লেজ খসে পড়া বাচ্চা টিকটিকিটা স্বচ্ছন্দে দেয়ালে পায়চারি করছে। তার শরীরের একটা অংশ নাই হয়ে গেছে অথচ এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সে ভিন্ন গোত্রের পোকামাকড় শিকার করে অনায়াসে দিন যাপন করে যাচ্ছে। সে এ দেয়াল থেকে ও দেয়ালে যায়। এমনকি এই রুম থেকে ঐ রুমে।
বাচ্চা টিকটিকির মা তার পিছুপিছু লেগেই আছে। ভয়, কখন না দেয়াল পিছলে পড়ে যায় সমান্তরাল মেঝেতে। মানুষের পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে হঠাৎ থেমে যায় জীবনের গতিপথ।
শেফালী বেগম টিকটিকির সাথে খেলার ছলে তার একমাত্র পুত্রের মুখে তোলে দেন রাতের খাবার। দুপুরের খাবার। টিকটিকির খেলা দেখে শিশুপুত্র খিলখিল করে হাসে। মুখে গুঁজা খাবার টপটপ করে গিলে তখন। তার মা তাকে কোলে নিয়ে টিকটিকির নাচন দেখান। কোলে নিয়ে জানালা খুলে রাতের চাঁদ দেখান। বলেন, আয় আয় চাঁদ মামা, টিপ দিয়ে যা....
টিকটিকি ক্ষণে হাটে, ক্ষণে দৌঁড়ায়। তিড়বিড়িয়ে তাকায় এদিক সেদিক। শেফালীর বুকের ভেতরটা হঠাৎ মোচড় দিয়ে ওঠে। পৃথিবীটা যেন অসাড় লাগে তার। ডাক্তারের রাশভারী কন্ঠস্বর ক্ষণেক্ষণে তার কানে ভেসে উঠে।
-দুঃখিত ম্যাডাম, আপনার বাচ্চার হাটার সম্ভাবনা আর একেবারেই নেই !