চার-পাঁচ ঘন্টার জার্নি, একা একাই যাচ্ছেন ? আশেপাশের সবাই সবার মত মহাব্যস্ত নিজেকে নিয়ে। শুধু আপনিই সবার ব্যস্ততা দেখে সময় পার করছেন। কিন্তু এসময় যেন পার হবার নয়। আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলেটিভিটির মতে, "আপনি যদি আগুনের পাশে পাঁচ মিনিট থাকেন তাহলে পাঁচ ঘন্টা মনে হবে আর যদি কোন সুন্দরী ললনার পাশে অনেক্ষন সময় পার করেন তাহলে মনে হবে এই এক্ষুনিই এলাম বুঝি"। এই যখন অবস্থা, তখন কি আর করার ? সহজ স্যলুশন-আপনার ফোনে আপনি গান শুনতে পারেন সেই সাথে ফোনে নেট ব্রাউজ করতে। কিন্তু তাতে কি আপনি ডেক্সটপ কিংবা ল্যাপটপের মত পরিপুর্ন ইউটিলিটি পাবেন ? আপাতত মনেহয় না। ঢাকা থেকে আমার বাড়ীর দূরত্ব প্রায় পাঁচ ঘন্টার। বাড়ী যেতাম আর ভাবতাম, ইসসসসসস এই বাসগুলিতে যদি হাইস্পিড ইন্টারনেট কানেকশনযুক্ত মনিটর থাকত তাহলে ইন্টারনেটের দুনিয়ার ভাঁসতে ভাঁসতে বাড়ীই পৌঁছে যেতাম। তা যেহেতু সম্ভব নয় তাহলে সেকেন্ড অপশনেই চলে যাওয়াই ভালো, আর তা হল সুন্দরী কোন ললনার পাশে সিট খোঁজা যার জন্য ভাগ্যকে খোদাতায়ালার হাতে সপে দিতে হবে।
আমরা জানি বর্তমান বিশ্বের টেক জায়ান্ট হচ্ছে গুগল। যার যাত্রা শুরু হয় সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে গুগলের সেবার মান ও পরিধি। কি নেই গুগলে ? আছে জিমেইল, ইউটিউব, গুগল ক্রোম, গুগল ড্রাইভ, গুগল ডক্স, গুগল ম্যাপস, গুগল ক্যালেন্ডার, এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম সহ আরো কত কি ! তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে যুক্ত হল গুগল বাস। যদিও আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গুগল বাস চালু হয় কয়েক বছর আগে কিন্তু বাংলাদেশে এই ধারণাটা নতুন। আমি যে ভাবনাটা ভেবেছিলাম তা পূরণ হয়েছে ঠিকই কিন্তু একটু অন্যভাবে। এটি গুগল বাস হলেও এটি যাত্রী পরিবহন করে না। তাহলে এটি কি ? নেট ঘেঁটেঘুঁটে গুগল বাস সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পাই নি, ইউটিউবে দু'একটা ভিডিও ছাড়া। গুগল বাস হল প্রযুক্তি দুনিয়ার অত্যাধুনিক বাস, হাই পাওয়ারের এসি এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য অনেক নান্দনিক। যদিও বাইরে গুগলের অফিসিয়াল লোগো ব্যবহার করা হয় নি। শুধু নরমাল ফন্টে বাসের গায়ে গুগল বাস লেখা। গুগল বাসে রয়েছে নয়টি হাই রেজুলেশনের মনিটর আর রয়েছে হাই স্পিড ইন্টারনেটের গতি। যেহেতু বাস চলমান আর বাংলাদেশ বলে কথা, গুগল বাসে ইন্টারনেট কানেকশন দেয়া হয়েছে থ্রিজির মাধ্যমে।
এখন প্রশ্ন, আমাদের সবার বাসায় থ্রিজির বাপ ব্রডব্যান্ড নেট কানেকশন আছে তাহলে গুগল বাসের কি দরকার ? দরকার আছে মশায়, দরকার আছে ! আমরা সবাই কমবেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করি। ক'জন আমরা সঠিক কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করি ? করি তো শুধু ডাইনলোডিং, ফেসবুকিং আর চ্যাটিং। এটা কি জগৎ হল ? না এর বাইরেও আরেকটা জগৎ আছে আর সেই জগৎটার সাথে আমাদের সংযোগের দায়িত্বটিই নিয়েছে মূলত গুগল বাস। গুগল বাস ঘুরবে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দেখাবে ইন্টারনেটের ফ্যাসিলিটি আর গুগলের সেবা সমূহকে। এ বাসের কার্যক্রম আপাতত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক। আপাতত বাংলাদেশের ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে টার্গেটে রেখেছে এই গুগল বাস। এর মাধ্যমে শুরু হল বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের আরেক বিপ্লব, শুরু হল গুগলের সাথে নতূন দিনের পথচলা। এই পথ চলায় যেন আমরাও অংশগ্রহণ করতে পারি সেই আশায় আমরা "জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়" বাসী../
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৮