আমাদের এক এক জনের দৃষ্যাঁটি ভঙ্রাগী এক এক রকম। সাংস্কৃতি কে ছোট্ট বিষয় মনে করেন
লেখাটি তাদের জন্যঃ
সম্মানিত পাঠক- পাঠিকা, কখনো কি চিন্তা করে দেখেছেন একজন মানুষের জীবনে সাংস্কৃতির প্রভাব কতটুকু?
আসলে সাংস্কৃতির সংঙ্গা বা ব্যাখ্যা অনেক গভীর আলোচনার বিষয়। আমি এতো বিস্তর আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না। আসলে আমরা সাধারণ ভাবে যেটা কে সাংস্কৃতি বলে বুঝি সেটা হলো। গান,কবিতা, উপন্যাস, নাটক, টেলিফিল্ম এবং মুভি ইত্যাদি কে । এগুলো ছাড়া বিনোদনের আরো অনেক উপায় উপকরণ থাকলেও আমরা মূলত এগুলোর মাধ্যমে বিনোদন পেয়ে থাকি।
আমি প্রথমে আলোচনা করছি, আমরা যারা সুস্থ সাংস্কৃতি চর্চা করি অথবা ইসলামী ভাবাদর্শে বিশ্বাসী তাদের কথা। দেখেন আমি নিজেকে যদি পর্যালোচনা করি যে, বিশ্বব্যাপী অপ-সাংস্কৃতির যে প্রবল আগ্রাসন, তা থেকে কি আমি সম্পূর্ণ মুক্ত? উত্তর হবে, "না" ।
কেননা আনমনে আমিও প্রচলিত নাটক, গান, অথবা মুভি দেখি মাঝে মাঝে। এটা যদি হয় আমার অবস্থা, তাহলে দেশের সর্বস্তরের মানুষের অথবা যুব সমাজের অবস্থা কি এটা সহজেই অনুমেয়। একথা সবাই স্বীকার করবেন যে, আমি বা আপনি যে নাটক, গান, বা মুভি দেখছি সেটা শুধু মাত্র করছি কিছুটা বিনোদন পাওয়ার জন্য।
এখন কথা হলো যে, আমরা বিনোদন পাচ্ছি ঠিক আছে। কিন্তু, কখনো আমরা কি ভেবে দেখেছি , যে এই নাটক, গান অথবা সিনেমা থেকে আমরা কি শিক্ষা গ্রহণ করছি , অথবা ঈমানী চেতনা বৃদ্ধির কোন উপাদান সেই গান, নাটক, সিনেমা থেকে অর্জন করতে পারছি কি ? উত্তর হবে, "না" । বরং এগুলো দেখে দেশের মানুষ তথা, যুব সমাজ ঈমান বহির্ভূত, নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত চরিত্র বিধ্বংসী শিক্ষা লাভ করছে।
তাই তো গবেষনায় উঠে এসেছে যে, ঢাকা শহরের শতকরা ৫৭% স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী নীল ছবি দেখে অভ্যস্ত । যেটা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সম্পর্কে আমাদের জন্য হতাশার চিহ্ন এঁকে দেয়।
এখন আপনি, আমি অথবা আলেম সমাজ এগুলোকে হারাম হারাম ফতুয়া দিয়ে মানুষকে এসকল গান, নাটক, সিমেনা থেকে ফেরানো সম্ভব নয়। যতক্ষণ না আপনি ঐ টার বিপরীতে মানসম্মত ভালো গান, ভালো নাটক , ভালো মুভি মানুষের মাঝে উপস্থাপন করতে পারবেন।
যেটা দেখে মানুষ বিনোদনের খোরাক ও পাবে এবং নীতি নৈতিকতা সমৃদ্ধ চরিত্র গঠনের কিছু উপাদান ও সংগ্রহ করবে। তাহলে সুস্থ সাংস্কৃতি চর্চা এই কাজটি কে যারা ছোট মনে করেন, আমি মনে করি তাদের দূরদর্শিতার অনেক অভাব।
মুসলমানদের উত্থান যখন শুরু হতে লাগলো। কাফের, মুশরিকরা সন্ধান করতে লাগলো যে, তাদের কি এমন শক্তি যেটার কারনে তারা এতটা অগ্রসর হচ্ছে । তাদের অনুসন্ধান শুরু হলো এবং অনুসন্ধানের রিপোর্ট আসলো যে, তারা সারাদিন টগবগে ঘোড়ার পিঠে ময়াদানে শত্রু পক্ষের সাথে লড়াই করে, আর রাত্রি বেলা জায়নামাজে দাঁড়িয়ে ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান হয় ।
এবার তারা দেখলো কিভাবে মুসলিমদের দূর্বল করা যায়। তারা সিদ্ধান্ত নিলো, একমাত্র চারিত্রিক ভাবে তাদেরকে দূর্বল করা গেলেই তাদের উত্থান ঠেকানো যাবে। এরপর তারা সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করতে লাগলেন। এভাবে কয়েকবছর পর তারা দেখলেন একটা নির্জন স্থানে একজন মুসলিম যুবক কান্না করতেছে । তারা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, যে কান্নার কারন কি? উত্তরে তিনি বললেন, "তারা প্রেমিকা তাকে ছেড়ে চলে গেছে, যে কারনে তিনি কান্না করতেছে"। একথা শুনে তারা খুব খুশি হলেন! এরপর তারা অল্প সময়ের মধ্যেই মুসলিমদের উত্থান ঠেকাতে সামর্থ হলেন।
সেই থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মুসলিমদের চরিত্র ধ্বংসের সেই কৌশলগুলো আজও চলমান । আর যেটা বাস্তবায়িত হচ্ছে সাংস্কৃতির নামে অপ-সাংস্কৃতির প্রবল আগ্রাসনের মাধ্যমে। আর চলমান সময়ে সেই শ্রোতের সম্পূর্ণ বিপরীতে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যারা সুস্থ সাংস্কৃতি চর্চা করছে, আমরা অনেকেই তাদের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা তাদের কাজ কে ছোট করে মানুষের মাঝে উপস্থাপন করছি।
আর এর চেয়ে দুঃখ জনক বিষয় হলো, অনেক আলেম ও ইসলামী গান বা নাটক অর্থাৎ ইসলামী সাংস্কৃতি চর্চাকে তেমন তেমন গুরুত্ব দিয়ে উপস্থাপন করছেন না। তারা বলছেন, "এটা মুবা"। ঐচ্ছিক বিষয় ,এটাতে পাপ- পূণ্য কিছুই নাই।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের কথাটা ঠিক থাকলেও। ব্যাখ্যায় তারা এটার গুরুত্ব সাধারণ মানুষকে বুঝাতে পারতেন।
কেননা চরিত্র বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নামক অপ-সাংস্কৃতির বিরুদ্ধে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা মুসলিমদের জন্য শুধু দায়িত্বই নয়, বরং, এটা সময়ের অপরীহার্য দাবী।
এটা নিতান্তই আমরা ব্যাক্তিগত মতামত। আমার লেখা বা উপস্থাপনে ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করি।
আসুন আমরা যে যেভাবে পারি অপ-সাংস্কৃতির বিরুদ্ধে এবং সুস্থ সাংস্কৃতির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করি। গড়ে তুলি নৈতিকতা সমৃদ্ধ সচেতন সমাজ।
আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। এগিয়ে যাক প্রিয় সাংস্কৃতি।
collected
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:০৭