একটা মহাসমুদ্র পার করে এসেছি তোমার কাছে, কেবল বলতে ভালবাসি
“এখন আমি কিভাবে দেশে আসবো বল” ? আবিরের কন্ঠে কেমন জানি একটা কাতর ভঙ্গি ।
নিশির মনটা যেন একটু কেমন করে উঠল । তবু ও নরম হল না । বলল “আমি তো তোমাকে দেশে আসতে বলি নি । তুমি বুঝতে পারছো না যে আমি এটা চাচ্ছি না । আমি চাচ্ছি না তুমি আমাকে প্রোপজ কর” ।
“কিন্তু কেন” ?
“আবির তুমি কচি খোকা না ? তুমি জানো আমার এমন টা বলার কারন কি ? এরকম ভার্চুয়াল রিলেশনের কোন মানে নেই” ।
আবির কোন কথা বলল না ।
নিশি আবার বলল “আমি চাইলেই তোমাকে দেখতে পারবো না চাইলেই তোমার হাত ধরতে পারবো না । একসাথে বৃষ্টিতে ভিজতে পারবো না । কোন বিশেষ দিনে তোমাকে কাছে পাবো না । অন্যেরা যখন তাদের মনের মানুষগুলোর সাথে সময় কাটাবে আর আমাকে তখন চেয়ে দেখতে হবে । আমি এতোটা কষ্ট সহ্য করতে পারবো না । এটা আমি মেনে নিবো না” ।
নিশি খানিকটা সময় নিল । আবিরের কোন কথা আছে নাকি শোনার জন্য ।
আবির কোন কথা বলল না । নিশি জানতো আবির কিছু বলবে না । ওর কিছু বলারও নাই ।
নিশি আবার বলতে আরাম্ভ করল “দেখো তুবুও আমি এটা মেনে নিতে পারতাম যদি আমাদের রিলেশনটা একটা হ্যাপি এন্ডের দিকে যেত । আমি কষ্ট করে হলেও অপেক্ষা করে থাকতাম । কিন্তু তাও তো হবার নয়” ।
“কেন তুমি এমন কথা কেন বলছ” ?
“বোঝ না আমি এমনটা কেন বলছি ? তুমি মেলবোর্ন গেছো কত দিন” ?
“এই তো চার মাস” ।
“তার মানে কি দাড়াল ? তোমার এখনও ফার্ষ্ট সেমিস্টারই শেষ হয় নি । স্টাডি শেষ হতে এখনও চার বছর । জব পেতে পেতে আরো একবছর । তার মানে পাঁচ বছর এখনও আমাকে ওয়েট করতে হবে । কিন্তু একটা মেয়ের পক্ষে কি এতোটা ওয়েট করা সম্ভব ? বল” !
নিশি জানতো আবির এটারও কোন জবাব দিতে পারবে না ।
“হ্যা আমি যদি স্কুলে পড়তাম তাহলে হত । আমি অনার্সের পড়ি । আর খুব বেশি ২ বছরের মধ্যে আমার মাবাবা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিবে । তখন আমি কি করবো ? তুমি নিশ্চই এটা আশা কর না যে তোমার জন্য আমি আমার বাবা মা কষ্ট দিবো বা তাদের মতের বিরুদ্ধে যাবো” ।
“না তা তো না” ।
“আমার প্যারেন্টস আমার কাছে সবার থেকে বড় । আজ পর্যন্ত তারা আমাকে দিয়েই গেছেন । কোন কিছু আমাকে মুখ ফুতে চাইতে হয়নি । তাহলে কেন আমি তাদের কে কষ্ট দিবো” ?
“আমি তো তাদের কে কষ্ট দিতে বলছি না” ।
“না । ইন্ডাইরেক্তলি তাই বোঝায় । তোমার সাথে রিলেশন হওয়া মানে তাই বোঝায়” ।
তারপর দুজনেই চুপ হয়ে গেল । কারো যেই আর কিছু বলার নাই ।
অনেকক্ষন পর আবির বলল “তাহলে এটাই কি শেষ ? আর কি আমাদের যোগাযোগ হবে না” ?
“না হওয়াটাই ভাল । তোমার সাথে যোগাযোগ হওয়া মানে কষ্টটা বেড়ে যাওয়া । আমি এসব চাই না” ।
“আচ্ছা ভাল থেকো” । আবির ফোন রেখে দিয়েছিল ।
ফোন রাখার পরও নিশি অনেকক্ষন ফোনটা কানে ধরে রেখেছিল । কেন কে জানে !
নিশির কাছে মনে হল ওর কি যেন হারিয়ে যাচ্ছে । নিশি খুব ভাল করেই জানে ওর কি হরিয়ে যাচ্ছে । ইচ্ছা করলেই ও সেটা ধরে রাখতে পারে । কিন্তু তাতে ওর কষ্টটা বাড়বেই । এখন ও কষ্ট পাচ্ছে । কিন্তু ও যদি আবির প্রোপজ গ্রহন করে তাহলে পরে ওকে কষ্ট পেতে হবে । আর পরের কষ্টটা হবে আকারে আরো বেশি । তার থেকে এখনই ভাল । কোন কিছু শুরুর আগেই সব কিছু শেষ হয়ে গেল । ভাল হল ।
ওর খারাপ লাগছে । কিন্তু নিশি জানে এটা সময়ের সাথে সাথে কমে যাবে । কিন্তু কমছে না কেন ? আবিরের সাথে ওর শেষ কথা কথা হয়েছে সপ্তাহ আগে । কিন্তু ওকে ও মিস ঠিকই করছে ।
“এই কি ভাবছিস” ? নিশি ফিরে তাকাল । ফারিয়া আসছে । ওর মনটা একটু ভাল হল । আজ একটু আগে আগেই ক্যাম্পাসে চলে এসেছে । ফারিয়াই আসতে বলেসে । কেন কে জানে ! এতোক্ষন একা একা এসব কথাই ভাবছিল । ফারিয়া এসে ভাল লাগল ।
“বললি না কি ভাবছিস” ? ফারিয়া আবার জিঞ্জেস করল ।
“না এমন কিছু না” ।
“আবিরের কথা ভাবছিস” ?
নিশি কিছু বলল না । ওর মনটা আরো একটু বিষন্ন হল ।
“দেখ তুই আমাকে বন্ধু মনে করিস তো” ?
“হুম করি” ।
“তাহলে আমার একটা কথা শোন । তুই আবিরের প্রোপজালটা একসেপ্ট কর” ।
“তুই তো সব জানিস তারপরও কেন এমনটা বলছিস” ?
“সব জানি । তারপরও বলছি । বলার প্রথম কারন হল তুই আবিরকে মিস করছিস আর মিস করতেই থাকবি কারন তুই ওকে ভালবাসিস । আর মন কি ওটো ক্যাকুলেশন বোঝে ? ভবিষ্যতে কি হবে না হবে এটা চিন্তা করে কি আর ভালবাসা হয় বল” ?
নিশির খুব ইচ্ছা হল ফারিয়ার কথা গুলো মেনে নিতে । এখনই আবিরকে ফোন করে ভালবাসি বলতে খুব ইচ্ছা হল । কিন্তু ও নিজেকে আবার সামলালো । কেবল ইমোশন দিয়ে জীবন চলে না । দীর্ঘস্থায়ী কষ্ট থেকে সাময়িক কষ্ট সহ্য করা ভাল । যদিও ও জানে না আবিরকে ও এতো সহজে ভুলতে পারবে কিনা । কি অবাকই না ওর লাগে মাঝে মাঝে ।
আবিরের সাথে ওর পরিচয় নেট এ । প্রথমে টুকটাক কথা হত তারপর এমন একটা পর্যায় এল সারা দিন নিশি অন লাইনে থাকতো । ওর আর কিছুই ভাল লাগতো না । আবিরের যে জিনিসটা সব থেকে ভাল লাগতো সেটা হল আবির ওকে খুব ভাল করে বুঝতো । ও কখন কি চায় কেমন ওর মন ভাব মন খারাপ নাকি ভাল সব কিছু যেন আবিরের জানা ।
তারপর প্রথম যেদিন আবিরের সাথে কথা হল বুকের মাঝে কি যে এক অনুভুতি হচ্ছিল নিশি সেটা বলতে পারবে না । কেবল সেদিন রাতে মনে হল আবির নামের এই ছেলেটাকে সে ভাল বাসে । সত্যি ভালবাসে । তখন নিশি কেবল নিজের মন দিয়ে ভেবেছিল আবিরের কথা গুলো । কিন্তু চারপাশের সব কিছু যখন সে ভেবে দেখল ওর সব স্বপ্ন ভাঙ্গতে সময় লাগল না ।
“আরে কি এতো ভাবছিস ? এতো মুখ গোমরা করে থাকিস না তো । আজ তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে” ।
“কি সারপ্রাইজ” ?
“এখানে না । ক্যান্টিনে চল তোকে দেখাচ্ছি” ।
ক্যান্টিনটা ফাঁকাই বলা চলে । সকাল বেলাতো এখনও লোকজন আসে নি । কেবল বাঁ দিকে একটা ছেলে বসে আছে ।
“কোথায় তোর সারপ্রাইজ” ?
“এই যে” ! ফারিয়া ছেলেটার দিকে ইশারা করল । প্রথমে নিশি কিছু বুঝতে পারল । ছেলেটাকে কেমন পরিচিত মনে হচ্ছে । ছেলেটা এতোক্ষন অন্য দিকে তাকিয়ে ছিল । ওর দিকে ফিরল ।
“এতো ....” নিশির দুটো হার্ট বীট মিস হল । তারপর পুরো শরীরটা কেঁপে উঠল উত্তেজনায় ।
এতো আবির ।
আবির !
আবির !
সত্যি সত্যি আবির !
কিন্তু ও এখানে কিভাবে ?
ফারিয়ার দিকে তাকাল । ফারিয়া হাসল । “সত্যি ওটা আবিরই । গতকাল ই এসছে । কালকেই দেখা করতে চেয়েছিল । আমি তোকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য ওকে এখন আসতে বলেছি । তোকে তো এতো সকাল সকাল আসতে বললাম” ।
নিশি এক ভাবে ফরিয়ার দিকে তাকিয়ে রইল । ওর মনে হল ফারিয়া ওর সব থেকে ভাল বন্ধু ।
“যা এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আসিছ কেন” ?
নিশি কাঁপা পায়ে আবিরের দিকে এগিয়ে গেল । ধুকধুক বুকে বসল ওর সামনে । ওর এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না আবির সত্যিই ওর সামনে বসে আছে !
“সত্যিই কি তুমি” ?
“বিশ্বাস হচ্ছে না” ? আবির হাসল ।
ইস কি সুন্দর করেই না হাসছে ছেলেটা !
“আমার হাসি মোটেই সুন্দর না” ।
নিশি চমকালো । আবির কেমন করে জানি ওর মনের কথা বুঝে ফেলে ।
“তুমি কেন আসলে” ?
“তুমি জানো আমি কেন এসেছি” ।
“আবির তুমি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসো নি মেলবর্ন থেকে বাংলাদেশে এসেছ” !
আবির কোন কথা বলল না ।
“কেন” ?
“তুমি বলেছিলে না তুমি কাউকে না দেখে প্রপোজ একসেপ্ট করবে না” ।
নিশির কথা আটকে গেল । এই ছেলেটা কি পাগল নাকি ।
আবির এবার উঠে দাড়াল । পাশে এক তোড়া গোলাপ রাখা ছিল । ওটা তুলে নিয়ে নিশির সামনে একহাটু বাঁকা করে বসল । গোলাপের তোড়াটা নিশি দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল
“নিশি আমি পুরো একটা মহাসাগর পার করে এসেছি কেবল তোমাকে একটা কথা বলার জন্য । আমি বলতে এসেছি আমি তোমাকে ভালবাসি । প্রচন্ড রকম ভালবাসি” ।
নিশি কিছুতেই নিজের চোখের পানি আটকে রাখতে পারল না । কেবল ওর জন্য একটা ছেলে মেলবোর্ন থেকে চলে এসেছে কেবল ভালবাসি বলার জন্য । কেবল এই জন্য যে ও না দেখে কোন প্রপোজ গ্রহন করবে না বলে ।
ও কেমন করে এই ছেলেটাকে না বলবে ? ওর সব যুক্তি তর্ক মুহুর্তের মধ্যে ভেঙ্গে গেল । নিশির কেবল মনে হল ও নিজেও এই ছেলেটাকে ভালবাসে । প্রচন্ড রকম ভালবাসে ।
“ডু ইউ লাভ মি” ?
নিশির মুখ দিয়ে আর কিছু বেরই হল না । কেবল বলল “ইয়েস”
( সত্য ঘটনা অলম্বনে)
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন