somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিন্স পরা মেয়েটার সাথে আবার দেখা হয়ে গেল !!

০৩ রা আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মালঞ্চ গাড়ীর হেলপার আবার আমাকে বলল
-মামা জলদি উঠেন । সিগনাল ছাইড়া দিছে !
আমি একবার হেলপারের মুখের দিকে তাকালাম আর একবার তাকালাম মেয়েটার দিকে । মেয়েটি আমার পাশ দিয়েই হেটে চলে গেল । এতোক্ষন আমার পাশেই দাড়িয়ে ছিল । এই গাড়ীর পেছনে আরো বেশ কয়েকটি গাড়ীর লাইন । নিশ্চই কোন একটাতে উঠবে । সেদিনতো রাজধানী পরিবহনে উঠেছিল । আজ ও নিশ্চই ঐ গাড়ীতেই উঠবে ।
মেয়েটাকে এখনও দেখা যাচ্ছে । আমি আরো খানিকক্ষন মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইলাম । এখন আমার সামনে দুইটা অপশন আছে ।
এক. আমি মালঞ্চ গাড়ীতে উঠে পড়তে পারি । তারপর সোজা বাসায় । এটাই অবশ্য যুক্তি সংগত কাজ । সারাদিন খাটাখাটনি পর এখন সোজা বাড়ি যাওয়াই উচিত্‍ না কিনা একটা অচেনা জিন্স পরা মেয়ের পেছনে যাওয়া ।
দুই. আমি মেয়েটার পেছনে যেতে পারি । কেন যাবো যার পিছনে কোন যুক্তিসংগত কারন নাই ।
কিন্তু মন কি আর কোন যুক্তি মানে ? আমি গাড়ি না উঠে মেয়েটার পিছন পিছন হাটা শুরু করলাম ।
কি পাগলের মত একটা কাজ !!
আশ্চার্য !
আজ সারা দিন আসলেই অনেক পরিশ্রম গেছে । সেই সকাল বেলা বের হইছি বাসা থেকে । পরীক্ষা ছিল । পরীক্ষার পর আবার টিউশনীতে । টিউশনী থেকে যখন বের হলাম তখন বিকেলের আযান দিয়ে দিয়েছে ।
শাহবাগ বাস কাউন্টারে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি ঠিক তখনই মেয়েটাকে দেখলাম ।
একটু ফর্সা করে চেহারাটা । একটা ঘিয়ে কালালের জিন্স আর শর্ট কামিজ পরে আছে । ওড়নার বদলে একটা স্কার্প পরে আছে কাঁধে একটা ব্যাগ । এক পায়ের উপর ভর দিয়ে দাড়িয়ে আছে আপন মনে ।
আমার মতই বাসের জন্য দাড়িয়ে আছে ।
আমার এই একটা দোষ আছে । জিন্স পরা এরকম মেয়ে দেখলে চোখ ঘুরে তার দিকে চলেই যায় ।
আর মেয়েটাকে লক্ষ্য করার আরো একটা কারন আছে । গত কাল ঠিক একই ভাবে মেয়েটাকে দেখেছিলাম । গতকাল মেয়েটা একটা নীল রংয়ের জিন্স পরেছিল । আর একই ভাবে দাড়িয়ে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছিল বাসের জন্য ।
গত কালের আবাহাওয়াটা কেমন ভেজা ভেজা ছিল । থেকে থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল । যেই বৃষ্টি শুরু হচ্ছিল কাউন্টারের আশেপাশে থাকা সব মানুষ কেমন কাউন্টারের বড় ছাতির নিচে জড় হয়ে যাচ্ছিল । কেবল মেয়েটা দাড়িয়ে ছিল একই ভাবে ।
বৃষ্টি আসলেই ছাতি মেলছিল । ছাতি আমার কাছেও ছিল । বৃষ্টি আসলে আমিও একই কাজ করছিলাম । ভালই লাগছিল ! মেয়েটাও বৃষ্টিতে ছাতির নিচে দাড়িয়ে ছিল আমিও ছিলাম !!
আজ অবশ্য আকাশে বৃষ্টি নেই । আমি একটু দুর থেকেই মেয়েটাকে দেখছিলাম । যদিও বারবার এরকম তাকানো ঠিক হচ্ছে না তবুও মেয়েটার দিকে চোখ চলে যাচ্ছিলই ।
কয়েকবার তাকানোর পর মনে হল যে মেয়েটা মনে হয় টের পেয়ে গেছে যে আমি ওর দিকে বারবার তাকাচ্ছি ।
মেয়েটার এটিচিউড কেমন যেন একটু বদলে গেল । কেমন যেন একটু অস্বস্তি বোধ করতে লাগল । মুখের ভাবটাও কেমন একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম ।
কিন্তু মেয়েটার দিক থেকে কিছুতেই চোখ ফেরাতে আমি পারছিলাম না । আসলে কেবল জিন্স পরা বলে না মেয়েটার চেহারার ভিতর কেমন যেন একটা অভিব্যাক্তি ছিল যা আমাকে বার বার কাছে টান ছিল ।
খুব ইচ্ছা করল যে মেয়েটার নাম জিজ্ঞেস করি ।
একটু কথা বলি !
কিন্তু কিভাবে করবো ?

মেয়েটার পিছু পিছু উঠে পরলাম রাজধানী পরিবহনে । যদিও রাজধানী বাসটা অনেক ঘুরে যায় তবুও আরো কিছুটা সময় মেয়েটার সাথে থাকা যাবে এটা একটা আনন্দের বিষয় ।
বাসটাতে বেশ ভিড় ছিল । প্রথম আমরা দুজনেই দাড়িয়ে ছিলাম কিন্তু সায়েন্স ল্যাবের কাছে আসতেই মেয়েটা ডাবল সিটে একটা সিট পেয়ে গেল ।
আমি দাড়িয়েই রইলাম । আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে মেয়েটা আমাকে লক্ষ্য করছে ।
কারন বেশ কয়েকবারই মেয়েটার সাথে আমার চোখাচোখি হয়েছে । প্রতিবারই মেয়েটার চোখের দৃষ্টিতে কেমন একটা জিজ্ঞাসা ছিল ।
মেয়েটা যেন জানতে চাচ্ছে আমি কে ?
কেনই বা ওর দিকে বারবার তাকাচ্ছি ?
আসাদ গেটের কাছে আমি মেয়েটার আচরনে কেমন অবাক হলাম । আসাদ গেটে এসে মেয়েটার পাশের সিটে লোকটা উঠে গেল । ঠিক তখনই মেয়েটা আমার দিকে তাকাল । আমার হয়তো বুঝতে ভুল হতে পারে কিন্তু কেন জানি মনে হল যে মেয়েটা চাচ্ছে আমি যেন মেয়েটার পাশে বসি ।
বড় অদ্ভুদ !
কিন্তু আমার বসার আগেই মেয়েটার পাশের সিট টাতে আর একজন বসে পড়ল ।
স্পষ্টই মেয়েটা বিরক্ত হল ।
বিরক্ত আমিও হলাম ঐ লোকটার উপর ।
একটা সুযোগ ছিল মেয়েটার পাশে বসার । পাশে বসলে মেয়েটার নাম নিশ্চই জিজ্ঞেস করা যেত ! কিন্তু তা আর হল না ।
মেয়েটা আদাবর এসে নেমে গেল । আমিও নেমে গেলাম মেয়েটার পিছন পিছন । মেয়েটি আমার দিকে একবার তাকিয়ে হাটা শুরু করল । আমি মেয়েটার পিছু নিলাম ।
একবার মনে হল এসব আমি কি করছি ?
কেন করছি ?
কোন না কোন একটা মেয়ে, তার পিছু নিয়ে এতোদুর চলে এলাম ? মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলেই হত,
আপনার নাম কি ? ইত্যাদি ইত্যাদি !
মেয়েটার চেহারা খুব বেশি এগ্রসিভ মনে হল না । মেয়েটার চেহারায় একটা নমনীয় ভাবও আছে । নাম জিজ্ঞেস করলে মেয়েটা হয়তো বলে দিত ।
এতো দুর আসার কোধ দরকার ছিল না ।
কিন্তু ...!
মেয়েটা একটা গলির ভিতর ঢুকে গেল । আমি একটু দাড়িয়ে রইলাম । আমি ঢুকবো কি না এমন কথা ভাবতে ভাবতে গলির মধ্যে ঢুকে গেলাম ।
ঢুকেই থ !
গলিটা তো শুরুর আগেই শেষ ।
আর মেয়েটা গেল কই । কোন বাড়ির মধ্যে ঢুকলো ? আমি মাথা চুলকাতে চুলকাতে গলির মধ্যে থেকে বের হয়ে এলাম । কি রে ভাই কই গেল মেয়েটা ? মন খারাপ নিয়েই বাসায় ফিরলাম । মেয়েটার নাম জানা তো হল না !!



কদিন ধরে কি যেন হয়েছে !! কিছুতেই লিখতে ইচ্ছা করছে না । অবশ্য কারন আছে ! সারাদিন রোজা, পরীক্ষা, টিউশনী করে এসে শরীর খুব ক্লান্ত লাগে । কিছুই লিখতে ইচ্ছা করে না ! একদম করে না !!
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১০





যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×