সকাল বেলা ফেসবুক চালু করেই ছবিটা চোখে পড়ল। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ফেসবুক পেইজে ছবিটা পোস্ট করা হয়েছে। ছবিটি তুলেছেন রাজীব ধর নামের একজন। ইনানী সমুদ্রসৈকতে একটা ঘোড়া একাকী দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু এই দাঁড়িয়ে থাকার পেছনে যে ভয়ংকর এবং মানবিক নিষ্ঠুরতার এক ভয়ংকর গল্প দাঁড়িয়ে আছে, তা জানা নেই অনেকের। অবশ্য কক্সবাজারে এই দৃশ্য খুব বেশি অস্বাভাবিকও না। এই দৃশ্য সেখানকার মানুষ এবং পর্যটকদের চোখে প্রায়ই পড়ার কথা। নিঃসঙ্গ এক ঘোড়া রাস্তায় কিংবা সমুদ্রতীরে একাকী ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এই ঘোড়াগুলো একসময় পর্যটকদের মনোরঞ্জন করে এসেছে। মালিকদের কাছে তখন এই ঘোড়াগুলোর দাম ছিল, কারণ তারা পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এসেছে। বয়সের ভারে কিংবা কোনো কারণে যদি ঘোড়াটা আঘাত পেয়ে অকেজো হয়ে যায়, তাহলে মালিক তখন সেই ঘোড়াটা এভাবে একা ছেড়ে দেয়। একা একা ঘোড়াটা তখন এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়। হয়তো বুঝতেও পারে না কেন তার এই অবস্থা! যদি এমন হয় যে খাওয়ার মতো ঘাস থাকে আশেপাশে, তখন হয়তো ঘোড়াটা আরও বেশ কিছুদিন বেঁচে থাকে। যদি ঘাস না থাকে, তাহলে অনাহারে-অযত্নে মারা যায়!
আচ্ছা, মানব চরিত্রই কি এমন? যে প্রাণীটি এতদিন তার আয়-রোজগার করে পকেট ভর্তি করেছে, আজ যখন তার দরকার শেষ, তখনই একেবারে ছুড়ে ফেলে দিল। অবশ্য কেবল এই পশুর কথাই কেন বলছি! মানুষ তো তাদের নিজের আপন বাবা-মা কেও ছেড়ে চলে যায়!
আজকে সকাল থেকে মনটা কেমন যেন বিষণ্ণ হয়ে আছে। এই ছবিটা সকাল থেকেই আমার চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কী নিঃসঙ্গ, একাকী লাগছে!
ঢাকার সদরঘাট থেকে গুলিস্তানে এখনও ঘোড়ার গাড়ি চলে। ঘোড়াগুলোর অবস্থা কী যে করুণ! কেবল মাত্র মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য এই প্রাণীগুলোকে কত অমানবিক ভাবে খাটানো হয়! একটা সময়ে পশু চালিত গাড়ি ছাড়া আমাদের কোনো উপায় ছিল না। কিন্তু ইঞ্জিনচালিত যান চালু হওয়ার পর এখন এই প্রাণীচালিত যানের কোনো প্রয়োজন নেই, বিশেষ করে নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্য তো নয়ই!