বাবা আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার জানতে চাইল
-কি করেছিস ?
আমি ক্ষীণ গলায় বললাম
-বাবা বিয়ে করেছি !
-কি করেছিস ?
আরে আপনি আব্বা হয়েছেন তাই বলে এই কথা বারবার হুংকার দিয়ে কেন বলবেন ? আর যতবারই জানতে চান উত্তর টা তো আর বদলে যাবে না ! ঘন্টা খানেক আগে যাকে বিয়ে করেছি সে আর বউ থেকে আবার আমার গার্লফ্রেন্ড হয়ে যাবে না ! আমার বউ বউই থাকবে !
একলাখ দেন মোহর দিয়া বিয়ে করেছি !
আমি বাবার দিকে তাকিয়ে আছি চুপ করে । বাবা নিজের মুখটা রক্ত বর্ণ করার চেষ্টা করছেন কিন্তু একটু সময় লাগছে । এই ফাঁকে নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর মুখ টা শুকিয়ে এতুটুকু হয়ে গেছে ! আসলে বাবার চিৎকার চেঁচামিচির অভ্যাসের সাথে ও খুব একটা পরিচিত নয় তো তাই একটু ভয় পেয়েছে মনে হয় !
বাবা মুখ লাল করে বললেন
-তুই এক্ষুনি বাসা থেকে বের হয়ে যা !
আমি খুব বেশি চিন্তিত হলাম না ! বাবা দিনে দুতিন বার আমাকে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলে !
তুই এটা কেন করলি ? এক্ষুনি বাসা থেকে বের হও !
ওটা কেন করলি ? বের বলছি বাসা থেকে !
এসএসসি পরীক্ষায় সবাই এ প্লাস পেয়েছে আমি পাই নি বলে আমাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বললেন । সন্ধার দিকে নিজেই মিষ্টি কিনে মানুষের বাসাতে পাঠানো শুরু করলেন ! তখন অবশ্য এপ্লাস পাওয়া এতো সহজ ছিল না ! আবার আমি কেন এ প্লাস পায় নি এই জন্য আমার মন খারাপ এই কথাও আলোচনা করতে লাগলো ! ছোট খাটো সব বিষয়তেই উনার প্রথম কথা হচ্ছে আমার বাসা তুই বেরিয়ে যা !
আমি বললাম
-নিশিকে কি নিয়ে যাবো নাকি রেখে যাবো ?
বাবা আবারও হুংকার দিয়ে বলল
-তোর বউ তুই রেখে যাবি মানে ? নিজে নিজে বিয়ে করেছি এখন বউকে নিয়ে নিজে নিজে থাক ! আমার বাসায় জায়গা হবে না !
নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ও প্রায় কেঁদে ফেলেছে । এখনও চোখ দিয়ে পানি বের হয় নি তবে যে কোন সময় বের হয়ে যাবে । আসলে আমার বাবার চিৎকার চেঁচামিটি আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি আমাদের কিছু একটা মনে হয় না কিন্তু নিশি তো প্রতিদিন দেখে না !
-রাহেলা ! রাহেলা !
বাবা মায়ের নাম ধরে ডাক দিল ! ততক্ষনে মা পিছনে এসে আমার সাথে চোখে চোখে কথা শুরু করে দিয়েছে ! মা নিশির দিকে চোখ ইশারা করে জানতে চাইলেন কে ?
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বাবা বলল
-তোমার ছেলে !! তোমার ছেলে একা একা বিয়ে করে নিয়ে এসেছে ! বুঝেছো ?
মা সামনে এল ! আমার আর নিশির দিকে চোখ বুলিয়ে বলল
-সত্যি নাকি ?
আমি ক্ষীণ গলায় বললাম
-হুম !
আমার হুম শুনে বাবা আবার হুংকার দিয়ে বলল
-হুম কি রে আহম্মক ! এক পয়সা ইনকাম করার মুরদ নেই বিয়ে করে আবার বলে হুম ! তোর এই বউ আমি আমার ঘরে রাখবো না ! তুই এখনই বের হয়ে যাবি আমার বাসা থেকে ! এখনই বের হ !
আমাকে বের হয়ে যেতে বলে বাবা নিজের বের হয়ে গেলেন বাসা থেকে ! এরকম অনেক বারই হয় ! বাবা হঠাৎ করে রেগে গেলে বাসা থেকে বের হয়ে যান ! অবশ্য বাবার রাগ খুব বেশিক্ষন থাকবে না !
বাবার চলে যাওয়ার পরে আম্মার আমাদের দুজনের সামনে এসে দাড়াল !
খানিকটা বিশ্ময় নিয়ে বলল
-তুই সত্যি বিয়ে করেছিস ?
-হুম !
-কোন কিছু না ভেবে একেবারে বিয়ে করে ফেললি ? আমাদের কথা একবার ভাবলি না ?
-তোমার কথা ভাবি বলেই তো বিয়ে করলাম ! তুমি সারা দিন বাসায় একা একা থাকো !
-তাই !
-তা নয় তো কি ? তোমার কথা চিন্তা করেই তো কাজ টা করে ফেললাম !
আমার কথা শুনে মা এবার নিশির দিকে এগিয়ে গেল ! বেচারী আসলেই একটু ভয়ে ভয়ে আছে । বিশেষ করে বাবা চিৎকারে একেবারে চুপসে গেছে !
মা নিশির কাছে গিয়ে বলল
-এই তোমার নাম কি ?
-জি ! আরিসা বিনতে চৌধুরী !
-আমি তো স্কুল টিচার না ! ভাল নাম বলতে হবে না ! ডাক নাম কি ?
-নিশি !
-বাবার নাম !
-পিন্টু !
-পিন্টু ?
-আপনি না বললেন ভাল নাম না বলতে ! ডাক নাম বললাম !
মা কিছু বলতে গিয়ে হেসে ফেলল !
-আচ্ছা ! ভাল নাম বলল তার
-রকিবুদ্দিন চৌধুরী !
দেখলাম মার হাসি আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেল ! হাসি মুছে মা বলল
-তুমি ঐ পাড়ার রকিবুদ্দিনের মেয়ে ?
নিশি বাচ্চা মেয়েদের মত করে মাথা নেড়ে বলল
-জি !
মা এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুই আর মানুষ পেলি না বিয়ে করার জন্য ?
আমি কিছু না বলে কেবল হাসলাম !
আসলেই আমি আর মানুষ খুজে পাইনি বিয়ে করার ! সত্য কথা বলতে কি বাবা এখনও জানে না আমি রকিব আঙ্কেলের মেয়েকে বিয়ে করেছি । জানলে কি করবে কে জানে ?
বাবা দুনিয়ার সব মানুষ কে পছন্দ করে কেবল রকিব উদ্দিন চৌধুরী মানে আমার সদ্য হওয়া স্বশুর মশাইকে একদম দেখতে পারে না দুই চোক্ষে ! তার সাথে একটা নিরব যুদ্ধ সব সময় লেগেই আছে আমার বাবার ! তিনিও কম যান না ! বরং আমার বাবা থেকে এক কাঠি উপরে !
-এই তোমার বাবা যদি আমাকে বাসা থেকে বের করে দেয় তখন ?
-তখন আর কি । তখন তোমাদের বাসায় গিয়ে উঠবো !
-বাবাও যদি তাড়িয়ে দেয় ?
-তাহলে গাছ তলায় গিয়ে থাকবো ?
-গাছ তলায় ?
-হুম ! কে পারবে না ?
নিশির মুখ দেখে মনে হল না সে গাছ তলায় থাকতে পারবে ! তবে যাক আপাতত নিজের ঘরে বসে আছে আমি আর নিশি ! মা আর বেশি কিছু জানতে চায় নি ! আমাদের কে ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে ! কেবল বলেছে বাবার সামনে যেন এই কথাটা মুখে না আনি !
এখন আমি আর নিশি কথা বলছি ! বাবা কখন আসবে এবং নিশি যে রকিব উদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে এটা জানতে পেরে কি করবে কে জানে ?
এই সব ভাবছি এমন সময় আবারও বাবার হুংকার শুনতে পেলাম ! আমার নাম ধরে ডাকছে ! নিশিকে রেখেই হাজির হলাম বসার ঘরে ! গিয়ে দেখি টবিলের উপর বেশ সাইজের এক প্যাকেট মিষ্টি ! নিশ্চই বাবা এনেছে ! আগেই বলেছি বাবার মন এমনই ! খালি খালিই চিৎকার করেন ! কিন্তু আমি যাই করি না কেন একটু পরেও সেটা মেনে নেন ! অনেক টা এই ভরশায় নিশিকে বিয়ে করে ফেলেছি !
অবশ্য বিয়ে না করে উপায়ও ছিল না ! আজকে বিকেলে নিশিকে দেখতে আসার কথা ছিল ! আর আমারও এখনও বছর খানেক লাগবে পড়ালেখা শেষ হতে ! তার উপর বাবার কাছে তো কোন দিন বলার উপায় নেই যে আমি রকিবুদ্দিন সাহেবের মেয়ে কে বিয়ে করতে চাই !
কিন্তু এখন তার মুখ গম্ভীর ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-শুনলাম ওপাড়ার রকিব্বার মেয়ে কার সাথে যেন পালিয়ে গেছে ! আজ নাকি মেয়েকে দেখতে আসার কথা ছিল ! মিষ্টি কিনতে গিয়ে কানে এল কথা টা ! তোর বউ কি রকিবের মেয়ে ?
খাইছে রে ! এখন কি বলি ? সত্য কথা বলে দিবো ?
যা আছে কপালে ! বললাম
-হুম !
-তোর বউকে ডাক !
আমি ডাক দিতে গিয়ে দেখি নিশি দরজার কাছে চলে এসেছে ! আবারও তার মুখ টা শুকিয়ে গেছে ! আমি একটু হেসে অভয় দেওয়ার চেষ্টা করলাম ! তারপর নিশিকে নিয়ে নিয়ে গেলাম বাবার সামনে !
-তোমার বাবার নাম রকিবুদ্দিন ?
বাবার জেরা শুরু ! তবে একটা ব্যাপার দেখলাম যে বাবার মুখে সেই রাগ কিংবা কাঠিন্যের সুর নেই !
-ব্যাপার টা কি ?
নিশির আগের মত মাথা ঝাকিয়ে বলল
-জি !
-তুমি এটা জানতে যে তোমার বাবার সাথে আমার দ-কুমড়া সম্পর্ক ?
-জি !
-তার পরেও তুমি আমার ছেলেকে ভালবাসো ?
-জি !
-এখন যদি তোমার বাবা তোমাকে নিতে আসে ? যাবে ?
-জি না !
-ঠিক তো ?
-জি !
-তোমার বয়স কত ?
-জি ?
আমিও একটু অবাক হলাম ! নতুন বউয়ের বয়স কেউ আবার জানতে চায় ? তারপর হঠাৎ আমার কাছে জিনিস টা একটা পরিস্কার হয়ে উঠলো যে বাবা কেন বয়স জানতে চাচ্ছে ! আমি তাড়াতাড়ি বললাম
-বাবা ওর বয়স এখন একুশ চলছে !
-গাধা তোর কাছে জানতে চেয়েছি ! আর আসল বয়স না, সার্টিফিকেইটের কথা বলছি ? সার্টিফিকেইটে কত ?
-ঐ টাতে উনিশ বছর !
-ঠিক তো ?
-হুম !
দেখতে পেলাম বাবার মুখে একটু হাসি ফুটলো ! কিছু একটা চিন্তা করছে যেন সে খুশি হয়ে উঠেছে ! মা তখনই আমাকে ইশারা করলো ! প্রথম বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারলাম আসলে মা নিশিকে সালাম করতে বলছে ! আমি বুঝতে না বুঝতেই দেখি নিশি ঠিকই বুঝে নিয়েছে ! মাথায় কাপড় দিয়ে আব্বাকে সালাম করে ফেলল !
-আরে ! ঠিক আছে ! ঠিক আছে ।
এই বলে বাবা পকেট থেকে একটা এক হাজার টাকার নোট নিশির হাতে তুলে দিল !
অর্থাৎ মোটামুটি ঝামেলা শেষ কেবল নিশির আব্বার দিক টা ছাড়া !
আব্বা মনে মনে কি বুদ্ধি করতে লাগলো কে জানে ! আমি নিশি কে নিয়ে আবার ঘরে চলে এলাম ! ওর মন টা একটু খারাপ কারন আমার বাসায় সমস্যা সমাধান হয়ে গেলেও ওর বাসায় এখনও সমস্যা সমাধান হয় নি ।
আসলে বাবা এতো স হজে কেন রাজি হয়ে গেল আমি খানিকটা বুঝতে পারছি ! আমার শ্বশুর মশাইয়ের সাথে তার যে একটা দা-কুমড়ার সম্পর্ক রয়েছে সেটাতে এখন বাবা মনে হয় এক ধাপ এগিয়ে থাকবে ! তার বাসার মেয়ে এখন আব্বার ছেলের বউ, অর্থাৎ রকিবুদ্দিনের মেয়ে হয়ে গেল ফরিদ আহমেদের বেটার বউ ! খুশি তো হওয়ারই কথা !
নিশি একটু চিন্তিতই ওর ফ্যামিলির জন্য ! মোবাইল ফোন টা আপাতত বন্ধ রেখেছে ! তবুও বাসার জন্য তো চিন্তা হতেই পারে ! সেই সকাল বেলা বের হয়েছে এখনও বাসায় ফেরে নি ! আর তার উপর বাবার কাছ থেকেই শুনলাম যে আমাদের বিয়েটা নাকি জানাজানি হয়ে গেছে ! এতো জলদি কেমনে জানলো কে জানে ? অবশ্য আমরা খুব দুরে গিয়ে বিয়ে করি নি ! কাছেই একটা কাজী অফিসে বিয়ে করেছি !
সন্ধ্যার সময় আরেকবার চিৎকার চেঁচামিচি দেখা দিল আমাদের বাসায় ! এবার নিশির বাবা মানে রকিব আঙ্কেল এসে হাজির ! আমি আর নিশি নিজের ঘরে বসে আছে চুপ করে । এদিকে নিশির বাবার চিৎকার শুনতে পারছি পরিস্কার !
-শুনো ফরিদ আমার মেয়েকে দিয়ে দাও বলছি !
নিশির বাবার উত্তেজিত গলা শুনতে পাচ্ছি ! কিন্তু সেই তুলনায় আব্বার গলার স্বর অনেক মধুর ! বাবা মধুর গলায় বললেন
-তোমার মেয়ে ? আমার বাড়িতে ?
-হ্যা ! আমি খুব ভাল করেই জানি নিশি তোমার বাড়িতে আছে !
কিছুক্ষন নিরবতা !
তারপর আব্বার গলা শোনা গেল
-নিশি নামের একটা মেয়ে আমার বাসায় আছে তবে সে তো তোমার মেয়ে নয় ! আমার ছেলের বউ !
-দেখো ভাল হবে না বলতেছি !
-না ভাল হলে আমার কিছু করার নেই ! তবে আমার ছেলের বউ আমার খুব পছন্দ হয়েছে ! খুব মিষ্টি চেহারা ! তবে আমি বুঝতেই পারছি না, একটা আহম্মকের ঘরে এতো সুন্দর একটা মেয়ে হয় কিভাবে ?
পাশ দিয়ে নিশি বলল
-এই তোমার বাবা আমার বাবাকে আহম্মক কেন বলল ?
-আরে আমি কিভাবে বলবো ? আমার কথা মত উনি চলে নাকি ? চুপ করে শুনো !
ঘরের ওপাশ থেকে আবার চিৎকার শোনা গেল !
-ফরিদ ! আমি কিন্তু পুলিশ নিয়ে আসবো ! এই বলে দিলাম ! তোমাদের বাপ বেটা কে আমি জেলের ভাত খাওয়াবো !
-হা ! হা ! হা ! যাও যাও ! পুলিশ নিয়ে এসো ! আমার ছেলের বউ এখন সাবালিকা ! আমার কাছে প্রমান আছে ! পুলিশ আমার কিচ্ছু করতে পারবে না ! আর যদি পুলিশ নিয়েই আসো উল্টো তুমি কেস খেয়ে যেতে পারো ! আমি যতদুর জানি তুমি তোমার মেয়েকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলে ! আজকে ছেলে পক্ষের আসার কথা ছিল !
আবারও কিছুক্ষন কোন কথা হল না ! আমি আর নিশি কান পেতে রয়েছি কি হয় শোনার জন্য ! এর মাঝেই এক মহিলার গলার স্বর শুনতে পেলাম !
-সরো তো ! এতো কথা আমি শুনতে চাই না ! আমি আমার মেয়েকে দেখবো !
নিশি স্বর শুনে বলল
-আম্মু ! আম্মু চলে এসেছে !
-খাইছে ! এখন ? এখন যদি তোমার বাবা মা আর আমার বাবা মা মারামারি শুরু করে ?
আমরা দুজন একটা মারামারির আশংকা নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম ! তখনই আমার মায়ের আওয়াজ পেলাম ! আমার মা বলল
-আপনাদের ঝগড়া শেষ হয়েছে ? দেখুন আপনাদের দুজনের অযথা রেশারেশির জন্য আমি আমার ছেলের পছন্দকে গলা টিপে মেরে ফেলতে দেবো না ! দেখুন ভাই সাহবে নিশিকে আমাদের অনেক পছন্দ হয়েছে আর আমার অপুকেও কিন্তু আপনার অপছন্দ হবে না !
নিশির বাবা বলল !
-কিন্তু ছেলে তো কিছু করে না ! আমি এমন ছেলের কাছে আমার মেয়ে দিবো না !
আবার বাবার কন্ঠস্বর শোনা গেল !
-বিয়ে দিবো না কি রে ! বিয়ে তো অলরেডি হয়ে গেছে ! তোমার দেওয়া না দেওয়ার কেয়ার কে করছে ?
মা বলল
-আপনি চুপ করেন ! দেখুন ভাই, এখন কিছু করে না সত্য কিন্তু সামনে করবে ! আপা আপনি কি চান বলেন ? মেয়ের সুখ চান নাকি অন্য কিছু ! শান্তি পূর্ণ ভাবে আমরা এটার সমাধান করতে পারি আবার ঝামেলার ভিতর দিয়ে যেতে পারি !
-কিন্তু ?
-এখন কিন্তু করে কি লাভ আছে ? যা হবার হয়ে গেছে ! এটাকে মেনে নেওয়া টা কি ভাল নয় ? তারপর উপর এই উছিলা দিয়ে উনাদের দুজনের ঝগড়া টা অবসান হবে ! এটা কি আপনি চান না ?
আরও কথা বার্তা হতে লাগলো ! আমি নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ও কি যেন ভাবছে !
-এই কি ভাবছো ?
-দেখো না একটু এডভেঞ্চার হবে ভেবে তোমার সাথে পালিয়ে বিয়ে করলাম এখন দেখি সবাই মেনে নিচ্ছে !
নিশির মুখে হাসি ফুটছে ! ও মোটামুটি ভেবে নিয়েছে যে সব কিছু ঠিক হয়ে যাচ্ছে ! কিন্তু একটু আগেও ওর মুখ ছিল শুকনো !
বললাম
-তাহলে চল এখন এখান থেকে পালিয়ে যাই !
-কোথায় যাবা ?
-আমার কাছে হাজার পাঁচেক টাকা আছে জমানো ! চল যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাই ! টাকা শেষ হলে আবার ফিরে আসবো !
তাকিয়ে দেখি নিশির চোখ চকচক করছে উত্তেজনায় !
-চল !
-সত্যি ?
-হুম সত্যি ?
তখনই শুনতে পেলাম আব্বা আমাদের দুজন কে নাম ধরে ডাকছে বসার ঘরে যাওয়ার জন্য !
-যাবে না ?
-চল !
আমরা দুজন উঠে দাড়ালাম ! তবে বসার ঘরে যাওয়ার জন্য না !
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৫৮