সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই মনে হল আজকে আমার দিন মোটেও ভাল যাবে না । এমন মনে হওয়ার কোন কারন নাই । আমি ভবিষ্যত্ দেখতে পারি না । আমাদের পরিবারের কেউ কোন কালে জোত্যিষী ছিল না ।
তবুও একটু সংকিত হয়ে উঠলাম । মনে মনে একটু ভয় শুরু হল । বারে বার মনে হল আজকে নিশ্চই কিছু একটা হবে ।
খারাপ কিছু একটা হবে ।
প্রথম যে দিন এমনটা মনে হয়েছিল তখন আমার বয়স কম । ক্লাস সেভেনে পড়ি । সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই মনে হয়েছিল আজকে খারাপ কিছু হবে । তখন অবশ্য তেমন একটা আমলে নেই নি । আসলে আমলে নেওয়ার মত বিচার বুদ্ধি তখন খুব একটা হয় নি । সকালের নাস্তা করে স্কুলে গেলাম । তিন নম্বর পিরিয়ডে হঠাৎ স্কুলে দপ্তরি এসে হাজির । আমি তখন ব্লাক বোর্ড থেকে অংক তোলায় ব্যস্ত । দপ্তরি এসে আমার নাম ধরে ডাকতে লাগল ।
হেডমাস্টার সাহেব জাহিদ কে ডাকছে । মানে আমাকে ডাকছে । মনে মনে একটু ভয় নিয়েই হেড মাস্টারের রুমের দিকে হাটা দিলাম । বারবার মনে করার চেষ্টা করতে লাগলাম যে এমন কিছু করেছে কি না । কি আকামটা করেছি যার জন্য আমার ডাক পরেছে । তখনকার বয়সে মনে হত স্কুলের হেড মাস্টারের রুমে কেবল বড় কোন অপরাধ করলেই ডাক পড়ে ।
কিন্তু বড় কোন অপরাধের কথা মনে করতে পারলাম না কিছুতেই । হেড মাস্টারের রুমে গিয়ে দেখি আমাদের পাশের বাড়ির জমির চাচা বসে আছে মুখ গম্ভীর করে । রুমে ঢুকতেই হেড স্যার বলল
-জাহিদ । তোমার চাচা তোমাকে নিতে এসেছে । তুমি তোমার চাচার সাথে বাসায় যাও ।
আমি মাথা কাত করে বললাম
-আচ্ছা ।
আমার তখন এই আনন্দ হচ্ছে যে পঞ্চম পিরিয়ডের ইংরেজি ক্লাসটা করতে হবে না । স্যার আজকে একটা পুরো রচনা মুখস্ত করতে দিয়েছিল । আমার পড়া হয় নি । জমির চাচা উঠে দাড়ালেন । আমি জমির চাচার পেছন পেছন বের হতে যাবো এমন সময় হেড স্যার বললেন
-জাহিদ তোমার সামনের দুইদিন স্কুলে আসতে হবে না । তোমার ছুটি ।
এই রকম অপ্রত্যাশিত ছুটি পেয়ে আমি একবারে লাফ দিয়ে উঠলাম । ক্লাস রুম থেকে বই খাতা নিয়ে জমীর চাচার পেছন পেছন নাচতে নাচতে বাসায় গেলাম ।
তখনও ঠিক বুঝতে পারি নি ঠিক কি কারনে জমীর চাচা আমাকে স্কুল থেকে নিতে এল । বাসায় কাছে এসে হঠাৎই দেখি বাড়িতে অনেক লোকের ভিড় ।
যদিও তখন ছোট কিন্তু আমার বিন্দু মাত্র বুঝতে অসুবিধা হল না যে খারাপ কিছু হয়েছে । আমি এক দৌড়ে বাড়ির ভিতর গিয়ে দেখি উঠানের উপর একটা বড় পাটি তে আমার বাবা শুয়ে আছে । চোখ দুটো বন্ধ । নাকে তুলো গুজা ।
ঐ দিন আমার বাবা আমার কাছ থেকে দুরে চলে গেলেন। বলতে গেলে আমি ঐ দিনই এতিম হয়ে গেলাম । তারপর থেকে যতবার এই খারাপ কিছু হওয়ার অনুভুতিটা এসেছে ততবারই কিছু না কিছু খারাপ হয়েছে ।
আমি চিন্তিত মুখেই বাথরুমে গেলাম । বাথরুম থেকে বেরিয়েই দেখি রুবি আমার খাটের উপর বসে আছে । আমাকে বের হতে দেখে রুবি বলল
-বাব্বাহ । মানুষ এতোক্ষন বাধরুমে থাকে জানা ছিল না । কি করতে ছিলেন এতোক্ষন ?
আমি খানিকটা বিরক্ত হলাম ।
-কি করতে এসেছিস তাই বল । আমি কতক্ষন বাধরুমে থাকি সেটা গবেষনা না করলেও চলবে ।
রুবি মুখ বেকিয়ে বলল
-আমার সেটা বয়েই গেছে । এই নেন ।
এই বলে রুবি আমার দিকে একটা কাগজ তুলে দিল ।
-কি এটা ?
-জি প্রেম পত্র । আমার এক বান্ধবী আপনাকে দিয়েছে ।
-ফাজলামী করবি না । থাপ্পর খাবি তাহলে ।
-মেরেই দেখেন ।
আমি হাত তুলে মারার ভঙ্গি করতেই রুবি পালিয়ে গেল । যাওয়ার সময় দরজার কাছে থেমে বলল
-আজকে সন্ধ্যায় আপনার খবর আছে ।
-যা ভাগ ।
আমার এই চাচাতো বোনটা বড় ফাজিল হয়েছে । মাঝে মাঝে ঢং দেখলে রাগে শরীর জ্বলে যায় । কিন্তু কিছু বলতে পারি না ।
চাচার বাড়িতে মানুষ আমি । বলতে গেলে আশ্রিত । মায়ের চলে যাওয়ার পরে আমাকে দেখার যখন কেউ ছিল না তখন এই বড় চাচাই আমাকে নিজের বাসায় এসে রেখেছিল ।
আমি কাগজ খুলে দেখি বাজারের লিষ্ট । সাথে একটা একহাজার টাকার নোট । একটু অবাক হলাম । যা যা লেখা আছে তাতে বড় জোর শ'পাঁচেক টাকার বাজার হবে ।
তাহলে চাচী এতো বড় নোট কেন দিলেন ?
এতো দিন ধরে এ বাড়ির বাজার করে আসছি । এমন তো কোন দিন হয় না । চাচী একদম ঠিক কাটায় কাটায় টাকা দেন আমাকে । যা যা লাগবে ঠিক ততটুকু । তাহলে আজকে এতো বড় নোট কেন দিলেন ?
থাক । দরকার নেই ।
ফেরত্ টাকা বাজারের সাথে দিয়ে দিলেই হবে । বাজার থেকে ফিরে এসে চাচীকে কাগজ সহটাকা ফেরত্ দিয়ে ঘরের দিকে পা বাড়াবো তখনই চাচী ডাক দিল ।
-জাহিদ ।
-তোর টাকা চলে এসেছে কাগজের সাথে ?
-আমার টাকা ?
আমি পকেটে হাত দিতে গিয়ে দেখি চাচী পাঁচশ টাকার নোট টা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল ।
চাচী বললেন
-পাঁচশ টাকায় সব কিছু হয়ে গেছে ?
-পাঁচশ টাকা ?
চাচী পাঁচশ টাকার কথা কেন বলল ? কাগজের ভিতরে তো এক হাজার টাকার নোট ছিল । চাচী কি ভুলে গেল নাকি কত দিয়েছিল ?
আমি বলল
-জি হয়ে গেল । দশ টাকা বেঁচে আছে ।
-আচ্ছা তোর কাছে রাখ । সিগারেট টিগারেট খাস ।
-চাচী আমি সিগারেট খাই না ।
আমি আসলেই সিগারেট খাই না । সিগারেট খেতে টাকা লাগে । সেই টাকা আমার কাছে নাই । চাচা এখানে আশ্রয় দিয়েছে এই টুকুই । তিনবেলা খাই আর রাতের বেলা ঘুমাই । বাদ বাকী কিছুর আমি চাচার কাছ থেকে নেই না । দুইটা টিউশনি করি । ঐটা দিয়ে কোন রকমে পড়ালেখা আর টুকটাক হাত খরচের টাকা চলে যায় । আমি সিগারেট খাওয়ার বিলাশিতা কিভাবে দেখাবো ?
চাচী আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-খাস না ? না খাওয়াই ভাল । খালি খালি টাকা নষ্ট ।
চাচী আর কথা বাড়ায় না । দশটাকা আর পাঁচশ টাকার নোটটা আমার হাতে দিয়ে চলে যায় । আমি নোট দুটো নিয়ে রুমে চলে এলাম । এখনও ঠিক বুঝতে পারছি এমনটা কেন হল ।
রুবি কিছু করে নি তো ?
রুবির ঘরে গিয়ে দেখি ও ওর কম্পিউটারে বসে কি যেন কর ছে ।
-রুবি ?
খানিকটা চমকে উঠে ও আমার দিকে তাকালো । চোখে মুখে কেমন একটা অপ্রস্তুত ভাব । তাড়াতাড়ি করে কম্পিউটারের স্কীন বন্ধ করে দিল । আমি বললাম
-কি করছিস ?
-কি ছু .......
-ওভাবে কম্পিউটার বন্ধ করলি কেন ?
-আমার ইচ্ছা । আর আপনি এভাবে দরজার নক না করে ভিতরে কেন ঢুকলেন ।
-আরে ..
আসলেই এভাবে দরজায় নক না করে ভিতরে ঢোকা ঠিক হয় নি । রুবি এই বার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়েছে । ইন্টার পড়া মেয়ে অনেক বড় হয়ে য়ায় । আমি নিজেও একটু অপ্রস্তু হয়ে যাই ।
-আসলে ...
রুবি ততক্ষনে সামলে নিয়েছে । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা ঠিক । এর পর থেকে মনে থাকে যেন । কি বলতে এসেছেন বলেন ?
-চাচী কয়টাকা দিয়েছিল তোর হাতে ?
-কেন ?
-বলবি তো ?
-একহাজার ।
-এক হাজার ?
-সিওর ?
-জি না সিওর না ।
-আহা বল না । আমার কেন জানি মনে হচ্ছে চাচীর ঠিক মত মনে নাই আমাকে কয় টাকা দিয়েছিল । উনি হয়তো ভুল করে আমাকে পাঁচশ টাকা বেশি দিয়ে ফেলেছে ।
-ভাল তো । পাঁচশ টাকা মেরে দেন । ভয় নেই আম্মু টের পাবে না । এখন আপনি যান । জলদি যান ।
আমি আর কিছু বললাম না !
আমি নিজের ঘরে ফিরে এলাম । সকালবেলা মনে হয়েছিল দিন খারাপ যাবে । কিন্তু সকাল বেলা করেই এই রকম অর্থপ্রাপ্তীর ঘটনা !
ভার্সিটিতে গেলাম না ভয় তেই । না জানি কখন কোন অঘটন ঘটে যায় । কিন্তু টিউশনিতে যেতেই হল বিকাল বেলা । মনের ভিতর একটা ভয় লেগে ছিল নিশ্চই আজকে আমার টিউশনিটা চলে যাবে । দেখা গেল পড়াচ্ছি হঠাৎ করে ছাত্র বলল স্যার কাল থেকে আমি আর পড়বো না । অথবা বাচ্চার মাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই কথাটা বলতে পারে ।
এমন একটা অভিজ্ঞতাও আছে । সেদিন সকাল বেলাও ঘুম থেকে উঠে ঠিক একই ভাবে মনে হয়েছিল ! আজকে কিছু একটা খারাপ হবে ।
মনে মনে ভয় থাকলেও সারা দিন কোন সমস্যা ছাড়াই চলে গেল । ঠিক সন্ধ্যা বেলা যখন পড়া শেষ হল দেখলাম ছাত্রের মা একটা খাম আমার দিকে এগিয়ে দিল !
একটু অবাক হয়েই টাকা টা নিলাম কারন মাস শেষ হতে এখন দু দিন বাকী ! এতো জলদি টাকা দেওয়ার মানে কি !
তারপরও ছাত্রের মা বলল
-আসলে বাবা আমাদের এখন সংসারে একটু টানা টানি চলছে ! সামনের মাস থেকে বাবু আর মনে হয় তোমার কাছে পড়তে পারবে না !
আজকেও না জানি এমন কিছু হয় ! কিন্তু যখন পড়িয়ে বের হয়ে এলাম তখনও যখন কিছু হল না তখন একটু হাফ ছেড়ে বাঁচলাম ! যাক !
এখন মনে হচ্ছে আর কোন সমস্যা নাই ! বাসায় গিয়ে খেয়ে একটা ঘুম দিলেই দিন শেষ !
কোন রকম সমস্যা ছাড়াই দিনটা শেষ হবে এটা ভাবতেই ভাল লাগছে !
বাসায় ড্রয়িং রুমে ঢুকেই দেখি চাচা গম্ভীর মুখে বসে আছে ! চাচার মুখটা এতো গম্ভীর যে আমি খানিকটা শংকিত হয়ে উঠলাম !
নিশ্চই কিছু হয়েছে ।
কি হয়েছে ?
বাড়ির কেই অসুস্থ হয়ে উঠলো ?
আমি চাচার সামনে খুব একটা পড়ি না ! আর পড়লেও একটু এড়িয়েই চলি ! কেন জানি চাচা কে একটু ভয়ই লাগে আমার !
আমি তবুও চাচার পাশে বসলাম ! চাচার মুখ গম্ভীর । এই সময় এখান থেকে চলে যাওয়া কেমন লাগে ?
আমি বসতে বসতে বললাম
-চাচা সব কিছু ঠিক আছে ?
চাচা কেবল আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকালেন কিছুক্ষন ! কিন্তু কিছু বললেন না ! আমি বুঝতে পারছি চাচা কোন কারনে আমার উপর রেগে আছেন। কিন্তু ঠিক কি কারনে রেগে আছে তাই তো বুঝতে পারছি না ! সকালে ৫০০ টাকার কথা কি জেনে গেছে নাকি ?
নাহ !
এটা তো জানার কথা না !
তবুও এতো রাগার কি আছে ?
আশ্চার্য তো !!
আমি আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলাম তখনই চাচী রুমে ঢুকলেন ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-জাহিদ তুই আমার সাথে আয় !
-কি হয়েছে চাচী !
চাচী কিচু বলতে যাবে তার আগেই চাচা চিৎকার করে বলল
-হারামজাদা জানিস না কি হয়েছে ? এখন আবার ন্যাকা সাজছিস ! থাপড়িয়ে তোর দাঁত খুলে ফেলবো !
চাচী বলল
-আহা ! এই সব কি ?
-এই সব কি জানো না ? এখনই ওকে বেরিয়ে যেতে বল ! এখনই ! আমার খেয়ে আমার পরে আবার আমার ঘরেই গর্ত করে ! এক্ষুনি বেরিয়ে যেতে বল !
চাচী আমার হাত ধরে অন্য ঘরে নিয়ে এল ! আমি এতোটাই অবাক হয়েছি যে কিছু বলতেও পারছি না ।
কি এমন হল ?
আর আমি কি এমন করলাম ?
তারপর চাচী আমাকে যা বলল তা শুনে আমি তো থ ! বারবার মনে হচ্ছে আমি ভুল শুনছি ! এ হতে পারে না ! কিছুতেই হতে পারে না !
বিকেল বেলা চাচা যখন বাসায় এল অফিস থেকে রুবি নাকি সরাসরি তাকে গিয়ে বলেছে যে আমাকে নাকি সে বিয়ে করতে চায় । এবং আজই । রাত দশটা পর্যন্ত সময় দিয়েছে সে । এর ভিতর যদি বিয়ে না দেয় তাহলে র্যাট কিলার খেয়ে সে মরে যাবে ।
সকাল বেলা নাকি সে র্যাট কিলার কিনে এনেছে !
আমি আসলেই কিছু বুঝতে পারছিলাম না এমনটা কেন হবে ! কেন ? রুবি এমন পাগলামো কেন করবে ?
দশটা বাজার আগেই রুবির সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেল ! কোন আয়োজন না ! কেবল কাজী এল । আমাদের বিয়ে হল ! তারপর চলে গেল ! সারাটা সময় চাচা আমার পাশেই বসে ছিলান গম্ভীর মুখে ! কিন্তু বিয়ে পড়ানোর পরে যখন তাকে সালাম করতে গেলাম তখন সে আসলেই আমাদের দুজনকে দোয়া করলেন !
আমার কিছু করার ছিল না । যে মানুষটা আমাকে এতোদিন বিনা হিসাবে এভাবে আশ্রয় দিল কিছুতেই তার অবাধ্য হতে পারলাম না !
চাচা যখন নিজেই আমাকে আড়ালে ডেকে রুবিকে বিয়ে করার জন্য বললেন আমি কিছুতেই মানা করতে পারলাম না !
-জাহিদ !
-রাগ করেছিস ?
-কেন ? রাগ করবো কেন ?
-না ।ঐ যে তোকে বকলাম ।
-না না । কি যে বলেন !
-আসলে তুই তো আমার ছেলের মতই ! মাথায় একটু রাগ বেশি তো তুই জানিস ! তারপর রুবি এমন একটা পাগলামো করবে বুঝতেই পারি নি !
-না চাচা ঠিক আছে ।
-আমার মেয়েটা কে বিয়ে করবি ? তুই তো ওকে চিনিসই । একটু জেদি আর কি । দেখতেও খারাপ না ! কি বলিস !
-হুম !
-ওর মা বলল সত্যি নাকি র্যাট কিলার এনে রেখেছে । ওকে মাকে নাকি দেখিয়েছে !
-আচ্ছা !
-আমি তাহলে কাজী ডাকি ?
-আচ্ছা !
আমি কেবল ভাবছি আমি মনে হয় স্বপ্ন দেখছি ! আমি স্বপ্ন দেখছি !
এই জন্য কি রুবি বলেছিল যে আমার রাতে আজকে খবর আছে ?
এই জন্য কি আমার মনে বলছিল আজকে কিছু একটা হবে !
তাই বলে আমার এতো বড় সর্বনাশ হবে ! এতো বড় সর্বনাশ !!!
আল্লাহ আমাকে বাঁচাও !
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৮