দুইটি ছোট গল্পঃ রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
গল্পঃ এক
-দোস্ত পার্টি দে কাল !
-কেন পার্টি দিমু ক্যান ?
-হালায় কয় কি ? সিঙ্গেল থেকে মিঙ্গেল হইলা আর পার্টি দিবা না ?
-আরে আগে সিঙ্গেল ছিলাম খরচপাতি কম হইতো এখন মিঙ্গেল হইছি খরচ পাতি বাড়ছে ! কুন হিসাবে তোগো খাওয়াই বলতো ?
ফোনের ওপাশ থেকে দেখালম মিনার কিছুক্ষন কথা বললো না !
আমি আবার বললাম
-তার উপরে আমি নিজে নিজে খুউজা একটা মাইয়া পাইছি তুই কোন হেল্প করছোস যে তোরে খাওয়ামু ?
মিনার এবার কথা হয় না ! আমি মনে মনে হাসি ! খানিক্ষন বাদে মিনার মিনমিন করে বলল
-তাই বলে খাওয়াবি না ! এটা কোন কথা ?
-আচ্ছা যা ! কালকে চা খাওয়াবো নে !
-চা !
-বেশি প্যাঁচাল করলে এটাও খাওয়াবো না !
-ওকে মামা ! চাই সই ! সাথে একটা লাইট হলেই চলবে ! হবে না মামা ?
-আচ্ছা যা !
আমি মনে মনে হেসে ফোন রেখে দেই ! এই নিয়ে এগারো জন ফোন দিল আমাকে খাওয়ানো নিয়ে ! ফেসবুকে রিলেশনশীপ স্টাটাস চেঞ্জ করেছি একঘন্টাও হয় নি তার ভিতরই এই কাজ কারবার ! আর তার উপর ফেসবুক ইনবক্সে তো আছে ! সবার মনে কত রকম জিজ্ঞসা !
কবে হল ?
মেয়েটা কে ?
দেখতে কেমন ?
কোন ক্লাসে পড়ে ?
আরও কত রকম প্রশ্ন ! আমি কেবল স্মাইলি দিয়ে এড়িয়ে যাই ! আর মনে মনে হাসি ! আমার গার্লফ্রেন্ড নিয়ে মানুষের কত আগ্রহ দেখাচ্ছে ! বেটারা নিজেদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে এতো আগ্রহ দেখায় কি না কে জানে ?
যাক যখন মোটামুটি প্রশ্নের ঝড় থেমে এল তখন প্রায় তিনটা বেজে গেছে রাত ! আমি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম ! কাল সাকলে ক্লাস আছে !
ঠিক তখনই ফেসবুক মেসেজ বাটন টা লাল হয়ে উঠলো !
আবার কে মেসেজ পাঠালো ! এখন আর উত্তর দিতে মন চাইছিল না ! কিন্তু কৌতুহল নিয়ে বাটনে চাপ দিলাম !
আদিবা মেসেজ পাঠিয়েছে ! অন্য কেউ হলে হয়তো আর ওপেন করতাম না কিন্তু আদিবা তন্বীর মেসেজ বলে মেসেজ উইন্ডোটা ওপেন করলাম !
ওপেন করতেই একটু ধাক্কার মত খেতে হল আদিবার মেসেজ দেখে ।
আদিবা লিখেছে
-“বীচ” টা কে?
আমি জানতাম আর কারও সমস্যা না হলেও এই মেয়েটার সমস্যা হবেই ! সে উল্টো কমেন্ট করবেই !
যতদিন ধরে এই মেয়েটাকে চিনি আমি যাই লিখেছি কি না এই মেয়েটা আমার বিরোধিতা করেছে ! সব সময় গায়ে পরে এসে ঝগড়া করেছে ! কাজ নেই কাম নেই সারাদিন আমার সাথে তর্ক করে বেড়ায় !
একদিন ইনবক্সে জানতে চাইলাম কারন টা ! আদিবা বলল তার কেউ নেই তো তাই সে আমার সাথে ঝগড়া করে সুখ পায় ! আমি অবশ্য আর কথা বাড়াই নি ! কিন্তু আজকে রিলেশনশীপ স্টাটাস বদলানোর পরে মেয়েটা একটা কমেন্টও করে নি ! ওর কমেন্ট খানিকটা মিস করছিলাম !
যাই হোক এখন এই কমেন্টের রিপ্লাই দিয়ে নেই ! লিখলাম !
-কোন বীচ? “সী-বীচ” আমার অনেক পছন্দের জায়গা।
-আপনি কথা ঘুরাবেন না। কথা ঘুরালে আমার অসহ্য লাগে।
-কথা কি চাকা যে ঘুরবে?
-ধূর! সত্যি করে বলেন মেয়েটা কে?
আমি না বোঝার ভান করলাম ! কথা না বোঝার ভান করে কমেন্ট করাটা বেশ মজার ! বললাম
-কোন মেয়ে?
-যার সাথে আপনার রিলেশন হয়েছে।
-আমার সাথে কোন সমুদ্র সৈকতের রিলেশন হয়নি।
-আপনি আমার সাথে ফাইজলামি করেন?
-মোটেও না। আই এম সিরিয়াস।
কিছুক্ষন বিরতি । মনে হচ্ছে আদিবা কিছু একটা ভাবছে ! কি লিখবে ঠিক খুজে পাচ্ছে না ! আমি অপেক্ষার করতে লাগলাম আর ভাবতে লাগলাম এর পর মেয়েটা কি লিখতে পারে !
আদিবার সাথে যখন আমার স্টাটাসে কথা বার্তা চলে তখন তর্কে না পেরে হঠাৎই মেয়েটা বলে আপনি অসহ্য একটা মানুষ ! কি করে আপনার সাথে আমি কথা বলি আমি নিজেই ভেবে পাই না ! এখনও তেমন কিছু বলবে কি না আমি ঠিক বুঝতে পারছি না !
আমার মনের কথা মনেই রয়ে গেল ! আদিবা লিখলো
-আপনি কি জানেন আপনি খুব অসহ্য একটা মানুষ?
-হ্যাঁ জানি।
-কিন্তু সমস্যাটা কি জানেন? আপনি এত অসহ্য হবার পরও আপনাকে আমি ভালোবাসি।
এবার আমি একটু ধাক্কার মত খেলাম ! আদিবার সাথে অনেকই কথা হয়েছে ! অনেক তর্ক হয়েছে কথার মাঝ পর্যায়ে ও রাগ করে চলে গেছে, ফিরে এসেছে একটু পরেই কিন্তু এই কথাটা সে কোন দিন বলে নি ! আমি এবার কি বলবো ঠিক বুঝতে পারলাম না ! কি বলা যায় ! কি বলা যায় ?
কিছু না ভেবে লিখলাম
-আরে কি আশ্চার্য, আমিও আমাকে খুব ভালোবাসি।
-আপনি আসলেই একটা অসহ্য। আপনি আমাকে আর নক দিবেন না।
-আমি আবার কখন নক দিলাম?
-ভুল হয়ে গেছে আমার। আমি আর জীবনেও আপনাকে নক দিব না। আই হেইট ইয়ু।
-উক্কে।
মনে হল মেয়েটা রেগে গেছে । আমার মনে ক্ষীন সন্দেহ হল মেয়েটা হয়তো কাঁদছে ! কারনে অনেকক্ষন ধরে কোন কথা নেই ! চ্যাট বক্সে দেখা যাচ্ছে আদিবা তন্বী ইজ টাইপিং, আবার চুপ ! একটু পরে আবার টাইপিং আবার চুপ ! মেয়েটা কিছু লিখছে আবার মুছে দিচ্ছে !
বেশ কিছুক্ষন পরেই দেখলাম মেয়েটা লিখলো
-আপনি আমার সাথে ফান করেন?
-একটুও না।
-চুপ আর একটা কথাও না। "OTHERWISE I WILL KILL U"
মেয়েটা আসলেই রেগে গেছে বোঝা যাচ্ছে ! আমি শান্তনা স্বরূপ কিছু বলতে যাবো তখনই দেখি মেয়েটার নামটা ব্লক হয়ে গেল !
তার মানে কি ?
মেয়েটা কি আমাকে ব্লক করে দিলো নাকি ?
নাহ ! এটা তো হবার কথা না ! আইডি ডিএকটিভ করে দিয়েছে !
আমার অন্য একটা আইডি দিয়ে খোজ করলাম ! নাহ ! ব্লক করে নি ! আইডি বন্ধ করে দিয়েছে !
যাক ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি চারটা বেজে গেছে । এখন না ঘুমালেই নয় !
ভেবেছিলাম জিনিসটা এখানেই শেষ হবে ! পরদিন ক্লাসের ফাঁকে মোবাইলে ফেসবুকে ঢুকেছি দেখি মেসেজ এসেছে !
আবারও আদিবা !
একটা মোবাইল নাম্বার দিয়ে নিচে লেখা
"আপনি যদি আমাকে এখনই ফোন না করেন তাহলে আমি আপনার ভার্সিটির গেটের কাছ দিয়ে যে বাস টা যাবে সেটার নিচে লাফ দিবো"
লাইনটা আরেকবার পড়লাম ! কি লেখা !
নাকি আমি ভুল দেখলাম ! এই মেয়ের সমস্যা কি ?
কি সর্বনাশ !
আমার ভার্সিটির গেটের সামনে কি করে ?
আমি তাড়াতাড়ি ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে ফোন দিলাম !
-হ্যালো !
কোন কথা নেই ! বুঝতে পারছি ওপাশে কেউ ফোন ধরেছে ! গাড়ির হর্নের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে কিন্তু কোন কথা শুনতে পাচ্ছি না !
আবারও বললাম
-হ্যালো !
হ্যালো হ্যালো বলতে বলতেই ভার্সিটির মেইন গেটের দিকে পা বাড়ালাম !
যখন পৌছালাম ততক্ষনে মেয়েটা একটা কথাও বলে নি ! আমিই কেবল হ্যালো হ্যালো করেছি !
গেটের কাছে গিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে আদিবা কে দেখতে পেলাম ! গেটের বাঁ দিকে দাড়িয়ে আছে ! আমার দিকে তাকিয়ে !
আমি কাছে গিয়ে দেখি মেয়েটার চোখ কেমন ফোলা ফোলা !
কেবল একটা ধমক দিয়ে বললাম
-পাগল নাকি তুমি ?
কোন কথা নাই !
-আমি সারা জীবনে অনেক বোকা মেয়ে দেখেছি তোমার মত গাধা মেয়ে দেখি নি !
-ভাল করেছেন ! এখন দেখেন ! আমি তো গাধাই ! গাধা না হলে কেউ এমন করে !
-আসলেই ! গাধা না হলে কেউ এমন করে না ! তবে তুমি গাধা না !
-তাহলে ?
-মহিলা গাধা !
আদিবার দিকে তাকিয়ে মনে হল এখনই ওর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়বে ! আমি ওর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ার আগেই ওকে ক্যাম্পাসের ভিতরে নিয়ে এলাম ! তারপর সোজা আমাদের ক্যান্টনে !
চায়ের ওর্ডার দিয়ে বসে আছি ! আদিবার সাথে টুকটাক কথা বলার চেষ্টা করছি , মেয়েটা মুখ গোমড়া করে বসে আছি । গতদিনের স্টাটাস যে একটা ফান ছিল এটা বলবো কি না বুঝতে পারছি না ! বলেই দেই !
বলতে যাবো তখনই পেছন থেকে মিনারের গলার আওয়াজ পেলাম !
আমার পিঠে থাবা দিয়ে বলল
-যাক ! শেষ পর্যন্ত !
আমি তাকিয়ে দেখি মিনার আদিবার দিকে তাকিয়ে বলল
-কি রিলেশনশীপে যাইতে পারলি না আর এখনই ঝগড়া বাধায়া দিলি !
তবে মামা আমি তো প্রথমে মনে করছিলাম তুমি আমাদের এপ্রিল ফুল বানাইতাছো যাক ভাবীরে নিয়া আসলা ভাল লাগলো !
তারপর আদিবার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি মিনার ! তুষারের সব থেকে কাছে বন্ধু ! এতো দিনে তুষার আপনার মত একটা মেয়ে পেয়েছে খুব ভাল লাগছে !
আদিবা কিছুটা সময় অবাক হয়ে মিনারের দিকে তাকিয়ে রইলো ! আমিও কিছুটা সময় তাকিয়ে রইলাম ! বেটা কি বুঝতাছে !
মিনার বলল
-আপনার মুখ দেখে মনে হচ্ছে তুষার কিছু বলেছে ! কোন চিন্তা করবেন না ! কেবল ওকে একটু টাইটে টাইটে রাখবেন । আর ওর ফেসবুক পাসওয়ার্ডটা নিয়ে নিবেন ! দেখবেন একদম আপনার বাধ্য হয়ে গেছে !
আবে শালা চুপ থাক ! কি করছিস ! একটা কথা বলবি না আর !
আমি আদিবার দিকে তাকিয়ে দেখি ও অদ্ভুদ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ! ঐ চোখের দৃষ্টি দেখে আমার কেন জানি ভয় ভয় করতে লাগলো !
পরিশিষ্টঃ
বাসে করে আদিবাকে বাসায় পৌছে দিতে যাচ্ছি ! আদিবা আমার বাঁ হাতটা ওর দুহাত দিয়ে ধরে রেখেছে শক্ত করে ! এতো সহজে ছাড়বে মনে মনে হচ্ছে না !
গল্প দুইঃ
নীলার কথাটা প্রথমে আমার ঠিক বিশ্বাস হল না ! মেয়েটা কি আমার সাথে ফান করছে নাকি ?
নাকি অন্য কিছু !
আমাকে চুপ থাকতে দেখে নীলা আবার বলল
-এতো ভাবছো কেন ? সবাইকে চমকে দিলে কেমন হবে বলতো ?
-না ! তা ঠিক আছে ! মানে .।
-কোন মানে টানে নেই । একবার ভাবো তো সবাই কেমন অবাক হবে ! ভেবেছো একবার ?
-তা অবশ্য ঠিক ! সবাই বেশ অবাক হবে !
অবাক তো আমি নিজেও হয়েছি এবং হচ্ছি ! অবাক হওয়ার মতই তো একটা বিষয় । হঠাৎ একজন যদি কেউ এসে বলে চল আমরা আমাদের রিলেশনশীপ স্টাটাস চেঞ্জ করে ফেলে সবাইকে অবাক করে দেই ! সবাইকে বোকা বানাই তাহলে একটু তো অবাক হওয়ারই কথা ! বিশেষ করে প্রস্তাবটা যদি আসে নীলার মত মানুষের কাছ থেকে !
বলতে গেলে নীলা আমাদের ক্লাসের সব থেকে আকর্ষনীয় মেয়েদের একজন ! বেশ কয়েকজন নীলার সাথে লাইন মারার চেষ্টা করেও পাত্তা পায় নি ! আমি অবশ্য চেষ্টা করি নি তার মানে এই নয় যে তাকে আমি পছন্দ করি না ! আসলে নীলার পেছনের এতো লম্বা লাইন দেখে ঠিক ইচ্ছে করে নি । নিজের পছন্দ টুকু নিজের কাছেই রেখে দিয়েছি ।
তবে ফেসবুক টা আসার পর থেকে ওর সাথে টুকটাক কথা বার্তা বলতাম ! তারপর দীর্ঘদিন এক সাথে পড়াশুনা করার সুবাধে কথা বার্তা হত সাধারন ক্লাস মেইট হিসাবে ! এর বেশি কিছু ছিল না ওর আমার সম্পর্ক !
কিন্তু আজকে একটু আগে যখন নীলা আমাকে নক করে বলল ওর পরিকল্পনার কথা সত্যি বলতে গেলে এটকু আনন্দই হল ! যাক মেয়েটা তো অন্য যে কাউকেই নিতে পারতো ! কিন্তু আমাকে নিয়েছে এই জন্য !
একদিনের জন্য নীলার বয়ফ্রেন্ড হতে খুব বেশি খারাপ লাগবে না ! সবাই এপ্রিল ফুল হয়ে যাবে !
রাত বারোটা বাজার পরপরই নীলা আমার সাথে রিলেশনশীপ স্টাটাস দিয়ে দিল ! বলতে গেলে আধা ঘন্টার ভিতরেই আমাদের পরিচিত সবাই একেবারে আমাদের দুজনকে চেপে ধরলো ! কমেন্ট করে ভাসিয়ে দিল বলতে গেলে ! সবার মনে একই জিজ্ঞাসা কবে হল । তলে তলে এতো দুর ! কেউ কেউ অবশ্য বললও যে আমরা সবাইকে এপ্রিল ফুল বানাচ্ছি !
হঠাৎই নীলা স্টাটাস দিল যে আমরা যে সবাইকে বোকা বানাচ্ছি না সেইটা কালকেই বোঝা যাবে ! নীলা সাথে সাথে আমাদের সবাইকে খাওয়াবে বলেই জানালো !
খাইছে এই এপ্রিল ফুল বানাতে গিয়ে দেখে পকেট থেকে বেশ বড় পরিমান অর্থ বের হয়ে যাবে দেখছি ! শেষে কি আমি নিজেই এপ্রিল ফুল হয়ে যাবো ?
একটু চিন্তিত হয়েও নীলাকে ফোন দিলাম ! বললাম
-ওটা কি ছিল ?
-কোন টা ?
-ঐ যে সবাই কে লাঞ্চ করানোর কথাটা ?
-ওটা সত্যি !
-সত্যি ?
-হ্যা ! ভাবলাম ব হুদিন পর সবার সাথে একটু আড্ডা হয়ে যাক ! কি বল !
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না ! নীলার সামনে টাকার কথাটা তুলতে কেমন একটা লজ্জা লাগলো ! যাক বেটা দেখা যাবে কালকে কি হয় !
আমি আসলেই ঠিক বুঝতে পারছিলাম না নীলা আসলে কি করতে চাচ্ছে আর কেনই বা করতে চাচ্ছে ! এটার তো কোন মানেই ! আমার মাথার ভিতর কিছু ঢুকছিল না ! একবার মনে হল হয়তো ওরা বান্ধবীরা মিলে আমাকে বোকা বানাবে ! কালকে যেহেতু এপ্রিল ফুল এই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ! পকেটে যদি ঠিক মত টাকা না থাকে তাহলে তো মান সম্মান থাকবে না ! আমি টাকার মোটামুটি ব্যাবস্থা করে ঘুমাতে গেলাম ! কালকে যা হবার হবে !
পরদিন আসলেই নীলা বেশ সেজে গুকে আসলো ক্যাম্পাসে ! ওকে দেখে কেমন জানি বুকের ভেতরে কেঁপে কেঁপে উঠলো ! তখনই কেবল মনে হল ইস আমাদের রিলেশন টা যদি সত্যি হত !
নীলা সোজাসুজি আমার কাছে এসে আমার হাতটা খুব সহজে ভাবে ধরলো ! এমন একটা ভাব যেন আমাদের কত দিনের সম্পর্ক ! তারপর আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলতে লাগলো যেন আমার সাথে ও প্রতিদিন এমন ভাবেই কথা বলে ! বুঝতে পারছিলাম আমাদের ক্লাসের প্রতিটা চোখ আমাদের দুজনের ওপর নিবদ্ধ ! কেমন একটা অদ্ভুদ অনুভুতি হচ্ছিল !
ওর প্রতিবার হাসি দেখে আমার বুকের ভেতর কেমন করে একটা মোচড় দিয়ে উঠছিল !
কিভাবে দিন টা চলে গেল বুঝতে পারলাম না ! বারবার মনে হচ্ছিল দিন টা যেন শেষ না হয় ! দিন টা যেন একই ভাবে চলতেই থাকে ! কিন্তু দিনটা শেষ হয় গেল !
আমি যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটা অমূকলই রয়ে গেল ! নীলা নিজেই খাওয়ালো সবাইকে ! সবার চোখে বিশেষ করে আমাদের ক্লাসে যারা নীলার পেছনে ঘুরতো সবার চোখে কেমন একটা ঈর্ষা দেখতে পাচ্ছিলাম ! বেশ মজাই লাগছিল !
কিন্তু সাথে সাথে এই ভেবেও খানিকটা অস্বস্থি লাগছি যে আগামীকালকে তো ওরা সব কিছু জেনে যাবে তখন আমার কপালে কি হবে ?
ওরা তখন নিশ্চই টিটকারী মারতে পিছপা হবে না !
সব ঝামেলা শেষ করে যখন বাসায় যাবার পালে এল তখন কি মনে করে আমি সবার সামনেই নীলাকে বললাম
-আমি আসি তোমার সাথে ?
নীলা খানিকটা হেসে বলল
-বাসা পর্যন্ত ?
-কেন নয় ?
-ওকে !
একই রিক্সায় চেপে বসলাম ! এই সুযোগও মনে হয় আর আসবে না কোন দিন !
অন্যান্য দিন রাস্তায় প্রচুর জ্যাম থাকে তবে আজকে কেমন ফাঁকা মনে হল ! সব কিছু কেমন দ্রুত কেটে যেতে লাগলো ! রিক্সা ভ্রমনটাও যেন টচ করেই শেষ হয়ে গেল !
ওকে ওর বাসার সামনে যখন পৌছালাম তখন অন্ধকার হয়ে এসেছে ! ওকে নামিয়ে দিতে দিতে বললাম
-চমৎকার একটা দিন গেল ! থ্যাঙ্কস টু ইউ !
-আমারও !
-কিন্তু কাল থেকে তো সেই যা তাই !
-কেন তুমি চাও না ?
-আমি......
দেখলাম নীলা কেমন একটা অদ্ভুদ হাসি দিল !
তারপর রিক্সাওয়ালা মামাকে নীলা বলল
-মামা আপনি একটু ঐ দিকে যান তো ! ওর সাথে কয়েকটা কথা বলি !
রিক্সাওয়ালা একটু দুরে চলে গেল !
আমি খানিকটা অবাক হয়ে বললাম
-কি এমন কথা যে ...।
আমার কথা শেষ হল না ! নীলা আমাকে চরম ভাবে অবাক করে দিয়ে আমার গালে ছোট্ট একটা চুম খেয়ে বলল
-তুমি এখনও বোকাই রয়ে গেলে !
তারপর আমাকে হতভম্ব করে রেখে নীলা গেট দিয়ে ভিতরে চলে গেল ! আমি কিছুক্ষন বোকার মত বসেই রইলাম ! কিছুই যেন আমার মাথায় ঢুকছিল না !
একটু পরে রিক্সওয়ালা মামা এসে বলল
-মামা কই যাইমু ?
-হুম ?
-কই যাইমু ?
রিক্সা চলতে শুরু করেছে আমি ভাবতেছি ! আমার মাথা দিয়ে কিছু ঢুকছে না ! কি হল আর কেমন করে হল !
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!
অপেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=
বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি
আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।
সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন