-আপনার কাছে ৫০০ টাকার নোট ভাংতি হবে ?
-আফা এটো বড় নোট হইবো না !!
মেয়েটিকে এই রিক্সার হুডের ভিতরেই কেমন একটু অস্থির মনে হল ! আমি অপেক্ষা করছি মেয়েটিকে কখন দেখতে পাবো !
মেয়েটি রিক্সা থেকে নেমে এল !
হায় !!
তোমাকে দেখে কেন বুকে বাজে সুখের কাটা !!
মেয়েটি একটা সাদা রংয়ের শর্ট কামিজ পরে আছে, সাথে টাইলস জিন্স !! কালো রংয়ের ! আর মেয়েটা চোখে কাজল দিয়েছে !
আমি ঠিক গেট টার পাশেই দাড়িয়ে আছি । রিক্সা যেহেতু এই এই বাড়িটার সামনে দাড়িয়েছে মনে হয় এই মেয়েটা এই বাড়িতেই থাকে !!
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকি ! মেয়েটা এখন রিক্সাযালার দিকে তাকিয়ে বলল
-আপনি তাহলে একটু বসেন আমি ভিতর থেকে টাকা নিয়ে আসি ! ঠিক আছে ?
-আইসচ্ছা !!
মেয়েটি এবার গেটের দিকে ফিরলো ! আমার পাশ দিয়েই যাবে ! আমার তাকালো ! কয়েক মুহুর্তের জন্য ! তারপর গেটের দিকে এগিয়ে গেল !!
-এক্সকিউজ মি ?
মেয়েটি ঘুরে দাড়ালো !
আমিও একটু অবাক হলাম ! কথাটা আমি বলি নি । বলেছে লিজা !!
আসলে আমার বন্ধুটির একটা বাসা দরকার । ভাড়ার জন্য ! লিজা আমার এলাকাতে থাকতে চেয়েছিল । সেই জন্যই এই বিকাল বেলাতে আমি লিজা আর সজিব বাসা দেখতে বেরিয়েছি । এই বাড়িতের সামনে একটা টুলেট দেখে দাড়িয়েছি ।
নাম্বার দেওয়া ছিল সজিব সেই নাম্বারে কথা বলছে এই সময় এই মেয়ের আগমন !!
মেয়েটি বলল
-জি ? বলেন ?
-আপনি এই বাসায় থাকনে ?
আরে এইটা কি ধরনের প্রশ্ন হল ! এই মেয়ে গুলা ঠিক মত কথাও বলতে পারে না ।
মেয়েটি যেন একটু অপ্রস্তুত হল ! মুখটা ঈষৎ লাল হয়ে গেল । মনে হয় অপরিচিত মানুষের সাথে মেয়েটির কথা বলে ঠিক অভ্যাস নাই । মেুেটি বলল
-জি ! এখানে থাকি !
লিজা বলল
-আসলে আমরা এই বাসাটা ভাড়া নিতে চাচ্ছি ! আপন কি বলতেন পারেন ভাড়া কত ?
মেয়েটার মুখটা যেন আবার একটু লাল হয়ে গেল ! মেয়েটি বলল
-আসলে আমাদের ফ্লাট কেনা তো আমি ঠিক বলতে পারবো না অন্য ফ্লাট গুলোতে কত করে ভাড়া ! সরি !
-না না ! কোন ব্যাপার না ......
এই ভাবে আরো কথা চলতে থাকে । লিজা ওর বাসার অন্যান্য ব্যাপার গুলো মেয়েটার কাছ থেকে জেনে নিতে থাকে ! আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়েই থাকি !!
এক সময় মেয়েটা চলে যায় ভিতরে !
মেয়েটা চলে যেতেই আমি লিজাকে বললাম
-শোন লিজা !! আর এই বাসাতেই বাসা ভাড়া নিতে হবে !! কোন কথা নেই ! এই বাসাই নিতে হবে !
লিজা কেবল হাসলো !
সজিবের মনে হয় কথা বলা শেষ ! আমাদের কাছে আসতেই বললাম
-এই বাসা নিতে হবে ! কোন কথা নাই !!
সজিবও আমার কথা শুনে হাসলো !! বলল
-কথা বার্তা মুটামুটি পজেটিভ ! এখন কেয়ারটেকার নাই ! মনেহয় নামাজ পরতে গেছে । চল আমরা অন্য বাসা গুলোতে দেখি ! একটু পরে এসে আমরা রুম দেখবো !
আমরা অন্য বাসাতে যাবোই কি মনে হল আমি দাড়িয়ে থাকা রিক্সায়ালাকে বললাম
-ভাড়া কত মামা ?
-২০ টাকা মামা !!
আমি মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে রিক্সায়ালাকে দিয়ে দিলাম ! বললাম
-যাও মামা !
রিক্সায়ালা টাকা নিয়ে চলে গেল ।
লিজা বলল
-এটা কি হল ?
-কিছু না ! এমনি !!
পরের মাসেই লিজারা ঐ ফ্লাটে উঠে পড়লো !! আমরা সারা দিন খেটে খুটে লিজার বাসায় তুলে দিলাম । বিকাল বেলা যখন নিচে নামতে যাবো তখন সেদিনের সেই মেয়েটার সাথে দেখা হয়ে গেল । আমি লিফট দিয়ে নামছিলাম লিফট এক ধাপ নিচে নামতেই মেয়েটা লিফটে উঠে এল ! আমাকে দেখে যেন একটু চমকালো !
লিফট মনে হয় আর একতলা নিচে নামলো ! মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে এবার বলল
-আপনারা চলে আসলেন ! তাই না ?
-আসলে আমি ঠিক আসি নাই ! সেদিন যে মেয়েটা আপনার সাথে কথা বলল না ওরা এসছে ! আমি থাকি কাছেই ! এই দুই গলি পরে । আমি আর লিজা একসাথে পড়িতো ! এই জন্য আর কি ?
-লিজা ??
মেয়েটার মুখে একটু যেন বিশ্ময় !!
আমি বললাম
-হ্যা ! আমার বন্ধুটির নাম লিজা ! কেন ?
মেয়েটা একটু যেন লজ্জা পেল ! মুখটা সেদিনের মত আজও একটু লাল হয়ে রইলো ! তারপর বলল
-আসলে আমার নামও লিজা ! আমরা যেই ফ্লাটে উঠেছেন সেটা আমার ছোটা চাচীর ফ্ল্যাট !
-ও তাই নাকি ? ভালতো !! সেদিন আপনার চাচীর সাথে কথা বলার সময়ে আপনার কথাই তাহলে উনি বলছিলেন !! লিজা !!
মেয়েটা আবা রেকটু লজ্জা পেল মনে হল !!
আমাদের লিফট জার্নি শেষ ! গ্রাউন্ড ফ্লোরে লিফট এসে হাজির ! মেজাজটা খানিকটা খারাপ হেয় গেল । শালার লিফট টা এতো জলদি শেষ হয়ে গলে কেন ?
আমরা দুজনেই গেটের কাছে বের হয়ে এলাম !
-বাসায় যাবেন এখন ?
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললাম
-হ্যা ! আপনি ?
-এই তো একটু সামনে যাবো !!
-আচ্ছা দেখা হবে !!
আমার যদিও যেতে ইচ্ছা করছিল না তবুও ভদ্রতা করে আগেই হাটা দিলাম । সবে তো মাত্র শুরু ! এখনই যদি মেয়েটার কাছে বেহায়ার মত আচরন করি তাহলে সামেন গিয়ে মেয়েটা হয়তো পাত্তাই দিবে না ! যা করতে হবে আস্তে আস্তে করতে হবে !!
আচ্ছা মেয়েটার কি কোন বয়ফ্রেন্ড আছে ?
যদি থাকে ? তাহলে তো সব প্রোজেক্ট লস হয়ে যাবে !!
দেখি লিজাকে দিয়ে এই লিজার আরো ডিটেইল খবর নিতে হবে !!
পরের দিনই লিজার সাথে আবার দেখা হয়ে গেল । দুই লিজার সাথেই । আমার বাড়ির সামনেই খুব সুন্দর চটপতি বানায় । লিজাকে অনেকদিন থেকেই বলে আসছিলাম । ওর বাড়ির সামনে গিয়ে দেখি দুই লিজা একসাথে গল্প করছে !!
আমি গিয়ে বললাম
-চল আজ তোমাকে চটপটি খাওয়াই ! টের পাবা কি পরিমান টেষ্ট !
-তাই !
ঐ লিজা বলল
-মন্টু মামার চটপটি ?
-হ্যা !
ঐ লিজা এই লিজা কে বলল
-হ্যা আপু অনেক টেষ্ট !! আচ্ছা আমি যাই !
আমি এই সুযোগ কিভাবে ছেড়ে দেই
-কোথায় যাবেন ! আপনিও চলেন ! চটপটি খেয়ে তারপর যাবেন !
-না ভাইয়া ! ঠিক আছে !
এই লিজা তখন ঐ লিজার হাত ধরে বলল
-আরে চলতো !! একটু আগে বললে না আমি তোমার আপু হই তাহলে আবার না করছো কেন ? চল চল !!
ঐ লিজা আবার একটু যেন লজ্জা পেল !!
-আচ্ছা আপু চলেন !!
চটপটি খেতে খেতে দুই লিজার সাথে অনেক কথা হল !! অনেক গল্পও হল । ছোট লিজার ব্যাপারে অনেক কিছুই জানলাম ! নিজের ব্যাপারেও অনেক কিছু বললাম !
কেন জানি মনে হচ্ছে সব কিছু অনুকুলেই আছে !! এখন দেখা যাক সামনে কি হয় ??
শানে নুজুলঃ গল্পটা খানিকটা সত্য কাহিনির উপর বেজ করে লেখা । আমার বন্ধু লিজার বাসা ঠিক করতে গিয়ে সত্যি এমন ভাবে একটা বাড়ির সামনে দাড়িয়ে ছিলাম । ঠিক সময়ে এমন একটা মেয়ে রিক্সা থেকে নামলো ! একই ভাবে ৫০০ টাকার নোট বের করলো ! লিজা তার সাথে কথা বলল ! এবং অবাক হবার বিষয় হল সামনের মাস থেকে লিজারা সত্যি সত্যি সেই বাসায় থাকতে আসছে । সেই হিসাবে আমার তো ওদের বাড়ি যাওয়া আসার হবেই । সুতরাং জোর সম্ভাবনা আছে মেয়েটার সাথে আবার দেখা হবে !! কথাও হতে পারে !! হতে পারে আরো কত কিছু !!
আমি খুব পজেটিভ মানুষ !!
ফ্ল্যাট মালিকের মেয়ের লিজা এবং আমার সম্ভাব্য প্রেম কাহিনী !! :!> :!> :#> :#>
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪৭টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!
অপেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=
বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি
আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।
সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন