আমাদের কিছু অসাধারণ ‘অসাম্প্রদায়িক’ উদাহরণ -
১। প্রাইম মিনিস্টার জাস্টিন ট্রুডো যখন সিরিয়ান রিফিউজিদের সাথে ধর্মীয় উতসবে শরীক হন, তখন বুক ফুলিয়ে সেটা ফেসবুকে শেয়ার করেন। কিন্তু সেই একই প্রাইম মিনিস্টার যখন রংধনু পোশাকে সেজে সমকামীদের সমাবেশে যান তখন তাকে অপছন্দ করেন আর সাথে সমকামীদের গুষ্ঠি উদ্ধার করেন সমাজ-জাতি-ধর্ম নষ্ট করে ফেলার জন্য।
২। সাড়ে আট হাজার মাইল দূরের এক দেশের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী (এখন নির্বাচিত) যখন সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে নির্বাচনে যেতেন তখন খুব প্রতিবাদ করতে মন চায় আপনার, কিন্তু নিজের দেশে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িকতার প্র্যাকটিস করেন তখন কই থাকে আপনার ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা’? আপনার দেশের ঘটনায় তো আপনাকে নড়েচড়ে উঠতে দেখি না।
৩। প্রতিবেশি দেশে যখন কট্টর ডানপন্থী সরকারের শাসন আমলে রেস্টুরেন্টে গরুর মাংসের কাবাব বিক্রি নিষিদ্ধ হয়, তখন ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন, কিন্তু নিজের দেশে অসাম্প্রদায়িকতার লেবাসধারী সরকারের শাসন আমালে (এবং কিছুক্ষেত্রে, নেতা-কর্মী-মন্ত্রী‘র ছত্রছায়ায়) যখন হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মালম্বী মানুষ পিটিয়ে-পুড়িয়ে মানুষের-মাংসের কিমা, কাবাব বানানো হয় তখন কই লুকায় আপনার প্রতিবাদ?
৪। অন্যের দেশে সাম্প্রদায়িক চেতনাধারী ব্যাক্তি সরকার-প্রধান হলে আপনি খুব চিন্তিত হন, বিশ্ব-শান্তি নিয়ে ভাবিত হন, কিন্তু নিজের দেশে কট্টর মৌলবাদী দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে মন্ত্রী বানাতেও আপনাদের বাঁধে নি, বরং আপেক্ষায় আছেন আবার কবে তারা ক্ষমতায় এসে আপনাকে শান্তির চাদরে ঢেকে রাখবে।
যারা নিজের দেশের, পাশের বাড়ির মানুষগুলোকে নিরাপত্তা দিতে পারে না, অসাম্প্রদায়িক হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত্বনার হাত টুকুও বাড়াতে পারে না, তাদের অন্যের দেশের সাম্প্রদায়িক ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিত হওয়াটা হিপোক্রেসি। মিঃ ট্রাম্প অন্ততঃ মনের কথাটা মুখে প্রকাশ করার মত সৎ-সাহস রাখেন, কিন্তু আপনার সেটা আছে কি? কাঁদলে সব সম্প্রদায়ের জন্য কাঁদেন, ঔটাই সত্যিকারের অসাম্প্রদায়িকতা।