সেদিন আমার স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। স্কুলে পড়াশুনারত অবস্থায় আমার কার্যক্রম ছিল সবার চোখে পরার মত; স্যাররা আমার বিশাল ভক্ত আর আমিও স্যারদের ভীষণ প্রিয় ছাত্র ছিলাম। কপাল বশত সেবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম তাই বন্ধুবান্ধবের সাথে ঘুরতে ঘুরতে স্কুলের দিকে আসি। এসে দেখি খেলাধুলার বিশাল এক মহাযজ্ঞ, মনে হচ্ছে অলিম্পিকের আসর বসেছে। আনন্দ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলা উপভোগ করছিলাম। হঠাৎ করে আমার সামনে কই থেকে যেন কয়েকটা মেয়ে এসে হাজির। আমিও অপ্রস্তুত হয়ে সেই মেয়েগুলোর মধ্যে একটি মেয়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম, দপ করে সেই মেয়েটি আমার দিকে ফিরিয়ে বলল, এই যে মিস্টার কি দেখেন, জ্বলে পুড়ে কয়লা হয়ে যাবেন কিন্তু...
চোখ ফিরিয়ে নিলাম, মেয়েগুলো অন্যত্র চলে গেল; সেই মেয়েটি বুকের বাম পাশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে গেল অজস্র চাঁপা ব্যাথা ও অনুভূতি। দূর থেকে খেয়াল করে দেখলাম, অনেক ছেলেপুলে তাকে চিঠি দিচ্ছে, সে সেই চিঠিগুলো পড়ে হাঁসতে হাঁসতে গড়িয়ে পড়ছে আর চিঠিগুলো ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছে। সে যতক্ষণ স্কুলে ছিল ততক্ষণই তাকে আড়াল থেকে দেখতে লাগলাম আর মিফতা জামানের সেই বিখ্যাত গানের একটি লাইন গুনগুন করে গাইতে লাগলাম-
“আড়াল হতে দেখেছি তোমার, নিষ্পাপ মুখখানি”
বাসায় আসলাম, শুয়ে শুয়ে তাহার কথা ভাবছি। তাহার রূপের বর্ণণা দিতে গেলে আমার বুক এখনো কেঁপে ওঠে। এত্তো সুন্দর ক্যান ? ক্যামনে একটা মেয়ে মানুষ এত্তো সুন্দর হতে পারে ? উফফফফফফফফ... না দেখলে বিশ্বাসই করতাম না। চোখ দুটো হরিণের টানা টানা চোখের চেয়েও সুন্দর এবং কাজল দিয়ে রাঙ্গানো, ঠোঁট দুটো গোলাপের পাপড়ির চেয়েও মসৃণ, তাহার দাঁতগুলো দাঁত নয় যেন মুক্তোর দানা, তাহার দিঘল লম্বা চুলগুলো যেন মেঘের চেয়েও ঘন ও কালো, তাহার হাসিটা আমি নিশ্চিত যে, লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা মোনালিসার চেয়েও সুন্দর, বেশী লম্বা না সে; মাঝারী গড়নের, গায়ের রঙ একটা পারফেক্ট মেয়ের যেরকম হওয়া উচিৎ সেরকম। আর হ্যাঁ তাহার কথাগুলো যেন নির্মল বৃষ্টির শব্দের মত; শুধু শুনতেই মন চায়। তাহার নাম আমি জানি কিন্তু তাহার এই নামের সাথে তাহার চেহারা কোন মতেই যায় না তাই তাহার একটা নাম দিয়েই দিলাম-
“লীলাবতী”
এরপর গল্পটা কোনদিকে মোড় নিতে পারে বলুন তো দেখি...?