ব্লগে নতুন গ্রুপ এসেছে ডিজিটাল ফটোগ্রাফি বিষয়ে। সদস্য হলাম, তাই কিছু লিখবার দায়িত্ব এসে যায়। ডিজিটাল ফটোগ্রাফি নিয়ে আলাদা ভাবে তেমন কিছু জানি না, তবে ফটোগ্রাফি নিয়ে একবার কিছু জেনে ছিলাম, সেটাই শেয়ার করব ব্লগ বন্ধুদের সাথে।
সময়টা খুব সম্ভবত সেই ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর। উইম কিউপেন্স নামের এক বেলজিয়ামের নাগরিক তার বিশ্ব ভ্রমনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এলেন ঘুরতে। তার বড় ভাই আবার অস্ট্রেলিয়াতে আমার কাজিনের সাথে থাকে, সেই সুবাদে উইম বাংলাদেশে আসবার আগে আমার সাথে যোগাযোগ করে। এদেশে এসে সে রাঙামাটি ও কক্সবাজার যায় আমাকে সাথে নিয়ে। এই ভ্রমনেই উইমের কাছ থেকে কিছু ফটোগ্রাফি বিষয়ক পাঠ পেয়েছিলাম। বেলজিয়ামে উইম প্রায় দুই বছর ফটোগ্রাফির উপর একটা কোর্স করেছিল। যে যখন মেক্সিকোতে তখন দুই দিন এক ফটোগ্রাফারের সাথে সে ছিল। উইমের মতে এই দুইদিনে যতটুকু ফটোগ্রাফি যে শিখেছিল, তা দুইবছরের কোর্স হতে সে পায় নি।
এবার আসি সরাসরি ফটোগ্রাফির কথায়।
১. ধরুন আমরা কোন মানুষের ছবি তুলতে চাই। প্রথমেই নিজের মনে ছবিটাকে চার ভাগে ভাগ করে নিন (নিচেরছবি দেখুন)। এবার যার ছবি তুলতে চান অর্থাৎ যে আপনার সাবজেক্ট তাকে চার অংশের যে কোন একটাতে রাখুন। খেয়াল রাখবেন যেন সাবজেক্ট ছবির কেন্দ্রে চলে না আসে। সাবজেক্ট কেন্দ্রে থাকলে ঠিক মত ফুটবে না। যেমন নিচের ছবিতে ছেলেটিই আমার সাবজেক্ট ছিল। ওকে মূলত ছবির বাম পাশে রাখা হয়েছে মাঝামাঝি নয়।
২. এবার আসুন আপনি কোন রাস্তার ছবি, নদীর তীর বা সমুদ্র সৈকতের বা ব্রীজের ছবি তুলতে চান। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনার সাবজেক্ট এগুলো। এগুলোকে যদি যে কোন এক কর্ণ বরাবর বা খানিকটা বাঁকা করে তোলেন তবে ছবি ভাল আসার কথা। লম্বালম্বি বা আড়াআড়ি এসবের ছবি ভাল আসে না। যেমন নিচের ছবিটি কাপ্তাইলেকে ঝুলন্ত! ব্রীজের।
৩. যে কোন বস্তুর ছবি তুলবার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন বস্তুটির আকার ছবিতে ফুটে উঠে। দর্শক নিজের আন্দাজ হতে বুঝে নেবে জিনিসটা কেমন, এই ধারণা থেকে কখনই ভাল ছবি আসবে না। অর্থাৎ ছবির এঙ্গেল খুব গুরুত্বপূর্ণ। খেয়াল রাখতে হবে যেন ছবির বেশির ভাগ অংশ ফুটে ওঠে। যেমন নিচের একটা পাঞ্চিং টুলের দুই দিক হতে তোলা ছবি আছে। প্রথমটি একদম সামনা সামনি প্রায় ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে অন্যটি প্রায় ১৩৫ ডিগ্রি এঙ্গেলে। প্রথমটির চাইতে দ্বিতীয়টিতেই ভালভাবে বোঝা সম্ভব বস্তুটি আসলে কি!
৪. প্রাকৃতিক দৃশ্যের (Landscape)ছবি তুলবার সময় নিচের নিয়ম গুলো ফলো করত হবে। যেমন ধরুন আপনি নিচের ছবিটি তুলছেন (নদী ও আকাশ)। এক্ষেত্রে ভূমি ও আকাশের যে সংযোগস্থল (ছবিতে লাল দাগ) সব সময় সবুজ দাগের নিচে অথবা উপর থাকে। অর্থাৎ সংযোগস্থল যেন ছবির মধ্যাংশে না থাকে। একই ব্যাপার কৃষি ক্ষেতের ক্ষেত্রেও খাটে।
আরো কিছু বিষয় সে আমাকে বলেছিল, যা আমি মাথায় রাখতে পারিনি। যেমন আলোর ব্যাপারটা। সব মনে রাখা সম্ভব নয়, তবে আমার মনে হয় ছবি তোলা শিখবার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হল দেখতে শেখা। দেখতে এখনও শিখতে পারলাম না, এটাই আক্ষেপ।
পোস্টটি ডিজিটাল ফটোগ্রাফি গ্রুপে প্রকাশিত।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৫