নেট কামের না বই কামের
সেবা থেইকা আবজাব বিভিন্ন অনুবাদ কিনতে কিনতে দেখি প্রায় ৮০০ টাকা নাই। বোঝা টানতে টানতে মনে পড়ল এ মাসে নেটের টাকাতো শেষ। বিধাতা সম্ভবত দোয়েল চত্ত্বরের দিকে কোন কাজে যাচ্ছিলেন। ব্যাস্ততার মাঝেও আমার এই দুর্দশায় দুর থেকে মাথায় একটু টোকা দেয়ার চেষ্টা করতেই সব ফক ফকা। ৮০০ টাকার বই পড়া শেষে কেজি দরে বেঁচে দিলেওতো ৫০ টাকা পাওয়া যাবে, আর নীলক্ষেতে বেচলে আর একটু বেশি। কিন্তু নেটের ডাটা কি বেচা সম্ভব? কাজেই তরুণ ব্রোগণ, বেহুদা কামে নেটে টাকা না ঢেলে বই কেনা শুরু করুণ
আগের চেয়ে ভাল
এবারের বইমেলায় আসল প্রকাশক ছাড়া কোন সংগঠন বা অন্যপ্রকাশনীর বই বিক্রেতাদের বসতে দেয়া হবেনা ইত্যাদি ব্যাপক বুলি ছাড়লে প্রথম গেটের কাছে ঠিক প্রাইম জায়গায় দেখলাম আওয়ামী লীগের মাসিক মুখপত্র ’উত্তরণ’ এর স্টল। আবজাব কিছু বই আর পত্রিকা সাজাইয়া রাখছে। স্টল কর্তৃপক্ষ বুদ্ধি করে কিছু চিনি ছিটিয়ে রাখলে হয়তো কিছু পিপড়া বা মাছির সমাগম ঘটতো, আর সেগুলো মেরে স্টলকতৃপক্ষের সময় কাটতো। তবে এরকম রাজনৈতিক স্টলের সংখ্যা ২/৪টি। আসল প্রকাশকদের মেলা নিশ্চিত করতে কৃর্তপক্ষকে একটা সাধুবাদ দিতেই পারেন।
উন্মাদক
রাস্তায় স্টল না থাকায় এবারের বইমেলার সেই পুরনো রূপ। তবে গতবারের মতো স্টলের ম্যাপ খুজে পাচ্ছিলামনা। বইমেলায় আসব আর উন্মাদ স্টল থেকে কিছু কিনবনা। এই অধর্ম থেকে রক্ষা পেতে গলি গুপচি থেকে শুরু করে বড়লোকী এলাকা হন্য হয়ে উন্মাদ খুজছি। বিধাতা মনে হয় কাজ শেষ করে আবার এ পথেই ফিরছিলেন। আবার ত্রানকর্তা হয়ে উন্মাদক আহসান হাবীবকে দেখিয়ে দিলেন। উদ্ভ্রান্তের মতো উন্মাদক সাহেব শিশু কর্নারের দিকে ছুটছেন। কান পর্যন্ত দন্ত বিকশিত করে তার পেছনে ছুট লাগালাম। কিন্তু ভীড়ের এক ফাকে উন্মাদক গায়েব। ঘুরতে ঘুরতে লেখক আড্ডার কাছে একটু পশ দিলাম। জাভেদ চিতকার করে উঠল ঐ যে উন্মাদক........ উদভ্রান্তের মতো নজরুল মঞ্চের দিকে ছুটছেন। আবার ছুট লাগালাম, আবার হারিয়ে ফেললাম, আবার দেখা গেল ক্যান্টিনের কাছে। আর ফলোআপ নয়, নিশ্চিত হলাম সে নিজেই উন্মাদ স্টল খুজে পাচ্ছেনা। ৩৩ বছরের সাধনায় অবশেষে সে উন্মাদক হইতে পারসে
চেতনার অধপতন
৯০ পর্যন্ত বাঙালীর ইতিহাস কিন্তু আগুন ইতিহাস। পরাক্রমশালী শক্তির বিরুদ্ধে বাঙালীর খালি হাতে লড়াইয়ের মুল হলো ভয়ঙ্কর চেতনা, সেই চেতনা হলো মাথা নত না করা। কিন্তু ৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর থেকে মনে হচ্ছে বাঙালীর সেই চেতনায় ঘুনে ধরেছে। বসুন্ধরার মতো একটা বহুজাগতিক কোম্পানী, বইমেলার সাথে যাদের বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নাই, তারা ঠিকই বইমেলার প্রাইম লোকেশন গতবছরের মতো এবারও একটা স্টল দিয়ে বসেছে। এবার তাদের দেখলাম এফোর কাগজ, বিক্রি করছে। বইমেলার মতো বাঙালী চেতনার এরকম একটি উতসবের সাথে সম্পুর্ন বেমানান বসুন্ধরার স্টল সম্পর্কে কোন মহলও টু শব্দ উচ্চারণ করেনি। অর্থের কাছে চেতনা, মননশীলতার এরকম বিক্রি হয়ে যাওয়া লজ্জাজনক কিনা তা বোধ হয়ে বোদ্ধামহল ভুলে গেছে
চিত্র প্রদর্শনী
এবারের মেলা হুমায়ুন আহমেদকে উতসর্গ করেই কর্তৃপক্ষ খালাস। তার স্মরণে বাড়তি কোন উদ্যোগ চোখে পড়লনা। তবে নতুন ভবনের দিকে চিত্র প্রদর্শনী হচ্ছে দেখে গিয়ে কিছুটা আশান্বিত হলাম...নিশ্চয় হুমায়ুন......ধরা খেলাম....কবীর চৌধুরি স্মরণে চিত্র প্রদর্শনী। যাক তাও খারাপ কি? কবীর চৌধূরীরর বিভিন্ন সময়ের আলোকচিত্র মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতে মাঝখানে এসে একটু বেশি সময় পশ দিলাম। পুরো প্রদর্শনীতে সবগুলো ছবি একই মাপের হলেও মাঝখানে একটি ছবির আকার বেশি রকমের বড়। কারণ ওখানে গনতন্ত্রের মানসকন্যার সাথে কবীর চৌধুরী রয়েছেন। এর মাধ্যমে কবীর চৌধুরীকে বড় করে দেখানো হলো না তাকে ছোট করা হল- এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে কেটে পড়লাম। চিত্রপ্রদর্শনীর মহাখুতটি ধরতে পেরে বেশ আনন্দে লাগছিল কারণ প্রমান হলো আমি খাটি বাঙালী...... কারণ সব কিছুতে খুত ধরা কেবল বাঙালীরই সাজে
নি:সঙ্গ হুমায়ুন
অন্যদিন প্রকাশনায় বইপ্রেমীদের সবচেয়ে বড় ভিড়, কিন্তু সেই মানুষটি নেই, সেই মানুষটি ঠাই করে নিয়েছেন বিশাল প্যানাফ্লেক্স ব্যানারে। অসংখ্য বইপ্রেমীর নি:শ্বাসে সেই মানুষটিকে খুজে না পাওয়ার দীর্ঘশ্বাস। সেই দীর্ঘশ্বাসটাকে আরো বাড়িয়ে দিল তিন তিন বার আগুনের হামলা পড়া নবীন প্রবীন লেখকদের বইয়ের স্তুপে-
এই আগুন বাঙালীর অস্তিত্ব বিনাশের প্রারম্ভিক ধাপ.........কেন এই অবহেলা, রাজনীতি আর দূর্নীতির দৃর্বত্তায়নে আমরা ক্রমশ অসহায় হয়ে পড়ছি
ছবি:www.demotix.com