আর আমার গার্লফ্রেন্ড নিশি , মোটামুটি সুপরিচিত একজন মানুষ ।
অন্য কিছু ভেবে বসবেন না । সুপরিচিত বলতে অন্য দিককার কিছু বোঝাই নি ।
আসলে আমাদের শহরের অর্ধেক মানুষই হল ওদের আত্মীয় । তাই মোটামুটি অর্ধেক লোকই ওকে চেনে । তাই ওকে নিয়ে রাস্তায় বের হবার কথা চিন্তাও করা যায় না ।
কেউ যদি দেখে ফেলে ডেটিংয়ের স্বাধ চিরো দিনের জন্য মিটে যাবে ।
কিন্তু মনতো আর মানে না । নিশিকে তো দেখতে মন চায় ।
ও কলেজে যায় । আমিও কলেজে যাই ।
দুর থেকেই কেবল ওকে দেখি । কারন বেশি কাছে গেলেও সমস্যা । কে না কে দেখে ফেলে !
ঐ দিন কলেজে ওকে দুর থেকেই দেখছিলাম দেখলাম ও ফোন করল আমাকে ।
-বল ।
-শিউলীদের বাড়ির সামনে যাও । আমি আসছি ।
আমি জলদি শিউলীদের বাড়ীর দিকে রওনা হলাম ।
শিউলী নিশির প্রায় সমবয়সী । সম্পর্কে ওর ভাতিজি হয় । কলেজের পাশেই ওদের বাড়ী ।
কালে ভাদ্রে যখন শিউলীর বাবা মা বাসায় থাকে না আমরা ওদের বাসায় দেখা করি । দুএকটা সুখদুঃখের কথা বলি আরকি ।
আজও মনে হচ্ছে সেরকম একটা সুযোগ এসেছে ।
আমি শিউলীদের বাড়ির সামনে গিয়ে হাজির হলাম । দেখলাম প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই শিউলী সামনের গেট খুলে দাড়াল ।
-আঙ্কেল ভাল আছেন ?
এতো বড় মেয়ে যদি আঙ্কেল বলে , শুনতে কি ভাল লাগে ? কিন্তু কিছু করার নাই । শিউলীর সাথে সম্পর্ক টাই এমন ।
-আসেন ।
আমি চুপপাপ ঘরে ঢুকে পড়লাম । আগেও এ বাসায় এসেছি । আমি বসার ঘরের দিকে পা বাড়ালাম । কিছুক্ষনের মধ্যেই নিশি এসে পড়ল ।
আহা ! কতদিন পর নিশিকে কাছ থেকে দেখলাম । ইচ্ছা করলেই এখন ওকে ছুয়েও দেখতে পারবো ! ওকে জড়িয়েও ধরা যেতে পারে অথবা চুমও খেতে পারবো !
নিশি মনে হয় আমার মনের কথা খানিকটা আচ করতে পেরেছিল । বলল
-শোন আলতুফালতু কোন চিন্তা করবা না ।
-আরে আলতু ফালতু মানে ? তুমি কিভাবে বুঝলে যে আমি আলতু ফালতু চিন্তা করছি ?
-তোমার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে !
আমি আয়নাতে নিজের চেহারা দেখলাম । কই কিছুইতো বোঝা যাচ্ছে না ।
-বলেছে তোমাকে ! আমি এখন চিন্তা করছিলাম তোমার ঐ মিষ্টি ঠোটে কয়টা চুম খাবো ! এটা কি ফালতু চিন্তা বল ? বলতে পারো এটা আমার জীবনের সুন্দরতম চিন্তা গুলোর একটা ।
-আহা ! শখ কত ! তুমি চাইলেই আমি তোমাকে চুম খেতে দিবো ?
-দিবা না মানে ? দাড়াও
বলে যখন নিশিকে ধরতে যাবো ঠিক তখন বাড়ীর কলিংবেল বেজে উঠল ।
সাড়ে সর্বোনাশ !
কেউ এসছে !
কে এসেছে ?
যদি আমাকে এখানে দেখে ?
খবর আছে !
বুকের মধ্যে খানিকটা ভয় আর উত্তেজনা অনুভব করি ।
কি হবে !
নিশির মুখ দেখেও বুঝতে পারি যে ও নিজেও খানিকটা চিন্তিত । শিউলী ঘরে ঢুকলো । বলল
-বাড়ির কাজের মেয়েটা এসেছে । আঙ্কেল কে বলেন না একটু খাটের নিচে পলাতে । কাজের মেয়েটা দেখে ফেললে আম্মুকে বলে দেবে !
নিশি আমার দিকে তাকাল । বলল
-প্লিজ ।
-কিন্তু তাই বলে খাটের তলে ?
-যাও না সোনা ! একটু কষ্ট কর ! আমার জন্য এই টুকু করতে পারবে না ?
কি আর করবো ? চট জলদি খাটের নিচে ঢুকে পড়লাম । আমি খাটের নিচে ঢোকার কিছুক্ষনের মধ্যেই কাজের মেয়েকে দেখতে পেলাম এ ঘরে আসতে । কাজের মেয়ে বলল
-আপামনি আপনার আম্মু ঘর মুছতে বলে গেছে । আর কিছু কি করা লাগবে ?
-না না ঘর মোছা লাগবে না ।
আমার বুকের মধ্যে কেমন একটা চাপ অনুভব করলাম । এখন যদি ঘর মুছতে শুরু করে আমাকে নির্ঘাত দেখে ফেলবে ! আর দেখলেই শিউলীর মার কাছে খবর চলে যাবে ।
হায় হায় এখন কি করি । শিউলী আবার বলল
-না না ঘর মোছা লাগবে না ।
-না আপামনি ঘর না মুছলে আম্মা আমারে বকবো । আমারে ভাল কইরা কইয়া গেছে ।
এই কথা বলেই কাজের মেয়ে দেখলাম ঘর থেকে বেরিয়ে গেল । মনে হয় বালতি আনতে গেল । কিছুক্ষন পর শুনতে পেলাম শিউলী বলছে
-আগে এই ঘরটা মোছেন ।
একটু পরই নিশি খাটের নিচে উকি দিল । বলল
-রেডি থাকো ।
-কেন ? দৌড় দিতে হবে নাকি?
-ঔরকমই । কাজের মেয়ে এখন বাথরুমের পাশের ঘরটা মুছতেছে । ওটা মোছা শেষ হলেই এঘরের পাশের ঘরটা মুছবে । ও যখন পাশের ঘরে ঢুকবে তুমি তখন চটকরে বেরিয়ে বাথরুমের পাশের ঘরে ঢুকবে ।
আমি বললাম
-বাথরুমে গিয়ে ঢুকি ?
-আরে গাধা নাকি ? পানির বালতি রাখতে যাবে না ? তখন কই যাবা ?
-হুম ! তাও তো ঠিক !
আসলে অস্থিরতা আর উত্তেজনায় আমার মাথা ঠিক মত কাজ করছে না । কিন্তু নিশিকে দেখলাম বেশ শান্ত ।
নিশি চলে যাবার পরপরই আমার মনের উত্তেজনা আরো একধাপ বেড়ে গেল ।
বারবার মনে হচ্ছে সঠিক সময়ে খাটের নিচ থেকে বের হতে পারবো তো ?
যদি কাজের মেয়ে আমাকে দেখে ফেলে ?
ছোট বেলায় আমরা পলাপলি খেলতাম । সেখানে একজন চোর হত আমরা সবাই লুকাতাম । তারপর সেই চোর আমাদের খুজে বের করতো । আর একটা নিয়ম ছিল যদি ঐ চোরের চোখের আড়ালে যদি ওকে ছুয়ে দেওয়া যেত তাহলে ওকে আবার চোর হতে হত ।
ঐ খেলায় একটা উত্তেজনা ছিল । ঠিক মত চোরকে ছুয়ে দিতে পারবো তো !
আমার বুকের মধ্যে এখন ঠিক ঐ রকম উত্তেজনা অনুভুত হচ্ছে । ঐ মহিলা যথন পাশের ঘরে যাবে আমি ওনার চোখের আড়ালে বের হতে পারবো তো ?
যদি আমাকে দেখে ফেলে ?
আমি অপেক্ষা করতে থাকি । আমার বুকের মধ্যে উত্তেজনাও একটু একটু করে বাড়তে থাকে ।