সত্যি কথা বলছি সকালবেলার ঘুম আমার কাছে খুব পছন্দের । কিন্তু যখন কেউ সকাল বেলার ঘুম ভাঙ্গিয়ে আমার কাছে ফোন করে তখন মেজাজটা ঠিক রাখা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে । আর একটু আগে সেই কাজটা করেছে আমার আব্বাজান । তাকে কিছু বলার উপায় নাই কারনে এই জগতে আমি কেবল একটা মানুষকেই ভয় পাই । সেটা হল আমার আব্বাজান । তবুও ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য মেজাজটা খারাপ হয়েই রইলো ।
আবার ঘুমানোর চেষ্টা করলাম । তার ফোনটা আসলো তখনই । কাল রাতে খুব মেজাজ খারাপ নিয়ে ঘুমিয়েছি । হাজার বার ফোন করার পরও সে ফোন করেনি । নিয়ম অনুযায়ী আমার এখন রাগ দেখানোর কথা কিন্তু রাগ করতে পারলাম না কিছুতেই । আর যাই হোক না কেন তার কাছ থেকে ফোন আসলে আমাকে রিসিভ করতেই হয় । কিন্তু ফোন ধরে দেখি সে না । তার ছোট ভাই । মনে হল যেন আবার ফোন না করতে পারার খবরই আসবে । কিন্তু যে খবর আসলো তাতে মনে হল মেঘ না চাইতে বৃষ্টি না মেঘ না চাইতেই সিডর এসে হাজির । ছোট ভাই বলল "আপা আজ অফিস যাবে আপনাকে বাস টার্মিনালে থাকতে বলেছে সাড়ে আটটার সময়" ।
ঘড়িতে সময় দেখি ৮ টা ১৪ । কোথায় গেল ঘুম । কত দ্রুত যে হাতমুখ ধুলাম সেটা আমিই জানি । যখন বাস টার্মিনালে পৌছালাম তখন ৮ টা ৩২ । টিয়া পাখি তখনও আসে নি । বুকের মধ্যে কেমন জানি এক অদ্ভুদ অনুভূতি হচ্ছিল । ভয় হচ্ছিল দেখা হবে তো ? দেখা হবে তো ! দেখতে দেখতে টিয়া পাথি হাজির । আহ্ কত দিন পর দেখা হল ! বললাম ওকে কথা টা ।
টিয়া পাখি বলল "বলেছে তোমাকে । ঈদের দিন না দেখা হল ।"
আমি বললাম "ঈদ হয়েছে সেই ৭ তারিখ আর আজ ১৬ । কত দিন না ?"
ও হাসলো । ওর মুখ যদিও ঢাকা ছিল হাসলে ওর চোখ গুলো অন্য রকম সুন্দর হয়ে যায় । চোখ থেকে যেন অন্য রকম দ্যুতি ছড়ায় । শুরু হয় আমাদের কাঙ্খিত সেই বাস ভ্রমন । বাস ভ্রমন আমার সব সময়ই ভাল লাগে । কিন্তু এই বাস ভ্রমনের কোন তুলনা হয় না । আমার টিয়া পাখি আমার পাশে বসে ।
কথা চলছে অবিরাম ।
কত কথা ।
হাসাহাসি ।
আমাদের মনেই থাকলো না যে আমাদের চারিপাশে কেউ আছে । মনে হচ্ছে যেন এই বাস যদি আর কোন দিন শেষ না হয় !
এই সুযোগ কি আর আসবে ? কিন্তু হায় সুসময় বড় জলদি শেষ হয়ে যায় । তেমনি এই আনন্দের সময়ও শেষ হয়ে গেল । মনে হল যেন বড় জলদি ।
এই বাস জার্নির কথা কখনও ভোলা যায়?