এই বোকামো কি আমাকে সর্বনাশ করেছে?
আমার আত্মীয় স্বজনরা তাই মনে করে। তারা বলেন, আমার মতো শিক্ষিত মেয়ে এমন কাজ কি করে করলাম।
হ্যাঁ বোকামো তো ছিলই; তার চেয়ে বেশি ছিল কয়েকজন পুরুষের প্রতারণা।
একটি পত্রিকা অফিসে নিজের লেখা কবিতা জমা দিতে গিয়েছিলাম। সেখানেই পরিচিত হয় একজন প্রকাশকের সাথে। সে আমার বই প্রকাশ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। মোবাইলে যোগাযোগ। তার মাধ্যমেই তার এক বন্ধুর সাথে মোবাইলে কথা বলি। জমিদার পরিবারের ছেলে, কবিতা লেখে, সবেমাত্র উচ্চ শিক্ষা শেষ করে একটি পত্রিকা অফিসে কাজ করে। প্রকাশক আমাকে ফুসলাতে থাকে তার বন্ধুকে ভালোবাসার জন্য। মোবাইলেই সে আমাকে ভালোবাসায় ভাসায়। আমি বিশ্বাস রেখেছিলাম। সে আমাকে বিভ্রান্ত করে, বাসর ঘরে দুজন দুজনকে প্রথম দেখার প্রস্তাব রাখে। আমি বিভ্রান্ত হই। মাত্র এক মাসের সম্পর্ক। প্রকাশকই ঢাকার পাশ্ববর্তী একটি জেলায় তার বোনের বাড়িতে বিয়ের ব্যবস্থা করেন। বাসর ঘরে আমি চমকে উঠেছিলাম, ওর কুৎসিত চেহারা দেখে। মেনে নিয়েছিলাম, চেহারাই সব নয়, হয়তো একটি ভালো মনের ছেলে হবে।
বিয়ের খরচের টাকাও ওর ছিল না। আমি দিলাম। পোষাক ছিল নিম্নমানের ও নোংরা। ও দাবী করেছিল, ও দরিদ্র এটা ঠিক তবে ভালোবাসা খাঁটি। আমি বাড়িতে বিয়ের কথা জানালে তারা আকাশ থেকে পড়ে। তবে মেনে নেয়। ও আমাদের বাড়িতেই ওঠে। আমার ঘরে যে বুকসেলফ ছিল সেখানে হুমায়ুন আজাদের বই দেখে খেপে উঠে। তাকে নাস্তিক, মুরদাত গালি দেয়। তাসলিমা নাসরিনের একটি বই ছুড়ে ফেলে দেয়। আমি হতভম্ব হই। সে আমাকে কারো সাথে কথা বলতে দিতে চায় না।
আমি বুঝে যাই ও শুধু প্রতারকই নয়, একজন উগ্র মৌলবাদী। তার দারিদ্রতাকে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু উগ্রতাকে তো মেনে নিতে পারি না। তাই আমাদের মাস খানেকের সংসার কিংবা দাম্পত্য ভেঙ্গে দিতে বাধ্য হই। ওকে ভুলে যেতে চাই। আমার জীবন থেকে ওকে মুছে ফেলেছি। এটা আমাকে বিধ্বস্ত করতে পারেনি। তবে অন্যদেরও জানানো দরকার মোবাইলে যার সাথে কথা বলছেন সেই পুরুষটি প্রতারকও হতে পারে। তার একটি কথাও বিশ্বাস করতে হলে যাচাই করে নিন।
আর আমি শুধু কবিতার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি.... ..... কবিতাই দায়ী অনেক খানি। সর্বোপরি বোকা মেয়েতো আমি নিজেই।