সকাল থেকেই মনটা খারাপ হয়ে আছে । কিছুতেই কিছুতে মন বসছে না । কিছু করতে ভাল লাগছে না ।
বার বার মনে হচ্ছে এমনটা কেন কেবল আমার সাথেই হয় !!
কেন এমনটা হয় ?
আজ একটা বিশেষ দিন । এই বিশেষ দিনটা আমি আমার বিশেষ মানুষটার সাথে কাটাবো তাও হচ্ছে না ।
অপুকে যখন কাল বললাম যে আজ আমি বাইরে যেতে পারবো না । আব্বু সারাদিন বাসায় থাকবে । আমি কিছুতেই বাইরে বের হতে পারবো না । অপুর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছিল ।
আর আব্বুর সামনে দিয়ে বাইরে যাওয়া মানে হাজারটা প্রশ্নের জবাব দেওয়া । এতো মিথ্যা কথা বলা আমার পক্ষ্যে সম্ভব না ।
আর আব্বুটাও না । বেছে বেছে ঠিক অপুর জন্মদিনটাতেই বাসায় থাকতে হবে !
আর ছুটির দিনটাতেই ওর জন্মদিনটা পরতে হবে ! আসলে আমার কপালটাই খারাপ ।
অপু কতটাই না মন খারাপ করছে ।
ইস ! আব্বুটা যদি এখন বাইরে যেত !
কত ছুটির দিনেই তো আব্বু বাইরে যায় !
আজ কি যাবে না ? আব্বু যাও না একটু বাইরে !!
অপুর সাথে একটু দেখা করবো !
ওর সাথে একটু কথা বলব !
ওর হাতটা একটু ধরবো !
ওকে একবার .... ও কতই না খুশি হত !
ওর জন্য একটা ছোট্ট গিফ্ট কিনেছি । ওটা কি ওকে দিতে পারবো না ?
আল্লাহ প্লিজ একটা কিছু ব্যবস্থা করে দাও ।
অল্প একটু সময়ের জন্য ওর সাথে দেখা করার সুযোগ করে দাও ।
ঠিক এমন সময় আব্বু আমাকে ডাক দিল ।
ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখি আব্বু তিন জন লোকের সাথে বসে কথা বলছে । তিনজনই একই রকম পোষাক পরা । কোন কম্পানী থেকে এসেছে বোধহয় ।
আজকাল সেলস ম্যান গুলোও কত হাইফাই হয়ে গেছে । আমি প্রথমে সেলস ম্যান গুলোর দিকে তাকাই নি । আসলে তাকানোর দরকার প্রয়োজন বোধ করি নি । সরাসরি আব্বুকে জিজ্ঞেস করলাম
-কেন ডাকছো আব্বু ?
-এই দেখ এরা এয়ারটেল থেকে এসেছে ।
আমি সরাসরি আব্বুর দিকে মুখ কয়ে দাড়িয়েছিলাম । সেলসম্যান গুলো আমার এক পাশে বসে ছিল । আব্বু যখন বলল এরা এয়ারটেল থেকে এসেছে ঠিক তখনই একজন সেলসমেন উঠে বলল
-গুড মর্নিং ম্যাম !
আমি মোটামুটি একটা ধাক্কার মত খেলাম । কোন মতে একটু ঘুরলাম চেহারা দেখার জন্য । যদিও চেহারা দেখার খুব একটা দরকার ছিল না নিশ্চিত হবার জন্য ।
কন্ঠ স্বর শুনেই অপুকে চিনতে পেরেছি ।
কিন্তু অপু এখানে ?
না না অসম্ভব ।
একে বারে বাসায় ? তাও আবার আব্বুর সামনে !
আমি ঘুরে তাকালাম অপুর দিকে ।
ইস ! ওকে ফরমাল ড্রেসে কি চমৎকারই না লাগছে !
আমি কেবল ওর দিকে তাকিয়েই আছি অবাক হয়ে । ভাবতেই পারছি না অপু এরকম সোজা সুজি বাসায় চলে আসবে !
কিন্তু ও কিভাবে এল বাসাতে ?
আর আব্বুকেই বা কি বলেছে ? এই কথার উত্তরটা পেলাম আব্বুর কাছ থেকে । আব্বু বলল
-আরে এয়ারটেলে চাকরি করে । গিফ্ট এন্ড ভাউচার ডিপার্টমেন্ট ।
গিফ্ট এন্ড ভাউচার ডিপার্টমেন্ট ? এমন নাম তো জীবনেও শুনি নি ।
এই অপুটা না ? এমন সব উদ্ভট চিন্তা ভাবনা বের করে !
-ইয়েস ম্যাম । আমরা গ্রাহক দের কাছে গিয়ে তাদের পুরুস্কার সরবারহ করি ?
যদিও ভেবেছিলাম কিছু বলবো না কিন্তু মুখ দিয়ে কথাটা বের হয়েই গেল । বললাম
-মানে ?
-মানে, ম্যাম এয়ারটেলের গ্রাহক রা যে সব পুরুস্কার জেতে বা কুইজ কন্টেস্ট অথবা লটারী জেতে আমরা সেই গিফ্ট গুলো তাদেরকে ডেলিভারি করি ।
-কিন্তু আমিতো কোন কুইজ কন্টেস্টে পার্টিসিপেইট করি নি ।
আসলে এটাও আমি জিজ্ঞেস করতে চাইনি । কিন্তু এতো কৌতুহল হচ্ছিল যে করেই ফেলল । জানতে ইচ্ছা করছিল যে কি বলে আব্বুকে পটালো !
-আসলে ম্যাম আমরা প্রত্যেক মাসে আমাদের সব সচল গ্রাহক দের নিয়ে একটা লটারী করি । তারপর রেনডমলি একটা নাম্বর সিলেক্ট করি । এবার আপনার নাম্বরটা উঠেছে । আর ভাগ্য ভাল যে আপনি আপনার রিয়েল ঠিকানা দিয়ে সিম টা কিনেছিলেন । তা না হলে তো আপনার পুরুস্কার তো আপনি পেতেনই না ।
-ও আচ্ছা ।
অপু এবার আব্বুকে উদ্দেশ্য করে বলল
-একচুয়ালী স্যার আমি আমাদের উইনার কে কিছু প্রশ্ন করতে চাই । ছোটখাটো একটা ইন্টার ভিউ বলতে পারেন ।
আব্বু বলল
-হ্যা হ্যা কর । সমস্যা নাই ।
-আসলে আপনার সামনে ম্যাম বোধহয় সাই ফিল করবে ?
আব্বু একটু ভুরু কুচকে বলল
-তোমরা কি এমন প্রশ্ন করবে যে ও আমার বলতে লজ্জা পাবে ।
-না না এমন কিছু না । তবে ইন্টারভিউ টা একা একা নিলেই স্যার ভাল হয় । মানে মেয়েরা তো বাবার সামনে সব কিছু বলতে পারে না । কিকি খেতে পছন্দ করে , কি করতে পছন্দ করে , কাকে পছন্দ করে ইত্যাদি ।
কাকে পছন্দ করে ? অপু বলছে কি এসব । আব্ব যদি টের পেয়ে যায় খবর আছে । অপু আবার বলল
-তবে স্যার আপনার অপত্তি থাকলে আমরা গিফ্ট দিয়ে চলে যাই । নিজের ইচ্ছামত কিছু একটা রিপোর্ট লিখে নিবো নে ।
আব্বু কি যেন একটু ভাবল । তারপর বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে । নিশি তুই ওকে ওর ঘরে নিয়ে যা ।
আব্বুর কথাটা শুনে মনের মধ্যে একটা আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল । কিন্তু তবুও মনে মনে সংঙ্কিত ছিলাম ।
কখন কি হয়ে যায় ? আব্বু যদি একটু খানি টের পায় তাহলে আমার খবরই আছে !
মনের মধ্যে সংঙ্কা আর কাঁপা কাঁপা পা নিয়ে আমার রুমের দিকে পা বাড়ালাম ।
কেবল দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকেছি ঠিক তখনই অপু আমাকে পিছন থেকে চেপে ধরলো ।
-কি করছো ?
তারপর আমাকে দরজার সাথে চেপে ধরল । আবার বললাম
-অপু কি করছো ?
-কি করছো বুঝতেছো না ?
-অপু ছাড়ো প্লিজ । কেউ চলে আসবে !
-আসুক আই ডোন্ট কেয়ার !
-ছাড়ো প্লিজ, সোনা পাখি ।
-ওকে আগে একটা কিস কর ।
-কি কিস ?
-হুম । চুম খাও ।
-আমি চুমটুম খেতে পারবো না ।
-খেতে হবে ।
-পারবো না ।
-ওকে, চুম না খেলে কোন ছাড়া ছাড়ি নাই ।
-প্লিজ ছাড়ো । কেউ চলে আসবে ।
-না । আজকে আমার জন্মদিন আমার গিফ্ট চাই । আর আমি এতো কষ্ট করে তোমার বাসায় আসলাম আর তুমি একটা চুম খেতে পারবে না ?
কথা সত্য । ও এতো কষ্ট করেছে । এটা তো ও চাইতেই পারে !
-আচ্ছা ঠিক চোখ বন্ধ করে ।
দেখলাম অপুর চোখটা কেমন উজ্জল হয়ে উঠল ।
-না করবো না । প্লিজ বন্ধ কর । আমার লজ্জা লাগছে ।
অপু আমার আমার হাত দুটো ছেড়ে দিয়ে আমাকে আরো খানিকটা জড়িয়ে ধরল ।
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!
অপেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=
বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি
আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।
সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন