somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ শান্ত কেন মাস্তান :D

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-এখন ফোন দিয়েছো কেন ?
আমি প্রথমেই কি বলবো ঠিক বুঝতে পারলাম না । মিমি যদিও এমনিতেই সব সময় একটু গম্ভীর আর ঠান্ডা থাকে কিন্তু আজকে যেন একটু বেশি গম্ভীর । আমি ওকে দেখতে না পারলেও ঠিকই ওর গাম্ভীর্য ভাব টা বুঝতে পারছি বেশ ।
আমি আমতা আমতা করে বললাম
-না মানে আজকে সারা দিন কোন খোজ খবর নেই নি তো !
-তো ! তোমাকে না বলেছি বাসায় থাকলে ফোন দিবে না ।
-ও ভুলে গেছিলাম ।
-ফোন রাখো ।
-আচ্ছা ।

আমাকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই মিমি ফোন রেখে দিল । আমি কিছুটা সময় মন খারাপ করে বসে রইলাম । আসলে মিমি এরকই । মন খারাপ করে কি লাভ ! নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম । তবুও মন খারাপ ভাবটা কাটলো না ।
এই কথা সত্যি যে মিমি যখন বাসায় থাকে তখন তাকে ফোন দেওয়া নিষেধ । ও যেগুলো শর্ত আমাকে দিয়েছিলো এটা তার ভেতরে অন্যতম ছিল । তবুও মাঝে মাঝে আমি ঠিক ঠিকই ফোন দিয়ে ফেলি । আর বকা শুনতে হয় ।

আসলে আমি ওকে ফোন দিয়েছিলাম কিছুটা অস্থিরতা থেকেই । মিমি গত সপ্তাহেই আমাকে বলেছিলো ওকে দেখতে নাকি পাত্রপক্ষ আসছে । এমন স্বাভাবিক ভাবে কথাটা বলল যেন প্রতি দিনই ওকে দেখতে পাত্রপক্ষ আসে । আমি কিছুতেই স্বাভাবিক থাকতে পারলাম না । একটু উত্তেজিত হতেই মিমি শান্ত কন্ঠে বলল
-আমি আমাদের সম্পর্কের শুরুতেই কি বলেছিলাম মনে আছে ?
আমি চুপ করে গেলাম ।
-মনে আছে ।
-তাহলে তুমি কেন এমন করছো ? আমি তুমি দুজনেই জানি যে এরকমই হবে । সো ?
আমি কোন যুত সই জবাব খুজে পেলাম না ।

আসলেই মিমির সাথে সম্পর্কের শুরুতেই আমার কিছু কথা হয়েছিল । আরও ভাল করে বলতে গেলে মিমি আমাকে কিছু শর্ত দিয়েছিল । যেগুলো যদি আমি মানতে পারি তাহলেই যেন আমি আগাই ।
ওর প্রথম কথাটাই ছিল ও বিয়ে হবে ওর বাবা মায়ের ইচ্ছায় । এখানে ওর কোন কিছু বলার নাই । যে সম্পর্ক টা হবে সেখানে কোন আশা রাখা যাবে না । ঘন ঘন ফোন করা যাবে না । ও যখন বাসায় থাকবে তখন কথা হবে না । খুব দরকার না হলে ফোনও করা যাবে না । দেখা হবে কিন্তু নো টাচিং । হাত ধরা যাবে তাও সব সময় না ।

আমার তখন আসলে এসব কিছু মনে হয় নি । প্রেমে পড়লে মানুষের মাথা ঠিক মত কাজ করে না । আমারও করে নি তাই সকল শর্তই মেনে নিলাম চুপাচাপ । কিন্তু পরে আস্তে আস্তে টের পেলাম । তারপরেও মিমিকে বেশ আনন্দেই ছিলাম । কিন্তু এইভাবে যে ওর বিয়ে হয়ে যাবে আমি ভাবতে পারি নি ।
পরের দিনও মিমি ফোন দিল না । আমি অস্থির হয়ে আছি । সন্ধ্যার দিকে মিমি আমাকে ফোন দিল । শান্ত কন্ঠে বলল
-এতো বার ফোন দেওয়ার কি হল ?
-আমি ফোন দিবো না ? তোমাকে অন্য কেউ দেখতে আসবে আর চুপ করে থাকবো ?
-কি করবে তুমি শুনি ?
-দেখো রাগাবা না কিন্তু । সত্যি বলছি রাগাবা না ?
-তুমি রাগতে জানো নাকি ? ভাল । শুনো একটা কাজ কর তো এখনই আমাদের বাসায় আসো তো একটু !
আমার মনে হল আমি হয়তো ভুল শুনলাম । কত কথা ভেবে রেখেছিলাম সব উবে গেল মুহুর্তেই । যেই মিমি বাসায় থাকলে আমাকে ফোন করতে মানা করে সেই মিমি আমাকে বলছে ওদের বাসায় যেতে । আমি কি ভুল শুনলাম !
আরেকবার শিওর হওয়ার জন্য বললাম
-কি বললে তুমি ?
-শুনতে পাও নাই ? বললাম বাসায় আসো ?
-কাদের ? তোমাদের ?
-গাধার মত প্রশ্ন কর কেন ? আসতে বলছি আসো ! ঠিকানা মেসেজ করে দিতেছি ।


আধা ঘন্টা পরে যখন মিমিদের বাসার নিচে এসে দাড়ালাম তখনই ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি আসলেই মিমিদের বাসায় ঢুকতে যাচ্ছি । শুনেছি মিমির বাবা নাকি খুব রাগি মানুষ । তারপর উপর ওর মাও নাকি বাবার থেকে কম না । এই দুইজন আমাকে পেলে কি করবে কে জানে ?


কলিং বাজানোর আগে আরও কয়েকবার চিন্তা করে দেখলাম । তারপর টিপ দিলাম বেল এ । হয়তো এমন হতে পারে যে ওর বাবা মা আগে থেকেই আমার আসার কথা জানে । এতো চিন্তার কথা না । না হলে মিমি হয়তো আমাকে আসতেই বলতো না ।
দরজা খুলে দিলেন মাঝ বয়সী এক ভদ্রলোক । চেহারা দেখেই আমার মনে হল উনি মিমির বাবা । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-কাকে চাই ?
বেশ ভরিক্কি গলা । আমি একটু থতমত খেলাম । তার মানে কি মিমি বলে নি ?
আমি বললাম
-এটা মিমিদের বাসা না ?
-হ্যা !
-আমি মিমির সাথে পড়ি ! ও আমাকে আসতে বলেছে !
এইবার সামনের ভদ্রলোক অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । ঠিক মত যেন বিশ্বাস করতে পারছে না যে আমি মিমির সাথে দেখা করতে এসেছি আর মিমি আমাকে এখানে আসতে বলেছে । মিমির বাবা তখনও দরজা ছেড়ে দাড়ায় নি । তার আগেই আরেক মহিলা এসে দাড়ালো ।
-কে এসেছে ?
মিমি বাবা বলল
-মিমি সাথে পড়ে । মিমি নাকি আসতে বলেছে !
-কি !!

ভদ্রমহিলা এমন ভাবে কি বলল যেন মনে হচ্ছে কোথাও কোন বড় ধরনেই দুর্ঘটনা ঘটে গেছে । তিনিও আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন অবাক হয়ে । তার চোখেরও অবাক বিশ্ময় । আমি পড়লাম ঝামেলায় । কি বলবো আর কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না । ঠিক মত কোন কথাও বলতে পারছি না ।
আমি যখন ভাবছি কি বলবো তখনই মিমিকে দুজনের পেছনে দেখতে পেলাম ।
-আরে চলে এসেছো ? এসো !
মিমির বাবা মা দুজনের অবাক চোখ এবার আমার দিক থেকে সরে গিয়ে তাদের মেয়ের দিকে গেল । তারা এখনও ঠিক মত বিশ্বাস করতে পারছে না এটাই আসলেই মিমি কি না !
মিমি আবার বলল
-কই এসো ? বাবা ওকে একটু ঢুকতে দাও ।

মিমি বাবা অবাক মুখ নিয়েই সরে দাড়ালো দরজা থেকে । আমি ভেতরে প্রবেশ করলাম ।
মিমি সামনে আমি পেছনে পেছন হাটছি । ও সম্ভবত আমাকে ওর ঘরের ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে । আমি পেছন দিকে না তাকিয়েও স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে মিমির বাবা আর মা আমার থেকেও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে । এতো দিন আমি মিমির কাছে যা শুনে এসেছি তা যদি সত্যি হয় তাহলে মিমির বাবা সম্ভবত তাদের মেয়েকে ঠিক মত চিন্তে পারছেন না । আমি নিজেও চিন্তা করতে পারছি না । মিমির আসলেই কি হয়েছে ! এতো সাহসী কিভাবে হল ?

দরজার কাছে গিয়ে হঠাৎ মিমি দাড়িয়ে পড়লো । আমাকে দাড়াতে হল । পেছনে ফিরে ওর বাবার মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
-আম্মু, অপু কিন্তু রাতে খেয়ে যাবে, ঠিক আছে ? আর ও মাংসে ঝাল একটু কম খায় !
তারপর আমাকে নিয়ে দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লো । আমি ওর ঘরের বিছানার উপর বসতে বসতে বললাম
-কি হয়েছে তোমার ? ঠিক আছো তুমি ?
-কেন ?
-না মানে কেমন জানি অপরিচিত লাগছে তোমাকে । যে মেয়েটা সারাটা সময় নিজের বাবা মায়ের ভয়ে অস্থির থাকতো আজকে সে তার প্রেমিক কে বাবা মায়ের সামনে দিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে এল । এতো সাহস পেল কোথায় সে ? কিভাবে ?
মিমি কিছু না বলে হাসলো । রহস্যময়ী হাসি । আমি আবার বললাম
-প্লিজ বল । কিছু তো বল !
-হুম ! কিছু তো একটা হয়েছে যা আমার ভয়কে ভেঙ্গে দিয়েছে ।
-কি হয়েছে ?

মিমি আরও কিছুক্ষন কোন কথা বলল না । পিসি চালুই ছিল ওখানে কি যেন করছিলো । আমি ওর ঘরটা দেখতে লাগলাম । বেশ চমৎকার করেই সাজানো ঘোছানো । ওর যা স্বভাব তেমনই আশা করেছিলাম । সামনে একটা বারান্দা রয়েছে । সেখানে একটা ফুলের গাছ আছে । আমি ওকে কদিন আগে দিয়েছিলাম !
আরও কিছুটা সময় পরে ও আমার দিকে না তাকিয়েই বলল
-আজকে ঐ ছেলের সাথে দেখা করতে গেছিলাম ।
-কোন ছেলের সাথে ? যার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ?
-হুম ।
-তারপর ?
-ছেলে না বলে লোক বললেই ভাল হত । আসলে আমি সারাটা জীবন এটাই জেনে এসেছি যে আমার বিয়ে বাবা মায়ের ইচ্ছে মতই হবে । আমার কোন কিছু বলার থাকবে না । তারা যেখানে বিয়ে দিবে আমার বিয়ে সেখানেই হবে । কিন্তু লোকটা কে দেখার পর আমার মাথা ঘুরে গেল । এমন রাগ অনুভব করলাম যে নিজের কাছে নিজেই অবাক হয়ে গেলাম ।

আমি চুপচাপ শুনে যাচ্ছি মিমির কথা । কিছুটা অবিশ্বাস নিয়েই । আমার শান্ত-শিষ্ট প্রেমিকা হঠাৎ করেই এমন বিদ্রোহী হল কিভাবে ? মান্নার শান্ত কেন মাস্তান মুভির মত হয়ে গেছে । কাউকে ভয় করছে না ।
মিমি বলেই চলেছে ।
-লোকটা বয়স আমার কাছে মনে হল ৪০ না হলেও কাছাকাছি তো হবেই । কথায় কথায় হঠাৎ আমি তাকে বললাম আপনার এতো বয়স হয়েছে গেছে এখনও বিয়ে করেন নি ।
লোকটা হাসলো একটু ! এমন বিশ্রী হাসি আমি এর আগে আমি আগে দেখেছি বলে মনে পড়লো না । সারা শরীর টা কেমন রিরি করে উঠলো ! লোকটা বলল
-কাজের চাপে আর সময় হয়ে ওঠে নি !
আমি হাসলাম । বললাম
-আপনাকে দেখে তো তেমন মনে হচ্ছে না ! সমস্যা মনে হচ্ছে !
লোকটার চেহারা মুহুর্তেই কেমন হয়ে গেল । আমি বিন্দু মাত্র না থেমে বললাম
-হয় আপনার আগে বিয়ে হয়েছে, আর নয়তো আপনি ........ কথাটা শেষ করলাম না !
লোকটা রেগে উঠলো তখন ।
-হোয়াট ? কিকিকি বললে তুমি ?
-অথবা দুটোই ! আপনারট বিয়ে হয়েছিল তারপর ঐ কারনে আপনার বউ আপনাকে ছেড়ে গেছে !

যদিও আমি এসবের কিছুই জানি না । আমার কেবল মনে হচ্ছে এই লোক কে আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না । কোন ভাবেই না । মনে যা আসে তাই বলে বলেছি কোন কিছু না ভেবেই । কিন্তু মনে হচ্ছিলো যে লেগে গেছে ।
দেখলাম লোকটার চেহারা রাগে নীল হয়ে গেছে । তোতলাতে তোতলাতে আরও কিছু বলল আমি তখনই শিওর হয়ে গেলাম যে আমার ধারনা মোটেই ভুল না । আমি যা বলেছি সব মিলে গেছে ।
-তারপর ?
-তারপর আর কি, লোকটা উঠে চলে গেল । বিল পর্যন্ত দিয়ে গেল না ।
-তোমার চিন্তা লাগছিলো না । বাসায় কি বলবে ?
-সত্যি বলতে কি আসলেই লাগছিলো না । বাসায় এসে আম্মুতো পারলে আমাকে খেয়ে ফেলে । আমি শান্ত কন্ঠে মাকে বললাম ছোট খালা কি তোমাকে বলেছে যে ছেলের আগে একবার বিয়ে হয়েছিল ? বিয়েটা আমার ছোট খালা এনেছিল ! তাই তো মায়ের এতো আগ্রহ ছিল । মায়ের মুখ দেখেই বুঝতে পারলাম যে বলে নি । আম্মু তখনই ফোন দিলো । আমি আর বাবা দুজনেই তখন তার সামনে দাড়িয়ে । ফোনে আম্মু কথা বলছে । তার চেহারা দেখেই বুঝতে পারছিলাম যে ছোট খেলা আগে বলে নি কিন্তু এখন স্বীকার করেছে ।
আমি শান্ত কন্ঠে আম্মুকে বললাম বাহ খুব ভাল । আমার খুব ভরশা ছিল যে তোমরা আমার খুব ভাল জায়গায় বিয়ে দিবে । এই হচ্ছে তার নমুনা । তা খালা এটা বলে নি যে ছেলে নংপুশক । তার প্রথম স্ত্রী তাকে এই জন্য ছেড়ে চলে গেছে ।

আম্মু আর বাবা দুজনেই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো । দুজনের চোখেই অবিশ্বাস । আমি যে তাদের সামনে এমন কথা বলবো সেটা তারা আসলেই বিশ্বাস করতে পারছিলো না !


রাতে খাওয়ার সময় আসলেই আমি একটু অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম । টেবিলের দুই মাথায় মিমির বাবা আর মা গম্ভীর মুখে বসে আছে আর মিমি আর আমি পাশাপাশি বসেছি । ও আমার সাথে টুকটাক কথা বলছে । ওর পাশে যে ওর বাবা মা বসে আছে সেটা যেন ওর লক্ষই নেই ।

আমি সেদিনের মত ভেবেছিলাম যে মিমির কার্য কলাপ থেমে যাবে । কিন্তু তখনও বেশ খানিকটা বাকি ছিল । আমার খাওয়া তখন অর্ধেকের মত হয়েছে । মিমিরও তাই । মিমি ওর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল
-বাবা তোমরা কি আবারও আমার জন্য ছেলে দেখতে শুরু করবে কাল থেকে ?
ওর বাবার মুখ দেখে কিছু বোঝা গেল না । তিনি গম্ভীর মুখে খেয়েই চলেছেন । মিমি বলল
-আমি চাই না তোমরা এই কাজ টা কর !
এবার সম্ভবত মিমির মা আর চুপ থাকতে পারলো না ! মিমির দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার বড় সাহস হয়েছে মনে হচ্ছে । তুমি কি বলতে চাও !
-মিমি বলল
-বলতে চাচ্ছি যে তোমাদের উপর ভরশা করে আমি ভুল করেছিলাম । তোমার একটা আধবড়ো অক্ষম ছেলে আমার জন্য খুজে এনেছো
-মিমি !
এবার কথা বলল মিমির বাবা !
-তুমি কিন্তু আসলেই সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছো ?
আমি ভেবেছিলাম মিমি মনে হয় চুপ করে যাবে । কিন্তু কোথায় কি !
মিমি যেন বোমা ফাটালো । ওর কন্ঠ শুন কেবল আমিই না ওর বাবা আর মা দুজনেই চমকে উঠলো । মিমি যে এভাবে কথা বলতে পারে সেটা আমার জানা ছিল না । সম্ভবত ওর বাবা মাও জানতো না !
-সীমা ছাড়াবো না ? তুমি বল জন্মের পর থেকে কোন কথাটা তোমাদের শুনি নাই । তোমরা যেভাবে বলেছো যা বলেছো সব শুনেছি তার বদলে তোমরা কি করলে ? কোথা থেকে একটা বুড়োকে ধরে আনলে আমার সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য । বল তুমি
এবার ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি তোমার বোন কে এই বাড়ির আসে পাশে আসতে মানা করে দিবা । সত্যি যদি তাকে এই বাড়ির আসে পাশে দেখি তাহলে দরজার হুক দিয়ে তার মাথা আমি ফাটিয়ে দেব বলে দিলাম ।
দুজন তখনও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মিমির দিকে । কি বলবে কিংবা বলা উচিৎ হবে কি না তারা বুঝতে পারছে না !
আমি মিমির দিকে তাকিয়ে বললাম
-মিমি ! খাওয়াটা শেষ কর । এখন আর এসব বলে কি লাভ । বিয়ে তো হয় নাই তাই না ?

মিমি আমার দিকে একটু তাকালো । তারপর আবারও ওর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল
-আর আমার বিয়ে নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না । এই অপুকে দেখছো না, একে আমি বিয়ে করবো ঠিক করেছি । তোমরা যেমন ছেলে চাও সেসব গুন ওর ভেতরে আছে ।

দুজনে এবার আর অত বেশি অবাক হলেন না । কেবল আমার দিকে এক সাথে তাকালেন । তারা হয়তো আগে থেকেই টের পেয়েছিলেন । মিমির বাবা চোখে কেমন যে একটু অসহায়ত্ব দেখতে পেলাম । আমি কোন দিকে তাকাবো ঠিক বুঝতে পারলাম না । এই মেয়ের আজকে কি হয়েছে কে জানে । এমন কেন করছে ?
খাওয়া শেষ করলাম । রাত ১০ টার দিকে যখন ওদের বাসা থেকে বিদায় নিয়ে হলাম তখনও মিমি আমাকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে এল । যাওয়ার আগে বললাম
-তোমার কি হয়েছে বলতো ?
-জানি না ! খুব রাগ হচ্ছিলো সকাল থেকে । তবে একখন একটু ভাল লাগছে ।
-তোমাকে খুব অচেনা লাগছে ।
-ভাল দিক দিয়ে নাকি খারাপ ?
-ভাল । অবশ্যই !
-খুশি হয়েছো তো ?
-হুম ! সাহসী প্রেমিকা । তা এখন রাতের বেলা ফোন দেওয়া যাবে তো ?
-হুম ! দেখতেই পাচ্ছো ?
-হাত ধরা যাবে ?
-যাবে ।
-আর ....
-আর ?


আর বলতে গিয়েই আমি চট করে ওর ঠোটে একটা চুম খেলাম টুপ করে, ওর বোঝার আগেই ।
ও আজকে এতো এতো সাহসের কাজ করলো আমিও একটু করি না হয় ।

মিমি কেবল হাসলো ! কিছু বলল না । আমার শান্ত প্রেমিকা আসলেই একদিনে বেশি সাহসী হয়ে উঠেছে । সামনের দিন গুলোতে সাবধানে থাকতে হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪০
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×