[একটা অন্যের পোষ্ট, Click This Link এটা আমি লিখলে কেমন হত, তার খসড়া।]
সন্ধ্যায় হলে ফিরছি, সুর্যসেন হলের দোতলা- তালা খুলে ঘরে ঢুকতেই বিস্ময়। ১৭/১৮ বছরের এক ছেলে পরনে জোব্বা মাথায় টুপি- আমাকে দেখে হাতটা কপালে ছুইয়ে বললো- আস্লামালাইকুম ভাই।
অনেকটা হুমায়ুন আহমেদের নাটকের কৌতুক দৃশ্যের মতো- কিন্ত আমি মুগ্ধ হতে পারলাম না…… সারাদিন পরে আস্তানায় ফিরলাম, কিছু জরুরী কাজ সেরে- আবার সারা রাতের মত বাইরে যাব আড্ডা মারতে… এর মধ্যে এই উৎপাত কোথা থেকে। আমি ছেলেটাকে খুটিয়ে দেখছিলাম- মফঃস্বল থেকে আগত অল্প বয়সের এক সুদর্শন কিশোর, এই মুহুর্তে খুব শান্ত ভাবে ঘরের এককোণে দাঁড়িয়ে আমাকে লক্ষ্য করছে। চেহারায় তার চাঞ্চল্যের কোন লক্ষণ নাই, একহারা নরম হালকা পাতলা চেহারা- কোন সন্দেহ নাই এলটন জন উপস্থিত থাকলে ছেলেটার সাথে বন্ধুত্ব করতে খুবই আগ্রহী হতেন।
কিন্ত এলটন জনের রুচি তো আমার নয়- আমি তো সে রসে বঞ্চিত……।
সকাল থেকেই সেদিন ক্যাম্পাস জুড়ে তোলপাড়-- বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার, সাইন্স এনেক্স থেকে শুরু করে শহীদ মিনার, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর হয়ে বকশীবাজার পর্যন্ত পুরা এলাকা রণক্ষেত্র। সারা রাস্তায় অসংখ্য ছোট ছোট ইটের টুকরা, ভাঙ্গা গাছের ডাল, বিক্ষিপ্ত কিছু জুতা স্যান্ডেল- এখানে ওখানে ছড়ানো। সারা রাস্তা জুড়ে ছুটন্ত মানুষ, রাস্তা থেকে শহীদ মিনার, সিড়ির ধাপ পেরিয়ে-মিনারের লাল সুর্য পেরিয়ে এক পক্ষ ধাওয়া করে নিয়ে যাচ্ছে অপর পক্ষকে, আবার পিছু হটছে পালটা ধাওয়া খেয়ে।
শহীদ মিনারের দিকে যারা- তারা জোটবদ্ধ ছাত্রদের সংগ্রাম পরিষদ আর বকশীবাজারের দিকে যারা তারা ছাত্র শিবিরের কর্মী। ঘটনাকাল ৮৩র ফেব্রুয়ারীর ছাত্র আন্দোলনের কয়েকমাস পরের- সামরিক জান্তা বিরোধী আন্দোলন তখন মধ্য গগনে। শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে বেশ নিরীহ নির্দোষ গোছের একটা মিছিল বের করেছিল সেদিন শিবির এবং কলা ভবন পর্যন্ত মিছিল নিয়ে যাবার হিম্মতও দেখাতে চেয়েছিল।
শিকারী বেড়ালের ইঁদুরের সাথে খেলা করার মতো কৌতুকের দৃষ্টিতে আমরা মিছিলটা লক্ষ্য করছিলাম, জগন্নাথ হলের পাশ দিয়ে, টি এস সি পেরিয়ে রোকেয়া হলের গেট পার হয়ে কলাভবনের দিকে যাওয়ার উদ্দ্যোগ নিতেই আমরা গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাড়িয়েছিলাম- ওক্কে, এনাফ ইজ এনাফ।
ঘন্টাখানেকের কিছু বেশি সময় লেগেছিল সেদিন শিবিরের পুলাপাইনরে আলিয়া মাদ্রাসার গেটের ভিতর ঢুকায়া দিয়ে আসতে। এর মধ্যে আহত জনা পঞ্চাশেক- আর ততোধিক আটক যুদ্ধ বন্দী হিসাবে।
সন্ধ্যায় হলে ফিরে সেদিনের যুদ্ধবন্ধী কিশোরকে আমি মুক্তি দিয়েছিলাম তার প্রতি এক ধরণের চমৎকৃত মনোভাব থেকে…… আমার মনে হচ্ছিল সারাদিনের লড়াইয়ে আমরা জিতেছি নিরঙ্কুশ সংখ্যাধিক্যে কিন্ত দিনের শেষে এই নবীন কিশোরই জিতে গেল মনোবল আর নৈতিকতার লড়াইয়ে…… কার?
সেই থেকে মনে একটা প্রশ্ন তাড়া করে ফিরছিল। হতে পারে মাথা ভর্তি তার ভুল রাজনীতি- চেতনা জুড়ে তার অগনতান্ত্রিকতার দর্শন। তার রাজনৈতিকতার অভিমুখ মানুষের ক্ষমতাবিমুখ এবং জনগণের বিপক্ষে যুদ্ধ অপরাধে…… লড়াইয়ের ময়দানে আজ তার অবস্থান আমার বিপক্ষে- কিন্ত একই সাথে মনে হোল, তার এই ভুল পক্ষ বেছে নেবার প্রশ্নে আমার কী কোন দায় আছে? আমার ভাবনা কী সবদিক থেকে যথেষ্ট ভেবেছে, কোন দিক কী ভাবনার আড়ালে থেকে যাচ্ছে না তো? নইলে কেন এই ১৭১৮ বছরের তরুণ কীসের আকর্ষণে আমার বিপক্ষে এই বয়সে দাড়িয়ে যাচ্ছে? এতে আমার কোন দায় থেকে যাচ্ছে কী?
সন্দেহ নাই আমাদের রাজনীতিতে জামায়াত একটা চরম বিপদজনক শক্তি- আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তার রাজনৈতিক অবস্থান অতি অবশ্যই গণবিরোধী এবং আজ পর্যন্ত জামায়াত ১৯৭১ সালে নেওয়া তার রাজনৈতিক অবস্থানের কোন ব্যাখা দেয় নাই- এটা সে আজকে কীভাবে দেখে? আজও ঠিক মনে করে না ভুল মনে করে!! আচ্ছা সুনির্দিষ্ট করে বলি। ২৫মার্চের রাত্রের নৃশংশতাকে সে কীভাবে এখন দেখে বা তখন দেখেছিল? তার অবস্থান কি? রাজারবাগ, পিলখানা, ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কেন্দ্রগুলো, সংখ্যালঘুদের ঘন আবাসস্হল, সাধারণ নিরস্ত্র জনগণ - কেউ বাদ যায়নি এই গণহত্যার মাতম থেকে। নিজের জনগণের বিরুদ্ধে এই অস্ত্রধারণ, খোদ রাষ্ট্রেরই সংঘটিত অপরাধ কি জায়েজ?? এমনকি তা পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার জন্য হলেও?? দল হিশাবে ২৬ মার্চ বা এরপরে জামাত কী পাকিস্তান সরকার ও সামরিক বাহিনীর নৃশংস আচরণের বিরুদ্ধে নূন্যতম নিন্দা জানিয়ে একটা বিবৃতি দিতে পেরেছিল?
এসব প্রশ্নের কোন ব্যাখা জামায়াত আজ পর্যন্ত দেয় নাই-- না তাদের ঘোষনা পত্রে, না তাদের কোন প্রকাশিত পার্টির দলিলে বা মূল্যায়নে। জানিনা তাদের কর্মীরা এ বিষয়ে তাদের নেতাদের প্রশ্ন করেন কিনা আর করলেও কি ব্যাখা তারা দিয়ে থাকেন।
আমাদের দৃশ্যমান রাজনীতিতে জামায়াত সক্রিয় আছে এসব প্রশ্নের সদুত্তর ব্যতিরেকেই। আমাদের যাবতীয় ঘৃণা আর নিন্দাবাদের বিপরীতে। আর যাবতীয় অগণতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে জারীকৃত আমাদের লড়াইয়ের এক অন্যতম প্রধান ফ্রন্ট- আমরা খুলেছি জামায়াতের বিরুদ্ধে। স্নায়ুযুদ্ধের কাল থেকে সাম্রাজ্যবাদের, আমেরিকার বিশ্বস্ত বন্ধু জামাত। কমিউনিষ্ট বা যেকোন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে দমনের কাজে সবসময় ব্যবহৃত হয়েছে সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে বিশ্বস্ত বন্ধু থেকেছে জামাত। স্নায়ুযুদ্ধের কাল শেষ হলে এমনকি আজকের পরিস্হিতিতেও এই সম্পর্কের বিশ্বস্ততায় কোন ফাটল ধরেছে বলে মনে হয় না।
কিন্তু এতসবকিছুর ব্যবহারিক পরিচয়ের পরেও আবার ভাবতে বসি, জামায়তে ইসলামী তো আবার একটা রাজনৈতিক মতবাদও বটে। রাজনৈতিক মতবাদ হলে এই রাজনীতিকে রাজনৈতিক মোকাবিলা একটা কাজও আমাদের আছে। রাজনৈতিক মোকাবিলা মানে একটা চিন্তাকে অগ্রসর চিন্তার সাহায্যে চিন্তার জগতেও পরাস্ত করতে হবে। আবার এসব করার ক্ষেত্রে যে জরুরী প্রশ্নটা আমাকে নাড়া দিয়ে যায়- তাহলে কোন রাজনৈতিক মতবাদকে পরাজিত করার জন্য তাকে প্রতিহত করা, তার কন্ঠরোধ করা, তাকে শারিরীক ভাবে আক্রমণ করা কোন যথেষ্ট ও একমাত্র কার্যকরী পদ্ধতি কিনা।
কোন চিন্তা বাস্তবায়নে বলপ্রয়োগের ভুমিকা অসামান্য। ১৯৭০ এর নির্বাচনে প্রাণভড়ে ভোট দিয়েও আমরা ক্ষমতায় যেতে পারিনি, শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আসনে বসাতে পারিনি, তবে আমাদের ক্ষমতার সপক্ষে একটা মতাদর্শগত আধিপত্ত্ব, নৈতিক ভিত্তি তৈরী করতে পেরেছিলাম মাত্র। পরে সশস্ত্র বলপ্রয়োগের ক্ষমতা যোগাড় ও অর্জন করে বাংলাদেশ হাসিল করেছিলাম। ফলে যেটা ভাবাদর্শগতভাবে অর্জন করার কাজ সেটা বলপ্রয়োগে অর্জন করা যাবে না, যেটা বলপ্রয়োগে অর্জন করার কাজ ওটা শুকনা কথার ভাবাদর্শগতভাবে অর্জন করা যাবে না, এটা বুঝি।
আমরা নিশ্চয় একমত হই যে, কোন ধরণের চিন্তা অথবা ভাবাদর্শ যে শরীরকে ঘিরে বাসা বাঁধে, ঐ ব্যক্তিকে শারিরীক ভাবে নির্মুল করে সেই ভাবাদর্শকে কি আমরা পরাজিত করতে পারবো? চিন্তাগত ভাবাদর্শকে পালটা ভাবাদর্শ দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছাড়া তাকে কি নাকচ করা যায়? জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রত্যেককে আজ যদি আমরা ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েও দেই- জামায়াত কি নির্মুল হয়ে যাবে? নেতাদের ফাঁসি দিয়ে জে এম বি’র রাজনীতি কি আমরা মুছে ফেলতে পেরেছি বলে মনে করি?
অথচ রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে জামায়াতের উত্থানের পর থেকে আমরা চেয়েছি তাকে শারিরীক ভাবে নির্মুল করতে, যেখানে যেভাবে সম্ভব তার তৎপরতাকে প্রতিহত করতে- আমরা চেয়েছি তাদের নেতাদের সামাজিক ভাবে লাঞ্ছিত করতে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ করতে – ভেবেছি এভাবেই আমরা পার পাব। আর তাদের ভাবাদর্শের সমালোচনার নামে করেছি বিস্তর গালিগালাজ।
যা করিনি তা হলো তার ভাবাদর্শের রাজনৈতিক সমালোচনা- তার যুক্তির অসারতা প্রমাণ করে দেওয়া, তার নৈতিকতার যুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করা। রাজনৈতিক আদর্শ হিসাবে মুসলিম লীগ যাদুঘরে ঠাই নিয়েছে- কিন্ত আমরা খেয়াল করিনি একাজটা করার জন্য আমদের অগণতান্ত্রিক ভাবে কাউকে প্রতিহত কিংবা নির্মুল করতে হয়নি। ন্যাপ ও আওয়ামীলীগের পাল্টা ভাবাদর্শই তাকে রাজনৈতিক ভাবে নাকচ করে দিয়েছে। জামায়াতকেও এভাবে নাকচ করে দেওয়া সম্ভব- তার রাজনৈতিক ভাবাদর্শিক দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করে দেওয়া যায়।
মুখে আমরা বলি জামায়াত ৭১ এর পরাজিত শক্তি- কিন্ত অন্তরে আমরা তা কতটুকু বিশ্বাস করি তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। আমরা জামায়াতকে রাজনৈতিক মোকাবোলার কাজটা করতে চাই না - সম্ভবতঃ এই আশংকা থেকে যে জামায়াতকে রাজনৈতিক ভাবে নাকচ করার মত শক্তিশালী রাজনৈতিক ভাবাদর্শ আমাদের নাই অথবা জামায়াতের রাজনীতি জনপ্রিয় হওয়ার জন্য সামাজিক বাস্তবতা এখনও রয়ে গেছে। অথচ তরুণ সেই সব কর্মী যারা জামায়াতের রাজনীতির ভিতর তার মুক্তি খোঁজে আমাদের ভাবাদর্শিক সংগ্রাম তাঁকে বের করে আনার ক্ষেত্রে অনেক কার্যকর হতো। আমাদের মনে রাখতে হবে-সে কিন্ত আমাদের অপছন্দের হলেও একজন আদর্শিক কর্মী- ছাত্রদল বা লীগের কর্মীদের মতো দলবাজির রাজনীতি সে করে না। সে রাজনীতি করে কিতাব পড়ে। অতএব আমাদেরকে এর বিরুদ্ধে ভাবাদর্শিক লড়াইয়ে যেতেই হবে। যেমন ধরুন, জামাত বলছে, আল্লাহ এর আইন চাই। অথচ আল্লাহ এর আইন চাওয়ার দিন শেষ। কারণ, আল্লাহ এর আইন বা কালাম আসতে গেলে একজন নবীর মাধ্যমে আসবে যা আর সম্ভব নয়। নবী মুহাম্মদ মুস্তফা শেষ নবী - আমাদের শিখিয়ে গিয়েছেন। ফলে জামাতের দাবীর আল্লাহ এর আইন মানে কী? জামাতের আইন? গোলাম আজম বা নিজামির আইন? এতো ভয়াবহ। আর আল্লাহ এর নামে গোপনে নিজের খায়েস চালিয়ে দেওয়া তো ভয়ানক ব্যাপার। ধর্মের দিক থেকে দেখলে শেরেকি গুনাহ, তাঁরা আল্লাহ এর শরিক হতে চায়! নাউজিবিল্লাহ! আবার রাজনীতির দিক থেকে দেখলে এক ভয়াবহ স্বৈরাচারী ক্ষমতা। কারণ কোন দলই বলতে পারে না তার দলের কথাই আইন। কারণ একটা নাগরিক রাষ্ট্র লাগবে, জনগণের সম্মতি লাগবে, ইনসাফ বা ন্যায় বিচারের প্রতিশ্রুতি ভিত্তিতেই না নাগরিক মানুষ ঐ রাষ্ট্রকে আইনি ক্ষমতা সম্মতি দেবে - রাষ্ট্র গঠিত হবে। এক আধটা দল বা তার নেতার কথায় আইন হতে পারে না, হবে একটা স্বৈরাচারী দানব।
৯/১১ এর পর ও প্রভাবে ইসলামের নামে নানান ধরণের রাজনৈতিক ধারা জেগে উঠেছে ও তৎপর আছে। মোটা দাগে এরা সবাই ১. খলিফা শাসন বা খেলাফত প্রতিষ্ঠা ও ২. শরীয়া আইন এব্যাপারে একমত। এই ধারাগুলোর রাজনীতি মামুলি রাজাকার বা যুদ্ধপরাধী মামলা নয়। একে রাজাকার বা যুদ্ধপরাধী বলে চেনা বা চেনানোর শঠতা করা মানে ভাবাদর্শগতভাবে শত্রুকে খাটো করে দেখা আর বিপদকে আড়াল করা। এই ধারাগুলোর বিভিন্ন মতভেদ থাকলেও লক্ষ্যের দিক থেকে এই দুটা ইস্যুতে সবাই একমত: খলিফা শাসন বা খেলাফত প্রতিষ্ঠা ও শরীয়া আইন, যার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মোকাবোলা বা চ্যালেজ্ঞ করার মত ভাবাদর্শিক সংগ্রাম আমাদের করতে হবে। আধুনিকতা ধারার রাজনীতি মনে করছে একে রাজাকার বা যুদ্ধপরাধী বলে আমেরিকান ওয়ার অন টেররের কোলে বসে একে মোকাবোলা করে ফেলবে।
বাংলাদেশে সক্রিয় ইসলামিক দলগুলো সম্পর্কে আমদের ধারণাও পরিস্কার নয়। মোটা দাগে ধর্ম নিয়ে যে কোন রাজনৈতিক তৎপরতাকেই আমরা জামাতের নামে চালিয়ে দেই। জে এম বি’র রাজনীতিও জামাত কর্তৃক সৃষ্ট, ইসলামিক শাসনতন্ত্র বলতেও বুঝি জামায়াত- হরকাতুল জিহাদ বা হিজবুত তাহির বা তাহিরীর হলেও জামায়াত- লালনের মুর্তি উপড়ে ফেললেও জামায়াত- বিচারকদের ওপর বোমা মারলেও তা জামায়াত- ইসলামিক দল গুলো কোনটা কি পর্যায়ের র্যডিকেল-তার চরম পন্থার মাত্রা কি- কি তারা ভাবছে, বলছে আমাদের কোন জ্ঞান নাই……
জামায়াতের বিরোধিতায় আমাদের এই বালখিল্যতা প্রমাণ করে আমরা আমাদের মতাদর্শগত কাজ ও শত্রু সম্পর্কে কত কম ধারণা রাখি। আমাদের ঘৃণার বিপরীতে একজন জামায়াত কর্মী/সমর্থক তার নৈতিক মনোবল জড়ো করে আমাদের এই বালখিল্যতা থেকেই। সে জানে আমাদের অনেক সমালোচনাই গড্ডালিকায় গা ভাসানো, আমাদের অনেক মন্তব্যই ঢালাও।
আমাদের কারণেই ২০০৮সালেও বাংলাদেশে জামায়াত এজন্য পরাজিত শক্তি নয়। ইসলামি রাজনীতি যেমন বর্তমান গ্লোবাল রাজনৈতিক পরিস্হিতিকে যেমন ইসলামের সাথে খৃষ্টানদের ধর্মযুদ্ধ মনে করে, মুদ্রার অপর পিঠ হিসাবে বুশও ক্রসেড মনে করে - আধুনিকদের রাজনীতিকতা উভয় পক্ষের ধর্মযুদ্ধের ধারণাকেই পাকাপোক্ত করে। এগুলো থেকে সাবধান হবার সময় গড়িয়ে যাচ্ছে।