-একটু শুনবেন ?
বাইরে এতো ঠান্ডা যে আমার কানের ভিতর কথাটা খুব ভাল করে ঢুকলো বলে মনে হল না । কোন ছেলের কন্ঠ হলে হয়তো আমি সেদিকে ফিরেও তাকাতাম না কিন্তু কন্ঠটা একটা মেয়ের । কিন্তু এতো ক্ষীন লাগলো !
তবুও বাঁ দিকে ফিরে তাকালাম !
আজকে বছরের শেষ দিন, টিউশনী থেকে বের হব এমন সময় বন্ধু আসিকের ফোন ! বলল
-টিউশনী থেকে বের হয়ে গেছ ?
-হুম ! কেন ?
-আরে বাসায় আসো !
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় সাড়ে নয়টা বেজে গেছে ! এখন আসিকের বাসায় যাবো কিভাবে যদিও আমার স্টুডেন্টের বাসা থেকে আসিকের বাসা খুব বেশি দুরে না । দুতিন মিনিটের পথ !
আমি বললাম
-এখন ?
-আসো ! পোলাও রান্না করেছি ! খেয়ে যাও !
-কিন্তু .....
আমি বলতে চাইলাম যে রাত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সাথে পোলাও এর কথা টা মনে পড়লো ! শেষে একবার আসিকের বাসা থেকে ঘুরে আসবো বলে ঠিক করলাম ! খাওয়া গল্প শেষ করে যখন বাইরে আসলাম তখন প্রায় ১২ টা বেজে গেছে । আসিক অবশ্য বলছিল বাসায় থেকে যেতে কিন্তু এই শীতের বেলায় অন্যের বিছানার ঠিক মত ঘুম আসবে না । তার উপর ইদানিং আমার ঘুম আসতেছে ভোরের দিকে এতো রাত পর্যন্ত অন্যের বাসায় জেগে থাকাটা কেমন দেখায় ! আজকে আবার থার্টি ফার্ষ্ট নাইট ! বাসায় যেতে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা না !
আমি মেয়েটির দিকে তাকালাম ! কাজীর গলির বাম পাশের মেয়েটি দাড়িয়ে রয়েছে ল্যাম্প পোষ্টের নিচে ! মেয়েটি কেমন যেন সংকুচিত হয়ে দাড়িয়ে আছে । এমন একটা ভাব যেন মেয়েটি খুব বড় কোন অপরাধ করে ফেলেছে । এখন দাড়িয়ে আছে শাস্তির অপেক্ষায় !
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মেয়েটি এখানে কি করছে !
এতো রাতে ?
যদিও এলাকাটা ভাল এলাকা ! কিন্তু রাত প্রায় ১২টা বাজতে চলেছে এই সময়ে একা একটা মেয়ে এখানে দাড়িয়ে !
সঙ্গে বয়ফ্রেন্ড থাকলে অবশ্য একটা কথা ছিল ! অথবা আশেপাশে কোন ফারারী দাড়িয়ে থাকলেও একটা কথা ছিল !
মেয়েটির পোষাক আকাশে অবশ্য ফারারী চড়ার মত না । কালো রংয়ের একটা কামিজের সাথে কালো একটা ল্যাগিংস পরেছে !
ল্যাগিংস !!
কাধে একটা ব্যাগ ! চোখে কালো ফ্রেমের একটা চশমা ! চুল গুলো খোলা !
মেয়েটি আবার বলল
-একটু শুনবেন ?
-আমি ?
-জি !
মেয়েটির গলা একটু একটু কাঁপছে ! যেন ভয় পেয়েছে কোন কিছুতে ! অথবা আমাকেও মেয়েটি ভয় পাচ্ছে !
আমি মেয়েটির দিকে এগিয়ে গেলাম ! বললাম
-জি বলুন !
-আসলে .....
কিছু একটা বলতে গিয়েও মেয়েটি থেমে গেল ! ভয় কিংবা দ্বিধার কারনে মেয়ে টি কিছু বলতে পাচ্ছে না !
আমি বললাম
-দেখুন যদি কিছু বলতে চান নির্ভয়ে বলতে পারেন ! বেশ রাত হয়েছে । এভাবে এখানে একা একা দাড়িয়ে থাকাটা ঠিক না !
মেয়েটির মনে হল আমার কথাটা বিশ্বাস হল । তার উপর আমার চেহারায় একটা ভাল মানুষী ভাব আছে । মানুষ জন সহজে আমকে খারাপ ভাবে না !
মেয়েটি বলল
-আসলে আমার বাসা গাজীপুরে !
-গাজীপুর ? এতো রাতে এখানে কেন ?
-বাড়িতে রাগারাগি করে চলে এসেছি ! এক বন্ধুর বাসায় আসবো বলে ! এখন এসে দেখে সে বাসায় নেই !
-বাসায় নেই ফোন দেন !
-ফোন বন্ধ !
-আরে এটা কোন কথা ? গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসার আগে আপনি তাকে ফোন দিবেন না ? এমন গাধামী কেউ করে নাকি ?
আমি মনে হয় একটু জোরেই কথাটা বলে ফেলেছি দেখলাম মেয়েটি চোখ ফেটে কান্না বেরিয়ে এল । যদিও মেয়েটি আপ্রান চেষ্টা করছে চোখের পানি আটকানোর ! কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হল !
আমি তাড়াতাড়ি বললাম
-আচ্ছা ঠিক আছে । কান্না কাটি করতে হবে না ! দেখুন প্লিজ কান্না থামান ! এখন কি করতে চান বলুন ?
মেয়েটি চশমা খুলে চোখের পানি মুছলো ! তারপর বলল
-আপনি কি আমাকে একটু শাহবাগ পর্যন্ত পৌছে দিতে পারবেন ? ওখান থেকে আমি নিজেই চলে যেতে পারবো ।
-এতো রাতে কিভাবে যাবেন ?
-বাস পেয়ে যাবো ?
-আরে মাথা খারাপ নাকি ? এতো রাতে কোন বাস আসবে কোথা থেকে ! দেখছেন না এখান থেকে পরীবাগ যাবে ন একটা রিক্সা পর্যন্ত নাই ! গাজীপুরের বাস কিভাবে পাবেন ?
-আমার কেবল এই পথ টুকু পর করে দিন ! আমার একা একা যেতে ভয় লাগছে !
মনের ভিতর কেমন একটা খটকা লাগলো ! মেয়েটি এই পথ টুকু যেতে ভয় পচ্ছে কিন্তু গাজীপুর এতো দুর ! সেখানে যেতে ভয় পাচ্ছে না ! আচ্ছা অন্য কোন মতলব নাই তো ?
যেমন সিনতাই জাতীয় কিছু ?
কে জানে ?
অবশ্য সিনতাই হওয়ার মত আমার কাছে তেমন কিছু নাই ও ! মাসে শেষে পকেট ফাকা প্রায় ! অবশ্য পকেটে মোবাইলটা আছে ! এটা গেলে একটু খারাপ লাগবে !
নিজের ভিতরেই একটু সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম । মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে কেন জানি মনে হচ্ছে মেয়েটি মিথ্যা বলছে না মানে সত্যই বিপদে পরেছে মনে হচ্ছে !! তারপরেও মেয়েটি কথা গুলো ঠিক বিশ্বাস করার মত না !
কি করবো ?
এখন ঘুরে চলে যাবো ? নাকি মেয়েটির সঙ্গে করে পরীবাগ পর্যন্ত নিয়ে যাবো ?
যা থাকে কপালে ! মেয়েটাকে নিয়েই যাই । আর যদি এর মধ্য একটা রিক্সা পেয়ে যায় তাহলে তো কথাই নাই !
আর মেয়েটিকে এখানে রেখে গেলে একটা চিন্তা মনের মাঝে রয়েই যাবে !
মনের ভিতর শান্তি পাবো না !
-আচ্ছা চলুন !
মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হল মেয়েটি যেন একটু ভয় মুক্ত হল !
আমি বললাম
-রিক্সা মনে হচ্ছে পাওয়া যাবে না । চলুন হাটা শুরু করি । যদি রিক্সা পাই তাহলে নেওয়া যাবে । ঠিক আছে ?
-আচ্ছা !
হাটা শুরু আগে আমি আরেকবার চারিদিকে দেখে নিলাম । কয়েকটা দোকান এখনও ঔষধের দোকান খোলা আছে । এগুলো মনে সারারাত খোলা থাকে ! কিন্তু এই গুলো ছাড়া চারিপাশে আর কোন জন প্রানী নেই ! মাঝে মাঝে কেবল ভুসভাস করে একেকটা গাড়ি চলে যাচ্ছে । কোন গাড়ীর ভিতর থেকে আবার ভেসে আসছে উচ্চ স্বরে হিন্দি গানের আওয়াজ !
থানা টা পার হয়ে রাষ্ট্রিও অতিথি ভবনের কাছে যখন এসেছি তখন মেয়েটি প্রথম কথা বলল !
-এদিক দিয়ে গেলে মনে হয় বেশি ঘুরে যেতে হবে ! ঐ দিকে আরেকটা রাস্তা আছে না ?
-আপনি এই এলাকা চেনেন দেখি !
-জি ! প্রায়ই আসা হয় এখানে ! সুমনের সাথে ঐ মিন্টু রোডে প্রায়ই হাটতাম !
-সুমন ?
মেয়েটি উত্তর দিতে কিছুটা সময় নিল ! কিছু একটা ভাবছে । আমাকে সুমনের কথা বলবে কি না ভাবছে ! শেষে মনে হল বলার সিন্ধান্তই নিল !
-আসলে আমি আপনাকে একটা মিথ্যা কথা বলেছি !
আমরা মিন্টু রোডের দিকে হাটা দিয়েছি ! মেয়েটা যদিও বলল যে ও আমাকে একটা মিথ্যা কথা বলেছে কিন্তু আমার মনে হল যে মেয়েটা সিনতাই করার জন্য আমার সাথে আসে নাই ! অন্তত এখন যখন মিন্টু রোডের দিকে যাচ্ছি তখন তো নয়ই ! এখানে ডিবির অফিস রয়েছ তার উপর প্রতিটা বাড়ির সামনে পুলিশের পাহারা ! এখানে সিনতাই করার সাহস পাবে না নিশ্চই !
মেয়েটি আমাকে এখনও বলে নি সে কি মিথ্যা কথা বলেছে ! আমি অবশ্য জিজ্ঞেস করি নি । মেয়েটির সাথে হাটতে কিন্তু খারাপ লাগছে না ! মিন্টু রোডটা আমার এমনিতেই পছন্দ ! দিনের বেলা আমি এখানে একলা একলা প্রায়ই হাটি ! আর এখন এই রাতের বেলা মিন্টু রোডের কেমন যেন একটা অন্য রকম সৌন্দর্য দেখা যাচ্ছে ।
প্রত্যেকটা বাড়ির সামনে একটা করে আলো জ্বলছে । আর জ্বলছে ল্যাম্প পোষ্টের আলো গুলো ! তবুও খুব বেশি লাভ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না । অন্ধকার দুর তো হয়ই নাই তার উপর একটা আলো আধারীর খেলা শুরু হয়েছে !
আর আমি এই হিম ঠান্ডার রাতে একটা অপরিচিত মেয়ের সাথে হাটছি ! আশ্চর্য ! যে মেয়েটার নাম পর্যন্ত আমি জানি না ! আরে মেয়েটার নামই তো জিজ্ঞেস করা হয় নাই !
আমি বললাম
-আরে আপনার নামটাই তো জানা হয় নাই !
-আমার নাম জেরিন ! জেরিন আফরিন !
-আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লাগল জেরিন ! আমি অপু ! আপনি কি যেন একটা মিথ্যা বলেছিলেন বলছিলেন ? সুমেনর ব্যাপারে মনে হয় !
জেরিন কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল
-আসলে আমি কোন বান্ধবীর সাথে দেখা করতে আসি নি ! আমি এসেছিলাম সুমনের সাথে দেখা করতে !
-সুমন ? আপনার ...।?
-আমার বয়ফ্রেন্ড !
আমিও তাই ভাবছিলাম ! একটা মেয়ে গাজীপুর থেকে বান্ধবীর সাথে দেখা করতে চলে আসবে তাও আবার একা একা ? এটা একটু অস্বাভাবিক !
কিন্তু বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার জন্য একটা মেয়ে বঙ্গোপসাগর আর বুড়িগঙ্গা নদীও পাড়ি দিতে পারে ! কোন রকম ভয় ভীতি ছাড়াই !
-তারপর ? দেখা হয় নি !
-হয়েছে !
-তাহলে ?
এবার আমি একটু অবাক হলাম । সুমনের সাথে দেখা হয়েছে । তাহলে সে কই ? ঝগড়া হয়েছে নাকি ? হতে পারে ! হয়তো এদের অন্য কোন প্লান ছিল । কিন্তু এতো রাতে মেয়েটাকে এভাবে একা একা ছেড়ে দিল !
আশ্চর্য !
আমি বললাম
-ঝগড়া হয়েছে ?
-নাহ !
-তাহলে ? সে কিভাবে আপনাকে একা একা আসতে দিল ? এই রাতের বেলা ?
-সে আসতে দেয় নি !
-মানে কি ?
জেরিন আমার কথার কোন জবাব দিল না । অন্ধাকরের মধ্যেই দেখলাম মেয়েটার মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেল !
সমস্যা কি !
আমিও আর কিছু না বলে হাটতে লাগলাম ! শীতটা যেন কোথা থেকে আরও উড়ে এসেছে । আমি একটু কাঁপতে লাগলাম !
কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় মেয়েটার গায়ে কোন চাদর কিংবা সোয়েটার নেই ! মেয়েটর কি শীত লাগছে না ?
-আপনার শীত লাগছে না ?
-নাহ !
-লাগছে না ?
-উহু ! আমার শীত লাগে না !
কি রে ভাই ! শীত লাগে না ! হুম ! এই জন্যই মেয়েদের হট বলে ! প্রবল শীতের মাঝেও এদের কোন শীত লাগে না !
হাটতে হাটতে প্রায় মিন্টু রোডের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি ! সামনেই রুপসী বাংলার মোড় ! কিন্তু এখানে তেমন আলো নেই ! আন্ধকারটা একটু যেন বেশি !
আমি হাটছি আপন মনে ! জেরিন হাটছে আমার পাশেই ! হঠাৎই জেরিনের ভয়ার্থ গলার আওয়াজ পেলাম ! পাশে তাকিয়ে দেখি জেরিন আমার পেছনে চলে এসেছে ! যেন সামনে থেকে কিছু একটা আক্রমন করছে ওকে !
আমি কিছু বুঝতে পারলাম না ! আসলে কিসে ও ভয় পাচ্ছে !
আমি বললাম
-কি হয়েছে ?
জেরিন আরও ভয় মাখা গলায় বলায় বলল
-ও ! আমাকে মেরে ফেলবে !
আমি জেরিনের হাতের নির্দেশ অনুসারে সামনের দিকে তাকালাম ! তাকাতেই আমর চোখ কপালে উঠলো !
মাই গড !
এ আসো কোথা থেকে !
ইয়া বড় এক ছুরি এক যুবক আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে । যদিও অন্ধকার তবুও যুবকের হাতের ছুরিটা কেমন চকচক করে উঠলো !
যুবক আমাদের কাছে এসে বলল
-শুনুনন মিষ্টার ! আপনার সাথে আমার কোন বিরোধ নাই ! জেরিন কে দরকার আমার !
জেরিনের নামধরে ডাকছে তারমানে জেরিন কে যুবক চিনে ?
কে ?
সুমন না তো ?
কিন্তু এর হাতে ছুরি কেন ? চোখে খুনে নেশা কেন ?
পেছন থেকে জেরিন আমার হাত চেপে ধরেছে ! ভর জড়ানো গলায় বলল
-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিবেন না ! ওর হাতে ছেড়ে দিবেন না !
যুবক বলল
-দেখুন ও আমার গার্লফ্রেন্ড ! আমাদের মাঝে আপন আসবেন না প্লিজ !
জেরিন বলল
-আমি তোমার সাথে যাবো না ! আমি তোমার সাথে যাবো না !
আমি কিছু বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে ! কিন্তু কিছু একটা যে ঠিক হচ্ছে না এটা বুঝতে পারছি ! আমার কি করা উচিৎ !
জানি না কিরা উচিৎ তবে জেরিন কে যুবকের হাতে তুলে দিতে মন বলল না যদিও তার হাতে ইয়া বড় একটা ছুরি রয়েছে !
-কই দিন !
যুবক ধমকে উঠলো !
আমার বুকের ভিতর টা দুরু দুরু করতে লাগলো তবুও বলল
-দেখুন আমি জেরিন কে আপনার হাতে তুলে দিবো না !
-ভাল হবে না আপনার জন্য !
-না হোক ! যদি ওকে নিয়ে যেতে চান তাহলে আগে ছুরিটা আমার উপর চালাতে হবে আগে !
কি কইলাম আমি ?
মাথা খারাপ হয়েছে ! এখন যদি এই ছুরি সত্যি সত্যি আমার গলায় চালিয়ে দেয় ?
কত সখ ছিল একটা বিয়া করুম ! এখন এক মাইয়ার জন্য জানটা হারাইতে হইতাছে !
এখন কি জেরিন কে নিয়ে দৌড় দিবো ? আমি জেরিনের দিকে মুখ করে ফিসফিস লরেবললাম
-আপনি দৌড় দেওয়ার জন্য রেডি থাকেন ! ঠিক আছে !
কোন উত্তর আসলো না ! আমি ঘাড় ঘুরিয়ে জেরিন কে দেখতে গেলাম তখনই আমাকে চরম ভাবে অবাক হতে হল !
আমার পিছনে কেউ নেই !
কই গেল ! আগেই কি দৌড় দিছে নাকি ?
কই না তো ! জেরিন যখন আমার পাশে হাটছিল তখন ওর পায়ের আওয়াজ পাচ্ছিলাম কিন্তু যদি ও দৌড় দিতো আমি অন্তত বুঝতে পারতাম যে ও দৌড় দিছে !
কই গেল !
আমাকে এই রকম বিপদের সামনে রেখে মেয়েটা চল যেতে পারলো !
ফজিল মাইয়া !
বদ মাইয়া !
এখন ছুরির কোপ খাবে কে ?
আমি আবার ভয়ে ভয়ে সামনের দিকে তাকালাম !
একি !
ঐ লোক গেল কই ?
আমি আরেক বার চারিদিকে ঘুরে দেখলাম !
কোথাও কেউ নাই !
না জেরিন
না ছুরি হাতে ঐ যুবক !
মানে কি ?
আমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না । তবে ছুরির কোপ খাওয়ার ভয়টা কমে এসেছে । কিন্তু পরক্ষনেই অন্য একটা ভয় চেপে ধরলো !
জেরিন আর ঐ যুবক কে ছিল ?
এখন আমার কি করা উচিৎ ! দৌড় মারবো নাকি ?
কি করবো বুঝতে পারছি না ! মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে ! সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না ! কিছুক্ষন দাড়িয়েই রইলাম একই ভাবে !
এমন সময় পেছনে টুংটাং আওয়াজ পেলাম ! পেছনে তাকিয়ে দেখি একটা রিক্সা আসছে !
-মামা যাইবেন নাকি ?
-হুম ! মোহাম্মাদপুর, যাবা ?
-হ ! যামু ! তয় ৭০ টেকা লাগবো !
-আচ্ছা
আমি আর কথা না বলে উঠে পড়লাম রিক্সায় ! বুকের ভিতের উত্তেজনটা একটু কমে এসেছে ! ভয়টাও একটু কমে এসেছে !
এতো ক্ষন তাহলে আমি কার সাথে কথা বললাম ? আর কার সাথেই বা হাটাহাটি করলাম ?