somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাবনূর আপা জিন্দাবাদ

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাতের আলো হয়ে আসা ‘শাবনূর’ ঢাকাই চলচ্চিত্রের আকাশকে ভালমতোই আলোকিত করেছেন। কথাটা হতে পারত আলোকিত করে চলেছেন। তা হতে পারলো না হঠাৎ করেই যেন খসে পড়ল উজ্জ্বল নক্ষত্রটি। এখানে কার কতটা দোষ তা সবাই জানেন আমার মত মামুলি দর্শকের সে বিষয়ে বলাটা দৃষ্ঠতা। ছবিপাড়ায় বহুল আলোচিত ও সমালোচিত নাম শাবনূর। সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও বরাবরই তিনি কাজ করেছেন নিভৃতে। কখনোই কোন টিভি অনুষ্ঠানে মুখ দেখান নি এবং স্টেজ পারফর্ম করেন নি। তার বিয়ে নিয়ে গুজব সবচেয়ে বেশি প্রচলিত, সম্ভবত শাবনূর সম্পর্কিত এ বিষয়টি গুগলেও সার্চ হয় বেশি। সার্চবক্সে শাবনূর লিখলেই “শাবনূরের বিয়ে” সাজেসন চলে আসে। বিভিন্ন সময় তার বিয়ে নিয়ে নানা মুখরোচক কাহিনী এসেছে কিন্তু এ পর্যন্ত কোনটা্রই সত্যতা মেলেনি। চলতি সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে শাবনূর অভিনীত নতুন ছবি “কিছু আশা কিছু ভালবাসা”।



নতুন ছবিটি দেখার আগে পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। ভাবলাম ভালো লাগা ছবিগুলোর একটা তালিকা করে ফেলি। শাবনূরের ক্যারিয়ারের সূবর্ণ সময়ে আমার ছোট্ট বয়সে হলে গিয়ে সিনেমা দেখার সুযোগ একেবারেই ছিল না। তবুও দেখা হয়েছে অল্প কিছু ছবি বাদে বাকি সব।

আমার দেখা ভালো ছবিগুলো

মাটির ফুল ২০০৩: মতিন রহমান


বাগানে ফুল ফোটে গোলাপ, রজনীগন্ধা। হৃদয়ে যে ফুল ফোটে তা মাটির ফুল।
সিনেমা হলের ভাড়াটে গুন্ডা মাটি’র সাথে একটা সিনেমার রিলের সূত্র ধরে পরিচয় হয় ফুলের। ফুলের বাবা ছিলেন একসময়কার শহরের কুখ্যাত সন্ত্রাসী দাউদ। কিন্তু ফুল তার পুলিশ কমিশনার মামাকেই বাবা জেনে বড় হয়। দাউদ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তার মেয়ের খোঁজ করে কিন্তু পুলিশ কমিশনার খোঁজ দিতে অস্বীকৃতি জানালে মাটিকে ভাড়া করে ফুলকে জিম্মি করে তার মেয়ের খোঁজ পেতে। স্বাভাবিকভাবেই মাটি ও ফুলের প্রেম হয়ে গেলে দাউদ জানতে পারে যে ফুলই তার নিজের মেয়ে। মাটিকে ফুলের জীবন থেকে সরিয়ে দিতে শুরু হয় জটিলতা। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে মাটি ও ফুলের মিলন হলেও ফুল তার আসল পরিচয় জানতে পারে না।

শাবনূরের সর্বাধিক ব্যবসাসফল ছবির পরিচালক মতিন রহমানের সাথে এটাই শেষ ছবি। প্রচলিত বানিজ্যিক ছবিগুলো থেকে এ ছবিটা কিছুটা আলাদা। এ ছবির তুলনায় মতিন রহমানের অন্য ছবিগুলো বেশি জনপ্রিয় হলেও আমার কাছে সবচেয়ে ভাল লেগেছে এ ছবিটাই। সেই সময় ঠিক করেছিলাম এই ছবি ১০০বার দেখব। যদিও ৫৫+ বার দেখার পর কি কারনে আর দেখা হয়ে ওঠে নি। ঘটনার সন্নিবেশনে নাটকীয়তা সহজেই আকৃষ্ট করে। সংলাপও অনেক সুন্দর। ছবির একটি গান খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সেসময়। ফিনিশিংটা দুর্দান্ত।

নারীর মন (২০০০): মতিন রহমান


পাশাপাশি দুই কলেজের ছেলেদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকে। এমনি এক সংঘর্ষের মধ্য দিয়েই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে সাগর ও গ্রামের গরীব ছেলে কবিসুলভ জীবনের। দু’জনের জীবনেই বসন্ত আসে, ফুলে ফুলে ভরে যায় মন, আর অপেক্ষা করে বান্ধবী অনামিকার। দেখাও হয় দুই জনের দুই স্বপ্ন নায়িকার সাথে। একজন আরেকজনের বান্ধবীকে দেখতে গেলে দেখা যায় দুজনের বান্ধবী একজনই ভীষণ অমায়িক কবিতা। একদিকে বন্ধুত্ব আর একদিকে প্রেম, আর কবিতাই বা কাকে বেছে নেবে? একটা নারীর একটা মন হয়তো দু’জনকে দেয়া যায় না, কিন্তু একটা শরীর দু’জনকে দেয়া খুব একটা কঠিন কিছু নয়।

শাবনূরের সব ছবির মধ্য থেকে সবচেয়ে রোমান্টিক একটি দৃশ্যের কথা জিজ্ঞেস করলে যে কেউ এ ছবির একটি দৃশ্যের কথা বলবে। আহলাদী মেয়ের অভিনয় এ ছবিতে সবচেয়ে ভাল হয়েছে শাবনূরের সেই সাথে ড্রেসআপ আর দেখতেও সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে বলে আমার মনে হয়। যোশেফ শতাব্দীর করা সংলাপ খু্বই মনকাড়া আর শক্তিশালী।কিছুগান হিন্দী গানের সুরে করা হলেও, গানগুলো জনপ্রিয় হয়।একটি গানের দৃশ্য শালীনতার পর্যায় অতিক্রম করলেও সেটা শিল্পসম্মত ঘোষণা করা হয়, সেই সাথে জেমস এর করা মীরাবাঈ গানটি ভিন্নতার স্বাদ এনে দেয়। ‘ঘুমিয়ে থাক গো স্বজনী’ মত গানের আবেদন চিরন্তন। বিয়ের ফুলে’র আগে বা পরে রিয়াজ আর শাকিল খানকে এক সাথে নিয়ে করা মতিন রহমানের এ ছবিটি দর্শক হৃদয়ে স্থান করে নেয়।


এই মন চায় যে ২০০০ : মতিন রহমান
সূদুর থেকে একটি সংগীত পরিবারে সংগীতের তালিম নিতে আসেন রিয়াজ। সংগীত গুরুকে দক্ষিণা দিতে চাইলে গুরু বলেন যে, সময় হলে দক্ষিণা চেয়ে নেবেন। সেই পরিবারের মেয়ে সংগীতার সাথে ভাব বিনিময় হয়ে যায় সময়ের পরিক্রমায় আর তা জানাজানি হয়ে গেলে গুরুদক্ষিণা হিসেবে সংগীতার জীবন থেকে সরে যেতে বলেন রিয়াজকে। ফেরদৌসের সাথে বিয়ে হয়ে যায় সংগীতার। যে মেয়ের প্রেমিক ছিল সে মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে দোটানায় পড়ে যান ফেরদৌস তবুও শাস্তি স্বরুপ ভালবাসতে যান। এক পর্যায়ে সংগীতার প্রেমিক কে খুজে বের করার ব্রত নিয়ে বের হন দু’জনে। খুজতে খুজতে এক সময় যখন দেখা পেয়ে যায় রিয়াজের সংগীতা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। রিয়াজও সংগীতার চোখে আর সেই প্রেম খুঁজে পায় না।

হিন্দী “হাম দিলদে চুকে সনম” অনুকরণে নির্মিত মতিন রহমানের এ ছবিটিও ব্যবসাসফল হয়। সঞ্জয়লীলা বানসালির সাথে তুলনায় না গিয়ে বিভিন্ন দিক দিয়ে ছবিটা যে ভাল হয়েছে সেটা বলা যায়।

দুই নয়নের আলো ২০০৬: মোস্তাফিজুর রহমান মানিক



সন্ধ্যার প্রদীপের মতোই ঘর আলো করে রাখে সেঁজুতি নামের মেয়েটি। ছোট দুই ভাই আর বাবা-মা’র সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম সে। ছোট ভাই বিদেশ যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর। সেঁজুতিও স্বপ্ন দেখে শহর থেকে দূরে নির্জন একটা জায়গায় বাঙলো করবে। সেখানে সবাই মিলে হাসবে, গাইবে আনন্দ করবে। স্বপ্ন দেখে যেদিন কাউকে ভালবাসবে সেদিন একটা সরিষা ক্ষেতে গিয়ে দুজনে গিয়ে নাচবে, তার পরনে থাকবে সাদা শাড়ী আর ভালবাসার মানুষটির গায়ে থাকবে লাল পাঞ্জাবী। স্বপ্ন দেখে….
বিদেশে বড় হওয়া আকাশ দেশে ঘুরতে এসে গাইড হিসেবে নেয় সেঁজুতিকে। ঘুরে ফিরে একসময় বিদায়ও নেয়। হঠাৎ একটা অন্ধকার এসে গ্রাস করে সেঁজুতিকে, অথচ এই অন্ধকারের কথা কাউকেই জানানো যায় না।কাউকেই জানানো যায় না যে এই সুন্দর পৃথিবীতে সে আর কয়টা দিন মাত্র বেঁচে থাকবে। সময় ক্রমেই ফুরিয়ে আসে অথচ তার সবগুলো কাজ থাকে বাকি। ছোট ভাইয়ের বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, বাবা-মার থাকার একটা ব্যবস্থা করতে হবে। টাকার বিনিময়ে সে একটা অনৈতিক কাজ করতে রাজি হয়।সুখের পাখি বুকের জালে ধরা পড়ে যায়। দুই নয়নের আলো ফুরিয়ে যাওয়ার আগে সে তার সব কাজ গুছিয়ে নেয়।
২০০৫ সালে ঢালিউডের সর্বকনিষ্ঠ পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক এই ছবিটি উপহার দেন। দু একটি সাধারণ বিষয় বাদ দিলে অসাধারণ একটা ছবি। এই ছবি শাবনূরকে একমাত্র জাতীয় পুরস্কারটি এনে দেয়। রিয়াজ, শাকিল ও ফেরদৌসকে একই ফ্রেমে এনে করা এই ছবির পোস্টারটি ছিল খুবই আকর্ষনীয়। সুবীর নন্দীর করা দুই নয়নের আলোসহ এই ছবির গানগুলো খুবই শ্রুতিমধুর। সাবিনা ইয়াসমিনও এই ছবির একটি গানের জন্য জাতীয় পুরস্কার পান। বয়স কম ছিল, এই ছবির একটি দৃশ্যে কান্না চেপে রাখতে পারিনি।
এই ছবি নিয়ে যে বিষয়টা না বললেই নয়,
ফেরদৌসের গাইড হিসেবে শাবনূর তাকে প্রথমেই নিয়ে যান জাতীয় স্মৃতিসৌধে। স্মৃতিসৌধে উচ্শৃংখল ফেরদৌসকে দেখে শাবনূর বলেন যে তাকে হয়তো স্মৃতিসৌধে আনা ঠিক হয়নি কারন এটা আমাদের কাছে অনেক আবেগের জায়গা। একথা শুনে ফেরদৌস স্মৃতিসৌধের সামনে দাড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু করেন, তার দেখে আশেপাশের সবাই এক হয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। জাতীয় সংগীতের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করতে আমি ও আমার বন্ধু দাড়াই এবং আমাদের দেখাদেখি হলের দোতলার প্রায় সকল দর্শক দাড়িয়ে যান।

নিরন্তর : আবু সাইয়ীদ


পরিবারের চাহিদা মেটাতে নিজের সবকিছুই বিলিয়ে দেয় তিথি। একসময় কিছু টাকা পেয়ে ছোট ভাই হিরুকে একটা ব্যবসা দাড় করিয়ে দেয়। সত্যি সত্যিই হিরুর ব্যবসা বেশ জমে ওঠে। এতটা জমে উঠবে কল্পনাও করতে পারেনি কেউ। এমনকি হিরুও না। অফিস আদালত ছুটির দিন বন্ধ থাকে কিন্তু রেষ্টুরেন্টের কোন বন্ধ নেই। বন্ধ করতে হয় গভীর রাতে। যত রাতেই হিরু দোকান বন্ধ করে ঘরে ফিরুক তার স্ত্রী অ্যানা না খেয়ে অপেক্ষা করে। হিরু তার বাবার চোখের অপারেশন করায় প্রাইভেট ক্লিনিকে যদিও এতে চোখের কোন উন্নতিই হয় না। পুরাতন গিন্জি বাসায় থাকতে মন সায় না হিরুর। নতুন আসবাবপত্রে ভরা ঝলমলে ফ্লাটে ওঠে সবাই। কিন্তু তারপরও তিথি্র মা মিনু সারারাত ঘুমাতে পারে না। কষ্ট, গ্লানি আর্তনাদ তাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। আর তিথি……….


শাবনূরকে নিয়ে নান্দনিক ছবি নির্মানে খুব একটা এগিয়ে আসেন নি নির্মাতারা। এগিয়ে আসলে যে ভূল করতেন না তার প্রমাণ নিরন্তর ছবিতে শাবনূর খুব ভালভাবেই রেখেছেন। যারা ছবিটি দেখেছেন তারা কেউ কি তিথি চরিত্রে শাবনূরের বিকল্প কাউকে চিন্তা করেছেন? হুমায়ুন আহমেদ এর ‘জনম জনম’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ছবিটি দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে পুরস্কার ছিনিয়ে আনে।

প্রাণের মানুষ : আমজাদ হোসেন


ভালবাসার সন্ধানে যতই ঘোর দোকানে
প্রাণের মানুষ পাবে না রে….
অন্ধ অভি’র ভাল বন্ধু রাজ। তাদের কলেজে স্মৃতি নামের একটি মেয়ে এসে প্রথম দিনেই অভি’র সাথে ধাক্কা খেয়ে অভিকে অন্ধ বলে গালি দিয়ে যখন জানতে পারে অভি সত্যি সত্যিই অন্ধ তখন অনুতপ্ত হয়। দিনে দিনে বন্ধুত্ব হয়ে যায় তিনজনের। অভি ও রাজ দু’জনেই পৃথকভাবে স্মৃতিকে প্রস্তাব দিলে স্মৃতি দুজনকেই পাশ কাটিয়ে চলে যায়। হঠাৎ একদিন স্মৃতি কলেজে আসে না। আসে নাতো আসেই না। খোঁজ নিয়ে জানা যায় স্মৃতি মারা গেছে।

মতিন রহমানের মত প্রখ্যাত পরিচালক আমজাদ হোসেনও শাবনূরকে নিয়ে অনেকসংখ্যক ছবি নির্মাণ করলেও এ ছবিটি একবারেই ব্যতিক্রম। বাংলা ছবিতে বৈচিত্র্য নেই বলে যারা বলেন তাদের জবাব হলো দর্শকই বৈচিত্র্য পছন্দ করেন না। ব্যতিক্রমধর্মী এ ছবিটি খুব একটা ব্যবসাসফল হয়েছে বলে আমার জানা নেই অবশ্য প্রচারও হয়নি সে অর্থে।
একই পরিচালকের সুন্দরী বধু, নাচনেওয়ালীর মত ছবিগুলো জনপ্রিয় হয়। ‘কাল সকালে’ ও একটি ভালো কাজ। অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে গোলাপী বিলেতে গেলেও সেই অর্থে দর্শক প্রত্যাশা পূরণ করেনি শাবনূর ও আমজাদ হোসেন জুটি’র শেষ ছবিটি।

মুঘল-ই-আযম ২০১০: মিজানুর রহমান খান দীপু


মুঘল সম্রাট আকবর তার শাহজাদা সেলিম কে অস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য সূদুরে পাঠান। দীর্ঘদিন পর শাহজাদার প্রত্যাবর্তনে সাজ সাজ রব পড়ে যায় রাজপ্রাসাদে। রানী এক ভাস্করকে হুকুম করেন এমন কিছু বানানোর জন্য যা দেখে শাহজাদা মুগ্ধ হয়ে যাবেন। ভাস্কর কম সময়ে কি বানাবেন দিশেহারা হয়ে তার আত্মীয় নাদিরা’কে মূর্তিরুপে দাড় করিয়ে দেন। শাহজাদার সাথে সেই মূর্তি দর্শনে আসেন স্বয়ং সম্রাট আকবরও। সম্রাটকে দেখে দিকবিহ্বল হয়ে মূর্তিরুপী নাদিরা সালাম জানান সম্রাটকে। নাদিরার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ভাস্করকে ক্ষমা করে দেন সম্রাট এবং আনারকলি উপাধি নিয়ে রাজপ্রাসাদে জায়গা হয় নাদিরার। আনারকলি ও শাহজাদা সেলিমের প্রণয়কাহিনী রটে গেলে আকবর আনারকলির মৃত্যুদন্ড ঘোষনা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীর শেষ ইচ্ছে জানতে চাওয়া হলে, আনারকলি একবারের জন্য শাহজাদা সেলিমকে বিয়ে করতে চায়। বিয়ের রাতে সেলিমকে মোহাবিষ্ট করে আনারকলিকে নিয়ে যাওয়া হয়ে মৃত্যুদন্ডের জন্য।

নির্মানে অনেক দূর্বলতা থাকলেও শাবনূর আর মান্না’র অভিনয়ে উৎরে গেছে। রাজনীতিবিদ পরিচালক মিজানুর রহমান খান দীপু এর আগে শাবনূরকে নিয়ে “যত প্রেম তত জ্বালা’ নামের ছবি নির্মান করে ব্যবসাসফল হন এবং নিজে নায়ক হয়ে শাবনূরকে নিয়ে “সে আমার মন কেড়েছে” নামের ছবি নির্মানের ঘোষনা দিয়ে সমালোচিত হন।
এ পর্যন্ত এটাই শাবনূরের মুক্তিপ্রাপ্ত শেষ ভাল ছবি।

তোমাকে চাই (১৯৯৪): মতিন রহমান


অসম্ভব সুন্দর একটি মেয়ে নাম নদী। বড়লোকের ছেলের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়লে দুই পরিবারের কেউই মেনে নিতে চায়না। এভাবেই এগিয়ে যায়। মিষ্টি প্রেমের ছবি।
সালমান শাহ ও মতিন রহমানের সাথে শাবনূরের সবচেয়ে আলোচিত ও ব্যবসাসফল ছবি।

আনন্দ অশ্রু (১৯৯৫): শিবলী সাদিক


তুমি মোর জীবনের ভাবনা
হৃদয়ে সুখের দোলা।
দেওয়ান খসরু নিজের লেখা এ গানের সুর খুজে পায় না। নিজেদের বসতভিটা গ্রামে বেড়াতে গিয়ে গ্রাম্য চঞ্চলমেয়ে দোলা প্রেমে পড়ে যায়। সম্পত্তির লোভে খসরুর চাচা তাকে পাগল বানিয়ে ফেলেন। তার পূর্ব অনুরক্ত ভাবনা তাকে ভালো করার দায়িত্ব নেন। ঘটনাক্রমে দোলাও সেখানে পৌছে যায়। জীবনের শেষলগ্নে প্রিয়জনকে নিয়ে মৃত্যুতেও চলে আসে আনন্দ অশ্রু।
শিবলী সাদিক পরিচালিত এ ছবিতে একই সাথে শাবনূর গ্রাম্য অপরিণত কিশোরী ও পরিণত ভাবাগের একটি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। প্রথম এ ছবি দেখেই শাবনূরকে ভাল লেগে যায়।
একই ধরনের ‘পাগলীর প্রেম’ ছবিটিও ভাল হয় সালমান শাহ্র সাথে অসমাপ্ত ‘বুকের ভিতর আগুন’ও একটি ভালো ছবি, সেই সাথে স্বপ্নের ঠিকানা, স্বপ্নের পৃথিবী, জীবন সংসার, রিমেক সুজন সখী, তুমি আমার, প্রেম পিয়াসী ছবিগুলো ভাল হয়।

শেষ ঠিকানা : শাহ আলম কিরন


“আশা” ছদ্মনামে কবিতা লেখে মেয়েটি। তারই এক কবিতায় সুর দেয় তার কলেজের এক ছেলে যার সংগে তার দ্বন্দ। ছেলেটি খোজে কবিকে, কবি শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সামনে আসতে পারে না সব সংশয় ভেঙ্গে। মরিচীকার মত বারবার হাতছানি দেয় আশা। ক্যান্সার আক্রান্ত কবি ক্রমেই চলে যায় মৃত্যুর দিকে। যে ভালবাসা দিয়ে সাগরের ঢেউ থামানো যায় আর পাথরে ফুল ফোটানো যায় তা কি শেষ পর্যন্ত ফিরিয়ে আনতে পারে শেষ ঠিকানায় পৌঁছে যাওয়া আশা কে?

শাহ্ আলম কিরন পরিচালিত ছবিটিতে শাবনূর অভিনীত চরিত্রটি দর্শককে কাঁদিয়েছে। শাহ্ আলম কিরন শাবনূরকে নিয়ে বিচার হবে, সুজন সখী, ঘর জামাইর মত ভাল ছবি উপহার দেন।

কাজের মেয়ে (১৯৯৯): আজাদী হাসনাত ফিরোজ


কোনভাবেই ছেলেটার মন জয় করতে পারছিল না নদী। অন্যদিকে ছেলেটির পরিবারের সাথেও তাদের চিরশত্রুতা। বাধ্য হয়ে কাজের মেয়ে হয়ে ছেলেটির বাড়ীতে প্রবেশ করে নদী এবং একই সঙ্গে ছেলেটির ও তার পরিবারের সবার মন জয় করে প্রমাণ করে যে সে আসলেই একটা কাজের মেয়ে।
রোমান্টিক কমেডি ধাঁচের অসম্ভব মজার একটি ছবি।এই ছবির সফলতার পর একই পরিচালকের ২০০২ সালে আরো একটি মজার ছবি বস্তির মেয়ে। এছাড়াও পরিচালক আজাদী হাসনাত ফিরোজ সবার উপরে প্রেম, বউ শ্বাশুড়ীর যুদ্ধ, ফুলের মত বউ, ঘরের লক্ষ্মীর মত ভাল ছবি উপহার দেন।

ভালবাসা কারে কয় (২০০২) : জাকির হোসেন রাজু


বাবা-মারা সন্তানকে এত ভালবাসেন কিন্তু তাদের ভালবাসার কোন মূল্য দেন না। জুঁই এর বাবা কি জানে না সে শুভকে কথা দিয়েছে!
জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ছবিটি ভিন্নতার স্বাদ এনে দেয়। ফিনিশিংটা অসাধারণ। একই পরিচালকের “জীবন সংসার”, নি:স্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি”, মিলন হবে কত দিনে ছবিগুলোও দর্শকপ্রিয়তা পায়।

মোল্লাবাড়ীর বউ (২০০৫): সালাউদ্দিন লাভলু


মোল্লাবাড়ীর বউ অত্যাচারে জর্জরিত। সে সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হলে মোল্লা তার ছেলেকে আবার বিয়ে দেন। ছোট বউ এসে বদলে দেয় সবকিছু। ‘ইল্লত যায় না ধুইলে আর খাসলত যায় না মইলে’ মোল্লাও ঠিক হয় না, শেষমেশ বড় বউয়ের হাতে খুন হয়ে যায় মোল্লা।

এই ছবি দেখে যদি কেউ না হাসে তাহলে বোধহয় সে বেঁচে নেই। সালাউদ্দিন লাভলু পরিচালিত ছবিটি সবারই দেখা হয়েছে আশা করি। নির্মল বিনোদনের ছবিটি খুবই ব্যবসাসফল হয়।

হঠাৎ করেই ঝড়ে পড়লেন যেন শাবনূর। নিজের অসচেতনতাই দায়ী এজন্য। এখন তাকে শুধুই বলতে ইচ্ছে করে


কি ছিলে আমার বলনা তুমি....


তথ্যসূত্র: দু:খের বিষয় কোনই বিশ্বস্ত তথ্যসূত্র নেই। উইকিপিডিয়া থেকে কয়েকটা ছবির মুক্তির সাল জানা গেছে। অনেক খুঁজেও ছবিগুলোর পোস্টার সংগ্রহ করতে পারিনি।

সংযোজন: শাবনূর কোন টিভি অনুষ্ঠানে মুখ না দেখালেও বিটিভির জনপ্রিয় ম্যগাজিন ইত্যাদিতে দু’বার তাকে দেখা যায়। একবার একটি ক্লাসিকাল নাচ পরিবেশন করেন আর একবার তার মা’সহ একটি সাক্ষাতকার দেন।
ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে দেশের বাইরে কিছু স্টেজ পারফর্ম করেন, কিছুদিন আগে দেশেও একটি অনুষ্টানে পারফর্ম করেন।
পোস্টের শিরোনামটি মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ঘোষিত একটি ছবির নাম। যদিও ছবির অগ্রগতি ঘোষণা পর্যন্তই।


১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×