যখন লিফটের দরজা দিয়ে বের হলাম পিছন ফিরে চাইলাম । এতো দিন পর এই প্রথম ওর চোখে আমি বাষন্নতার জায়গায় এক টুকরো বিশ্ময় দেখতে পেলাম । ঈশিতা এতোটাই বিশ্মিত হয়েছে যে হয়তো ও ভুলেই গেছে এই ফ্লোরেই ওকে নামতে হবে । আস্তে করে লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে গেল । আমি আমার কেবিনে ঢুকে পরলাম ।
প্রথম যে দিন আমি এই অফিসে যোগদিই সেই দিনই ঈশিতার প্রতি আমি ইন্টারেস্টেড হয়ে উঠি । একনম্বর কারন হল আমার পোষ্টটা টা ঈশিতার আন্ডারে । ম্যানেজার সাহেব যখন আমাকে ঈশিতার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিল তখন আমার মনে হল এই টুকু একটা পিচ্চি মেয়ের আন্ডারে আমি কাজ করবো ?
এই পিচ্চি মেয়েটা আমার বস ?
দ্বিতীয় কারনটা হল পিচ্চি হলেও মেয়েটা অসম্ভব গম্ভীর । প্রয়োজনের একটাও বেশি কথা বলে না । আমি ভেবে পেলাম না এই টুকু বয়েসে মেয়েটা এতো গম্ভীর্য পেলো কোথা থেকে ?
প্রথম দিনে এই কথাটাই কেবল আমার মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগল । এমনটা কেন হবে !
আমার বস হওয়ার সুবাধে ঈশিতার সাথে আমার কথা বলার অনেক স্কোপই তৈরি হতে লাগল । কিন্তু ঈশিতা সেই আগের মতই । প্রয়োজনের একটাও বেশি কথা মেয়েটা বলে না । কয়দিন পরই এক কলিগের কাছ থেকে মেয়েটার এমন গাম্ভীর্যের কারন জানতে পারলাম । জানতে পেরে মোটামুটি একটা সক খেলাম ।
মেয়েটা বিবাহিত । ও মাই গড ! এটু টুকু পিচ্চি মেয়ে বিবাহিত । আরো জানতে পারলাম মেয়েটার খুব সুখী একটা সংসার ছিল ।
আগে সবার সাথে খুব মেলামেশা করত ।সবার সাথে কথা বলত , হাসতো । খুব প্রাণ চঞ্চল একটা মেয়ে ছিল । কিন্তু মাস ছয়েক আগে একটা দুর্ঘটনায় মেয়েটার স্বামীটা মারা যায় । তারপর থেকেই মেয়েটা এমন চুপচাপ হয়ে যায় । তারপর থেকেই মেয়েটার উপর আমার আকর্ষন আরো বেড়ে যায় ।
আমি উপায় খুজতে শুরু করলাম কিভাবে ঈশিতাকে আবার স্বাভাবিক করা যায় ! কিভাবে মেয়েটার মুখে হাসি ফোটানো যায় ! এসব ভাবতে ভাবতে একটা সময় আমি লক্ষ্য করলাম আমি সারাটা সময় কেবল ঈশিতার কথাই ভাবছি । যতক্ষন অফিসে থাকি ততক্ষন কেবল ওর আসেপাশে থাকতে ইচ্ছা করে । কোন না কোন কাজের বাহনায় আমি ঈশিতার কেবিনে যেতে লাগলাম । ওর সাথে একটু বাড়তি কথা বলার চেষ্টা করতে লাগলাম । খুব যে বেশি লাভ হল তা বলব না , কিন্তু আমি নাছড়বান্দা । আমি চেষ্টা করতেই থাকলাম ।
কিন্তু সব ভাল কাজে বাধাতো আসবেই । কয়দিন আগে আমার হাতে আমার প্রমোশন লেটার এসে হাজির হল । তাতে বলা হয়েছে আমাকে সিনিয়র অফিসার পদে অধিস্থিত করা হয়েছে । তারমানে ঈশিতার সমান পদ । কিন্তু সমস্যা হল আমার আমার পোষ্টিং হল অন্য শাখায় ।
কিন্তু আমি ঈশিতাকে ছেড়ে কিভাবে যাবো ? মোটেই যাবো না । প্রমোশনের খ্যাতা পুড়ি আমি । লাগবে না আমার প্রমোশন । চুপচাপ বসের কেবিনে গেলাম । গিয়ে বললাম আমার প্রোমোশনের দরকার নাই । আমাকে যেন আগের পদেই রাখা হয় ।
বস শুধু অবাক হল না যেন আকাশ থেকে পড়ল তাও আবার সাত আসমানের উপর থেকে । কিন্তু আমার কাজ করার রেকর্ড মোটামুটি ভাল । তাই বস আমার কথা রাখলেন ।
সেই দিনই ঈশিতা আমার সাথে প্রথম কথা বলল । মানে কাজের বাইরে কোন কথা বলল । ওর কেবিনে গেছিলাম একটা কাজে । কাজ শেষে কেবিন ছেড়ে যাবো ঠিক এমন সময় ও পিছন থেকে ডাকল ।
-অপু সাহেব একটু শুনুন ।
-জ্বি বলুন ?
-আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি ? যদি কিছু না মনে করেন ।
-হ্যা অবশ্যই ।
ঈশিতা খানিকটা ইতস্তত করে বলল
-আচ্ছা আপনি প্রমোশনটা রিফিউজ কেন করলেন ?
আমি হাসলাম । বললাম
-আসলে সাভারে পোষ্টিং দিচ্ছিল তো তাই ইচ্ছা করলো না যেতে ।
ঈশিতা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল । কি বিষন্ন সেই দৃষ্টি ! তারপর বলল
-আপনি যেটা চাচ্ছেন সেটা কখনও সম্ভব না । কখনও না ।
আরে মেয়েটা বলে কি ? তার মানে আমার আচরন ওকে কিছুটা ভাবিয়েছে । ও কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছে । আমি একটু হাসলাম । বললাম
-যদি লক্ষ্য থাকে অটুত দেখা হবে বিজয়ে ।
-মানে ?
-কোন মানে নেই । আমি আসি । আমি আবার হাসলাম ।
কেবিন থেকে বেরনোর আগে আমি আবার ঘুরে দাড়ালাম । বললাম
-ঈশিতা !
ঈশিতা মুখ তুলে চাইল ।
-আমি আপনার মুখে আমি হাসি ফোটাবোই ।
আর দাড়ালাম না । ঘুরে চলে এলাম ।
তারপর আমি ওর আশেপালে থাকি । প্রত্যেকটা কাজে ওকে জানান দেওয়ার চেষ্টা করি যে আমি আছি তোমার আসেপাশে । যতক্ষন না তুমি হাসছো ততক্ষন আমি নড়ছি না । কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না । ঈশিতা ঠিক আগের মতই রয়ে গেল । আগের মতই চুপচাপ আগের মতই বিষন্ন ।
তবে একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করতাম আমার উপস্থিতিতে ওর চেহারার মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আনতো । তবে এটা সিওর বুঝতাম না যে ওটা অস্বস্তি ছিল নাকি আনন্দ । এভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিল । ঈশিতার সাথে দেখা হচ্ছিল কথা হচ্ছিল কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছিল না । মেয়েটার বিষন্ন চেহারায় কিছুতেই পরিবর্তন আনতে পারছিলাম না ।
তারপর আজকের দিন এল । অফিসে আসতে আজ একটু দেরি হয়ে গেছিল । লিফটের সামনে এসে দেখি ঈশিতা দাড়িয়ে আছে । আমাকে দেখেও যেন দেখল না ।
আরে এটা কেমন কথা হল ? আমরা একসাথে কাজ করি দুএকটা কথাতো বলা যায় !
আমি খানিকটা হেসে বলল
- গুড মর্নিং
ও যথারীতি আমার দিকে না তাকিয়েই বলল
-গুড মর্নিং ।
লিফট চলে এল । মাত্র দুজনই । আর কেউ উঠল না । আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম যেন আর কেউ না ওঠে । দরজা বন্ধ হতেই ঈশিতাকে বললাম
-মানুষের সাথে এরকম ব্যবহার করা কিন্তু ঠিক না ।
-আপনি কি আমাকে বলছেন ?
-না আপনাকে কেন বলব ? আমার পাশের ফ্লাটে একটা পেট মোটা লোক থাকে সে সবসময় মানুষকে খুব হার্ট করে । তাকে বললাম কথাটা ।
ঈশিতা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে । আমি আবার বললাম
-এটা কি ধরনের প্রশ্ন হল ? অবশ্যই আমি আপনাকেই বলতেছি ।
-অপু সাহেব আমি এমনই ।
-কিন্তু আপনিতো এমনটা ছিলেন না ।
-কেমন ছিলাম এটা প্রশ্ন না এখন কেমন আছি এটাই প্রশ্ন ।
-আমার খুব খারাপ লাগে আপনার এরকমটা দেখে । আপনি কি পরিবর্তন হতে পারেন না ? নতুন করে জীবন শুরু করা কি যায় না ?
এবার ঈশিতা খানিকটা কঠিন গলায় বলল
-দেখুন আপনার কি ভাল লাগে না লাগে তাতে আমার কিছু যায় আসে না ঠিক আছে । আপনার সাথে কথা বলতে ভাল লাগছে না ।
কি ? মেজাজটা খানিকটা খারাপ হল । এই মেয়েটার কথা ভেবেই আমার সারাটা দিন যায় । আমার কেবল এই চেষ্টা থাকে কিভাবে এর মুখে হাসি ফোটাবো আর এই মেয়ে কিনা আমাকে গোনার মধ্যেই নেই নেয় ।
আমি কি জলের টানে ভেসে এসেছি । ঈশিতার মুখোমুখি গিয়ে দাড়াই । ও কিছু বলার আগেই ওর হাত দুটো চেপে ধরলাম । বললাম
-এই মেয়ে তোমার প্রবলেম কি ? আমার সাথে এমন কেন কর তুমি ?
আমার তখন রাগে শরীর কাঁপছে । নিজের মধ্যে নেই আমি । কি করছি কি বলছি কিছুই ঠিক নেই । তোমাকে আজ আমি মজা দেখাচ্ছি । বলেই ওকে চেপে ধরে চুম খেলাম ওর ঠোটে । বেশ লম্বা করেই ।
যখন হুশ হল ততক্ষনে লিফটের দরজা খুলে গেছে । ভাগ্য ভাল যে দরজার বাইরে কেউ ছিল না । আমি লিফট থেকে বের হয়ে এলাম । যথন পিছনে ফিরে তাকালাম লিফটের দরজাটা বন্ধ হচ্ছে । আর প্রথম বারের মত ঈশিতার চেহারায় বিষন্নতার জায়গায় আমি বিশ্ময় দেখতে পেলাম ।
কাজ টাজ করছিলাম । কিন্তু মনটা ঐ দিকেই পড়ে ছিল । একটু দুষ্চিন্তাও হচ্ছিল । না জানি ঈশিতা কি একশন নেয় । তবে আমার কেন জানি মনে হচ্ছিল ও কাউকে কিছু বলবে না । সারা দিনে একবারও ঈশিতার কেবিনে যাই নি ।
পরদিনও গেলাম না । কিন্তু পরদিন অফিস ছুটি হবার একটু আগে পিয়ন এসে একটা চিরকুট দিয়ে গেল । বলল ঈশিতা দিয়েছে । চিরকুট টা খুলে দেখলাম
অপেক্ষা করবেন প্লিজ ।
প্রথমে ভেবেছিলাম ঈশিতা হয়তো খুব ঝাড়ি মারবে । কিন্তু ওকে বেশ নরম দেখাল । আর সব থেকে বড় কথা হল ওর চেহারায় বিষন্ন ভাবটা তুলনা মূলক ভাবে কম ।
অফিসের সামনের একটা রেস্টুরেন্টে বসলাম আমরা । সত্যি বলছি আজ ঈশিতাকে দেখতে খানিকটা অন্য রকম লাগছে । আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আজ ঈশিতা হাসবে । আমার এতো দিনের চেষ্টা আজ সফল হবে ।
আমি আগে মুখ খুললাম, বললাম
-তোমাকে সুন্দর লাগছে ।
একেবারে আপনি থেকে তুমি । হাহাহা !!!
-এই কথা কেন বললেন ?
-কারন আজ তোমার চেহারায় বিষন্নতাটা কম । একটু আছে তবে আমার বিশ্বাস এখন আমার সাথে কথা বলার পর তাও থাকবে না ।
-আপনার বিশ্বাসে সমস্যা আছে । আপনি যা ভাবছেন তার কিছুই হবে না । আমি শুধু একটা কথা জানতে আপনাকে এখানে নিয়ে এসেছি ।
-তাও তো নিয়ে এসেছ ! বল তোমার কথা ।
-আপনি কেন করলেন কাজটা ?
-কোন কাজটা বল তো ?
-শুনুন ঢং করবেন না । আপনি খুব ভাল করেই জানেন কোন কাজটা !
সরাসরি ঈশিতার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম
-তুমি কি শুধু এই কথাটা জানার জন্যই আমাকে এখানে নিয়ে এসেছ ?
ঈশিতা চট করেই উত্তর দিল না । কিছুক্ষন পর মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিল যে ওর আরো কিছু বলার আছে ।
-আগে তোমার কথা শুনি ।
খানিকটা সময় চুপ করে থেকে ঈশিতা বলল
-আপনি যে কাজটা করেছেন ঠিক এমনই একটা ঘটনা আমার জীবনে এর আগেও ঘটেছে ।
-মানে ?
-মানে সজিব । আমার হাজবেন্ড । বিয়ের আগে ও আমাদের পাশে ফ্লাটেই থাকতো । একদিন লিফটের মধ্যে আপনার মতই কথা বলতে বলতে আমাকে চেপে ধরে কিস করেছিল । ওর খুব রাগ করার চেষ্টা করেছিলাম । কিন্তু পারি নি । ঐ ছেলেটা কিভাবে যে আমার মনটা নিজের করে নিল বুঝতেই পারলাম না । আমার সব কিছুই যেন ওর ছিল । আমার সব আবেগ অনুভূতি ভালবাসা সব কিছুই ওর ছিল । ও চলে যাবার পর ওর সাথে সাথে এ সব কিছুও হারিয়ে গিয়েছিল । কিন্তু ...
-কিন্তু কি ?
-আজ আমি আপনার উপর রাগ করতে পারছি না । আপনি যে কাজটা করেছেন অভিয়াসলি আপনার উপর আমার রাগ করা উচিত্ কিন্তু আমি রাগ করতে পারছি না । আমি কাল সারাটা রাত কেবল আপনার কথা ভেবেছি । আপনি এতো দিন যে আমার পিছনে লেঘেছিলেন তার প্রতিটা কথা আমি কাল রাতে ভেবেছি । খানিকটা অবাক হয়েছে ।
তারপর একটু ইতস্তত করে বলল
-খানিকটা খুশিও হয়েছি ।
খুশি ?
ওমাইগড !
এই মেয়েটা কি বলছে !
এই সুযোগ । আমার যা বলার তা বলেই ফেলতে হবে ।
আমি ওর হাত ধরলাম । ঈশিতা অন্য দিকে তাকিয়ে থাকল । আমি বললাম
-আমার চেহারাটা তো এতোটা খারাপ না যে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে । জানো কলেজ লাইফে আমার পিছনে কত গুলো মেয়ে ঘুরতো !
ঈশিতা মুখে একটু যেন হাসির আভা দেথতে পেলাম । তবে ওর চেহারার বিষন্নতা পুরোপুরি কেটে গেছে ।
ওকে বললাম
-জীবনটাকে সব সময় সচল রাখতে হয় । এটাই জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট । কিন্তু তুমি তোমার জীবনটাকে থামিয়ে রেখেছ । একটা জায়গায় আটকে রেখেছ । এতে যেমন তুমি কষ্ট পাচ্ছ তোমার আসেপাশের মানুষ গুলোও কষ্ট পাচ্ছে । এটা কি ঠিক হচ্ছে বল ?
ঈশিতা আবার মাথা নাড়াল ।
-তাহলে কেন এমন করছ ? তোমাকে একটা গল্প বলি । একটা ছেলে একটা মেয়ে অনেক ভালবাসত । কিন্তু একদিন মেয়েটা মারা যায় । এতে ছেলেটা খুব বেশি কষ্ট পায় । সারা দিন কান্না কাটি করে মন খারাপ করে থাকে । একদিন ছেলেটা মেয়েটাকে স্বপ্নে দেখলো । স্বপ্নে দেখলো যে মেয়েটার চারিপাশে খুব চমত্কার পরিবেশ । গাছগাছালি রংবেরংয়ের জিনিস পত্রে ভরপুর । কিন্তু কেবল মেয়েটা যেখানে আছে তার আসেপাশে সবকিছু কেমন যেন প্রানহীন বিবর্ণ । ছেলেটা আরো লক্ষ্য করল আসেপাশের সবার ঘরে আলো জ্বললেও মেয়েটার ঘরে কোন আলো জ্বলছে না ।
ছেলেটা জানতে চাইল তোমার এমন কেন অবস্থা ।
মেয়েটা বলল আমার এ অবস্থার জন্য তুমি দায়ী ।
ছেলেটা খুব অবাক হল । বলল কেন ? মেয়েটা বলল তুমি যে আমার জন্য সারাদিন কান্নাকাটি কর তোমার সেই চোখের জল এসে আমার ঘরের মোমবাতি নিভিয়ে দিয়ে যায় । এই জন্য আমাকে অন্ধকারে থাকতে হয় । আর তুমি যে মন খারাপ করে থাকো তোমার সেই বিষন্নতা আমার চারিপাশটাকে প্রান হীন করে তোলে ।
ঈশিতা বলল
-এ গল্প আপনি কোথা থেকে শুনেছেন ?
-কোথা থেকে শুনেছি ইম্পর্টেন্ট না । মুল থিমটা ইম্পর্টেন্ট । তুমি কিন্তু তোমার ভালবাসার মানুষটাকেও কষ্ট দিচ্ছ । যে ঐ উপরে আছে তোমাকে দেখছে তাকে কষ্ট দিচ্ছ আর যে তোমার কাছে আছে তাকেও ।
ঈশিতা কোন কথা না বলে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল ।
-আচ্ছা আমি তাহলে কালকেই সাভারে পোষ্টিং নিয়ে নিচ্ছি । ঠিক আছে ?
ঈশিতা এবার অবাক হল ।
-কেন ?
-আরে আশ্চর্য আমার বউ যদি আমার উপরে জব করে তাহলে লোকে কি বলবে ? ঘরেও আমি বউয়ের কথা শুনবো আবার অফিসেও তার কথা শুনবো তাহলে কিভাবে হয় ?
ঈশিতা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে হেসে ফেলল ।
এই প্রথম ওকে আমি হাসতে দেখলাম । হাসলে ওকে কি চমত্কারই না লাগে । হাসতে হাসতেই বলল
-আমার বয়েই গেছে তোমাকে বিয়ে করতে ! কত কিছু ভাবো না তুমি । ঠিক মত কথা শুরু করতে পারলাম না উনি বিয়ে পর্যন্ত চলে গেছে । বসে বসে স্বপ্নই দেখো তুমি ।
আমি কোন কথাই বলি না । কেবল ওর হাসি ভরা মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকি । মনে হয় আমি জয়ী হয়েছি ।