নীরা ঘুমাচ্ছে। গভীর ঘুম। ঘনঘন নাক ডাকছে তার। এই নাক ডাকা স্বভাবটা বিয়ের ঠিক তিন বছরের মাথায় শুরু হয়েছে। আর ক'দিন চলবে কে জানে।
চারদিকে নিস্তব্ধতা। রুমে জ্বলছে মিটিমিটি নীলাভ ডিমলাইট। তার মুক্তর নাকফুল থেকে যেন দৈবিক একগুচ্ছ আলো ঘরময় ছড়িয়ে পড়ছে। আজকেই কাজটা শেষ করে ফেলবো কিনা ভাবছি। এমন সুযোগ বারবার আসে না। নীরা সাধারণত আমার আগে কখনোই ঘুমায় না। আজ হয়তো এটাই তার শেষ ঘুম। জীবনের শেষ দিন। এবার রক্ষা নেই নীরা। এবার তোমার রক্ষা নেই !
গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে আমার। এমন না যে কাজটা আমার জন্য সহজ হবে। কঠিন। ইস্পাতসম কঠিন। একগ্লাস পানি খাবো কিনা ভাবছি। অন্যদিন হলে পানির জন্য নীরাকে জাগিয়ে তুলতাম। আজ নয়। আমার শতকষ্টের নেপথ্যে, আমার জীবন দুর্বিষহ করার নেপথ্যে, আমার স্বপ্ন চুরমার করার নেপথ্যে এই কালসাপটই যে দায়ী। সো.....
আমার নাড়ানাড়িতে ঘুম ভেঙ্গে যায় নীরা'র। চোখে এক প্রস্ত ঘুম নিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে। কন্ঠে জড়তা নিয়ে বলে-তোমাকে নিয়ে একটা দুঃস্বপ্ন দেখলাম জামিল। তুমি ঠিক আছো তো ? স্বপ্নে দেখি পাঁচ ছয়জন লোক তোমার গলা চেপে ধরেছে। তুমি আপ্রাণ বাঁচার জন্য চেষ্টা করছো। কিন্তু পারছো না । তোমাকে নিয়ে খুব টেনশন হয় জামিল। আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেনা তো তুমি। বলো, বলো, কোত্থাও যাবেনা !
আমি হাতদুটি দিয়ে ওর গলাটা চেপে ধরি। নীরা গুঙানি দিয়ে ওঠে। কিছু একটা বলার চেষ্টা করে। আমি আরো জোরে চেপে ধরি, আরো জোরে....
এই পর্যন্ত পড়ে গল্পবইটা রেখে দেয় রায়হান। ধুর.. কী সব ছাইপাঁশ লিখে লেখকরা । যত্তসব উদ্ভট গল্প, মনে মনে বলে সে !
ছবি- গুগল