সামু পোষ্ট রিভিউঃ যারা সায়েন্স ফিকশন পড়তে ভালাসেন এই দিকে আসেন !
সামুতে অনেক টাইপেরই লেখক আছে । কেউ ভাল ফিচার লেখে কেউ সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে লেখে আবার কেউ লেখে কবিতা ! সব শেষে বলা যায় গল্পের কথা ! আমার নিজের বিচরনে এই গল্পের প্রাঙ্গনে বলেই আমার এই গল্পকার দের ব্লগেই বেশি যাওয়া হয় ! অনেক রকম গল্পকার আছে এখানে কিন্ত দঃখের সাথে বলতে হচ্ছে বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী লেখে এমন গল্পকার সামুতে হাতে গোনা কয়েকটা ! আজকের পোষ্ট রিভিউ টি কেবল আমার ভাল লাগা কয়েক টি সায়েন্স ফিকশন পোষ্ট নিয়ে ! আসুন তবে ঘুরে আসা যাক সেই কল্পনার জগৎ থেকে !
প্রথম যে গল্পটার কথা বলবো সেটার নাম
প্রজেক্ট নস্ট্রাডমাস ।
গল্পটা একজন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ফজলুল করিম কে নিয়ে ! ঘটনার শুরুই হয় এক হাড় কাঁপানো রাত থেকে । যেখানে ফজলুল করিম তার দীর্ঘ এতিম খানার জীবন থেকে কঠিন বাস্তব জীবনে পথ চলা শুরু করে !
ছাত্র জীবনে এক ছাত্রী শায়লার সাথে পরিচয় হয় ! শায়লা ফগলুল করিম কে পছন্দ করলেও তিনি তা বুঝতে পারে না ! তিনি মেতে থাকে তার গবেষনা আর পরাশুনার কাজ নিয়ে !
আস্তে আস্তে সফলতা আসে । পৃথিবীর সুপরিচিত একজন বিজ্ঞানী হয়ে যান তিনি ! আবিস্কা রকরে ফেলেন কিভাবে মানুষের ইন্দ্রীয় দিয়ে সামনের ভবিষ্যৎ বলে দেওয়া সম্ভব ! কিভাবে তার সমস্ত ইন্দ্রীয় কাজে লাগিয়ে নির্ভুল ভাবে সমানে কি ঘটনা ঘটবে তা বলে দেওয়া সম্ভব !
চীন সরকার এগিয়ে আসে । ব্যয় বহুল এই প্রজেক্টে ফাইন্যান্সিং এর জন্য ! চীনের সানঝি প্রদেশে কঠিন নিরাপত্তার মাঝে চালু হয় প্রজেক্ট নস্ট্রাডমাস ! টানা সাড়ে চারবছর পরিশ্রমের ফলে সফল হয় প্রজেক্ট নস্ট্রাডমাস !
কিন্তু ঝামেলা বাধে তখনই যখন নস্ট্রাডমাসের কাছে প্রশ্ন করা হয় আগামী ২০০ বছরের সব থেকে গুরুত্বপূর্ন কাজ হবে কোন টি ! নস্ট্রাডমাস যা জানায় তা শুনে সবার মাথায় হাত ! সে জানায় পৃথিবী ধ্বংসের খবর । যুক্তরাষ্ট্রের একটা গোপন সামরিক ল্যাবে দুর্ঘটনাবসত একটা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বব্যাপি !
ফজলুল করিম আবারও কাজে লেগে যান ! এই পৃথিবীর বুকে মানব অস্তিত্ব রক্ষা করার কাজে !
তিনি কি সফল হয়েছিলেন ?
নাকি সত্যিই নস্ট্রাডমাসের ভবষ্যৎ বানী অনুযায়ী আস্তে আস্তে পৃথিবী থেকে মানুষের অস্তিত্ব গায়েব হয়ে যায় এটা জানতে আপনাকে পড়তে হবে প্রজেক্ট নস্ট্রাডমাস !
গল্পের লিংক
মানস স্বজ্ঞ
এই গল্পটার শুরু হয় মেঘলা আকাশ দিয়ে ! কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রধান ক্লোরা ভিনসেন্ট কে দিয়ে ! তিনি একটা প্রজেক্ট হাতে নেন ! প্রজেক্ট ভেনাস । নতুন রবো মানব তৈরির কাজ এবং তাদের কে মানুষের মাঝে ছেড়ে দিয়ে একটা নতুন পরীক্ষা !
কিন্তু দেখা যায় রবো মানব গুলোর কোন দোষ না থাকলেও তার আশে পাশের মানুষ গুলো একটু যেন অদ্ভুদ আচরন করে ! সেইটারই ফলাফল পর্যনবেক্ষ করে তারা !
কিভাবে ?
সেটা না হয় নাই বলি ! এটা জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে মানস স্বজ্ঞ গল্প টি !
গল্পের লিংক
ক্লোরোপ্লাষ্টিক মেসেজ
বলতে গেলে অনলাইনে পড়া অন্য তম সেরা সায়েন্স ফিকশন এইটা ! কাহিনী গড়ে উঠেছে দুইটা পৃথিবী কে নিয়ে ! এক পৃথিবীতে দেখা যায় রায়হান নামের এক বোটানীর ছাত্র কিভাবে ক্লোরোপ্লাষ্টিক প্যাটার্ন এর ব্যাখ্যা করে কিভাবে নতুন কিছু আবিষ্কার করে ফেলেন ! কিভাবে একমাত্রার অবজেক্ট স্ট্রিং গুলো; X, Y, Z এই তিনটি মাত্রা বরাবর বিভিন্ন কম্পাঙ্কে প্রকম্পিত হয়ে স্থান (স্পেস) তৈরি করে, আর সময় মাত্রা T বরাবর প্রকম্পিত হয়ে একত্রে চার মাত্রার স্থান-সময় (স্পেস-টাইম) তৈরি করে। আর গ্র্যাভেটি স্ট্রিং গুলো এই চার মাত্রার স্পেস-টাইমের মধ্য দিয়ে সময় মাত্রাকে স্থির রেখে, শুণ্য সময়ে অসীম দূরত্ব অতিক্রম করে অথবা স্থানকে স্থির রেখে শুণ্য স্থানে অসীম সময় অতিক্রম করে।
একটু জটিল লাগছে ! তাই না ? একটু মন দিয়ে পড়তে হবে !
আর অন্য এক পৃথিবীর এক বিপ্লবী পিপার ! তিনি ফোটন কাউন্সিলের বিরুদ্ধে অহিংস সংগ্রাম করে যাচ্ছে !
রায়হানের শুণ্য সময়ে অসীম দূরত্ব অতিক্রম করে অথবা স্থানকে স্থির রেখে শুণ্য স্থানে অসীম সময় অতিক্রম সুত্র কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর মানুষ অন্য গ্রহের মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় !
পিপার তার আন্দোলনের জন্য পৃথিবীর কাছে সাহায্য চায় !
পৃথিবীর মানুষ কি বিপ্লবী পিপার কে সাহায্য করেছিল ! নাকি পিপারে খাদ্যের জন্য সংগ্রাম ব্যর্থ হয়েছিল !
এই গল্পে লেখকের কল্পনাশক্তি দেখে বিস্মিত হতে হবে নিঃসন্দেহে । সায়েন্স ফিশনের সাথে বিপ্লব, মানবিকতা ফিজিক্সের সাথে বোটানির অভূতপূর্ব সংযোগ, এই সব কিছু মিলে চমৎকার উপস্থাপনা ! এইরকম চমৎকার কল্প গল্প আপনার একটা পড়েছেন বলে আমার মনে হয় না !
গল্পের লিংক
সিরাস ভ্রমন !
আমরা এতদিন ধরে নিয়েছিলাম সময় একদিকে প্রবাহমান, অতীত থেকে ভবিষ্যৎ, কিন্তু সময় নিজেই আসলে দ্বিমাত্রিক। একটা মাত্রা আমরা অনুভব করতে পারছি, যেটা অতীত থেকে ভবিষ্যতে ধাবিত হচ্ছে এটা অনুভূমিক, আর একটা মাত্রা এর লম্ব বরাবর প্রবাহিত হচ্ছে। যেমন ধরুন, একটা ভবন এর বারান্দা দিয়ে হেঁটে যাই তাহলে যে গতিপথ হবে সেটাকে যদি অনুভূমিক ধরি তাহলে ঠিক নিচের তলা দিয়ে যে লোকটি হেঁটে যাচ্ছে তার গতিপথও অনুভূমিক তবে সে আমার সাথে একটা নির্দিষ্ট লম্ব দূরত্ব রেখে হেঁটে যাচ্ছে। এভাবেই সময়ের লম্ব বরাবর অসীম সংখ্যক বিশ্ব পাশাপাশি প্রবাহিত হচ্ছে। আর এইভাবেই বিশ্বে অসীম সংখ্যক চৌ-মাত্রিক জগতে প্রতিনিয়ত ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে !
এটাই হল মুল থিউরী !
এই থিউরী কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানী সিরাস অন্য জগতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন ! এই ভ্রমনের নাম দেওয়া হয় তার নাম অনুযায়ী সিরাস ভ্রমন !
তারপর ?
সেই ভ্রমনের ফলাফল কি ?
জিজ্ঞানী সিরাস কি আসলেই সফল হয়েছিলেন নাকি তার সিরাস ভ্রমন ব্যর্থ হয় ?
গল্পের লিংক
ফিউশন ট্রেকিং !
একবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে পৃথিবীতে যখন অরাজকতা সীমা ছাড়িয়ে যাবার উপক্রম হয় তখন একদল নিবেদিত প্রাণ বিজ্ঞানী ফিউশন ট্রেকিং ডিভাইসটি আবিষ্কার করে ! আইন করে সবার মাথায় এই ফিউশন ট্রেকিং ডিভাইসটি স্থাপন করা হয় ! যার ফলাফল হয় অন্যরকম ! সমগ্র মানব জাতী এক হয়ে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে কাজ করতে থাকে, কোথাও কোন অপরাধ নেই, নেই কোন বিশৃঙ্খলা, সবাই যার যার কাজ করে যাচ্ছে সুশৃঙ্খলভাবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে মানুষের জীবন হয়ে উঠে ভয়ংকর রকম বৈচিত্রহীন, একঘেঁয়েমি পূর্ণ, আত্মহত্যার হার বেড়ে যায় ভয়ংকর রকমভাবে ।
সম্পূর্ণ ট্রেকিং সিস্টেম এমন ভাবে ডেভেলপ করা হয়েছিলো যে, সে নিজেই নিজেকে আপডেট করতে ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে। সুতরাং মানুষ পরিনত হয় সেই সিস্টেমের গোলাম !
এর হাত থেকে মুক্তর জন্য এলেন একটা চমৎকার বুদ্ধি আটে ! এবং সেই প্লান অনুযায়ী কাজ করতে থাকে । ধ্বংস করতে অগ্রস্বর হয় সম্পূর্ণ ট্রেকিং সিস্টেম টি !
শেষ পযর্ন্ত কি হয় এবং এলেন কিভাবে তার প্লানটা বাস্তবে কার্যকর করে সে জানতে হলে আপনাকে এই গল্পটি পড়ে আসতে হবে !
গল্পের লিংক
রোবসেপিয়ান্সের ভালোবাসা
তিনটি খবর দিয়ে এই গল্পটা শুরু !
তারপরেই দেখা যায় রিশান নামের একজন শহরের বিলাশ ব হুল বাড়ি ছেড়ে চলে যায় নির্জন এক জায়গায় ! একা একাই বাস করতে থাকে ! কিন্তু রিশানের উদ্দেশ্য ছিল অন্য ! সে এক অন্য রকম কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে । বানানো শুরু করে আর আপন স্বপ্নের প্রেমিকাকে ! নিজ হাতে !
একটু অন্য রকম লাগছে না !
নিজ হাতে নিজের প্রেমিকাকে সৃষ্টি করা !
এই গল্পে খানিকটা এমনই হয়েছে ! কিন্তু আসলেই কি শেষ পর্যন্ত সব কিছু তার মন মত হয়েছিল ? গল্পের শেষে আর একটা সত্য কথা জানার আছে !
দেরী না করে গল্পটা পড়ে ফেলুন !
গল্পের লিংক
খাস্তগীর সমগ্র
বিজ্ঞানী খাস্তগীরের মোট তিনটি গল্প আছে ! তিনটি গল্প দারুন মজার ! পড়ে দেখতে পারেন । তার যুগান্তকারী আবিস্কারের সাথে সব যুগান্তকারী ঘটনা ! ভাল করে বলতে গেলে যুগান্তকারী দূর্ঘটনা !
গল্পের লিংক
গল্পের লিংক ০২
গল্পের লিংক ০৩
আগেই বলেছি সামুতে সায়েন্স ফিকশন লেখকের সংখ্যা অনেক কম ! আমার চোখে পড়েছে আরো কম ! মোটামুটি এই কয়দিনে এই গল্প গুলোই পড়েছি ! আপনারা পড়ে দেখতে পারেন ! সময় গুলো বৃথা যাবে না এই টুকু গ্যারান্টি দিতে পারি !
একজন লেখকের একটা গল্প পড়ে, যদি তার অন্যান্য গল্প পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করি তাহলে আমার কাছে মনে হয় সেই হল আসল লেখক ! দেবদূত ভাইয়ের একটা গল্প দিয়ে শুরু করেছিলাম । কিন্তু এক পড়ার পর তার প্রত্যেকটা গল্প পড়তে আমি বাধ্য হয়েছি ! এবং একটাতেও আমি হতাশ হয় নি ! তাই এই গল্প গুলো নিয়ে একটা পোষ্ট দিলাম !
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন