২৫ শে মার্চ ২০১৩ ।।
একটি দিন এর পর আসবে ,
২৬ শে মার্চ ২০১৩ ।।
বাঙ্গালি জাতি উদযাপন করবে স্বাধীনতার ৪২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী । ২৬ শে মার্চ আমাদের জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সাল এর এই দিন এ বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন দেশের জন্ম হয়। কম বেশি সবাই আমরা সেই ইতিহাস জানি। রাজনীতির কুটনীতিতে সেই ইতিহাস অদল বদলের কাহিনী ও কম বেশি আমাদের সকলেরই জানা। আমি ইতিহাসবিদ ও নই , রাজনীতিবিদ ও নই । একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে সাধারণ মানুষের চোখ দিয়ে স্বাধীনতার স্পর্শ, অনুভূতি বুঝার চেষ্টা করছি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও আত্নত্যাগের ঋন আমরা কোন ও দিন ও শোধ করতে পারবোনা।
স্বাধীনতা মানেই সকল সমস্যার সমাধান নয়, স্বাধীনতা মানেই দারিদ্র মুক্ত বদলে যাওয়া বাংলাদেশ নয়। রাতারাতি সব কিছুই বদলে দেওয়া সম্ভব নয়। স্বাধীনতার ৩০ বছরে হায়দার হোসেন তার গান এর মাঝে যে স্বাধীনতাকে খুঁজে বেড়িয়েছেন, তা আজ ৪২ বছর পর ও আমরা খুঁজে বেড়াই ।
জানিনা আর কতকাল খুঁজে বেড়াতে হবে। আজকের এই সময়ে আমি যে রকম বাংলাদেশ দেখছি , নিশ্চয় এই রকম একটি বাংলাদেশ দেখার জন্য আমাদের যোদ্ধারা যুদ্ধ করেননি। আমি রাজনীতির বিপক্ষে নই, তবে নোংরা রাজনীতি সাপোর্ট করার মত যথেষ্ঠ ধৈয্য আমার নেই।নোংরা রাজনীতি কিভাবে একটি সুন্দর স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটায় তা দেখার কিছুটা সৌভাগ্য অথবা দূভাগ্য যাই বলিনা কেনো, আমার তা কিছুটা হয়েছে। আমার থিওরি হলো দেশের জন্য দল,সবার আগে দেশ। দল জাহান্নামে যাক,তাতে আমার বিন্দুমাত্র কষ্ট নেই। কিন্তু আমার দেশের বিন্দু মাত্র ক্ষতি আমি মেনে নিতে পারিনা , মেনে নিতে পারছিনা , মেনে নিতে পারবোনা। স্বাধীনতার পরবর্তিতে আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু অনুধাবন করতে পেরেছি ,তাতে করে আমার মনে হচ্ছেনা যে আমরা কোন ও সত্যিকারের রাজনীতিক দল খুঁজে পেয়েছি। আমাদের রাজনীতিক দল গুলো শুধু আদর্শের কথা বলে বেড়ায়, কিন্তু আদর্শের প্রতিফলন তারা কতটুকু ঘটিয়েছে,তা তারা যাচাই করে দেখে কিনা এই নিয়ে আমার সন্দেহ।
একটি দেশের ধ্বংসের জন্য সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো দূর্ণীতি। দূর্ণীতি নামক এই অভিশাপ থেকে আমরা যতদিন পর্যন্ত না মুক্ত হতে পারবো, ততদিন পর্যন্ত আমরা প্রকৃত স্বাধীন বাংলাদেশ দেখতে পাবোনা। দূর্ণীতি আজ কোথায় নেই? কিন্ডারগার্ডেন থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত দূর্ণীতির আখড়া, হসপিটাল গুলোতে ডাক্তার এর চেয়ে ডাকাতের সংখ্যাই বেশি,কোর্ট তো পুরাই একটা দূর্ণীতির আখড়া, মন্ত্রনালয় গুলো কে দূর্ণীতির কেন্দ্রবিন্দু বলা চলে। দূর্ণীতি এতো ব্যাপক যে তা বলতে গেলে দুর্ণীতি মুক্ত প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করতেই কষ্ট হয়ে যাবে। স্বাধীনতা মানে আলাদিনের ছেরাগ হাতে পাওয়া নয় তা আমি বুঝি। কিন্তু এতোটা দূর্ভোগ তো স্বাধীনতার ফসল হতে পারেনা। হরতাল নামক একটা ভয়াবহ অধ্যায়ের মাঝে জিম্মি থাকা মানেতো স্বাধীনতা নয় । স্বাধীন দেশে যদি এতো হরতাল হয়,তাহলে কি পেলাম আমরা এই স্বাধীনতায় ? এই ভাবে আর কতকাল বেঁচে থাকা যায়?? এর থেকে বদলানোর পথ কি আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা খুঁজে পান না?
স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা আজ বন্দি পরাধীন নিয়মের দাসত্বে।
দুখিনী মা এর চোখের জল আজ ও মুছে দিতে পারেনি রক্তে অর্জিত এই স্বাধীনতা। এই দেশের অগণিত শান্তি প্রিয় মানুষ চায় সুন্দর একটি দেশ। তবে কেনো আজ কতগুলো মুখোশধারী রাজনীতিবিদদের হাতে এই অগণিত মানুষদের স্বপ্ন বন্দি থাকবে স্বাধীনতার পরাধীনতায়।।
এই দেশ আমার মা এর মতো। মা এর কোলে বসে মা কে অবমাননা করা কার ও কাম্য নয় । আমাদের এই দেশটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই । স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকার মান আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। স্বাধীনতার পরাধীনতা থেকে বেরিয়ে এসে শপথ নিতে হবে সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ার।।
আমার সোনার বাংলা ,
আমি তোমায় ভালবাসি ।।