নিজের জন্মের দুই যুগ পরে প্রসুতিসদনে গিয়ে দেখি
এক প্রবীন দর্জির কারখানা।জন্মকেন্দ্রের ইতিহাস নির্মাতা
মায়াদৃস্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন সুর্যের মাতৃগর্ভে আর
সেখানে বৃত্তাকার এক দোলনায় দোল খাচ্ছে আমার
আতুরঘর।এই দর্জিকে আমি শৈশবে দেখেছি
লালা ঝরবার কাপুড়ে ঝুড়ি বানাতে,আজ উল্কা
ঝড়ের এই রক্তবর্ণ রাতে,যখন চাঁদ ও সুর্য
একই প্রান্তরে গড়াতে গড়াতে একে অপরকে
করছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,আমারই জন্মের
দুই যুগ পুর্তিতে প্রসুতিসদনে জন্মচিন্হ খুজতে এসে
দেখি,সবুজ এপ্রনে ঢাকা সেবিকারা ঝোপের
ভেতর দাড়িয়ে গাছ সেজে দুলছে,তাদের মধ্যে
কেউ সেজেছে বকুল,কেউ সন্ধ্যা মালতি
আবার কেউ আমলকি,আর জন্মকেন্দ্রে বসে
একজন প্রবীন দর্জি সেলাই করছেন শবদেহের
পরিধেয় জীবাশ্ম দিয়ে তৈরী মৃত্যুর ইউনিফর্ম।
২মহামায়া
এখনো শরতে আমি তোমার চাইতে প্রিয় কোনো
মুখ দেখি না তো-মন্ডপের ভিড় ঠেলে
সপ্তমী সন্ধ্যায় ওহে ভুবনেশ্বরী আজো খুঁজে যাই
বেগুনী রঙের মায়া-সম্মোহনী পূজোর পোষাক,
যে পথে গিয়েছ তুমি সেই পথ ছুঁতে গিয়ে
অবাক মেঘলা গিরিখাতে দেখো ভাসমান
এই আমি;নিঃসন্গতা আমাকে টানে না-
দেখি সফলতাকামী মানুষেরা অপরিচিতের
মত যাদুপথে যেতে গিয়ে শারীরিক হতে
ভালবাসে,আমাকে দেখলে তারা দু'একটি
বাদাম খেতে দেয় -
এবার পূজোয় তাই তোমার দেবীর মুখোমুখি
হয়ে বলে দেব সাফকথা,যে যাই বলুক
ওগো মহামায়া শোনো,উচ্চাশার চেয়ে
আদিগন্ত ভালবাসা নিয়ে যেন বিসর্জিত না হই-
(এই কবিতাগুলো "কালস্রোত"নামক পত্রিকায় অতিসম্প্রতি প্রকাশিত)