-ভাইয়া আসবো !
পিসির দিকে তাকিয়ে ছিলাম । ব্লগে একটা পোষ্ট পড়ছিলাম ! নিহিন খাটের উপর শুয়ে আছে একপাশ হয়ে ! সেই সময় অনি দরজা একটু খুলে মুখ বাড়িয়ে দিয়ে বলল কথা টা ! আগে অবশ্য অনি আমার ঘরে আসার জন্য কোন দিন অনুমুতি নিত না । কিন্তু আজকে নিচ্ছে । তার অবশ্য কারনও আছে ।
অন্য দিন ঘরে আমি একাই থাকতাম আজকে নিহিনও আছে ! আমি মুখ ফেরাতে ফেরাতে দেখি নিহিন খাটের উপর উঠে বসেছে । আমার দিকে একটু চোখা চোখি হল !
আমি অনির দিকে তাকিয়ে বললাম
-আয় !
অনি দরজা দিয়ে ঢুকেই আমার দিকে না এসে নিহিনের সামনে গিয়ে বসলো ! আমি পিসির দিক থেকে মুখ সরিয়ে অনি আর নিহিনের দিকে তাকিয়ে আছে । অনি মনে হচ্ছে কিছু একটা বলার জন্য এসেছে ! কি বলবে কে জানে ?
এমনিতেই অনির কোন ঠিক নেই । কোন কথা বলতে গিয়ে আবার কোন কথা বলে ফেলে শেষে আমি লজ্জায় পড়ে যাবো ! প্রস্তুত থাকা ভাল !
অনির প্রথম কথাটাই বলল
-ভাবী তুমি অনেক সুন্দর ! ভাইয়ার এমনি এমনি তোমার প্রেমে পড়ে নি !
আমি একটু কেঁশে উঠলাম ! নিহিন আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার অনির দিকে তাকালো ! ও নিজর খানিকটা অস্বস্তি বোধ করলো !
-ভাইয়া এইজন্যই তোমাকে নিয়ে এতো কবিতা লিখেছে ! আর এতো এতো ফেসবুক পোষ্ট !
খাইছে রে ! মান সম্মান আর রাখলো না এই মেয়ে !
আমি তাড়াতাড়ি বলল
-এই কি বলতে এসেছিস এখানে ? যা ভাগ এখান থেকে !
নিহিনের দিকে তাকিয়ে দেখি ও আমার অস্বস্তি ভরা চেহারা দিকে খানিকটা সময় অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ! তারপর অনির দিকে তাকালো কৌতুহলী হয়ে । বলল
-তাই নাকি ?
-কি বল ? তুমি জানো না ? ভাইয়া তোমাকে কিছুই জানাই নি ?
-না তো !
আমার অস্বস্তি আস্তে আস্তে বাড়তে লাগলো ! পারি তো এখনই সব ব্লগ পোষ্ট গুলো মুছে ফেলি । ফেসবুকটা কি ডিএকটিভ করে ফেলবো নাকি ?
আমি অনি কে একটা ধমক দিয়ে বললাম
-এই তুই এখানে কেন এসেছিস ?
অনি আমাকে বিন্দু মাত্র দাম না দিয়ে বলল
-দেখো ভাইয়া আমি এখন আমার ভাবীর সাথে কথা বলছি । সে তোমার এক সময় প্রেমিকা ছিল কিন্তু এখন সে এই বাড়ির বউ ! তোমার একার না !
তারপর নিহিনের দিকে তাকিয়ে বলল
-ভাবী তুমি চল তো আমার ঘরে । ভাইয়া তোমাকে কি পরিমান পছন্দ করে তোমাকে দেখাবো !
আমি কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না । আর বললেও অনি শুনবে কি না কে জানে ? নিহিনের চেহারা দেখেও মনে হচ্ছে ও খানিকটা কৌতুহলী হয়ে উঠেছে । নিহিন আমার দিকে একটু তাকিয়ে অনির সাথে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল ! আমি বোকার মত বসে রইলাম কিছুক্ষন !
কি করবো এখন ?
অফিস থেকে একবার ঘুরে আসবো ?
ওখানে অন্য তত আমার এই বিয়ের কথা কেউ জানে না !
বিয়ে ?
নিজের মনেই খানিক্ষন হাসলাম ! আসলেই কি বিয়ে হয়েছে আমার ? আসলেই কি নিহিনকে বিয়ে করেছি ?
নাহ !
কেবল ভাগ্যের একটা ছোট্ট খেলায় নিহিন আজকে আমার ঘরে এসে উঠেছে । বিয়ে না করেও সে আজকে আমার বউ হয়ে গেছে ! আশ্চর্য !
আমি তৈরি হয়ে বাইরে আসতেই মা সাথে দেখা হয়ে গেল ! মায়ের মুখ গম্ভীর ! হবেই বা না কেন ?
যদি বাড়ির ছেলে কাউকে না বলে রাতের বেলা একটা ব্যাগ হাতে মেয়েকে নিয়ে হাজির হয় তাহলে কোন মায়ের মুখ কি হাসিখুসি থাকতে পারে ?
বাবার মুখ তো আরো গম্ভীর ! আমি তো নিহিনকে বাসায় আনার পর থেকে বাবার ধারে কাছে যাই নি । আরো ভাল করে বলতে হয় যেতে সাহস পাই নি ! গেলে কি হবে কে জানে ?
মা গম্ভীর গলায় বলল
-কোথায় যাচ্ছিস ?
-অফিস থেকে ছুটি নিয়ে আসি !
-ফোনে নিয়ে নে ! যাওয়ার ক দরকার ?
-যাই ! গেলে ভাল হবে !
আসলে আমি এখন বাড়ি থেকে বের হত চাচ্ছিলাম ! যদিও বাবা এখন বাসায় নেই ! কোর্টে গেছে ! তবে যে কোন সময় চলে আসতে পারে । যে কোন সময় চলে আসতে পারে । আমি আসলে বাবার ঘরে ঢোকার সময়ে তার সামনে পরতে চাচ্ছিলাম না ! কোর্ট থেকে ফেরার সময় বাবার মেজাজ এমনিতেই গরম থাকে । এই সময় আমার চেয়ারা দেখলে তার মেজাজ আরো গরম হয়ে যাবে । কি করে বসবেন কে জানে !
দেখলাম মাও আর খুব বেশি না করলো না । তবে আমার হাতে হাজার পাঁচেক টাকা দিয়ে বলল
-আসার সময় একটা ভাল শাড়ি কিনে আনিস ! নতুন বউকে দিতে হবে !
খাইছে !
পরিবারের সবাই নিহিনকে বাড়ির বউ মনে করছে । করারই কথা । যে ভাবে আমি নিহিন কে নিয়ে বাড়িতে ঢুকেছি কালকে যে কারো মনে হবে । কিন্তু যখন মা আসলো কথাটা জানবে তখন কি হবে ?
নিহিনকে যে এখনও বিয়ে করি নি এটা জানতে পারলে তখন কি হবে ?
আমি টাকা নিয়েই বাইরে চলে এলাম ।
হাটতে লাগলাম কোন দিক না লক্ষ্য করেই । কেন জান অফিস যেতে মন বলল না !
নিহিন !
একটা নাম ! একটা অনুভুতির নাম ! যেদিন প্রথম ওকে রাফির সাথে দেখেছিলাম সেদিন থেকেই । কেমন একটা অচেনা অনুভুতি হয়েছিল ওর দিকে তাকিয়ে । বুকের ভিতরটা বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছিল ওর দিকে তাকিয়ে ! রাফির আমাকে ওর সাথে পরিচিয় করিয়ে দিয়েছিল ওর গার্লফ্রেন্ড হিসাবে !
গার্লফ্রেন্ড !
নিহিন আমার বন্ধু রাফির গার্লফ্রেন্ড !
আমার সাথে পরিচয় হওয়ার সময় নিহিন কেবল মৃদুস্বরে হেসেছিল ! সেই মৃদু হাসিতে কি ছিল কে জানে আমি টুপ করে নিহিনের প্রেমে পরে গেলাম । যদিও বন্ধুর প্রেমিকার দিকে তাকানো ঠিক না তবুও মন কে কেন জানি বিরত রাখতে পারি নি নিহিনের প্রেমের পরা থেকে !
অবশ্য আরেকটা কারনও ছিল !
রাফি আমার বন্ধু হলেও ওর ব্যপারে খুব ভাল করেই জানতাম । রাফির মেয়ে বাতিক আছে । ওর জীবনের প্রধান এবং অন্যতম লক্ষ্য হল মেয়েদের সাথে প্রেম করা এবং ওদের সাথে রুম ডেটিং করা তারপর কিছু দিন পরে মেয়ের সাথে ব্রেক আপ করা !
বন্ধদের মাঝে রাফির এই সব গল্প খুবই জনপ্রিয় ! আড্ডায় সময় এলেই রাফির এই প্রমের গল্প আমরা প্রায়ই শুনতে পাই !
এই জন্য আরো বেশি খারাপ লাগছিল !
মেয়েটা কষ্ট পাবে ! ঠিকই একদিন নিহিনকে রাফি রুমে নিয়ে যাবে তারপর ব্রেক আপ !
সেদিন উপরওয়ালার দিকে তাকিয়ে মন খারাপ করে বলেছিল কেন ? কেন ? সব কেন রাফির কপালেই পড়বে ?
সেদিন সেই কেনর কোন উত্তর পায় নি কিন্তু, কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি উপরওয়ালা সেদিন আমার আক্ষেপ দেখে মুচকি হেসেছিলেন ঠিকই !
নিহিনের সাথে প্রায়ই দেখা হত ! রাফিই আমাকে আসতে বলতো ! আমরা একসাথে আড্ডা দিতাম । আমরা হাসাহাসি করতাম কিন্তু আমার বুকের ভিতর কেমন চিন চিন করতো !
একদিন রাফি আমাকে ডেকে বলল
-দোস্ত এই মাল তো পটতাছে না !
-মানে কি ?
-মানে কিছুতেই রুমে যাইতে চায় না ! দেখিস না একা একা কোথাও ডেটিংয়েও যাইতে চায় না !
আমি মনে মনে বললাম শালা এই জন্য আমাকে নিয়ে আছিস !
রাফি বলল
-নিহিনের একটাই কথা বিয়ের পরে সব ! এর আগে কিছু না ।
মনে মনে বললাম ভালা অনেক ভালা !
মনে মনে এ ভেবে খুশি লাগতো যে যাক মেয়েটা রাফির ফাঁদে পা দিচ্ছে না ! একবার মনে করেছিলাম যে নিহিন কে সব কিছু বলে দেই । কিন্তু বলতে পারলাম না !
এভাবেই চলছিল দিন ! গত কালের কথা । অফিস থেকে বের হয়েছি তখনই নিহিনের ফোন ! ফোন ধরতেই নিহিনের কান্নার আওয়াজ পেলাম ! আমি ঠিক কিছু বঝতে পারছিলাম না ! কোন মতে ও কোথায় আছে জেনে সেখানে হাজির হলাম !
তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায় ! আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম নিহিনের হাতে একটা কালো রংয়ের ব্যাগ ! ট্রাভেল ব্যাগ !
ওর সাথে কথা বার্তা বলে জানতে যা জনাতে পারলাম তার সারমর্ম হল নিহিনের বাসা থেকে নিনিহের বিয়ে দেওয়ার জোর কথা চলছে । আজকে ছেলে পক্ষের আসার কথা । নিহিন তাই ব্যাগ নিয়ে পালিয়েছে বাসা থেকে । রাফির ভরশায় !
এখানে এসে রাফিকে ফোন দেওয়ার পর রাফি ওকে তো বিয়ে করতে চায়ই নাই ওর সাথে দেখা করার প্রয়োজন মনে করে নাই ! আমি জানতাম রাফি এমনই ! কোন কাজ কাম করে না সারা দিন মেয়েদের সাথে ফুট্টুফাটাম করে বেড়ায় ! ও কিভাবে কোন মেয়ে বিয়ে করবে ! এতো বড় দায়িত্ব নেওয়ার মত মন মানষিকতা ওর নেই !
আমি বললাম
-এখন ?
নিহিন ততক্ষনে কান্না থামিয়ে নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত !
আমি বললাম
-বাসায় ফিরে যাওয়া যায় না ?
চোখ মুছতে মুছতে নিহিন বলল
-তার আর কোন উপায় নাই ! একটু আগে ওর মা ফোন করেছিল ! ছেলে পক্ষ নাকি এসে ফিরে গেছে । অনেক কথাও শুনিয়ে গেছে ।
-তো !
-আপনি আমার বাবাকে চেনেন না ! মা বলল বাবা নাকি বলে দিয়েছে আমার মুখ নাকি তিনি আর দেখবেন না !
-আরে এটা কোন কথা নাকি ?
-এটাই কথা ! বাবা মুখ দিয়ে যা বলেন তাই করেন !
সন্ধ্যা থেকে রাত হয়ে গেল আমরা দুজন বসে রইলাম ! শেষে উপায় না দেখে নিহিনকে আমার বাসায় যাওয়ার কথা বললাম । বললাম যে রাতটা অন্তত থেকে অন্য কোন চিন্তা করা যাবে কাল সকালে !
নিহিনের অবশ্য আর কোন উপায় ছিল না ! একবার অবশ্য নিহিন বলেছিল ওকে একটা হোটেলে রেখে আসতে কিন্তু আমি ওকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলাম !
আমি তো নিহিনকে সাহায্য করার জন্যই নিয়ে যাচ্ছিলাম বাসায় ! কিন্তু বাসায় গিয়ে এমন কিছু হয়ে যাবে ভাবতেই পারি নি ! অনি দরজা খুলে দেখে আমি দাড়িয়ে । আমার পাশে নিহিন । আমার হাতে ব্যাগ !
আর নিহিনের কয়েকটা ছবি ছিল আমার পিসিতে । বদ টা নিশ্চই সে গুলো দেখেছে ! তার উপর নিহিনকে নিয়ে লেখা ব্লগ পোষ্ট গুলো অনি পড়তো নিয়মিত ! টিটকারিও মারতো ! অনির মনে করেছে আমি মনে হয় সত্যি সত্যি নিহিনকে বিয়ে করে এনেছি ! চিৎকার করে বাড়ি একাকার !
মা এবং বাবাও দেখলাম গম্ভীর হয়ে গেল ! আমাকে কেউ কিছু বলার সুযোগই দিলো না !
একদিক দিয়ে অবশ্য ভালই হল । একটা মেয়ে এভাবে বাসায় তুলে আসলে হাজারটা প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে যেতাম । কে ই মেয়ে ? কেন এসেছে ? তুই কেন এনিছিস ? তোর এতো ঠেকা কেন ?
ইত্যাদি !
যাক যা বুঝার বুঝে নিয়েছে ! আমাকে ঝামেলা করতে হয় নি !
কিন্তু এখন এই রাস্তা দিয়ে একা একা হাটতে হাটতে মনে হচ্ছে ! ইস ! যদি অনি আর মা যা ভাবছে তা যদি আসলেই সত্য হত !
অফিসে গেলাম না । এদিক ওদিক কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করে বিকেলের দিকে বাসায় ফিরে গেলাম !
দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই বুকের ভিতর ধক করে উঠলো ! টিভির ঘরে বাবা বসে আছে পা তুলে !
তার সামনে একটা চায়ের কাপ রাখা ! কিন্তু তার থেকেও অবাক হওয়ার বিষয় আব্বার পাশে নিহিন বসে আছে !
দুজনের কাউকে দেখে খুব বেশি গম্ভীর মনে হচ্ছে না ! তার উপর নিহিন শাড়ি পরেছে । আমার যড়দুর মনে হচ্ছে শাড়িটা মনে হয় মায়ের শাড়ি !
কিন্তু কেন ?
এই মেয়ে শাড়ি কেন পড়বে ?
আব্বা আমাকে দেখে খানিকটা গম্ভীর হয়ে গেল ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুই কি সারা জীবন গাধাই রয়ে যাবি ?
আমি কোন কথা বললাম না !
-কোথায় গিয়েছিলি ?
-অফিস !
-মিথ্যা বলবি না ! আমি তোর অফিসে ফোন দিয়েছিলাম । তুই ওখানে যাস নাই ! তার উপর মোবাইল বন্ধ রেখেছিস !
আমি চুপ করে থাকি !
-বিয়ে করেছিস কোথায় ?
কিছু বলতে পারি না !কি বলবো ? নিহিন কি কিছু বলেছি কি না কে জানে ?
আমার হয়ে নিহিন প্রশ্নের জবাব দিল !
-আব্বা, মগবাজার কাজী অফিস !
-হুম ! তা কাবিন নামা কই !
নিহিন বলল
-ওটা তো তুলি নি ! পরে তুলবো বলে চলে এসেছি !
বাবা এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোকে বিয়ে করতে কে বলেছে ! বিয়ে করেছিস আর প্রমান পত্র আনিস নি !
বাবা সারা জীবন তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে কাজ করেছে এখন তার ছেলের এই অপ্রামানিক কাজ দেখে তিনি আজ বড় বিরক্ত ! আমি মনে মনে বলি আব্বাজান যে বিয়েই হয় নাই সেই বিয়ের কাবিন নামা কই থেকে আসবে !
আব্বা আরো কিছুক্ষন আমাকে বকাবকি করলো তারপর বলল
-যা এখন গিয়ে ভাল করে গোছল কর । আর শেভ কর জলদি । মেহমান আসছে ! তোর শ্বশুর বাড়ির লোক !
আমি আকাশ থেকে পড়লাম ! আমার শ্বশুর বাড়ির লোক !
কেমনে ?
আমি ঠিক মত বুঝলাম না !
নিহিন দেখলাম আমার দিকে উঠে এল !
আমার দিকে তাকিয়ে খুব স্বাভাবিক ভাবে বলল
-এসো ! খাওয়া হয় নি দুপুরে !
আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম নিহিন আমাকে তুমি করে বলছে । আর এমন একটা ভাব দেখাচ্ছে যেন সে আসলেই আমার বউ !
আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ! কি হচ্ছে ?
নিহিন আমার বউয়ের মত আচরন করছে । আব্বা বলছে শ্বশুর বাড়ির লোক ! মানে কি ?
অবশ্য যা হচ্ছে খারাপ কিছু হচ্ছে না ! আমি তো এটাই চেয়েছিলাম । কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে হচ্ছে ? নিহিন তো সব কিছু জানে !
তাহলে ?
খাবার টেবিলে নিহিন আমাকে ভাত বেড়ে দিচ্ছিল ! আমি সবে মাত্র ভাত মুখে দিয়েছি তখনই নিহিন বোমাটা ফাটালো !
-আব্বা আসছে ?
-তোমাকে নিয়ে যাবে ?
-জি না ! আমাকে পার্মানেন্টলি এখানে রেখে যাবে !
-কিঈঈঈঈই !!
আমার খাওয়া বন্ধ করে নিহিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম । নিহিন বলল
-আমার ভাগ্যে হয় তাই হয়তো লেখা ছিল ! আর অবশ্য অন্য কিছু করাও ছিল না । আমি চাইলেই সত্যটা বলতে পারতাম ! কিন্তু ..
-কিন্তু ?
-কিন্তু বলি নি ! বলতে পারি নি ! হয় তো বলেও দিতাম কিন্তু তোমার লেখা গুলো পড়া পর আর পারি নি ! যে আমাকে কোন দিন ভালবাসে নি তার জন্য জীবনটা নষ্ট করার চেয়ে যে আমাকে ভালবাসে তার সাথে জীবনটা কাটানো কি ভাল নয় কি ?
আমি কোন কথা না বলে কেবল নিহিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম । সেদিন উপরওয়ালা নিশ্চই আমার আক্ষেপ দেখে মুচকি হেসেছিল ! নিশ্চই হেসেছিল !
নিহিন বলল
-শোন আব্বার সামনে কিন্তু হায় হ্যালো করবা না ! আব্বার এসব পছন্দ না ! আব্বা যখন আসবে তার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করবে ! তাহলে আব্বার খুশি হবে ! ঠিক আছে ?
-তা তো না হয় বুঝলাম কিন্তু এসব হল কিভাবে ?
-আমি জানি না ! আব্বা বাসায় এসে আমাকে ডেকে পাঠালো ! তারপর আমার কাছ থেকে আমার বাবার ফোন নাম্বান নিল ! উনি কি কথা বলেছেন আমি জানি না !
-আরে গাধা বিয়ে করবি আমাকে বলবি না ? এভাবে পালিয়ে বিয়া করা কি দরকারটা ছিল ?
রাতে খাবার টেবিলে সবার সামনেই আব্বা কথাটা বলল !
আব্বার সাথে মিল রেখে আমার শ্বশুর মশাই মানে সদ্য হওয়া শ্বশুর মশাইও বলল
-আমাকেও তো বলতে হবে ! না বললে আমি কিভাবে বুঝবো ? ছেলে মেয়েরা বুঝে না যে আমরা তাদের ভাল ছাড়া খারাপ চাই না ! সব বাবামাই চায় তার মেয়ের বিয়ে হোক একটা ভাল ছেলে সাথে ! সাথে একটা ভাল ফ্যামিলি ! এই তো ! আর কিছু চাওয়ার নাই !
এর পর আরও উপদেশ বানী বর্ষিত হতে শুরু করলো !
সন্ধ্যার পর থেকেই এই সবই চলছে ! নিহিনের বাবা এসেই বলল এই বিয়ে আমি মানি না । বিয়ে হতে হবে আমার চোখের সামনে তারপর হবে ! বাবাও এমনটা ধারনা করেছিলেন ! আগে থেকেই ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন । কোথায় যেন ফোন করলেন ! কাজী হাজির ! রাত ১০ টার দিকে আমার আর নিহিনের প্রথম এবং পারিবারিক ধারনা অনুযায়ী দ্বিতীয় বিয়ে ! তারপর খাবার টেবিললে এই কথা বার্তা !
একদিনে আর কিছু না হোক এই চাচ্ছিলাম । এখন আমার নতুন বউকে নিয়ে বাসর ঘরে ঢুকতে পারলেই হয় ! কত দিন ধরে নিহিন কে নিয়ে এমন কল্পনা করেছি । আজকে তা সত্যি হতে যাচ্ছে কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না ! আসলেই বিশ্বাস হচ্ছে না ! নিহিন সত্যি সত্যি আমার বউ হয়ে গেল !
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!
অপেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=
বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি
আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।
সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন