যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং ও তার স্ত্রী হো চিং। রাষ্ট্রীয় সফরের অংশ হিসেবে হোয়াইট হাউজেও যান তারা। আর সেখানেই সবার মনোযোগ কেড়ে নেন হো চিং। সুনির্দিষ্টভাবে বললে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তার হাত ব্যাগটি। নীল রঙের ডেনিম কাপড়ে তৈরি ওই ব্যাগের ওপর ছাপা ছিল ছোট ছোট বেশ কয়েকটি ডাইনোসরের প্রতিমূর্তি। ব্যাগটি দেখতে খুব আহামরি
কিছু নয়। আর প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর হাতে রয়েছে, সেই হিসেবে এর দামও অস্বাভাবিকভাবে কম; মাত্র ১১ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৮৮০ টাকা। তাহলে এই হাত ব্যাগ কী করে সবার মনোযোগ কেড়ে নিলো? কেনই বা এই হাত ব্যাগকে নিয়ে সবার মুগ্ধতা। এর উত্তর মিলেছে হো চিংয়ের কাছ থেকেই। সিঙ্গাপুরের অটিজম-কেন্দ্রিক প্রথম স্কুল পাথলাইটের এক শিক্ষার্থী ডিজাইন করেছে এই ব্যাগ। অনুদান সংগ্রহের একটি অনুষ্ঠানে এই ব্যাগটি কিনেছিলেন হো চিং। আর সেটাকেই তিনি সঙ্গী করেছেন হোয়াইট হাউজের আমন্ত্রণেও। এটা জানার পরই আসলে ওই ব্যাগ নিয়ে শুরু হয় মাতামাতি। পাথলাইট ওই ব্যাগ অনলাইনে বিক্রি করে থাকে। হো চিংয়ের হাতে এই ব্যাগ রয়েছে, এটা জানার পর হু হু করে বেড়ে যায় ওই ব্যাগের বিক্রি। শেষ পর্যন্ত অনলাইনে বিক্রির জন্য এর স্টকই শেষ হয়ে যায়। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, সিয়েন লুং ও হো চিংকে যখন হোয়াইট হাউজে স্বাগত জানাচ্ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা তখনই হো চিংয়ের হাতে দেখা যায় ব্যাগটি। সাধারণ দেখতে হাত ব্যাগটি শুরুতে খানিকটা প্রশ্নেরও জন্ম দেয় অনেকের মনে। একজন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর পক্ষে এমন সাধারণ ব্যাগ বহনের সমালোচনাও করেন অনেকে। কিন্তু পরে জানা যায়, পাথলাইট অটিজম স্কুলের ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থী সিতোহ শেং জিয়ে ডিজাইন করেছে এই ব্যাগ। এর দামও মাত্র ১১ ডলার। ওই অটিজম স্কুলের শিক্ষার্থীদের মেধার কথা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য এটি অনলাইনে বিক্রি করা হয়ে থাকে। সেটিকেই হোয়াইট হাউজে সফরসঙ্গী করেছেন হো চিং। তার এমন সারল্যই মুগ্ধ করেছে সবাইকে। পাথলাইট স্কুলের অধ্যক্ষ লিন্ডা খো বলেন, তারা জানতেনই না যে ওই ব্যাগ হোয়াইট হাউজে পৌঁছে গেছে হো চিংয়ের হাত ধরে। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিভূত ও সম্মানিত যে তিনি এই ব্যাগকে রাষ্ট্রীয় সফরে বয়ে নিয়েছেন। আমাদের শিক্ষার্থী-শিল্পী কর্মসূচির শিল্পীদের জন্য এটি বড় একটি অনুপ্রেরণা। তিনি আমাদের সবার কাছে মাটির মানুষ হিসেবেই পরিচিত। এই ব্যাগকে হোয়াইট হাউজে নিয়ে তিনি প্রমাণ করলেন, তিনি কেবল মাটির মানুষই নন, তিনি আত্মবিশ্বাসী এবং খাঁটি একজন মানুষও বটে।’ ব্যাগটির ডিজাইনার শেং জিয়ের কাছেও পৌঁছে গেছে এই খবর। তাতে সে খুব খুশি বলে জানিয়েছেন তার বাবা। প্রসঙ্গত, পাথলাইট স্কুল প্রতিষ্ঠায় সহায়তা দিয়েছিল অটিজম রিসোর্স সেন্টার (এআরসি)। এই সংস্থাটির একজন উপদেষ্টা হো চিং।
0
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩০