আমি, আপনি – আমরা সবাই জন্মানোর মুহূর্তেই একটা একটা সুনির্দিষ্ট অধিকারের মালিক হই – ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার’। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু আমরা মানুষরাই জেনে বা না-জেনে এই নিয়মের ব্যতয় ঘটাই। আমি প্রচণ্ড মুষড়ে পড়ি যখন দেখি কেউ একজন শুধুমাত্র ভিন্নমত পোষণ করার জন্য, একটু আলাদা করে চিন্তা করবার জন্য কারো হাতে খুন হন। রাগে, ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলতে ইচ্ছা করে, ‘না, তুমি এটা করতে পারো না; কেউ তোমাকে এই অধিকার দেয় নি’। কিন্তু, বলতে আমি পারি কি?
আমাদের সমাজ আমাদের ভিন্ন কিছু ভাবতে শেখায় না। সমাজ আমাদের সেটাই শিখায় যা সমাজের জন্য নিরাপদ। কিন্তু তাই বলে কি সমাজ আমাদের এটা শিখায় যে, কেউ একজন প্রচলিত নিয়মের বাইরে যেয়ে কিছু ভাবলেই তাকে মেরে ফেল? সমাজ আমায় সমাজচ্যুত করতে পারে কিন্তু মেরে ফেলতে পারে না। তাহলে আমাকে কেন মৃত্যুভয়ে থাকতে হয় শুধুমাত্র আমার কিছু ভিন্নমত আছে বলে? এর উত্তর দেয়ার দায়িত্ত্ব এই সমাজের, আমরা যারা এই সমাজে বাস করি আমাদের সবার। যে মানুষটা ৫টা ভিন্ন কথা বা অন্যরকম কথা বলছে বা লিখছে সেটা তার বিশ্বাস। কিন্তু সমাজের বিশ্বাস কেন এত নড়বড়ে হবে যে তার কথায় বা লিখায় তাসের ঘরের মত বিশ্বাসগুলো ভেঙ্গেচুড়ে পড়বে? কথার লড়াই কথায় কেন নয়? কথার লড়াই মোকাবেলা করতে কেন অস্র্্ আসে, পুলিশ আসে, জেল আসে....আমার কাছে এই ডায়নামিকস টুকু কখনই পরিষ্কার হবে না হয়ত।
কিন্তু যারা লেখাটা পড়ে নাক কুচকে তাকাচ্ছেন আপনাদের কাছে কি পরিষ্কার? ভিতর থেকে কি আমার কথায় সায় দিয়ে ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার’ নিশ্চিত করার সাড়া পাচ্ছেন? যদি না পান, বুঝবেন, সূর্য উঠতে এখনো অনেক বাকি।