প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা, আমার এই পোস্টটি নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক। সম-সাময়িক রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক বিষয়াদির সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১শে ফেব্রুয়ারী” গানটা গাইতে গাইতে আমরা শহীদ মিনারে নগ্ন পায়ে শ্রদ্ধা জানাতে যাই। কিন্তু এটা তো ফেব্রুয়ারীর ২১ তারিখের চিত্র। বাকি দিন গুলোতে কী হয় এই পবিত্র বেদীতলে, তার খবর কী আমরা রাখি? সত্যি কথা বলতে কী, আমি নিজেই কী রাখি?!
ঐ বিশেষ একটি দিন ছাড়া সাধারণ জনতা কিংবা বুদ্ধিজীবী কেউ ই ঐ বস্তুর খোঁজ রাখেন না। তাই অবহেলায় পড়ে থাকে আমাদের এই জাতীয় গর্ব। আগামীকাল সকাল-বিকাল যেকোন সময় অমর একুশে শহীদ মিনারে গেলে আপনি যে চিত্রটি পাবেন তা হলো-
১. কয়েক ইঞ্চি পুরু হয়ে ধুলো পড়ে আছে, বোঝা যাবে গত এক মাসে কেউ এ জায়গাটি ঝাড়ু দেবার প্রয়োজন মনে করেনি
২. পুরো লাল সিঁড়িগুলো জুড়ে কাকের বিষ্ঠা ছড়ানো
৩. গোটা শহীদ মিনার এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা জুড়ে পড়ে আছে বাদামের খোসা, চিপ্সের প্যাকেট, কাগজের ঠোঙ্গা, হরেক রকম লিফলেটের ছেঁড়া অংশ, কলার খোসা, সিগারেটের ধ্বংসাবশেষ, বিস্কুটের প্যাকেট, ওয়ান-টাইম ইউজ কফি গ্লাস ইত্যাদি
৪. কয়েকজন মানুষ পাবেন (আপনার আমার মতোই) যারা জুতা পড়ে শহীদ মিনারের বেদীতে উঠে গেছে
৫. শহীদ মিনারের স্মৃতি স্তম্ভের পিছনে উলটো হয়ে ঘুরে বসে প্রেমিক-পেমিকারা আড্ডা মারছে
৬. কিছু উলংগ শিশু দোড়াদোড়ি করছে বা বেদীতে বসে ভাত খাচ্ছে
৭. পথশিশু আর ভিক্ষুকরা বিশ্রাম নিচ্ছে বা ঘুমাচ্ছে
৮. এবং একদল আগ্রহী বিদেশী-বিদেশিনী এসবের ছবি তুলছে
প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা, দোষ দেবার কোন অধিকার নেই আমাদের, কারন আমরাও ওদেরই দলে। হয়তো কোনদিন ওসব কাজ আমরাও করেছি বা করবো। ভুলে যাবো শহীদদের অমর আত্মত্যাগের কথা। কারন এসব কথা দিয়ে আর্টিকেল লিখতে বা বক্তব্য দিতেই ভালো লাগে। বাস্তবে তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তৈরী শহীদ মিনার আমাদের কাছে মূল্যহীন। ঐ একটি দিনে ফুল দিতে যাই আমরা ফ্যাশন করে বা রাজনৈতিক কারনে। আমরা একে অপমান আর অবহেলা করেই বেশী আনন্দ পাই।
১. আমরা কী পারিনা জুতাটা খুলে হাতে নিয়ে শহীদ বেদীতে হাটঁতে?
২. আমরা কী পারিনা আমাদের নিত্যব্যবহার্য জিনিস পত্র শহীদ মিনারে না ফেলে অন্য কোথাও ফেলতে? অন্ততঃ এই শহীদ মিনারকে সামান্য সম্মান করি
৩. বন্ধুদের আর ছোটদের শহীদ মিনারকে সম্মান করার কথা বলতে পারিনা?
আমরা সবই পারি কারন আমরা বিজয় পাগল জাতি, কিন্তু বিজয়ী হয়ে জতের মহিমা আমরা কেন ভুলে যাই?
আজ বাংলা নিয়ে আমরা গর্ব করি, বাংলায় ইন্টারনেটে লেখালিখি করি, বাংলা সফটয়্যার ডেভেলপ করি, অথচ যদি শহীদ মিনারকে ভুলে যাই, তবে কী বাংলাকে সত্যিকারের ভালোবাসা হলো??
আসুন বাংলাকে ভালোবাসি।
শুধু মুখে নয়, আমাদের প্রতিটি কাজে থাকুক বাংলার প্রতি ভালোবাসা ...
তবে কী শুধু ২১ শে ফেব্রুয়ারীতেই শহীদ মিনারকে শ্রদ্ধা করতে হয়? প্রিয় ব্লগার আপনিও তাই করেন !!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !
"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমিত্ব বিসর্জন
আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।
"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?
স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন