ছোটবেলায় আমরা সবাই কমবেশি এই ইংরেজি রচনা গুলো পড়েছি ! এ জার্নি বাই বাস, ট্রেন, লঞ্চ অথবা প্লেন ! কেউ কি এ জার্নি বাই অটো রিক্সা পড়েছেন ?
আমি নিশ্চিত যে পড়েন নি । আমিও পড়ি নি ।
আমাদের একটা ছোট্ট ক্লাব আছে । আমাদের ৫ জন স্কুল ফ্রেন্ডের নিয়ে । যদিও ৫ জনের একজন এখন স্বেচ্ছায় বিতারিত । যা হোক বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আমরা প্লান করে আসছিলাম যে আমরা মুজিনগর যাবো । এবং যাবো অটোরিক্সাতে করে ! সবাই তো বাসে কিংবা মাইক্র নিয়ে যায় আমরা না হয় অটো নিয়ে গেলাম ।
পরিক্ল্পনা মত এবার রোজায় যখন সবাই একসাথে একটা দিন ঠিক করে ফেললাম । জুম্মাতুল বিদার পরদিন !
অটোরিক্সা আগেই ঠিক করা ছিল । নির্ধারিত দিন সকাল সাড়ে নয়টায় আামদের যাত্রা শুরু হল !
এই হল সেই অটো রিক্সা । ড্রাইভারের সিটে বসে পোজ দিলেও আমি কিন্ত ড্রাইভার না বলে দিলাম !!
অটোরিক্সা থেকে তোলা মেঠো পথের ছবি
মুজিবনগর আমাদের শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দুরে । আর এতোটা পথ ইজিবাইকে পাড়ি দেওরা খানিকটা কষ্ট কর । তাই আমরা শর্ট কার্ট পথ ধরেছিলাম ।
মুজিবনগর যাবার এই পথে আরো একটা দর্শনীয় স্থান পরে । আট কবর নাম !
৭১ সাথে শহীদ হওয়া আটজন মুক্তিযোদ্ধার কবর !
এই হল সেই আট জন মুক্তি যোদ্ধার পরিচয়
এখানে ছোট একটা কমপ্লেক্সও আছে ! ঈদের আগে গিয়াছিলাম বিধায় বন্ধ ছিল ভিতরে ঢুকতে পারি নি !!
আটকবর থেকে বের হয়ে আবার আমরা রওনা দিলাম । মোটামুটি একঘন্টা ২০ মিনিটা লাগলো আমাদের মুজিবনগর পৌছাতে !
এতোক্ষন একভাবে বসে থাকাটা একটুকষ্ট করই বটে !
যা হোক আসলাম যখন !
প্রথম গেট দিয়ে ঢুকে তোলা প্রথম ছবি
তারপর আরো একটা
এবার দেখেন তো নিচের ছবিটা ! বলেনতো এটা কিসের ছবি ! খুবই কমন, খুবই পরিচিত !! দেখেনতো চিনতে পারেন নাকি !!
অনেকে চিনে ফেলেছেন ! আবার অনেকে চিনতে পারেন নি বোধহয় ! অবশ্য নিচ থেকে তোলা তো একটু বুঝতে কষ্ট হতে পারে ! তাহলে আরো কিছু ছবি দেখা যাক ! উপর থেকে ! চিনতে পারার কথা
এখনও কি চিনতে পারেন নি?
এটা আমাদের দেশের মানচিত্র ! আমি যতদুর জানি এটাই সব থেকে বড় মানচিত্র !
উপর থেকে দেখার জন্য প্রায় চারতলা সমান উচু লম্বা বিল্ডিং আছে ! কিন্তু তবুও ক্যামেরায় সম্পুর্ন টুকু আসে না !
এবার সামনের অংশটুকু দেখুন উপর থেকে
পাশে বিশাল আমবাগান
পিছনে রয়েছে অফিস এবং মিউজিয়াম ! যদিও মিউজিয়ামটা এখনও চালু হয় নি !!
অন্যপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য ! যখন একদম উপরে দাড়িয়ে দেখছিলাম সত্যি মনটা জুড়িয়ে যাচ্ছিল.....।
এবার কয়েকটা ভাস্কর্য দেখুন মুক্তিযুদ্ধের
আমবাগানের পরেই আছে এখান কার স্মৃতিসৌধ !! না ঠিক আমবাগানের পরে না, আম বাগানের মধ্যেই আছে স্মৃতিসৌধটা !!
যদিও লেখা ছিল যে স্মৃতিসৌধের উপরে জুতা পরে ওঠা নিষেধ কিন্তু এতো রোদ ছিল আর উপরটা এতো গরম ছিল যে স্যান্ডেল ছাড়া ওঠা সম্ভব ছিল না ।
ফিরে যাবার পথে আমবাগানের ভিতর হাটছিলাম আমরা । এমনিতে রোজা ছিলাম আর আমবাগানটা এতো বড় ছিল যে এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব ছিল না !
পিছন থেকে তোলা ছবি
জায়গাটা সুন্দর, তবে বলবো না যে খুব হাইফাই ! একটু দুরেই ইন্দিয়ান বর্ডার । ইচ্ছা হলেই ভ্যান নিয়ে যাওয়া যায় ! তবে বাইরের প্রকৃতিটা আসলেই সুন্দর !
এচ্ছা হলেই ঘুরে আসতে পারেন !
যেভাবে যাবেন :
মুজিবনগর মেহেরপুর জেলার ছোট্ট একটা থানা শহর ! আয়তন খুবই অল্প ! ঢাকা থেকে সরাসরি মেহেরপুর যাবা বাস পাবেন !
গাবতলী থেকে জে. আর পরিবহন & মেহেরপুর ডিলাক্স নামের গাড়ি যায় সরাসরি মেহেরপুর । নন এসি হলেও গাড়ি খুব ভাল মানে আর আরামদায়ক ! ভাড়া নিবে ৩৫০ টাকা !
তারপর মেয়ের পুর থেকে বাস চেন্জ করে যেতে হবে মুজিবনগর । খুব বেশি হলে ২৫ টাকা ভাড়া নিবে জনপ্রতি ! তবে এই বাস জার্নিটাতে একটু কষ্ট করতে হবে !
আর একটা উপায় অবশ্য আছে ! জে আর পরিবহনের কয়েকটা গাড়ি সরাসরি মুজিবনগর পর্যন্ত যায় । কাউন্টারে খোজ নিলে জানতে পারবেন !
যদি থাকতে হয়ঃ কোন কারনে যদি মুজিবনগরে থাকতে হয় তাহলেও কোন সমস্যা নাই । একটা উন্নত মানের মোটেল আছে । এসি রুম ভাড়া ৫০০ টাকা ! এই হল মোটেলের ছবি
সবাই ভাল থাকবেন !!