ঘটনা ১ : খ্রিস্টান এক ছেলে তার ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে মিথ্যা পরিচয়ে সম্পর্ক করে মুসলিম এক মেয়ের সাথে।
ঘটনা ২ : মুসলিম এক ছেলে তার ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে মিথ্যা পরিচয়ে সম্পর্ক করে সনাতন ধর্মাবলম্বী এক মেয়ের সাথে।
ঘটনা ৩ : হিন্দু এক ছেলে তার ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে মিথ্যা পরিচয়ে সম্পর্ক করে মুসলিম এক মেয়ের সাথে।
ঘটনা ৪ : ছেলেমেয়ের সম্পর্কের দেড় বছর পর ছেলেটা মেয়ের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেয়। এরপর যোগাযোগ বন্ধ। মেয়ের কাছ থেকে বিস্তারিত শোনার পর জানা যায়, ছেলের নাম ছাড়া (হতে পারে সেগুলোও ছদ্মনাম) আর কোন তথ্যই মেয়েটা জানে না। কিন্তু দেড় বছরে মফস্বলের ছেলেটা ঢাকায় এসে অনেকবারই দেখা করেছে, শুধু টাকা নয়, আরো অনেককিছুই নিয়ে গেছে।
ঘটনা ৫ : ছেলেমেয়ের সম্পর্ক। একে অপরের বিশ্বস্ত। প্রায়ই একে অপরকে নিজেদের ব্যক্তিগত ছবি আদান-প্রদান করে। তৃতীয়পক্ষ হ্যাক করলো ছেলের আইডি। দুজনের সব ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু দুজনকে। দাবি, ছেলের কাছে টাকা আর মেয়ের কাছে শরীর।
উপরোক্ত ঘটনার সবার মধ্যে অনেকগুলো মিল আছে।
মেয়েদের বয়স ১৫ - ২১। ছেলেদের বয়স ১৭ - ২৭।
সবচেয়ে বড় মিল, এদের সবার পরিচয় ফেসবুকে। এবং তারা ছেলেগুলোর নাম ছাড়া আর কিছুই জানে না।
মেয়েরা সত্য জানতে জানতে ছেলেগুলোর উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে গেছে। এখন নিজের কপাল চাপড়ানো ছাড়া মেয়েগুলোর আর কিছুই করার থাকে না। বরং দিন কাটায় "আমার ভিডিও কি ও নেটে ছেড়ে দিবে" অজানা ভয় নিয়ে।
মূল কথায় আসি, ফেসবুকে কারো সাথে পরিচয় হতেই পারে, এটা খারাপ নয়। বলবো না যে, আপনি ফেসবুকের পরিচয়ে কারো সাথে সম্পর্ক করবেন না। কিন্তু যখনই আপনি তার সাথে ভিন্ন কোন সম্পর্ক করতে যাচ্ছেন, তখন অবশ্যই তার বিষয়ে বিস্তারিত সত্য জেনে নিন। আর সম্পর্ক করলেই ভার্চুয়াল সেক্স করতে হবে, এই নীতি থেকে বেরিয়ে আসুন।
মনে গেঁথে ফেলুন, যখনই আপনার সম্পর্কে ভিজ্যুয়াল প্রযুক্তি চলে আসছে, তখনই নিশ্চিত থাকুন যে, আপনি প্রতারণার শিকার হতে যাচ্ছেন ৯৯%। ব্যক্তিগত মূহুর্তের স্মৃতি থাকে মনে। প্রযুক্তিতে তা বন্দী করা অসম্ভব। যখনই দেখবেন প্রযুক্তিতে ব্যক্তিগত মূহুর্ত ধারণ করা হচ্ছে, নিশ্চিত থাকুন, মূহুর্তকে কেউ বন্দী করেনি। বন্দী করলো আপনাকে। কেউ কি কোন যুক্তিপূর্ণ কারণ দেখাতে পারবেন যে, কেন প্রযুক্তিতে ধারণ করবেন ?
হতে পারে আপনার ভালবাসার মানুষটা সৎ। তিনি যেখানে সংরক্ষণ করছেন, সেখান থেকেও তো চুরি হতে পারে। যেমনটা হয়েছে ঘটনা ৫এ।
আসলে, সংরক্ষণ বা আদানপ্রদানের দরকারটাই বা কি !!!
আরেকটা বিষয়, অনেকেই ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে কথা বলে থাকেন। আমার সাথে প্রায়ই অনেক নারীরা তাদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। এইতো সেদিনও এক নারী আমাকে কল দিলেন। আমিও রিসিভ করলাম। স্ক্রিনে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম যে, উনি ভুলে ভিডিওকল দিয়েছেন, কথা বলেই যাচ্ছেন কিন্তু জানেনই না যে, ভিডিওকল দিয়েছেন। এটা নতুন নয়, এ নিয়ে পঞ্চম নারী আমার সাথে এমন করেছেন।
একবার ভেবে দেখেছেন কি, আপনার এই একটু অসতর্কতা আপনাকে হয়রানির শিকারে পরিণত করতে পারে। তাড়াহুড়া করে কল দিচ্ছেন ভালো কথা। কোনটাতে টাচ করছেন, সেটা দেখে নিন। টাচ করেই বসে না থেকে স্ক্রিনে তাকিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনি কোনধরনের কল দিচ্ছেন।
সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে সাহস করে আইনি ব্যবস্থা নিন। ছবি বা ভিডিও আপনার জীবনের চাইতে দামী নয়।
প্রযুক্তি আমার আপনার জীবনের একটি অংশ মাত্র।
প্রযুক্তিকেই আপনার জীবন ভাববেন না।
কৃতজ্ঞতাঃ Dias Daniel Jewel
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০৮