somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহবাগ চত্বরের অর্জন, বর্জন, গর্জন। হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে খালেদা জিয়ার শুভাকাংখীর সংখ্যা- মুখোশের আড়ালে এরা ঢাকতে চায় দলীয় কুকীর্তি, তবে. . . .।

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সাম্প্রতিক শাহবাগ চত্বরের প্রজন্ম আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বহু বহু পোস্ট আসছে। পক্ষে বিপক্ষে কিংবা অনপক্ষে। শুরুতেই আমরা সত্যিকার আন্দোলনকে সমর্থন জানাই শর্তহীনভাবে। যুদ্ধাপরাধীদের সত্যিকার বিচারের দাবীতে লড়াকুদের গণণ বিদারী শ্লোগান পুরো জাতিকে কাপিঁয়ে দেয়। ভয়ার্র্ত যুদ্ধাপরাধী ও তাদের ছাপোনারা সর্বাত্মক ভীতির জায়গায় চলে যায়। দলীয় আম্লীগও যে চেষ্টা করেনি-তা করে শাহবাগমঞ্চ। লেখার জবাব লেখায় না দিয়ে পত্রিকা বন্ধের আল্টিমেটামের পথে যায় আন্দোলনকারীরা, আব্দার করে সম্পাদকের গ্রেফতার-যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। গ্রেফতার হতে প্রস্তত রয়েছে সম্পাদক, হোচট খায় আন্দোলনকারীরা । একজন ব্লগারের নৃশংস খুনকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী দৌড়ে যায় তার বাসায়, মীরপুরে। জনতা জানে সাংবাদিক দম্পতি জোড়াখুনেও প্রধানমন্ত্রী নিকটস্থ ইন্দিরা রোডে যাওয়ার তাড়নাবোধ করেননি, অনেকেই এর মধ্যে মতলব খুজঁতে পারেন। সরকারদলীয় শাহবাগীরা রাজীব হত্যাকান্ডের বিচারের দাবী করলে সরকার বিব্রত হবে ভেবে মতলবী শান্তনা হিসাবে রাজীবকে প্রথম শহীদ ঘোষণা করে। নবমুক্তিযোদ্ধা হওয়ার বাসনায় অনেকেই বাসায় খেয়ে, নতুন জামা পড়ে, সঙ্গী নিয়ে কয়েক ঘন্টা শাহবাগে রোমান্টিক বিপ্লবী সময় কাটানোর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুযোগ গ্রহনের প্রত্যাশা করে। অফিস শেষে বাড়ি ফিরে নিত্য ঘ্যান ঘ্যান শুনার চাইতে আমার মতো অনেকেই ফিরতি পথে/সময় শাহবাগে হাজিরা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট অর্জন করতে চায়। অখ্যাত একজন ব্লগারকে দেশসেরা সর্বনাশা নাস্তিক হিসাবে প্রতিভাত করে অতি গুরুত্ব দিয়ে আমাদের প্রযুক্তিবিমুখ হুজুররা মাঠে নামে ইসলাম রক্ষার আন্দোলনে-পরিনাম আমাদের সবার জানা। মুখোমুখি দাড়িয়ে যায় সরকারী সুবিধাপ্রাপ্ত শাহবাগ চত্বর ও বহুধাবিভক্ত ইসলামরক্ষক হুজুরের দল। এ পর্যর্ন্ত বিএনপির অবস্থানকে অনেকেই কটাক্ষ করেছেন। অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন যে, দেশের বৃহত্তম দল হিসাবে বিএনপি-র অসম্ভব নীরবতা এমতাবস্থায় কাম্য নয়। তাদের কথায় ও প্রত্যাশার সাথে দ্বিমত করিনা। যদিও বিভিন্ন সময়ে বিএনপির কয়েকজন প্রথম সারির নেতা শাহবাগের আন্দোলনকে জনতার আন্দোলন মনে করে সাধুবাদই জানিয়েছেন। কিন্তু শাহবাগে যখন আম্লীগ, ইমরান সরকারের একপাশে ছাত্রলীগের নেতা, আরেক পাশে নাসিরুদ্দিন বাচচু-তখনই বিএনপি চোখ ছানাবড়া করে ফেলে, সন্দেহ করতে থাকে এই আন্দোলন নিয়ে। কাদের মোল্লার ফাসিঁর দাবীতে আন্দোলন কিভাবে ভিন্নমতের মিডিয়ার গলাচেপে ধরতে পারে, বীরউত্তমকে রাজাকার গণ্য করে তার উপাধী প্রত্যাহারের দাবী জানায়?-এসব দেখে বিএনপি নয়, বহু সাধারণ মানুষ প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলনকে হাইজ্যাক হওয়ার অভিযোগ করে। আন্দোলন হওয়ার কথা বিচারে আতাঁত করার দায়ে সরকারের বিরোদ্ধে, অথচ হচ্ছে কি? অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে নাসিরুদ্দিন বাচ্চু ও নাজমুল-সোহাগের কানে কানে আদেশ-নির্দেশ দেওয়া, গোপন আস্তানা থেকে আসা ওহীর তাপে-চাপে রাতে নেওয়া সিদ্ধান্ত সকালে পাল্টে পাঠ করা-আমাদের হতাশ করে। দল হিসাবে বিএনপিকে করে তোলে সচকিত। দেশের ব্যাপক মানুষ বিশ্বাস করতে থাকে, এই আন্দোলনটির মাধ্যমে সরকার তার কলুষিত অতীতকে ঢাকতে চায়, চলমান সমস্যা গুলো আড়াল করতে চায় কিংবা আরো বড় কোনো দুর্বিসন্ধি থাকাও স্বাভাবিক!! সন্দেহ নেই সরকার কিংবা দল হিসাবে আম্লীগ যেকোনো সুবিধা অর্জন চাইতেই পারে, তাই বলে আন্দোলনে ডাক দেওয়া নেতৃত্বদানকারী নেতাদের সরকারী পকেটে যেতে হবে? অনেকেই ধারণা করেন, বিএনপি এই আন্দোলনে আসলে জামাতীরা শেষ হয়ে যেতো এখনই। শেষ হতো কিনা তা আর বলা যাচ্ছেনা, কিন্তু বিএনপি বা দলীয়ভাবে ছাত্রদল সেখানে গেলে, সাগর-রুনি, রাজীব হত্যার বিচারের আল্টিমেটাম দিলে, ইমরানের কানে কানে মন্ত্রণা দিলে, আম্লীগের রাজাকার গুলোর ফাসিঁর দাবী করে টিভিতে মিটিমিটি হাসলে-সরকার সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করতো না-এই নিশ্চয়তা দেওয়া যায়না। শিক্ষকদের নিরীহ মানবন্ধন যে সরকার সহ্য করতে রাজি নয়, তারা শাহবাগে পুলিশি নিরাপত্তায় ছাত্রদলকে আন্দোলন করতে দিবে-এটা ভাবলেও পাপ হবে। বিএনপি-র অবস্থান ও শাহবাগ চত্বর সম্পর্কে যে মূল্যায়ন-তার ভার আমরা সময়ের হাতে ছেড়ে দিলাম। সময় এটার যৌক্তিকতা ও অযৌক্তিকতার মূল্যায়ন করবে। শাহবাগ আন্দোলন সফল হলে, নির্দলীয় ভাবনা জয়ী হলে, মহাঅর্জনটি ইতিহাস হয়ে ভন্ড রাজনীতিবিদদের যুগে যুগে চোখে আঙ্গুল দিয়ে সাবধান করতে পারতো।

শাহবাগের অর্জনঃ
নতুন প্রজন্ম সত্যিকার অর্থেই যুদ্ধাপরাধের বিচায়-এটা দিবালোকের মতোই সত্য। দেশের স্বার্থে আন্তরিক ডাক পেলে আমাদের সন্তানরা ঘরে বসে থাকবেনা-এটা প্রমানিত। এখন কয়েক সপ্তাহ পর বহুমুখী স্বার্থের প্যাচে পড়ে আন্দোলনের দিক পরিবর্তন হলেও নতুন প্রজন্ম তার প্রমান সময় মতো দিয়েছে। জনতা এক সাথে থাকলে, অত্যাচারী শাসকও অসহায় হয়ে পড়ে এবং ইজ্জত বাচাঁতে হলেও সাড়া দিতে বাধ্য হয়-এটাও প্রমানিত। মানুষ জাগলে রাজাকার ও তাদের ছাপোনারা চরমতম অসহায়ত্বের ভিতর নিপতিত হয়-এটাও প্রমানিত। বাই-প্রডাক্ট হিসাবে অর্জিত হয়েছে বাম সংগঠন গুলোর যে ছাত্রনেতৃত্বকে দেশবাসী কাস্তেওয়ালা লিপিস্টিকি কথাশিল্পী হিসাবে জানতো, তারা আগামী দিনে আম্লীগ বা বিএনপিতে যোগ দেওয়ার মতো পূজিঁ অর্জনে সক্ষম হলো বামবেষ্টিত মিডিয়ার বদৌলতে!! সে এক বিরাট অর্জন। শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের সাফল্য সুদূর প্রসারী, সময় তা প্রমান করতে পারে।

শাহবাগের বর্জনঃ
শাহবাগের একটি মাত্র দাবী ছিলো রাজাকারদের সত্যিকার বিচার এবং চরমতম শাস্তি। সেখান থেকে সরে গিয়ে দিশেহারা সরকার নিয়ন্ত্রিত, বামপরিচালিত আন্দোলনটি এক সময় জামাতের আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলো বর্জনের ডাক দেয়। কোথাও কোথাও কেবল এটিএম বুর্থ ভাঙ্গার চেষ্টা করে ছাত্রলীগ-যা তাদের স্বকর্মসংস্থান প্রকল্পের সাথে মিল খায়! এখন পর্যন্ত জামাতীদের প্রতিষ্ঠান গুলো চলছে, ইমরানও এটি হয়তো ভুলে গিয়েছে! অর্থাৎ শাহবাগ এখানে ব্যর্থ হয়েছে। শাহবাগ চত্বরের অতিবিপ্লবীরা একটিমাত্র বিরোদ্ধমতকে টার্গেট করে তা বন্ধ করতে এবং তার সম্পাদককে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেয়। ব্লগারদের অভিধানে ‘‘মিডিয়ার কন্ঠরোধ’’ জাতীয় বিষয় থাকতে পারে-এটা অবিশ্বাস্য, যা ফ্যাসিস্টদের মনে করিয়ে দেয়। অতিরঞ্জিত/মিথ্যা সংবাদ এমনিতেই বর্জিত হয়, সময়ে পত্রিকাই ডাস্টবিনে জায়গা নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু মিডিয়ার কন্ঠরোধ ব্লগারদের দাবী হবে কেন, উপরন্তু যখন সকল মিডিয়া এই আন্দোলনকে সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করছে? এই আল্টিমেটামকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গ্রেফতারবরণ করতে অপেক্ষায় থাকে মাহমুদুর রহমান। অঞ্জন রায়, নাসিরউদ্দিন বাচ্চুদের মতো দলীয় ও মিডিয়ার দালালরা শাহবাগে শ্লোগান দিতে পারলে, অন্যরা কেন এ আন্দোলনের অসংগতির বিরোধীতা করতে পারবে না? মত প্রকাশের স্বাধীনতা যখন ব্লগাররা অস্বীকার করে কেবল ভিন্নমতের কারণে-তখন দলীয়দাস গুলোর কুৎসিত চেহারাই ভেসে উঠে। এই মাত্রার কন্ঠরোধকারী ফ্যাসিস্ট ব্লগাররাই ভিন্নমতালম্বী/রাজীবদের হত্যা করতে পারে, মিডিয়াকেও খুন করতে পারে। অথচ মতপ্রকাশের সুযোগ নিয়ে মিডিয়ার কল্যানেই ব্লগাররা এই আন্দোলনকে গড়ে তোলে, মহিমান্বিত করে। আজ তারা আমার দেশ পত্রিকার মৃত্যু চায়, গ্রেফতার চায় সম্পাদকের-আইনী পথে যেতে চায়না, কার্যালয়ে আগুন দেয়!! লেখার জবাব লেখা দিয়েই দিতে হয়-এটাই সভ্যতা, এটাই গণতান্ত্রিক-এর বাইরে যেকোনো প্রচেষ্টাই সরাসরি ফ্যাসিজম।

শাহবাগের গর্জনঃ
যুদ্ধাপরাদের একমাত্র দাবী থেকে এখন আন্দোলনকারীরা বহুমুখী গর্জনে নেমেছে-যা আন্দোলনটির বহুমুখি ক্ষতিই করেছে। জামাতীদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা আইনের মাধ্যমেই কেবল সম্ভব, যদি সেগুলো আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেসব দেখার দায়িত্ব সরাসরি সরকারের, প্রজন্ম চত্বরের নয়। অতিবিপ্লবীরা সবচেয়ে মারাত্মক যে বার্তাটি জনগণকে দিয়ে দেয়-তা হলো বীরউত্তমকে রাজাকার খেতাব দিয়ে তার সন্মান প্রত্যাহারের দাবী। কাদের সিদ্দিকীর খেতাব ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলার মতো মানসিক উচ্চতা ও সামাজিক গ্রহনযোগ্যতা যাদের নেই, তাদের মুখে মুক্তিযোদ্ধার এরকম মূল্যায়ন/অপমান শুনে অনেকেই বিব্রত। পাল্টা প্রশ্ন জাগে, চেনা বামন কাদের সিদ্দিকীর পৈতা লাগে কি? পৈতা লাগে তাদের- যাদের মধ্যেই বাস করে আকন্ঠ সুবিধাবাদীতা, অতীত পলায়নপর কাপুরুষতা। চরিত্রহননের এই খেলায় ‘দৈনিক আমার দেশ’ও নাম লেখালে এর দায় অতি উৎসাহীরা এড়াতে পারেন না। হরতাল প্রতিরোধ করা, সম্পদ রক্ষা করা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দায়িত্ব হলেও সরকারী সংগঠন এই প্রতিরোধ সেবায় নিজেদের নিয়োগ করে থাকে। এটা মেনে নিলেও শাহবাগ চত্বর হরতাল প্রতিরোধে সরকারী দলীয় সংগঠনের ন্যায় দায়িত্ব পালন করবে কেন-সেটার মূল্যায়ন সচেতনদের উপর থাকলো।

খালেদা জিয়ার নব্য শুভাকাংখীরাঃ
হঠাৎ করে এক শ্রেনীর ব্লগার গজিয়ে উঠেছে যারা সকাল বিকাল খালেদা জিয়াকে গালাগালি করছে এটা বলে যে, কেন খালেদা জিয়া শাহবাগে গেলোনা। খালেদার কান্ধে জামাতীরা, বিএনপি জামাতের মধ্যে বিলীন, বিএনপি জামাতের বি-টিম, খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা শূণ্য-এ জাতীয় মন্তব্য করে তাকে হেয় করার কাজটি করে যাচ্ছে। সন্দেহ নেই এই কাজে এগিয়ে আছে বাকশালী ব্লগারদের একটি অংশ যারা সরকারের নানাবিধ ব্যর্থতায় নাকে খত দেওয়ার পর্যায়ে অবস্থান করছিলো। ডাক্তার আইজু, াহো-এদের মতো ব্লগাররা শুরুতেই এই আন্দোলনকে নেতিবাচক হিসাবে উপস্থাপন করে পোস্ট দিয়েছেন। শাহবাগ চত্বরের ফুয়েলে মুখোশ লাগিয়ে এখন খালেদা জিয়াকে গালাগালি করছে, বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে তারা যারপরনাই শংকিত। আহা কতটা খালেদা দরদী, কতটা বিএনপি প্রেমী তারা-এটা খালেদা জিয়া বুঝতেছেন না!! অথচ এই এরাই খালেদা জিয়ার চরিত্র নিয়ে কুৎসা রটিয়েছে, গায়ের জোরে যেদিন সরকার অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে ঘরছাড়া করেছিলো-সেদিন তারা উৎসব করেছে। চরম নির্যাতিত সন্তানকে দেখে ক্রন্দনরত খালেদা জিয়ার ছবি নিয়ে এই কুলাংগাররা মস্করা করেছে। আজ তারা বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যত দেখার জ্যোতিষি সেজেছে। সময় বলে দিবে, জনতাই ঠিক করবে কে ঠিক পথে আছে, কে বিপথে আছে। আগামী নির্বাচনটি নিরপেক্ষ হতে হবে-তাহলেই বুঝা যাবে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবস্থানটির মূল্যায়ন। তরুনদের ২কোটি ভোটের লোভ দেখিয়েও অনেকে খালেদা জিয়াকে হুমকি দিচ্ছেন যে, শাহবাগের আম্লীগ প্রযোজিত বামপরিচালিত ইমরান সরকারের খাদেম না হলে আগামী নির্বাচনে বিএনপি তরুনদের ভোট পাবেনা। তাদের কথায় মনে হয়, বিএনপি নিয়ে খালেদা জিয়ার চাইতে তারাই বেশী দরদী ও চিন্তিত!! শাহবাগের মতলবী বাকশালী ব্লগাররা ধরে নিয়েছে দেশের দুইকোটি তরুন কেবল ইমরানের কথায় বাম-ডান-বাম সুরে মার্চপাস্ট করে!!

চলমান রাজনৈতিক হত্যকান্ড, হলুদ সাংবাদিকতা ও বিবেকহীন ব্লগার সমাজঃ
দেলু রাজাকারের ফাসিঁর আদেশ দিয়েছে আদালত,। এটা নিয়ে দ্বিমত থাকলে আন্দোলনকারীদের উচিত ছিলো আদালতে আপীল করা। কিন্তু সারা দেশব্যাপী যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃস্টি হলো, নিরীহ সংখ্যালুঘুদের গৃহহারা হতে হলো তার দায় জামাত শিবিরকে নিতে হবে, আম্লীগকেও নিতে হবে। অবশ্য একই ভাবে যেকেউ বলতে পারে, আদালত কাদের মোল্লার রায় দিয়েছে যাবজ্জীবন-এটা নিয়ে শাহবাগ চত্বরে সংক্ষুদ্ধ হয়ে তরুন প্রজন্ম আন্দোলন করতে পারলে, অন্যরা কেন একই আদালতের প্রতি সংক্ষুদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে পারবেনা? শাহবাগ আন্দোলনের কারণে মৃত্যু হয়নি, সম্পদের ধ্বংস হয়নি-এর কারন হলো শাহবাগে পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে, কিন্তু সারা দেশে যে হত্যাকান্ড গুলো ঘটলো, সংখ্যালুঘুদের বাড়ীতে আগুন জ্বললো-সেখানে পুলিশ মৃতদের জন্য, গৃহহারাদের জন্য নুন্যতম নিরপত্তার কথা ভাবেনি, প্রজন্ম চত্বরের নেতাদের এ বিষয়ে নুন্যতম দায়বোধ আছে বলে মনে হয়না। এই ভাবে পুলিশি রাষ্ট্র বানিয়ে আইনহীন মানুষ খুন করে, ভীত সংখ্যালঘুদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে হয়তো ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা যায়, কিন্তু চিরস্থায়ী করা যায়না। কাদের মোল্লার রায়-ই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে আম্লীগ ও সরকারের অবস্থান/আন্তরিকতা কতটা কলুষিত!!

একই আদালতের রায়ে দুটি পক্ষ, পুলিশের দুরকম আচরণঃ
যুদ্ধাপরাধের ট্রাইব্যুনালের একটি রায়ের বিরোদ্ধে আন্দোলনকারীদের পুলিশ নিরাপত্তাসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করছে, একই ট্রাইব্যুনালের আরেকটি রায়ের বিরোদ্ধে আন্দোলনকারীদের পুলিশ গুলি করছে-যা আইনের শাসনের চরমতম লংঘন। গুলির বাইরেও বহু পথ আছে এরকম আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করার। এত গুলো মৃত্যুর পরও আমাদের হলুদ পত্রিকা/টিভি মিডিয়া গুলোতে চরমতম কুলাংগারীর সাথে মিথ্যাচার চলছে। কঠিনতম অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলমান দেশটিতে জনতার ভিন্নমতের কোনো বক্তব্য প্রচার পায়না-যা নৈতিকতা ও গণতন্ত্রের জন্য অশুভ। বিরোধীদলের কর্মসূচী গুলোকে সরাসরি অরাজকতা, তান্ডব, ধ্বংসলীলা হিসাবে দেখাতে চাইছে আমাদের হলুদ মিডিয়া, ভিন্নমতের দ্বিমতের যেকোনো ব্লগারকেই দেশবিরোধী হিসাবে ট্যাগ করছে বাকশালীরা। মিথ্যাচার যদি মিডিয়া গুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার! হয়ে থাকে, তাহলে আমার দেশ সেই চর্চাই এখন করছে সকল মিডিয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে। নির্বিচার মানুষ হত্যাকান্ডের জন্য যার বিবেক নিন্দা জানায় না, মূল্যবান জীবনের চাইতে সরকারের দালালীতে যে ব্লগারের বিবেক নিমজ্জিত, সংবিধান ও আইনের চাইতে দলীয় আবেগে যে ব্লগারের মানসিকতা জংলীময়-আমি তাকে ঘৃণা করি, তার দেশপ্রেমকে ধিক্কার জানাই। যুক্তির চাইতে অন্ধ অনুকরণে বিবেক বর্জিত উল্লসিত লম্ফমান যে তারুণ্য-তার উপস্থিতি দেশের জন্য সর্বাত্মক দায়মাত্র।

সুবিধাবাদী চেতনা বা আস্ফালন নয়, সরাসরি বাস্তবায়ন করে দেখান মাত্র ২টি দাবীঃ
১. ধর্মীয় সকল রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ;
২. যুদ্ধাপরাধীর উচিত বিচার। (এর সাথে তবে, যদি, কিন্তু, অন্যথায়, সুতরাং, যেহেতু নেই।)

উৎসর্গঃ গণতন্ত্রের জন্য নিখাদ দেশপ্রেমের কারণে’ ৯০-এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জীবন দেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অকুতোভয় সৈনিকদের-যাদের রক্তের সাথে বেইমানী-আমাদের নিত্য রাজনৈতিক তামাশায় পরিনত হয়েছে।
৮৯টি মন্তব্য ৮৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×