somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পতঙ্গতন্ত্র

১৪ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিনোদন পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে আমার প্রথম এ্যাসাইনমেন্ট আজকে। একজন লাস্যময়ী উঠতি চিত্রতারকার সাক্ষাৎকার নেয়া। কাজটি নিঃসন্দেহে উত্তেজনাপূর্ণ। এত কাছ থেকে সুন্দরীর রূপসুধা উপভোগ করতে পারবো, এই চিন্তায় আমি আমার আটপৌরে ম্যাদামার্কা প্রেমিকার সাথে গতকালের নৈশভোজকালীন মধুর মুহুর্তগুলো ভুলে থাকি। গতকাল আমার জন্মদিন ছিলো। সে আমার জন্যে একটি হৃষ্টপুষ্ট মুরগী আর কড়া মিষ্টি পায়েস রেঁধে এনেছিলো। এটা তার গার্হ্যস্থ গুণাবলী জাহির করার প্রয়াস, নাকি সত্যিকারের ভালোবাসার প্রকাশ ভাবিনি। ভাবিনা কখনও। যেমন চলছে চলুক। যেমন চলছে হৃদপকেটে আর মগজে বিষাক্ত কীটপতঙ্গের সাথে বিষময় বিস্ময় সমর সময়। চলুক! ওখান থেকে কখনও কোন শুয়োপোকা যদি প্রজাপতি হয়ে ওঠার চেষ্টা করে, তো বেশ একটা হল্লা লেগে যায়। অসম যুদ্ধ!

লাস্যময়ী যৌনাবেদনময়ী নায়িকার বাড়িতে যাবার পথে আমি আমার পতঙ্গগুলো নেড়েচেড়ে দেখি। পতঙ্গকূলের সাথে আমার সখ্যতা দীর্ঘদিনের। তারাই আমাকে চালিত করে। সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। তাদের মধ্যে আছে ধারালো হুলের বোলতা, কর্কশ এবং রহস্যময় ঝিঝিপোকা, সূচালো দাঁড়ার বৃশ্চিক, প্রাগৈতিহাসিক তেলাপোকা প্রভৃতি! কিছু ঘাসফড়িঙ আর প্রজাপতি ছিলো, কিন্তু ওগুলো উড়ে গেছে সেই কবে! ওদের সাথে আমার বনিবনা হয়নি। হবে কিভাবে? যেদিন আমি প্রথম কিশোর বয়সে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসা তরুণী আত্মীয়ার ঘরে রাতের বেলা চুপিসারে দৃশ্যসঙ্গম সারতে গিয়েছিলাম, প্রজাপতিগুলো তাদের ডানাদুটো প্রসারিত করে আমার চোখ ঢেকে দিচ্ছিলো বারেবার। শেষপর্যন্ত তাদের কতককে পায়ের তলায় পিষে মারতে হয়েছিলো। তাতেও হয়নি। আমার চারপাশে বো বো করে ঘুরে এ আচরণের প্রতিবাদ জানাচ্ছিলো ঘাসফড়িঙগুলো। হুমকি দেয়াতে অগত্যা মনক্ষুণ্ণ হয়ে তারা নিরুদ্দেশ হয়। সেই রাতেই, সেই ক্ষণেই আমার হৃদপকেট বিষাক্ত এবং শক্তিশালী কীটপতঙ্গে ভর্তি হয়ে ওঠে...

কীটপতঙ্গের কথা থাক। এখন আমি সামনে বসা যুবতীর আঙ্গিক বিশ্লেষণে মত্ত। ইন্টারভিউ আর কি নেব! সেই গৎবাঁধা কিছু প্রশ্ন। কি খেতে পছন্দ করেন, প্রিয় ব্যক্তিত্ত কে, দেশের জন্যে কি করার পরিকল্পনা ইত্যাদি। এসব নীরস প্রশ্নে অবশ্য খুব বিরক্ত হচ্ছিলো আমার বন্ধু পতঙ্গকূল। এও বুঝতে পারছিলাম যে শীঘ্রই তারা আমাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেবে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং ধীমান-ঘুণপোকা আমার মগজের ভেতরে শায়িত অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে আড়মোড়া ভাঙে। ইনাকে আমি শ্রদ্ধা এবং সমীহ করি। ইনি আমাকে সবসময় সঠিক পরামর্শ দেন। তার শরীর এবং শক্তি অন্যান্য বিষধর পতঙ্গগুলোর ধারে কাছেও নেই, কিন্তু তিনি সবসময় নিরাপদে থাকেন। অন্যেরা বিভিন্ন সময় মাতবরি করতে গিয়ে আহত, নিহত বা অপমানিত হয়ে পকেটচ্যূত হয়, কিন্তু ইনি সবসময় আমার মগজের নিরাপদ বাংকারে থাকেন অপরাজেয় সেনাপরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। এই মুহুর্তে তিনি আমার মগজে সদর্পে এবং সগর্জে বিচরণ করছেন।

নিরামিষ প্রশ্ন করতে করতে আমার আর ভালো লাগেনা। প্রিয় ফল-ফুল, পাখী-সখী, নদী-নালা, খালা-বালা ইত্যাদি রুটিন বাঁধা প্রশ্ন শেষ করে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি,
"আপনার প্রিয় পতঙ্গ কি?
"কি বলছেন! পোকা? প্রিয় পোকা? ছি ছি! ইয়াক! আমি পোকা ভীষণ ভয় করি। ঘেন্না পায়। সেদিন তো একটা আরশোলা আমার গায়ে এসে পড়েছিলো বলে ভয়ে আমি চিৎকার দিয়ে উঠেছিলাম"

ইন্টারভিউ আপাতত এটুকুই থাক পত্রিকার জন্যে। এখন ইন্টারভিউ আমার পোকাগুলোর জন্যে।
"পোকা ভালোবাসেন না বলছেন, কিন্তু আপনার এ্যালবামে তো ঢাউস আকৃতির বেশ কিছু পোকা দেখলাম"
আমি অথবা ঘুনপোকাটি। জিজ্ঞাসা করে কেউ একজন।
"কি বলছেন! পোকা! ওগুলোতো আমার শ্যুটিংস্পটের দৃশ্য। এইযে সুদর্শন ভদ্রলোকটি... (সে মনে হয় জানেনা যে সুদর্শন মানে কাঁচপোকা) আমার চলতি নাটকের পরিচালক। আর এই যে আমার নায়ক। এদেরকে কি আপনার পোকা মনে হচ্ছে? হি হি হি! আপনি তো ভীষণ রসিক!"
এবার আমি, নাহ ঘুনপোকাটা গম্ভীর কন্ঠে বলে ওঠে,
"আপনি ভালো করেই জানেন আমি রসিকতা করছিনা"
অভিজ্ঞ ঘুনপোকাটির নির্দেশে সহস্র মৌমাছি ঘিরে ধরে সুন্দরী নায়িকাকে। সে একটি মৌচাকে পরিণত হয়। মৌমাছিদের সাঁড়াশি আক্রমণে সে বিপর্যস্ত, তার চপলা এবং শ্রুতিমধুর কন্ঠটি ক্লান্ত এবং বিষাদী হয়ে ওঠে।

"হ্যাঁ, আমি জানি আপনি রসিকতা করছেননা। আমি সবসময়ই পোকা কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে এসেছি। ঘেন্না করলেও সহ্য করতে হয়েছে।
"এই যেমন এখন" একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলে।
আমি তার আক্রান্ত হওয়া উপভোগ করি। চাক ভেঙে মধু সংগ্রহ করি। একসময় মৌমাছিরা ফিরে আসে ঘুনপাকার নির্দেশে। লাস্যময়ী তার পুরোনো রূপ ফিরে পায় আবার।

"আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সাক্ষাৎকার দেবার জন্যে। শেষ কথা হিসেবে পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন কি?"
আমার শেষ প্রশ্নের জবাবে সে আবেগমথিত কন্ঠে শ্রেষ্ঠ অভিনয়কলা প্রদর্শন করে একই সাথে চটকদার এবং গভীর কিছু কথা বলতে শুরু করে।
এসময় তার এয়ারকন্ডিশন্ড উঁচুতলার ভবনটিতেও হঠাৎ মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। চটাস চটাস শব্দে সে মশা মারতে শুরু করে। আমি বুঝি, সে এখনও পতঙ্গদের সাথে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি।

ইন্টারভিউ শেষে আমি সম্পাদকের দপ্তরে যাই। সম্পাদক সাহেব ঘাগু লোক। তাকে সন্তুষ্ট করা কঠিন।
"এটা কোন ইন্টারভিউ হল? এটা পড়ে কেউ মজা পাবে?" শাসিয়ে ওঠে সে।
আমার পোকাগুলো ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। তার আচরণে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু পররামর্শদাতা ঘুনপোকার নির্দেশে তারা নিবৃত হয়। অবশ্য বোকা একটা গুবড়ে পোকা আক্রমণ করতে গিয়ে নিহত হয় শম্বুকগতির কারণে যথাসময়ে ফিরে আসতে না পারায়।
সম্পাদক সাহেব সাপ পুষতেন। আমার বিক্ষুব্ধ পোকামাকড়ের দল তার কাছে বড়ই দূর্বল প্রতিপক্ষ। তবে ঠান্ডা মথার ঘোড়েল ঘুণপোকাটি নতুন পরিকল্পনা আঁটছে। মগজের আরামদায়ক সজ্জায় বসে সে সম্পাদক সাহেবের হিংস্র সাপখোপের দিকে তাকায়।
"কিছুই হয়নি এ কথা বলবেন না স্যার! দাঁড়ান আপনাকে আনএডিটেড ভার্শনটা দেখাই। ওটা দেখলে মজা পেতে পারেন।"
সম্পাদক সাহেব মৌমাছি, মধু, আরোহণ, আহরণ এবং মৌচাক দেখেন। তার সাপগুলো খোপে ঢুকিয়ে ফেলেন।
"হু, ইন্টারভিউ যা তা হলেও চালিয়ে নেয়া যাবে। গসিপ সেকশনে আনএডিটেড ভার্শন থেকে কিছু জিনিস রঙ চড়িয়ে দিলে বেশ হবে। গুড জব ইনডিড!"
তিনি আমাকে তার পকেট থেকে কিছু দুস্প্রাপ্য বিদেশী বিষাক্ত পোকা উপহার দেন। আমার পতঙ্গভান্ডার সমৃদ্ধ হয়।

নতুন আসা পোকাগুলোর সাথে পুরাতনগুলোর খুব সহজেই ভাব জমে যায়। তারা একত্রে শলা-পরামর্শ করে নতুন এক প্রস্তাব পেশ করে কেন্দ্রস্থানীয় পতঙ্গ, অর্থাৎ ঘুণপোকার কাছে।

আমি ফোন করি আমার প্রেমিকাকে।
"আজকে বিকেলে ফ্রি আছি, আসবা?"
"বাসা থেকে বের হওয়া একটা সমস্যা...তাছাড়া..."
"ইয়েস অর নো?"
আমি জানি, তার না বলার শক্তি নেই। সে আমার পতঙ্গবলয়ের দ্বারা বন্দী। তার কোন পতঙ্গ নেই।

"কোথায় বসবা?" দেখা হবার পরে সে সুধোয়।
"বসব না শোবো"
"ছি! এত বাজে কথা বল তুমি!"
"তুমি এত ন্যাকামি কর কেন?"
"আমি তো তোমার জন্যে সব করতে পারি...কিন্তু ভয় হয়, আমাকে ছেড়ে যাবে না তো?"
তার ছলোছলো চোখের বোকাটে দৃষ্টি আমাকে বিরক্ত করে। কিন্তু ঘোড়েল ঘুনপোকাটি আমাকে তা প্রকাশ করতে নিষেধ করে।
"কি যে বল! তোমাকে ছেড়ে আমি থাকবো কিভাবে!"
তার চোখে সংশয় দেখতে পাই। কিন্তু গোধূলিবেলার মায়াময় পরিবেশে আমার পতঙ্গবাহিনীর অন্যতম সদস্য ঝিঝিপোকার নীচুলয়ের অর্কেস্ট্রো পরিবেশনে তার সমস্ত দ্বিধার পাথর লেকের পানিতে টুপ করে ডুবে যায়। তার ঘোলাটে সরল চোখে জোনাক পোকারা আতশ উৎসব শুরু করে। আমার চোখ ঝলসে যায় সে আলোয়। আমি চোখ ফিরিয়ে নেই।
"চল" আমি বলি।
তার শরীর থেকে রঙ বেরঙের প্রজাপতি বের হতে থাকে, উড়তে থাকে, অনিশ্চয়তা আর আশ্বাসের মাঝামাঝি এক শূন্য বোধ নিয়ে। আমার পকেটের শুয়োপোকাটার অস্তিত্ব টের পাই। সেও প্রাণপন চেষ্টা করে প্রজাপতি হবার। কিন্তু বোলতার এক দংশনেই অক্কা পায় বেচারা। বোলতাবাহিনী এরপরে আমার প্রেমিকার প্রজাপতিগুলোর দিকে ধেয়ে যায়। তাদেরকে ক্ষতবিক্ষত করে। মৌমাছিবাহিনী সাথে যায়, রঙ শুসে নেয়।
আমি উপভোগ করি এই হত্যাযজ্ঞ। পতঙ্গদের কার্যক্রমের সন্তোষজনক সমাপ্তির পরে আমি চলে যাই। পড়ে থাকে, মরে থাকে অজস্র বিবর্ণ প্রজাপতি, আর বিস্রস্ত অবস্থায় মায়াটে চোখে চেয়ে থাকে এক তরুণী।

রাতে আমার বেশ আরামের ঘুম হয় সবসময়। ফুরফুরে মন নিয়ে আজও আমি বিছানা সাজাই। শরীরটা অবশ্য একটু ক্লান্ত। এই এলাকায় মশার খুব উপদ্রব। কিন্তু আমাকে কখনও মশারি টানাতে হয়নি। পতঙ্গকূল আমার একান্ত অনুগত। কিন্তু আজ রাতে ঘুমে ঢলে পড়ার কিছুক্ষণ পরে মশার কামড়ে আমার ঘুম ভেঙে যায়। বিরক্ত হয়ে মশারিটা টানাই। মশাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। কিন্তু মশারির নিরাপত্তা দেয়াল ভেদ করতে নাপারায় তাদের অক্ষম পিনপিনানি'ই সার হয়! এই শব্দে আমার ঘুমের কোন ব্যাঘাত ঘটেনা।

কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আমি তীব্রতর দংশনের স্বীকার হই। ঘরের বিভিন্ন কোণে পড়ে থাকা আমার বিশ্বস্ত পোকাগুলো যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে মশারি ভেদ করে আসতে থাকে। তাদের ধারালো হুল দিয়ে আমাকে কামড়ে খুবলে খেতে চায়। আমার প্রাজ্ঞ ঘুণপোকাটির কোন নির্দেশও তারা মানেনা। ফলে ব্যাপারটা যা দাঁড়ায়, তা হল, তিনিও তাদের বশ্যতা স্বীকার করে নিয়ে আমার মগজে কুটকুট করে কামড়াতে থাকেন।
উফ! কি অসহ্য যন্ত্রনা! প্রতিরক্ষার জন্যে কোথা থেকে যেন উড়ে আসে আমার পিষে ফেলা, তাড়িয়ে দেয়া সেই প্রজাপতি আর ঘাসফড়িঙের দল। তারা তো শক্তিতে কুলিয়ে উঠতে পারবেনা, তাই আলোচনার মাধ্যমে অরাজক অবস্থার একটা সুরাহা করতে চায়। কিন্তু আজ তারা একই মতাদর্শের ছাতার নীচে দাঁড়ালেও পুরোনো বিভেদের কারণে হিংস্র পতঙ্গগুলো তাদেরকে তাড়িয়ে দেয় দূর দূর করে।
"ছাড়ো তোমাদের অহিংস বুদ্ধ নীতি। এর ব্যবস্থা আমরা করছি দেখো। এখানে নাক গলিওনা।"
ঘাসফড়িঙ এবং প্রজাপতিরা উৎকন্ঠিত চিত্তে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে।

মাথার ভেতর ঘুণপোকার তান্ডবনৃত্য বেড়ে চলেছে। বিষাক্ত পতঙ্গকূলের অবিরাম আক্রমণে আমি ডাক ছেড়ে কাঁদি। তারা আমাকে খুবলিয়ে, কামড়িয়ে ক্ষান্ত হয়না। অক্লান্ত প্রচেষ্টায় উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে ফেলে আবর্জনার স্তুপে। সেখানে নোংরা ঘিনঘিনে পিচ্ছিল বস্তুর আঁশটে সংস্পর্শে আমার গা গুলিয়ে ওঠে। আমি তাদের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করি। কিন্তু এতে তারা কৌতুক অনুভব করে, এবং যথেষ্ঠ শিক্ষা দেয়া হয়েছে ভেবে সন্তুষ্টচিত্তে ফিরে যায়। আমার সারা শরীর ফুলে উঠেছে, কোথাও কোথাও মাংস উঠে গিয়েছে। অসহায় আমি এই গন্ধময় দোজখে পড়ে থাকি, যন্ত্রণাকাতর।

ধীরে ধীরে আমার চেতনা নাশ পায় নাকি আমি ঘুমিয়ে পড়ি, জানিনা। সকালবেলায় প্রতিদিনের অভ্যাসে তাড়াহুড়ো করে ঘুম থেকে উঠি। গায়ের ফোলা ভাব এখন আর নেই। ঘুণপোকাটিও যথেচ্ছ যন্ত্রণা দিয়ে এখন আবার পূর্বের প্রাজ্ঞ নেতা হয়ে বসে আছে মস্তিস্কের রাজাসনে।

এখন দরকার শুধু একটা আরামদায়ক শাওয়ার এবং অল্পবিস্তর প্রাথমিক চিকিৎসা। গতরাতের অপকর্মে লজ্জিত হয়ে আমার প্রিয় পোকারাই চিকিৎসাকার্যে এগিয়ে আসে। তারা তাদের উপকারি তরলের প্রলেপ দিয়ে দ্রুত আমার ব্যথা নিরসন করে এবং ক্ষতস্থান সারিয়ে তোলে। সবকিছু আবার আগের মত হয়ে যায়। আমার পতঙ্গরাজ্যে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। শাওয়ার নিয়ে ফিরে আসার পরে আমি দেখি কালকে রাতের অনাহুত ঘাসফড়িঙ এবং প্রজাপতিরা এখনও উদ্বিগ্ন মুখে চেয়ে আছে। আমার কড়া দৃষ্টি দেখে তারা বুঝতে পারে এখানে তারা আর আকাঙ্খিত নয়।

উড়ে যায় ঘাসফড়িঙ এবং প্রজাপতিরা। তাদের দু একটা পালক খসে পড়ে যায়। বিজ্ঞ ঘুনপোকাটি আদেশ দেন ওগুলোকে ঝাঁট দিয়ে ঘর পরিস্কার করতে। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হয় থাকুক না...


১৮৫টি মন্তব্য ১৮৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×