গ্রামীণফোনের অন্দরমহল-১
Click This Link
গ্রামীণফোনের অন্দরমহল-২ Click This Link
কোনো নতুন কোম্পানিতে জয়েনিং বা রিজাইন যেকোনো মানুষের জীবনে খুবই গুরুত্বপুর্ন মুহুর্ত। এ অভিজ্ঞতা মনে থাকে দিনের পর দিন। তাই প্রতিস্ঠানের উচিৎ কাজটাকে অত্যন্ত সিরিয়াসলি নেয়া। খরছাবিহীন কর্পোরেট ব্রান্ডিংয়ের এটা মোক্ষম সুযোগ। জানামতে, ফাইসন্স বাংলাদেশ (বর্তমানে সানোফি এভেন্টিসের সাথে একীভুত) নাকি একসময় এপয়েন্টমেন্ট লেটারের সাথে ফুলের তোড়া পাঠাত! বুঝলাম এখন সেই মামার বাড়ীও নাই, মধুর হাড়িঁও নাই, কিন্তু জয়েনিং এর সময় ১টা ফুল, চা-কফি ও সিনিয়র কোনো স্টাফের উপস্থিতি নিশ্চিৎ করতে তো বাধা নাই! আর গ্রামীনের মত 'টাকার পাহাড়' সর্বস্ব কর্পরেট দৈত্যর কাছে এটা কোনো ব্যাপারই না। এই একমাত্র 'ঔষধে' ১ জন মানুষ চাকরি ছেড়ে গেলেও আজীবন হাজারো আত্বীয়, বন্ধু মানুষের কাছে সংশ্লিস্ট কোম্পানীর 'দূত' হিসেবে মাগনা রোল প্লে করতে পারে। ব্যর্থতার পাহাড় সর্বস্ব ক্রিকেট, ফুটবল, খো খো টিমের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরছ কৈরা যে মার্কেটিং হয়, নি-খরছায় এতে তার চেয়ে ঢের ভাল নীরব মার্কেটিং হতে পারে।
আর তা না করে, দায়সারা গোছে ইন্টার্ন, কন্ট্রাকচুয়াল, পার্ট টাইমার দিয়ে 'রেগুলার' স্টাফের জয়েনিং প্রসেস করা একধরনের 'তাচ্ছিল্য।' তার উপর 'ফরম পূরন করতে দেরী' হওয়ার কারনে বিরক্তি প্রকাশ করা এসব গর্হিত অপরাধ। অনেকেই বলবেন, জিপিতে প্রতিদিন দলে দলে লোক জয়েন করে! এত ফরমালিটির টাইম নাই। আমি বলব জিপিতে দলে দলে লোকের কোনোই কাজ নাই! এভাবে তাদের অন্তত: আড়মোড়া ভাংতে পারে! আরেকটি মজার ব্যাপার হল, ডেপুটি ম্যানেজার বা তদুর্ধ পদে যেতে পারলেই এখানে নিজের হাতে আর কোনো কাজ এমনকি ইমেইলের সাথে কোনো এটাচড্ এক্সেল শীট পূরন করা 'প্রেস্টিজের' ব্যাপার মনে করার কু-খাছলত থেকে বেরুলেই এটা সম্ভব! তবু বলা যায়, দেশের অন্য অনেক প্রতিস্ঠান থেকে এখানকার জয়েনিং এক্সপেরিয়েন্স অনেক উত্তম।
কেননা প্রথমদিনই আইডি কার্ড, মোবাইল সীম, হ্যান্ডসেট, ইমেইল আইডি ইত্যাদি দাপ্তরিক বিষয়াদি প্রায় সম্পন্ন হয়ে যায়। বাংলাদেশের বিচারে যা অত্যন্ত দ্রুতগতির বলতেই হবে।আরো একটি বিষয় হল- গভর্নেন্স ডকুমেন্ট, কোড অব কন্ডাক্ট ইত্যাদি হাতে ধরিয়ে দেয়া। কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নাই মার্কা হলেও পয়লা মুহুর্তে নবাগতকে এসব দলিল ধরিয়ে দেয়া কোম্পানীর কমপ্লিটনেস প্রকাশ করে। তবে 'অধিক সন্যাসীতে গাজন নস্ট' প্রবাদের পুরোটাই অনুভব হল 'যান, এবার আপনি ৫ নং বিল্ডিং এ চলে যান।' কার কাছে যাব? 'ম্যানিয়া আপার কাছে।' রাতকানার মত হাতড়াতে হাতড়াতে ৫ নং বিল্ডিংয়ের ৬ নং ফ্লোরে পৌছালেও ম্যানিয়া আপার চেম্বার? দরজার নিকটতম জনকে এপ্রোচ করতেই উনি ' বুঝছি আপনি বল্টু ভাইর টিমে জয়েন করেছেন। ওয়েট করেন, উনি বোধ হয় বাইরে আছেন।' ওয়েট করতে করতে পশ্চাৎদেশে টনটন হলে পড়লে আর পারলাম না! ইতি উতি খুজেঁ ঠিকই ম্যানিয়া আপার চেম্বার পেয়ে গেলাম! কিন্তু অত্যন্ত প্রভাবশালী, সদা ব্যস্ত এত বড় ডিজিএমের দেখা পাওয়া সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার! (রং বেরংয়ের সেকশন, ডিপার্টমেন্ট জন্ম দিয়ে, শ খানেক পালামাইয়ার ক্যারিয়ার অকুল সাগরে ঠেলে দিয়ে ভদ্রমহিলা বছরখানেক পর অন্য এক ডিভিশনে চলে যান। এবং পরে চাকরিটা ছেড়ে দেন, মতান্তরে ওনাকে খেদানো হয়)। বিরক্ত হয়ে মানবসম্পদ বিভাগে ফেরৎ চলে আসি! আবার "আপু, কার কাছে যাব?" চোখ কপাল ছুইঁ ছুইঁ করে সুন্দরী আপু দন্ডায়মান এসিট্যান্টকে কইলেন, "জামান, ওনারে এক কাপ চা দাও!" (চলবে)