আমার কথা বলা তখনও শেষ হয়নি অমনি শেফালীম্যাডাম বেশ ধমকের সুরে মাকে বলে উঠলেন ,
-আহ! মা,তোমার কি এখনই এসব আলোচনা করার সময়?
-না না ম্যাডাম! আপনি মিছে রাগ করছেন। উনি সাধারণ কৌতূহল থেকেই প্রশ্নটা করেছেন।
হঠাৎ থমথমে পরিবেশকে স্বাভাবিক করতে আমি আবার প্রশ্ন করলাম ,
- মাসীমা ,মেশোমশাই এখন কেমন আছেন?
-কিছু জানি না বাবা । ইনটেনসিভ কেয়ারে আছেন । আগামী 48 ঘন্টার না গেলে কিছু বলা যাবে না।
এবার পাশ থেকে কাকু বলে উঠলেন,
-বৌদি মাম ও ওর বন্ধু যখন চলে এসেছে তাহলে বরং আমি এখন আসি?
-হ্যা,ঠাকুরপো! তোমাকে আর আটকাবো না । তুমি না থাকলে আজ ওর বাবাকে এখানে জীবিত অবস্থায় নিয়ে আসতে পারতাম কিনা সন্দেহ। মাম চলে এসেছে যখন তখন আর চিন্তা নেই । তোমাকে আর আটকাবো না।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
-কাকু এখন কোথায় যাবেন?
মাসিমা উত্তর দিলেন ,
-কাকুর বোনের বাড়ি বাঘাযতীনের পাটুলিতে । তোমরা না এলে অবশ্য কাকু এখানে থাকতেন। তোমরা আসাতে কাকুকে আর কষ্ট দেব না এত রাতে ।
আমিও মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়ে বললাম,
-হ্যাঁ, কাকু! আপনি তাহলে আর দেরি করবেন না । এমনিতেই এখন অনেক রাত হয়ে গেছে।
পাশ থেকে শেফালীম্যাডাম বললেন,
- হ্যাঁ কাকু ! তুমি আর দেরি করো না । যদি পারো কাল সকালে একবার এসো ,প্লীজ।
- আচ্ছা! ঠিক আছে মা। সময় পেলে কাল অবশ্যই আসবো । তবে আমার বোনটার শরীরও ভালো নেই । আজি খবর পেলাম আমি । কিন্তু তোমার বাবাকে নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম যে খোঁজ নিতে পারিনি । এখন গিয়ে দেখি কি অবস্থায় আছে।
রাত ক্রমশ বাড়ছে। মেল ওয়াডের সামনে ফাঁকা গ্রাউন্ডে রোগীর পরিজনদের অনেকে যে যার মত শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রায় সকলেই শোয়ার তোড়জোড় শুরু করলো । মাসিমা ব্যাগ থেকে একটি বেড- কভার বার করলেন। আমি ওটাকে বড় করে জায়গা করে দিতেই উনি সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়লেন। মাথায় দিলেন ওনার সঙ্গের ব্যাগটি । শেফালী ম্যাডাম পরম যত্নে মায়ের শাড়ি গুঁজে দিতে লাগলেন। আমরা দুজনে নীরবে বসে থাকলাম। খিদে নামক শব্দটা যে করে হোক আজ আর কোন অবস্থায় মনে উঁকি মারলো না। এক সময় ম্যাডাম বললেন,
-আপনি শুয়ে পড়ুন । আমাদের জন্য আপনাকে এমন অবস্থায় টেনে আনার জন্য আমি সত্যিই খুব দুঃখিত, লজ্জিতও।
-না না ! এসব কি কথা বলছেন আপনি । আপনি বরং শুয়ে পড়ুন। কাল সকালে অনেক কাজ আছে।
কিছুটা শ্লেষের সুরে,
-আমার আবার ঘুম, ঘুম আমার আর আসবে না।
-তাহলে বরং চোখে মুখে একটু জল দিয়ে আসুন না, ঠিক চলে আসবে দেখবেন।
-হ্যাঁ, সেটাই তাহলে করি।
সঙ্গে সঙ্গে উনি ওয়াশ রুমের দিকে চলে গেলেন । খানিক বাদে ফিরে এসে,
-আপনিও একটু ফ্রেশ হয়ে আসুন।
-ঠিক বলেছেন। তাহলে যাই বরং চোখেমুখে একটু জল দিয়ে আসি।
আমি বাধ্য ছেলের মত উঠে গেলাম ওয়াশরুমে দিকে। সত্যিই দীর্ঘ জার্নির পরে চোখেমুখে জল দিয়ে আলাদা একটা স্বস্তি অনুভব করলাম। ফিরে এসে দেখলাম মায়ের পাশে ব্যাগ মাথায় দিয়ে ম্যাডামও শুয়ে পড়েছেন। আমিও যথারীতি ওনাদের উল্টোদিকে খবরের কাগজ বিছিয়ে আমার ব্যাগটি মাথায় দিয়ে শুয়ে পড়লাম এবং খানিক বাদে ঘুমিয়েও গেলাম।
রাত তখন দুটো-আড়াইটা হবে, বেশ ঠান্ডায় ঘুম ভেঙে গেল। দেখলাম মা -মেয়ে গভীর নিদ্রায় মগ্ন । ম্যাডামের চুড়িদারটি অনেকটা উপরে উঠে গেছে। ঠান্ডায় গুটিসুটি মেরে আছেন ঠিকই তবুও ওনার শরীরের অনাবৃত অংশ বড্ড দুশ্চিন্তায় ফেলে দিল আমাকে। আশপাশে কেউ জেগে আছে কিনা একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। মনে মনে ভাবলাম এই অবস্থায় আমার করণীয় কি, মাথা নিচু করে বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকলাম।
মনে মনে শক্তি সঞ্চয় করে নিলাম । যদি খুব সাবধানে চুড়িদারটি নিচে নামিয়ে দেই... যেমন ভাবনা তেমনি কাজ । হাত প্রসারিত করলামও, কিন্তু বিবেক যেন সায় দিল না। পরক্ষণেই মনে হল মুখে ডাকি। কিন্তু কেন যেন মনে হল , কি জন্যই বা ডাকবো ওনাকে। তেমন সন্তোষজনক প্রশ্ন অবশ্য নেই আমার কাছে । হঠাৎ মাথায় একটা আইডিয়া চলে এলো, হিন্দি ফিল্মের নায়কদের মত নিজের শার্টটি খুলে ওনার অনাবৃত অংশে ঢেকে দেওয়ার কথা ভেবেও পরক্ষণেই এটাকে ঠিক শালীন বলে মনে না হওয়াতে আবার পিছিয়ে এলাম । হঠাৎ ব্যাগ থেকে একটি পুরানো খবরের কাগজ বার করে ওনার গায়ের উপর চাপিয়ে দিতেই, তড়াক করে উনি উঠে বসলেন । সঙ্গে সঙ্গে জামাটা টেনে নিলেন।
-আপনি ঘুমাননি?
-হ্যাঁ ঘুমিয়ে ছিলাম, তবে একটু আগে ঘুম ভেঙে গেছে । দুঃখিত ম্যডাম আপনাকে এভাবে ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য।
-আপনি দুঃখিত হবেন কেন বরং আমি দুঃখিত ! নিন আবার শুয়ে পড়ুন।
আমি আবার শুয়ে পড়তেই, ম্যাডামও শুয়ে পড়লেন । মাসীমা অবশ্য একভাবে ঘুমিয়ে আছেন । কিছুক্ষনের মধ্যে দেখি চোখ বুজে আসছে কিন্তু ম্যাডাম জেগে থাকায় আপ্রাণ চেষ্টা করলাম না ঘুমোতে। কিন্তু তবুও পারলাম না , নিজেকে বশ করতে। কখন যে ঘুমিয়ে গেছিলাম তার কোন খেয়াল ছিল না। সকালে লোকজনের কোলাহলে যখন ঘুম ভেঙে গেল তখন দেখলাম বেশ বেলা উঠে গেছে । আমার ওঠার আগে অবশ্য ওনারা দুজন জেগে গেছিলেন । মাসিমা আমাকে বললেন,
-যাও বাবা ; তাড়াতাড়ি হাতমুখ ধুয়ে এসো। রাতের বেলা কিছুই খাওয়া হয় নি, বেশ খিদে পেয়ে গেছে।
-হ্যাঁ, মাসীমা আমি এক্ষুনি আসছি । আপনারা তৈরি হন । কিছু একটা খাওয়া দরকার।
আমি হাত মুখ ধুয়ে ফিরে গিয়ে দেখলাম মা -মেয়ে বেড কভার গুছিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। এবার আমরা তিনজন ক্যান্টিনের দিকে এগোলাম। তবে এত সকালে ক্যান্টিনে খাবার এখনো তৈরি হয়নি। আপাতত একটু চা- যোগ করে আমরা মেইন গেটের বাইরে খাবারের সন্ধানে বার হলাম। এখানে অবশ্য বেশ কয়েকটি দোকান পাশাপাশি দেখলাম। স্বাস্থ্যকর কতটা হবে সেটা না ভেবেই সকালবেলা গরম গরম কচুরি ও আলুর কারি যোগে টিফিন করে মনে শান্তি পেলাম। মধ্যপ্রদেশও যেন এক নিদারুণ কষ্ট থেকে বাঁচল ।
সেদিন সকাল এগারোটার ভিজিটিং আওয়ার্সে ডক্টর জানালেন,
-পেশেন্ট আপাতত বিপদমুক্ত । তবে আজ গোটাদিনটা আমরা পর্যবেক্ষণে রাখব। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল ওনাকে জেনারেল বেডে টান্সফার করার পরিকল্পনা আছে।
মেসোমশাই-এর স্বাস্থ্যের উন্নতির খবরে আমরা খুবই খুশি হলাম । আইসিইউতে একজনের বেশি প্রেসেন্ট পার্টির প্রবেশাধিকার নেই। নিরবতা বজায় রাখাই এই কক্ষে কাম্য।কাজেই মা -মেয়ে বাবার সঙ্গে সাক্ষাতের পরে ম্যাডাম শেষে আমাকে নিয়ে চললেন বাবাকে দেখানোর জন্য। দরজার মুখে দাঁড়িয়ে উনি দেখিয়ে দেওয়াই আমি কার্ড নিয়ে প্রবেশ করলাম। একেবারে মেসোমশাই-এর বেডের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। শরীরে চার- পাঁচটি নল ফিট করা। সারাক্ষণই চোখ বন্ধ করেছিলেন। আমি স্ট্যাচু হয়ে বেশ কিছুক্ষণ ওনার দিকে দৃষ্টি রাখলাম। আইসিইউ থেকে বাইরে বেরিয়ে দেখি কাকু ততক্ষণে চলে এসেছেন। কাকুকে উদ্দেশ্য করে ,
-পিসিমণি কেমন আছেন?
-আছে! তবে শরীর প্রচণ্ড দুর্বল। ওতো অনেক দিন থেকে ভুগছে।
আমি আবারো বলি,
-ম্যাডাম! কাকু যখন চলে এসেছেন তাহলে বরং আমি এখন আসি?
-বাবা! তুমি আমাদের ফেলে চলে যাবে? মাসিমা বললেন।
-না মাসিমা, আপনি এভাবে বললে আমি যেতে পারব না । আসলে দেখলাম মেসোমশায়ের অবস্থার উন্নতি হয়েছে আর কাকুও চলে এসেছেন, তাই আমি বলছিলাম।
-হ্যাঁ মা, ওনাকে স্কুলে যেতে হবে। আর বাবা তো প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিয়েছেন। বাকিটা আমরা সামলে নেব।
বাস্তবে দুজনের দু রকম কথা বলার প্রকৃতি দেখে আমি সাময়িক বেকায়দায় পড়লাম। হঠাৎ কাকু বলে উঠলেন,
-বাবু! তোমার যদি কোন সমস্যা না হয় তাহলে আজ রাতটা একটু থেকে যাও না । আমার আজ একটু সমস্যা আছে । আজ রাতে তুমি একটু সময় দিতে পারলে কাল থেকে আমি আবার এদেরকে সময় দিতে পারবো।
-ঠিক আছে, কাকু। আমি থেকে যাচ্ছি । তবে প্রথমে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না যে আমার এখানে কি করণীয় । এখন যদিও বিষয়টি পরিষ্কার । আপনি আর ভাববেন না। আপনি পিসীমার ওখানে সময় দিন । আমি এদিকটা সামলে নেব।
আমার কথা তখনও শেষ হয়নি শেফালীম্যাডামের মুখের ছবির কোন পরিবর্তন আমার চোখে ধরা না পড়লেও মাসিমার মুখের চওড়া হাসিটা আমাকে প্রচন্ড আরাম দিল । জীবনে কাউকে কোন বড় উপকার করেছি বলে মনে করতে পারছিনা ,তবে এক্ষণে অসহায় মা -মেয়েকে একটু সময় দেওয়ার প্রতিদানে মানুষের শারীরের ভাষা যে কতটা আমোদিত হতে পারে সেটা নিজের চোখে না দেখলে শুধু মুখের কথাতে বিশ্বাস করতে পারতাম না।
দুপুরে স্থানীয় একটি হোটেলে সবাই নিরামিষ খাবার খেলাম। রাতে এই হোটেলেই তরকা-রুটি অর্ডার করলাম । সে রাতে কাকু চলে যেতে আমরা গত রাতের মত বিছানা করে শুয়ে পড়ি। তবে গতরাতের সঙ্গে পার্থক্য হলো প্রায় 15 /16 ঘন্টা এক বস্ত্র গায়ে রেখে নিজের প্রচণ্ড অস্বস্তি হতে লাগল। মনে মনে ঠিক করলাম পরের দিন সকালে বাড়ি গিয়ে ড্রেস বদল করে আসবো। সকালে উঠে এসে কথা বলতে মা মেয়ে দুজনেই সম্মতি দিলেন। মাসীমা আরো বললেন,
-আমি বরং এখানে থেকে যাই। তোমরা দুজনেই বাড়িতে গিয়ে পোশাক-পরিচ্ছদ বদল করে এসো। মাম, আমার জন্য কয়েকটা শাড়ি নিয়ে আনিস তো মা।
সেদিন সকালে হসপিটালের মুখ থেকে ম্যাডামকে হাওড়া গামি বাসে তুলে দিয়ে দেখলাম, চলন্ত বাস থেকে উনি ক্রমাগত পিছনের দিকে হাত নাড়ছেন । প্রথমটা আমি ঠিক বুঝতে পারিনি। কাজেই আমিও প্রতিউত্তরে বিদায় জানাতে, হাত -নাড়তে থাকলাম । কিছুটা দূরে গিয়ে দেখলাম বাসটা থেমে গেছে। বাস থেকে নেমে উনি আবার আমার দিকে এগিয়ে আসছেন। ভাবলাম কিছু ভুলে গেছেন বা ফেলে গেছেন কিনা । একেবারে সামনাসামনি আসতেই,
-কি ব্যাপার, আপনি কি কিছু ফেলে গেছেন?
-হ্যাঁ ফেলে গেছি; সেটাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
-কি ভুলে গেছেন ম্যাডাম?
-আপনাকে।
বাস্তবে আমি যেন আমার কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । হঠাৎ করে সারা গায়ে অদ্ভুত শিহরণ তৈরি হলো । প্রতুত্তরে কি বলবো , ঠিক মুখে আসছে না । গলা শুকিয়ে আসছে । অন্তরের এতগুলো পরিবর্তনকে সামলিয়ে আবেগের কোন বহিঃপ্রকাশ না দেখিয়ে খুব শান্তভাবে বললাম,
-ও আমার জন্য! আপনি খামোকা কেন বাসটা ছাড়তে গেলেন? এখন দুজনেই দ্রুত বাড়িতে যাওয়ার দরকার । প্রয়োজনীয় কাজ সামলে যত দ্রুত সম্ভব আমাদের এখানে আসাই কাম্য।
এমন সময় ধর্মতলা গামী একটি মিনি সামনে এসে দাঁড়াতেই, আমরা তার সওয়ারী হলাম । বাসে আসতে আসতে ভাবলাম দুদিন হসপিটালে এক সঙ্গে কাটালাম। কি অসম্ভব দৃঢ়তা; ব্যক্তিত্বে ও আচার-আচরণে। কথাবার্তায় যথেষ্ট সংযমের পরিচয় দিয়েছেন যে মানুষটি কিন্তু চলে আসার সময় সেই মানুষটি যেন আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না। হয়তো ওনার অন্তরাত্মা ইতিমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে যার সামান্য বহিঃপ্রকাশ একটু আগে ঘটেছে মাত্র। বাসে পাশাপাশি বসার সৌভাগ্য আমাদের হয়নি । কাজেই তেমন কথা বলার সুযোগ আর আমাদের হলো না । ধর্মতলাতে নেমে স্ট্যান্ড রোডের দিকে কিছুটা হাঁটা লাগালাম । এবার উনি মুখ খুললেন,
-আসলে আপনি গত পরশুদিন থেকে আমাদের সঙ্গে রয়ে গেছেন । অথচ আপনাকে এভাবে ছেড়ে আগেভাগে বাসে উঠে যাওয়াতে প্রচন্ড খারাপ লাগছিল, যে কারণে নেমে গেছিলাম। এই দুই দিন আপনি ও কাকু পাশে থাকাতে যে কি অসম্ভব বল পেয়েছি সে কথা মুখে বলে বোঝাতে পারবো না। কিন্তু এবার আমাদের যে যার পথে ফিরে যেতে হবে ভেবে খুব বিষন্ন লাগছে ।একদিকে বাড়িতে অসুস্থ দিদি অপরদিকে হসপিটালে বাবা মা , আমার কোথাও যে একটু সময় কাটানোর সুযোগ নেই।
-হ্যাঁ ,একদম ঠিক বলেছেন ম্যাডাম। সামনে অনেকগুলো কাজ আমাদের হাতে আর একদম সময় নেই বলে হাত বাড়াতেই ম্যাডামও যেন তৈরি ছিলেন। হ্যান্ডশেক করে দাড়াতেই ,
-একটা কথা বলার ছিল।
-বেশতো! নিঃসংকোচে বলে ফেলুন।
-প্রথম দিন এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
-কোন পরিস্থিতি? আমার তো কিছু মনে নেই।
-আসলে অনির্বাণ মুখার্জির নামে আমার এক সময় এক ঘনিষ্ঠ সহপাঠী ছিল । মা তার কথাই ওখানে মিন করতে চেয়েছেন। পরে সময়মত আপনাকে বলব সে কথা ।
-ওটা আপনার পার্সোনাল ব্যাপার, ম্যাডাম।
এমন সময় আবার একটি হাওড়া গামী বাস এসে দাঁড়াতেই উনি উঠে পড়লেন। বাসের পিছন পিছনে আমিও দু -এক পা করে এগিয়ে হাত নেড়ে বিদায় জানাতে লাগলাম। এরপর আমিও সোজা মেট্রো ধরে দমদমে চলে এলাম। পরে দমদম থেকে লোকাল ট্রেনে এক্কেবারে বাড়ি। কিন্তু বাড়িতে এসে আর এক বিপত্তি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:- ১,আজকের এই পর্বটি শ্রদ্ধেয় ব্লগার করুণাধারা আপুকে উৎসর্গ করলাম।
২, শেফালী ম্যাডামের সঙ্গে এই বিশেষ পর্বটি আজ এখানে শেষ হল। মরীচিকার পরবর্তী পর্ব ' কুহেলিকা' শীঘ্রই পোস্ট হবে । পাঠক বন্ধুদেরকে সঙ্গে থাকার জন্য একান্ত অনুরোধ রইলো।