somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভন্ড বাবার স্বরূপ

১৪ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেকেন্ড ইয়ার কিংবা থার্ড ইয়ারের কথা………….

মিরপুরে একটা টিউশান করি………….

ক্যাম্পাসের বাসেই আসা-যাওয়া করি……….

পড়ানো শেষ করে টেকনিক্যাল আসতে আসতে ছয়টার বাস প্রায়ই মিস হয়ে যেত……..

যেদিন বাস মিস হত, সেদিন সাতটার বাসের জন্য এত লম্বা প্রতীক্ষা করতে হত যে মাঝে মাঝে মনে হত বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন বুঝি সাতটার বাস তুলে নিয়েছে আর সেইটা সিদ্ধান্ত আজকে থেকে কার্যকর…….. আমি তার খবরই জানি না……

টেকনিক্যাল মোড় থেকে একটু দক্ষিণ দিকে, রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বে একটা চায়ের দোকান আছে, কোন বসার যায়গা নাই তাতে ……….
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খেতে হয়…………
কোন একদিন ছয়টার বাস মিস করলাম……
মোড়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম …….
বাস আসেছে না……

অধৈর্য হয়ে শেষে দোকানটাতে গিয়ে একটা চা নিলাম…….

চায়ের বিলটা আগেই দিয়ে দিলাম, যাতে এর মধ্যে বাস আসলে চা ফেলে দৌড়ে গিয়ে বাসে উঠতে পড়তে পারি………

খুব দ্রুত চুমুক দিচ্ছি………

এমন সময় পিছন থেকে ঝুলা কাধে একটা পাগলা বাবা এসে আমার হাতে একটা সুতা পেচিয়ে বাঁধতে শুরু করল…….

বৃদ্ধই বলা চলে….. রোগা টিং টিংগে শরীর…গায়ে কোন জামা নাই…পড়নে একটা লাল শালুর লুঙ্গি…মাথায় একটা গামছা বাঁধা…লালচে এলো মেলো দাঁড়ি….. বড় বড় গোফ…..অনেক দিন ক্ষুর-ব্লেডের ছোয়া পড়েনি তাতে…...বাম হাতে অনেকগুলা লাল সুতা…..
বাম হাতে সুতা গুলো মুঠি করে ধরে ডান হাতদিয়ে আমার হাতে সুতা পেচিয়ে দুই হাত দিয়ে গিট বাঁধার চেষ্টা করতে লাগল……বাম হাতে সুতা ধরে থাকায় সেই হাত সমেত গিট দিতে খুব কষ্ট হচ্ছিল…
আমি কিছু বললাম না…..হাতটা একটু বাড়িয়ে বাঁধতে দিলাম…. কষ্ট করে হলেও হালকা একটা গিট্টু মারতে সক্ষম হল….

ততক্ষণে আমার চা খাওয়া শেষ…..দোকানীকে কাপটাও ফেরৎ দিয়ে দিয়েছি এরই মধ্যে…..
পাগলাটা সুতা বাঁধা শেষ করল……

আমার মাথায় হাত দিয়ে আমাকে অনেক দোয়া করল…..আমি অনেক ভাল যেন থাকি, আমার যেন রুপসী একটা বৌ হয়, আমি যেন দগাড়ি-বাড়ির মালিক হই….. ইত্যাদি……
তার পর চলে গেল…..

কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসল…..

আমার একেবারে সামনে এসে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, পাগলেরে কিছু দে না, বাবা…………..!
আমি বললাম, কি! সুতার জন্য টাকা চাচ্ছেন?
সে বলল, না! না!! আস্তাগফিরুল্লা….ওইডা তো কামেলের দোয়া, অইডার জন্য ট্যাকা নেওয়া নিষেধ…. আর খবরদার, অইডারে সুতা কবি না………
পাগলেরে এমনি কিছু দে….

আমি দশ টাকার একটা নোট বের করে তার হাতে দিলাম…. হাজার হোক মাথার উপর হাত রেখে অনেক ভাল ভাল কথা বলে দোয়া করেছে বলে কথা…..

দশ টাকা হাতে নিয়ে বলল, আরও কিছু দে বাবা…..
আমি আরও দশ টাকা দিলাম…..খুশি হয়েই দিলাম…..
সেটা নেয়ার পর আবারও বলল, একটু বড় দেইখ্যা দে রে, বাবা….

এবার আমি বেশ বিরক্ত হয়ে তাকে আরও পাঁচ টাকা দিয়ে ধমক দিয়ে বললাম, যা… ফুট এখান থেকে……..

সে বলল, পাগলের সাথে রাগ দেখাইস না রে বাবা! ক্ষতি অইয়া যাইব……একটা বড় দেইখা দে, তোর অনেক ভাল অইব…….আমি দোয়া কইরা দিমু…….

আমার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো… ((সেই সময়কার পঁচিশ টাকা যে কত টাকার সমান ছিল তা আল্লাহ ই মালুম…..!!))….কিন্তু এবার আর ধমক দিলাম না…

আমি ওয়ালেট টা বের করে হাতে নিয়ে বললাম, আচ্ছা বাবা! ছোটগুলা তাহলে দেন, আমি বড় দেইখা একটা দেই…..

সে সুবোধ বালেকের মত আমার দেয়া পঁচিশ টাকা আমার হাতে ফেরৎ দিল…

আমি টাকাগুলা হাতে নিয়ে তার সুতাটা টান মেরে ছিড়ে তার দিকে ছুড়ে দিয়ে বললাম, যাহ….ফুট এবার…..কিচ্ছু পাবি না….শালা ভন্ড পাগল……

সে খুব মারমুখো হয়ে আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল, পাগলের হক মারিস না….. দে! কিছু দে.. নইলে! নইলে অনেক বড় ক্ষতি অইয়া যাইবগা কইয়াদিলাম…..বলে প্রায় আমার ওয়ালেটে হাত দিয়ে দেয় ……..

আমি তখন কষে এক ধমক দিয়ে বললাম, ভন্ডের বাচ্ছা যাবি নাকি থাপ্পর দিয়া চাপা উল্টাইয় দিব…..???
ধমক খেয়ে সে পিছু হটল…..

আমাকে অভিশাপ দিতে দিতে চলে গেল…. আমার বড় ক্ষতি হবে, আমার সর্বনাশ হবে, আমি পাগলের হক মারছি, আমার রক্ষা নাই….. ইত্যাদি….

পাগলটা আমারদিকে ফিরে ফিরে চেয়ে উচ্চ স্বরে কথা বলছিল আর ধীরে পায়ে গাবতলীর দিকে যাচ্ছিল। আমি তার তোয়াক্কা না করে রাস্তারদিকে তাকিয়ে আছি, আমার সাতটার বাস কখন আসে…..তখন প্রায় সাড়ে আট টা বাজে…..

গাড়িটা তখন চলে আসল…….. থামল গিয়ে মিরপুর -১ এর দিক থেকে আসা রাস্তাটার উল্টা দিকে…….

দোকান টা মোড় থেকে একটু দুরে হওয়ায় গাড়িতে ওঠার জন্য আমাকে দৌড় দিতে হল…..আমি রাস্তার পাশের ফুটপাত ধরে দৌড়দিলাম…. দৌড়ে যাওয়ার সময় দেখলাম পাগল লোকটা রাস্তা ধরে হেটে যাচ্ছে….আমার আর লোকটার মধ্যে রাস্তা আর ফুটপাতের সেপারেটর রেলিং…..আমাকে দেখে খুব অসহায় ভাবে আমারদিকে তাকাল….এক মুহুর্তের জন্য সরাসরি তার চোখে আমার চোখ পড়ল….সেই শেষ এক মুহুর্তে তার চোখে ভন্ডামী ছাড়াও আরও একটা কিছু দেখেছিলাম….. আমি সেই একটা কিছু কে তখন চিনতে পারি নি……বুঝতে পারিনি সেই একটা কিছু কি ক্ষোভ, নাকি ঘৃণা, নকি মমতা……..

হলে গিয়ে রুমমেটের সাথে ঘটনা টা খুব মজা করে আলোচনা করলাম…..দোস্ত জানিস আজকে কি হয়েছে…….??? আমি গর্ব করে জাহির করলাম, কতটা স্মার্টনেস করে ভন্ড পাগলা কে ধাপ্পা দিলাম…..
তারপর দু’জনে মিলে খুব হাসা-হাসি করলাম………

তার কয়েকদিন পর………

আমি আল্লাহর রহমতে ভালই আছি….কোন ক্ষতি হয়নি তখনও…..

বিকেল বেলা হলের রুমে বসে ”প্রিন্স অব পর্শিয়াঃ দ্যা টু থ্রনস” খেলছি…... একটা ঘোড়ার গাড়ি চালানোর স্টেপ আছে……প্রায় একসপ্তাহ যাবৎ খেলছি ত খেলছিই…. স্টেপ টা কোনক্রমেই পার হতে পারতেছি না……..হতাশ হয়ে রুমমেট কে বললাম, দোস্ত স্টেপ টা মনে হয় পারব না রে…..

রুমমেট বলল, অইট বাদ দিয়া বন্ধু জিটিএ ধর……… (সে জিটিএ ভিসি খেলত)
হঠাৎ পাগলটার কথা মনে পড়ল…. রুমমেট কে বললাম, বন্ধু , পাগলাটার দোয়ায় মনে হয় ধরছে আমারে….

বলার পর দু’জন মিলে খুব হাসা-হাসি করলাম ঘটনা টা নিয়ে…..

আমার ফোন বেচে উঠল….. গ্রামের এক বড় ভাই ফোন দিয়েছে…. তার এক আত্মীয়কে অর্থোপেডিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। মারাত্মক বাইক এক্সিডেন্ট করেছে….. ইমার্জেন্সি ব্লাড দরকার…. আমি বাঁধনের মাধ্যমে ক্যাম্পাস থেকে ব্লাড যোগাড় করতে পারব কি না….

আমি তাকে হ্যা সুচক জানিয়ে ঐদিনের মত প্রিন্স অব পার্সিয়া গুছিয়ে ব্লাড খোজতে নেমে গেলাম…..
দুই তিন টা ফোন দেয়াতেই ব্লাডের বন্দোবস্ত হয়ে গেল….

আমি ডোনরকে নিয়ে চলে এলাম শেরে বাংলা নগর…..

ব্লাড নিয়ে ডোনর কে বিদায় করে আমি সেখানে রয়ে গেলাম…..রাত সাড়ে নয়টার দিকে আমি আর বড় ভাই শিশু হাসপাতালের সামনে চা খেতে গেলাম….

গেইটের এক পাশে দাড়িয়ে চা খাচ্ছি… তখন সেই পাগলা বাবাটাকে শিশু হাসপাতালের গেইট দিয়ে ঢুকতে দেয়খলাম….আমি দেখেই তাকে চিনেতে পারলাম….. সেই ঝুলা, সেই সালু, সেই গামছা…..

বড় ভাইকে সেদিনের ঘটনা বলার পর ভাই বলল, চল ত দেখি শালায় শিশু হাসপাতালে কি ধান্ধামি করে। মানুষের বাচ্চা-কাচ্চা হাসপাতালে ভর্তি তো, বাবা-মা গুল খুব সেন্টিমেন্টাল আছে, এখানে ধান্ধামি করতে খুব সুবিধা হবে। চল আজ ধরতে পারলে ওকে পিটাব……..

আমিও ভাইয়ার কথায় রাজি হয়ে দুজনে তার পিছু নিতে শুরু করলাম……….
সে উপরে উঠছে, আমরাও তার পিছু পিছু উঠছি………

সে একটা ওয়ার্ডে ঢুকে একটা বেডের পাশে দাঁড়িয়ে ওয়ার্ডে ডিওটিরত হাসপাতালেরে একটা মহিলা স্টাফের সাথে কথা বলছে। বেডটা দরজা থেকে বেশ দুরে, রুমের অন্য পাশে। আমরা দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে দেখছি………

সে বিছানাটায় বসল। আমরা দরজার ভিতর ঢুকলাম। খেয়াল করলাম বিছানায় একটা বাচ্চা শুয়ে আছে। আমরা আরেকটু এগিয়ে গেলাম। খুব কাছে যাচ্ছি না। আমার ভয় হচ্ছে, যদি সে চিনে ফেলে………!

বাচ্চাটার মুখে অক্সিজেন মাস্ক দেয়া। বাচ্চাটার গায়ের চর্বি-মাংশ এতটাই শুকিয়ে গেছে যে, সেটাকে বাচ্চা বলার চেয়ে বাচ্চার কংকাল বলাটাই বেশি যুক্তিযুক্ত। আমরা লোকটা কে তখনও ধান্ধাবাজই ভাবছি………

সে যে মহিলার সাথে কথা বলল, তিনি দরজার দিকে আসছেন……… আমাদের বরাবর আসলে আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ লোকটা এখানে কি করে………?

তিনি বলল, তার পেশেন্ট আছে………

এই কথা শুনার পর একটা ঝাকুনি খেলাম। তার প্রতি আমার সকল কঠোরতা নিমেষে গলে গেল। তাও সংশয় কিন্তু থেকেই গেল। তারই পেশেন্ট তো, নাকি আবার ধান্ধাবাজি………!

ভাই বলল, চল গিয়ে জিজ্ঞেস করি।
আমি বললাম, নাহ………! আপনি যান, আমাকে যদি চিনে ফেলে………!

সে বলল, চিনুক, চিনলেই ত আর মারবে না। আজকে আর গোয়েন্দাগিরি করার দরকার নাই………! খোজ-খবর নিয়ে চলে যাই………
আমি বললাম, আপনি যান, জিজ্ঞেস করে আসেন। আমি এখানে দাঁড়াই………
তারপর ভাই একাই গেল লোকটার কাছে। আমি দাঁড়িয়ে রইলাম………

বড় ভাই গিয়ে লোকটার সাথে কথা বলছে। আমিও তার কাছে যাওয়ার একটা অসম্ভব কৌতূহল বোধ করছি। আমি আর দাঁড়াতে পারলাম না। ধীরে ধীরে চোরে মত তার পেশেন্টের বেডের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার খুব ভয় হচ্ছিল, তিনি চিনে ফেললে………..

অথচ আপাত দৃষ্টিতে আমি কিন্তু কোন শাস্তিযোগ্য অপরাধ করিনি ……তাও ভিশন ভয় হচ্ছে, চিনে ফেললেই বুঝি ধরা পড়ে যাব…….

কিন্তু তিনি আমাকে চিনতে পারল না……… আমার মত স্মার্টনেস হয়ত তিনি ঢাকা শহরের অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে উপহার পান প্রতিদিন, কাজেই আমাকে আলাদা করে চিনে রাখার কিছু নাই………
লোকটার চোখে-মুখে রাজ্যেরে ক্লান্তি, ঘুমে ঢুলো ঢুলো করছে আর বিছানার পাশে সেলাইনের স্ট্যান্ডে ধরা হাতটা দুর্বলতা বশতঃ কাপছে………

তিনি আমাকে চিনে নাই, জেনে খুব শান্তি পেলাম………

আমি খুব অপরাধীর মত জিজ্ঞেস করলাম, পেশেন্ট আপনার কে………?
তিনি- নাতি………
আমি- ছেলের ঘরের না মেয়ের ঘরের………?
তিনি- মেয়ের ঘরের………
আমি- ওর বাবা কোথায়………?
তিনি-নাই, মারা গেছে………
আমি- ওর মা ………?
তিনি- মানুষের বাসায় কাজ করে, ১০ টায় ছুটি, আরও পরে আসবে।

কিছুক্ষণ কথা বলার পর জানতে পারলাম, বৃদ্ধর নাতিটি নয় মাস যাতৎ হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় চিকিৎসাধীন……… নিউন্যাটাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছিল……… প্রয়োজনীয় ফি পরিশোধ করতে না পারায় পরশু এনআইসিই্উ থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে………

তার মা শ্যামলীতে একটা বাসায় কাজ করে……… দিনে মাঝে মাঝে দেখতে আসে আর সারারাত বাপ-বেটি মিলে হাসপাতলেই নির্ঘুম রাত কাটায়……… তাকে দেখে মনে হল, সে নিজেও খুব অসুস্থ, কিন্তু সেকথা তিনি একবারের জন্যও বললেন না………

গাবতলী আর ধানমন্ডি এলাকার ভিতরেই তিনি সারাদিনে তার কার্য পরিচালনা করেরন………
কার্যটা কি তার………?

তার কার্য খুব সহজ……… কখনোও ধান্ধাবাজি করেন, পাগলা বাবা সেজে মানুষের হাতে লাল সুতা বাধে, কখনোও বা মানুষের পায়ে পড়ে দুই চার’শ টাকা যা আনেন, তাই দিয়ে শয্যাগত নাতির চিকিৎসা করান………

তিনি এই বৃদ্ধ বয়সে অসুস্থ শরীর নিয়ে সারাদিন রোদে পুড়ে, খেয়ে-না খেয়ে মানুষের অবর্ণনীয় অপমান হজম করে দু-চার’শ টাকা আয় করে শুধু মাত্র তার শয্যাশায়ী নতির চিকিৎসার জন্য………জেনে তার প্রতি ভিতর থেকে একটা বিমুগ্ধ শ্রদ্ধার জন্ম হল………

তার সেই অপরিসীম ত্যাগ আর ধৈর্যে কাছে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে অর্জিত বিদ্যা আর কথিত স্মার্টনেস কে তুচ্ছ, নগন্য মনে হল………

চোখ ভেঙ্গে কান্না পেল……… বড়ভাই কেদেই ফেলল……… ভাইয়ার কান্না দেখে লোকটি খুব খুশি হল, কিন্ত ভেবে পেল না, সে কি করবে বা কি বলবে……… হয়ত তার কষ্টে কখনো কেউ কাঁদেনি, তাই তিনি জানেন না, তার কি করা উচিৎ……

ভাইয়া কোনমতে কান্না সংবরণ করে তার দিকে তাকিয়ে বলল, আমি যদি আপনাকে কিছু টাকা দিতে চাই…………!

তিনি বলল, ওই একটা উপায়ই ত আল্লাহ আমার জন্য খোলা রেখেছে……… জানি না কোন কালে কোন পাপ করেছিলাম, যার জন্য আল্লাহ শেষ জীবনে এসে আমাকে মানুষের কাছে হাত পাতাইল………
বলার পর তার চোখদিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল………

বড়ভাই তার হাতে কিছু টাকা তুলে দিল, তিনি অস্ভব মায়া ভরা চোখে ভাইয়ার মুখেরদিকে তাকিয়ে টাকাটা হাতে তুলে নিল…… তার সেই কৃতজ্ঞতাপুর্ন মায়াময় দৃষ্টি নিমেষেই অনেক কথা বলে ফেলল, বলেদিল যে ভালবেসে তাকে এই সামান্য কয়টা মাত্র টাকা দিলেও সে কতটা খুশি হল……… কিন্তু তার মুখে কোন কথা বের হল না……

আমারা খুব মন খারাপ করে সেখান খেকে বেরিয়ে আসলাম……
এর চেয়ে বেশি কিছু করার সাধ্যও ছিল না………

পাগলটা সেইদিন টেকনিক্যাল মোড়ে আমাকে বলেছিল যে, পাগলের সাথে রাগ দেখাইলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে……… সত্যি আজকে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়েগেল……… নিজেকে খুব জালিম মনে হতে লাগল………

সেই দিনকার সেই “স্মার্টনেস”টুকুর জন্য আমার ভিশন অপরাধবোধ শুরু হল……ক্ষমাও চাইতে পারলাম না………

আমার সেই দিনের সেই “স্মার্টনেস” নামক নিষ্ঠুরতার জন্য আমি নিজেকে নিজে কখনোও ক্ষমা করতে পারলাম না………
আর জানারও চেষ্টা করলাম না তার নাতিটা বাঁচল না মরল……… চেষ্টা না করার কারণ আমার প্রবল আত্মসমর্থন মুলক যুক্তি “আমার তো তার জন্য কিছু করার সাধ্য নাই…………”
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি তাদের কাছেই যাবে তারা তোমার মূল্য বুঝবে....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৪


মৃত্যুর পূর্বে একজন পিতা তার সন্তানকে কাছে ডেকে বললেন, 'এই নাও, এই ঘড়িটা আমি তোমাকে দিলাম। আমাকে দিয়েছিলো তোমার দাদা। ঘড়িটা দুইশত বছর আগের। তবে, ঘড়িটা নেওয়ার আগে তোমাকে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×