বই মেলা আমার বেশ পছন্দের একটা জায়গা তবে মানুষের ভীড় ভাল লাগে না । তাই সব সময়ই আমি বই মেলায় যাই ছুটির দিন এড়িয়ে । তার উপরে মেলার স্টল খোলার সাথে সাথেই ঢুকে পড়ি আর টুকটাক বই কিনেই মানুষ জন আসার আগেই কেটে পড়ি । প্রতিবারই এমনই হয় । এবারও তেমন করেই এগোচ্ছে বই মেলা অভিযান । আজকে ছয়দিন বই মেলা শুরু হয়েছে তার ভেতরে তিনবার যাওয়া হয়েছে । কেন হয়েছে কিছু বই । সেই বই গুলো নিয়েই আজকের পোস্ট ।
মেলার প্রথম গিয়েছি দুই তারিখে । সবার আগে হাজির হয়েছি আদী প্রকাশের স্টলে । সেখানেই যাওয়ার কথা । প্রথমে শুরু করেই ব্লগার নাজিম উদ দৌলার ব্লাডস্টোন দিয়ে বই কেনার যাত্রা শুরু হল । যদিও গতবার বের হওয়া নাজিমের ইনকারনেশন টা বেশ হতাশ করেছিল তবে তার গল্প আমার সব সময়ই পছন্দ । দেখা যাক ব্লাডস্টোন এবার প্রত্যাশা পূরন করতে পারে কি না !
ব্লাড স্টোনের পরেই হাতে নিয়েছি "শোণিত উপাখ্যান" লেখকের নাম সৈয়দ অনির্বাণ । এটাও আদী প্রকাশ থেকেই । এই বইটা সম্পর্কে আমার খুব একটা ধারনা ছিল না এমনি হাতে নিয়েছি । তবে এই বইটার নাম শুনেছিলাম বইপোকাদের আড্ডাখানা গ্রুপে । সেখানে বেশ সুনামও শুনেছি ।
শোণিত উপাখ্যানের পরেই আদী থেকে বের হয়ে এলার সেবার কাছে । সেখান থেকে কিনে ফেললাম হেনরি রাইডারের দুইটা বই । আসলে ঠিক তিনটা গল্প তবে দুইটার ভেতরে । এদের ভেতরে কেবল শী টা আগে থেকেই পড়া ছিল তবে রিটার্ন অব শীটা পড়ার আগ্রহ ছিল অনেক দিন থেকেই ।
এরপর আমি বই মেলার ঘুরতে লাগলাম একা একা । আমি স্বাধারন বই মেলার খুব একটা ঘুরাঘুরি করি না । যে বই গুলো কিনবো সেগুলো আগে থেকেই ঠিক করে যাই । আর সাথে সেই স্টলের কিছু বই চোখে পড়ে গেলে কিনে ফেলি । স্টলে স্টলে ঘুরে ঘুরে কম বই কিনি । যাই হোক এবার একটু ব্যতীক্রম হল । এবার স্টলে স্টলে একটু ঘুরলাম । আর কিনে নিলাম এরকম দুইটা বই
ঐদিন আরও কিছু সময় ঘোরা ঘুরি করেই মেলা ভ্রমনের ইতি টানলাম ।
তারপর হাজির হলাম গতকাল অর্থাৎ ৫ই ফেব্রয়ারী । আমার একটু আগে আগেই যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু একটু দেরি হয়ে গেল । ভেতরে ঢুকতে গিয়ে দেখি লোকজনে ভর্তি, এখানে বেশি সময় থাকা যাবে । সোজা আবারও গেলাম আদীর সামনে । জিকো ভাইয়ের "যে প্রহরে নেই আমি" কিনে দৌড় দিলাম ।
এলাম বাতিঘরের সামনে । বাতি ঘরের স্টলে বসে ছিল পরিচিত মানুষ । ক্যাম্পাসে থাকতে সব সময় বাতি ঘরের শো রুম থেকেই বই কিনতাম । একটা দুইটা কিনতাম, কিনতাম দুই হাত ভরে । সে আমাকে খুব ভাল করেই চেনে । হাসি দিল আমাকে দেখে । কি আর করা কিনে ফেললাম কিশোর পাশা ইমনের "মিথস্ক্রিয়া" !
বাতিঘর থেকে এবার বই কেনার ইচ্ছে ছিল না কারন মেলা থেকে মাত্র২৫% কমিশন দিচ্ছে যেখানে আমরা শোরুম থেকে কিনে ৫০% পর্যন্ত কমিশন পেয়ে অভ্যস্ত । ইচ্ছে ছিল মেলা শেষে একদিন বাতিঘরের শোরুমে হামলা দিয়ে সব গুলো কিনে আনবো । ঠিক মেলা শুরুর দুই তিন দিন আগে চারটা কিনে এনেছিলাম । তার দুটো ছবি
এবার হাজির হলাম বাংলা একাডেমির স্টলের সামনে । আরজু পনি আপু আগের দিন রাতে একটা বাংলা অভিধান কিনতে উৎসাহিত করে পোস্ট দিয়েছিলো ফেসবুকে । কিনে ফেললাম আধুনিক বাংলা অভিধান ! যারা আমার ব্লগ পড়ে তারা জানে আমার লেখায় কত বানান ভুল হয় । এবার যদি কিছুটা ঠিক হয় !
সেদিনের মত ইতি হল মেলা অভিযান ।
আজকে অবশ্য যাওয়ার প্লান ছিল না তবে সকাল বেলা শান্তির দেবদূত ভাই ফোন দিলেন । বললেন যে যাবেন । ব্লগ কিংবা অনলাইনের মানুষজনের সাথে আমি ঠিক বাস্তবে দেখা সাক্ষাত করতে খুব একটা আগ্রহী নই কোন কালেই, খুব অল্প কয়েকজনের সাথেই আমার বাস্তবে পরিচয় আছে । তারা সব সময়ই কাছের মানুষ । কিন্তু শান্তির দেবদূত ভাই সবার থেকে আলাদা । গতবারও তার সাথে দেখা হয়েছি এবারও হয়ে গেল । এই বইমেলাতেই সামনের সপ্তাহে আবারও দেখা হবে আশা করা হচ্ছে যাই হোক । দেখা যাক তিনি বই কিনছেন আদী প্রকাশ থেকে
নীল টিশার্ট পরা ইনিই হচ্ছে শান্তির দেবদূত ভাই । দুঃখিত তার চেহারার দেখাতে পারলাম না আপনাদেরকে
স্টলের ভেতরে জিকো ভাই (ব্লগার জিকসেস)কে দেখা যাচ্ছে । আরও একটু ভাল করে দেখুন
দেবদূত ভাইকে নিয়ে সেখান থেকে হাজির হলাম দেশ পাব্লিকেশনের সামনে ! সেখানে নোমান ভাই বই বের হয়েছে "জীবন বিত্তান্তে নেই"
তার পরেই ইশতিয়াক আহমেদের "সিনেমা হলের গলি"
এই দুটাই দেবদূত ভাই কিনে দিয়েছে আমাকে ।
যাই হোক মেলা থেকে বের হয়ে এলাম । ছবির হাতে বসে ভাইয়ের সাথে পিয়াজু আর চপ খেলাম । দেবদূত ভাই জীবনে স্বাধীনতা সীমিত হওয়ার কিছু কথা বলল । যাক সময় টা কাটলো বেশ । আবার সামনে দেখা হবে আশা করা যাচ্ছে ।
মাত্র তো তিন গেলাম । আরও সামনে যাবো অনেক বার । আপনাদের কারো সাথে দেখা হলেও হয়ে যেতে পারে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৬