মৃত্যু এসেছিল ছদ্মবেশে
সুরম্য সে ভবনের সিড়িতে দাঁড়িয়ে
তাকে বলেছি- বাড়ি যাব
.......................
হাফলেডিস কিছু পোলাপাইন আছে, স্মার্ট হইতে চাংকু-পাংকু করে। ধরা খায়। আমগো মতো কাউয়া চালাকরা ঠিকই এক সময় বুঝে- অনেক হইল, এইবার থামি। কিংবা থামা যায়, উচিত। তারা বুঝে না। না বুইঝা সেই বৃত্তে ঘুরপাক খায়, বের হইতে পারে না। মাঝখান দিয়া চিরদিনের জন্য অনুতাপে পোড়ায় তার ম্যান্টরগো। জাবির আছিলো সেইরকম।
পোলাডার বাসায় প্রথম যেইদিন গ্যালাম, সে তার পেপার কাটিংয়ের কালেকশন দ্যাখাইল। সেন্ট গ্রেগরিজ, নটরডেম থাইক্যা পাশ করা একটা পোলা শাবানা-ওয়াসিম-ফারুক-রোজিনার পেপার কাটিং জমায়, এইটা দেইখ্যা আমি অবিশ্বাসে তব্দা খাইছিলাম। তার সেই প্রেম খাটি ছিল। পরে তা ফিল্মফেয়ার, স্টারডাস্টে কনভার্ট হইছে। লেডিত্ব ঘুচাইতে আরিফ ওরে ডাইল খাওয়া শিখাইছিল। জাবির-জেমস-আরিফ-টুটুল-মিলটন; সিএমসির সেইরকম ডাইলিস্টগ্রুপ।
জাবির পাশ করতে পারে নাই। জাবির ডাইল ছাড়তে পারে নাই। জাবির মারা গেছে। আরিফ যখন গত বছর দেশে ফিরল, বলছিল আমার জীবনে একটাই বড় পাপ, আমি জাবিররে ডাইল খাওয়া শিখাইছিলাম। তার পরপর চারটা সন্তান গর্ভেই নষ্ট হওয়ার জন্য এই পাপরেই কারণ মানে। আমি বুঝ দিই। কেউ কারো নিয়তি বদলাইতে পারেনা, সবাই নিজেই তার নিয়ামক, বাকিরা অনুঘটক হয়ত। কিউ সেরা সেরা- যা হবার তা হবেই।
জাবির কাল স্বপ্নে আইছিল। দুইজনে সুন্দর একটা বিল্ডিংয়ের সিড়ি বাইয়া উঠতাছি। ঢোকার সময় আমার একটু সংশয় কাজ করছে, অচিন বাড়িতে ঢুকতাছি, গেটে মানুষ ছিল। কিন্তু জাবির খুব কনফিডেন্টলি ঢুকল আমারে নিয়া। ওর হাতে টকটকে লাল একটা জনি ওয়াকার রেড লেভেল। ক্যাপ খুইলা কয়, খাও। আমি কই, এইখানে! দরকার হইলে বাসায় গিয়া খামু, কিন্তু এইরকম পাবলিকের বাসায়, সিড়িতে দাড়াইয়া খাইতে পারুম না। স্যরি দোস্ত তুমি খাও, আমি বাসায় গেলাম।
এইটা একটা স্বপ্ন। উপজাত কিছু স্মৃতি। আমি স্মৃতিকাতর। জাবির আর আমার একটা ভিডিও আছে আমাদের ফাইনাল ইয়ার এন্ডে গান গাইতেছি। গানটার কথাগুলা ছিল:
নিশিরাতে যদি দ্যাখো আমাকে
চাঁদ হয়ে ভেসে ওই দূর আকাশে
একটি বার শুধু ডেকো গো আমায়
না হয় জানিও বিদায়, মিষ্টি হাসি হেসে...
জাবিররে বিদায় জানাইছি স্বপ্নে, কঠোরভাবে। কাজটা খারাপ হইছে। মনটা খারাপ হইছে।