অনলাইনে কিছু কিছু মানুষ, বিশেষ সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ সুন্দরবনের কাছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে কথা বলছে এবং তারা এই পাওয়ার প্লান্টের বিরোধীতার করার ব্যাপারে কিছু নিয়ম নীতিও প্রতিষ্ঠা করেছে । অর্থ্যাৎ আপনি যদি রামপাল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সেই নিয়ম নীতি গুলো মানতে হবে । নতুবা আপনাকে বিরোধীতা আমলে নেওয়া হবে না । অনেক নিয়ম নীতি আসুন অল্প কিছু নিয়ম নীতি দেখে নেওয়া যাক ।
ধারা ১(ক). আপনাকে অবশ্যই সংবিধান সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা থাকতে হবে । কেবল ধারনা থাকলেই চলবে না, কতটি ধারা আছে কতটি অনুচ্ছেদ আছে এবং সেই ধারা উপধারা অনুচ্ছেদে কি বলা আছে সেই সমস্ত ব্যাপারেও আপনাকে পরিস্কার ধারনা থাকতে হবে ।
ধারা ২১ (গ). আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট সংখ্যক বৃক্ষ রোপন করতে হবে । কতটি বৃক্ষ রোপন করলে আপনি আসলে রামপালের বিরুদ্ধে কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করবেন সেই বিষয়ে নিকটস্থ দালালী করবুতের কাছ থেকে দিক নির্দেশনা নিতে হবে।
ধারা ৩২ (খ). আপনি যদি অদুর এবং দুর অতীতে কোন প্রকার পরিবেশ দুষন মূলক কোন কাজে অংশ গ্রহন করে থাকেন তাহলেও আপনি রামপাল বিরোধী কোন কথা বলতে পারবেন না । এমন কি ভবিষ্যতেও যদি এমন কোন কাজ করার ইচ্ছে থাকে তাহলে আপনাকে এই ব্যাপারে কোন কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে ।
ধারা ৩৪ (ঐ). আপনাকে অবশ্যই পরিবেশ বিজ্ঞানের উপর উচ্চতর ডিগ্রি থাকা থাকা লাগবে । নয়তো আপনি কিভাবে বলবেন যে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে !
ধারা ৫১ (ঙ). আপনি যদি বলতে চান যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের কাছে অবস্থিত তাহলে আপনাকে নিজ হাতে গজ ফিতা নিয়ে সেই দুরুত্ব মেপে আসতে হবে । নয়তো সরকারী তথ্য (৯২ কিমি) চোখ বুঝে বিশ্বাস করে নিতে হবে । কোন ভাবেই গুগল ম্যাপ কিংবা বেসরকারী হিসাব বিশ্বাস করা যাবে না ।
ধারা ৫৬ (ক). কেবল মাত্র সরকারী কিংবা সরকার দলী লোকজনের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেশনই গ্রহনযোগ্য হবে । অন্য কারো তথ্যের ভিত্তিতে তর্ক করতে আসবেন না ।
ধারা ৫৭ (ঘ). আপনাকে আরও বিশ্বাস করতে হবে যে, যারা সরকারের যে কোন সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে তারা আসলে জামাত শিবির জঙ্গী !
ধারা ৬৮ (খ). হেপাজত যে ২০১৩র দিকে ঢাকায় এসে গাছ কেটেছিল সেই গাছ কাটাতে পরিবেশের যে মারাত্বক ক্ষতি হয়েছিল, সেই ক্ষতি এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ার ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হবে, এই দুই ক্ষতিকে আপনাকে একই পাল্লাতে মাপতে হবে ।
ধারা ৬৯ (ক). সুন্দরবনের দু একটা গাছ হয়তো মরবে সেই জন্য প্রত্যেকটি বাড়িতেই "একটি বাড়ি একটি সুন্দরবন গড়ে তোলা সম্ভব এমন মনভাব পেষন করতে হবে । এবং এর ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ও ঠেকানো সম্ভব এটাও চোখ বুঝে মেনে নিতে হবে ।
ধারা ১০০. পরিবেশ সংরক্ষন বিষয়ক ক্লজ এই সরকারের আমলে সংবিধানে যুক্ত হয়েছে সুতরাং এই সরকার কোন প্রকার পরিবেশ ধ্বংশ মুলক কাজ করতে পারেন না এই কথা বিশ্বাস করতে হবে ।
উপরে বর্নিত সকল ক্লজ এবং আরও কিছু হিডেন ক্লজ মানতে পারলেই আপনি রামপাল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের বিরুদ্ধে কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করবেন । যদি একটিও না থাকে তাহলে আপনি ডিসকোলিফাই !
কিন্তু যদি আপনি রামপালের পক্ষে বলতে যান তাহলে উপরের কোন যোগ্যতা আপনার না থাকলেও চলবে । আপনার সংবিধান জানতে হবে না, পরিবেশ বিষয়ক জ্ঞান থাকাও খুব বেশি দরকার নাই এমন কি আপনাকে গজ ফিতা নিয়ে দুরুত্বও মাপার দরকার নেই । কেবল দালালী মনভাব থাকলেই চলিবে ।
সুংযুক্তি দিলাম দুইটা ফটুঃ
আইডিয়াঃ আপেল আহমুদ এবং অনলাইনের আরো বিভিন্ন মানুষের পোস্ট !
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৪