একজন ব্লগার হিজাব বিরোধী শিক্ষকের পক্ষে ব্লগ লিখেছেন। লুঙ্গির ছবি দিয়ে তিনি বোঝাতে চাচ্ছেন হিজাব পড়েও ক্লাসে যাওয়া যাবে না! অতি আশ্চর্যজনক ভাবে তারা জঙ্গিদের সাথে হিজাবের পক্ষভুক্তদের এক করে ফেললেন। ঠিক একই কাজটি ঐ শিক্ষক করেছেন। এর প্রতিবাদও হয়েছে ঐ ক্লাসে। যা প্রতিবাদকারিনী ছাত্রিটিও উল্লেখ করেছেন। অথচ প্রতিবাদকারী সহপাঠীরা জঙ্গি দলের সদস্য, এমন দাবী কোন পাগলেও করতে পারেনা। দাবি করেছেন ঐ ব্লগার!
গোজামিলে পারদর্শিতা দেখাতে ইচ্ছুকদের জন্য বলছি- প্রথমত, লুঙ্গি ইসলামী কিংবা আরবীয় পোশাক না। এটা আমাদের ট্র্যাডিশনাল পোশাক। বরং বাঙ্গালী হিসেবে আমরা আমাদের ট্র্যাডিশনাল ড্রেসকে যতটা অপমান করেছি ভুটানি-নেপালিরা ততটাই উর্ধে ধরে রেখেছে। হীনমন্যতার কারনেই আমরা অফিসিয়াল কাজে লুঙ্গী পরিধান করিনি। কিছু দিন আগেও দার্শনিক ফরহাদ মজহার লুঙ্গি পড়ে ঢাকা ক্লাবে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় একটা আন্দোলন হয়েছিলো। সাংস্কৃতিক আন্দোলন। অথচ আমরা বাঙ্গালী সংস্কৃতিতেও এতটাই দেউলিয়া হয়ে গেছি যে অফিসিয়ালি লুঙ্গীকে আমরা অপমানের প্রতীক বানিয়ে নিয়েছি। আর এই সুযোগকে হিজাবের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন কিছু লোক! লজ্জার ওপর লজ্জা!!
যারা ঐ শিক্ষকের হিজাব বিরোধী অবস্থানকে ঢেকে দিতে চান, আপনারা বরং ২০১৫ সালের ঐ একই শিক্ষকের সেইম টাইপ "প্রতিবাদের" জবাব দিন। একটি অধিকারগত আন্দোলনকে ঘায়েলের উদ্দেশ্যে মিথ্যাচার বন্ধ করুন।
আপনারা 'স্যাবোটাজ' করে একে জঙ্গি কুপানির সাথে লিংকেড করতে চাচ্ছেন। এতেই ক্লিয়ার হয় আপনাদের 'উদারতার' পেছনের উদ্দেশ্য কী। শুধু ঢাবি কেন কিছু দিন আগেই বদরুন্নেসা মহিলা কলেজেও হিজাব নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর তা উইথড্র করা হয়েছে। এমন ঘটনা আমাদের দেশে প্রায়ই হচ্ছে! হিজাব নিষিদ্ধ করার কারনে চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজেও আন্দোলন হয়েছিলো। যা সেসময় সারা দেশে আলোচিত হয়েছিলো।
এদেশেই কিছু লোকের হিজাবে চুলকানির ভুরি ভুরি উদাহরন, এড়িয়ে জঙ্গি লিংকিং আপনাদের পরিচয় প্রকাশ করেছে মাত্র।
একটা ছাত্রী দিনের পর দিন খাতায় উপস্থিতি পাচ্ছেনা। উপস্থিতির অভাবে সে পরীক্ষা দেয়ার অনুমতিও হারানোর শংকায়। তার প্রতিবাদ করায় ঐ হিজাবধারিনী ও তার পক্ষঅবলম্বনকারীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হল! এসব পরম্পরাকে খুব সহজে এড়িয়ে যেতেই পারেন। একটা মেয়ের জন্য হিজাব কতটা স্পর্ষকাতর বিষয়, তা বুঝার ক্ষমতাও আপনি হারিয়ে ফেলেছেন। তাই চিনতে না পারার অযুহাতে প্রেজেন্ট দেয়ার বিনিময়ে ভরা ক্লাসে হিজাবধারীনীকে হিজাব খুলতে বলা কোন পর্যাদের মানবাধিকার লংঘন ও অসভ্যতা তা আপনি উপলব্ধিও করতে পারছেন না।
একই ব্যাক্তি বছরের পর বছর একই কাজ করে তথাকথিত 'প্রতিবাদ' প্রকাশ করেন। আর তার স্বরুপ উন্মোচন করা হলেই কোপাকুপির আশংকায় প্রতিবাদকারীরা হয়ে গেলেন খারাপ!! দিনের পর দিন নারী অধিকার হরন করেও উনি কোপ খাবার আশংকায় মহানায়ক!
প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে। আর দোষ প্রমাণ হলে বিচার করাটাও সরকারের কর্তব্য। সঠিক সময়ে ক্রিমিনালদের বিচার হলে মানুষ ক্ষুব্ধও হতনা। আবার জঙ্গিদের উত্থানও বাধাগ্রস্থ হত। আপনারা নিজেদের তথাকথিত উন্মুক্তমনের পরিচয় দিয়ে বরং এইসব লোকের আইনগত বিচারের দাবিতে সম্পৃক্ত হয়ে দেখান।