somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম আলোর ক্ষমা অতপর আমরা যা জানার জেনে গেছি

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা যা জানার জেনে গেছি। ক্ষমা চাইলেও তা আর গোপন করা যাবে না। প্রথম আলো তথা একই ঘরনার একটি মিশন থাকতেই পারে। কিন্তু এর ভেতরের দোষত্রুটি বা অমার্জনীয় কিছু বিষয় যে ধামাপাচা দেয়া যায় না প্রথম আলোর সম্পাদক কি তা বুঝেন না? মোদ্দা কথা যা কিছু মানুষের কানে ভাসছিল লেখক সেসব পর্যবেক্ষণ করেই একটি গল্প সাজিয়েছেন। লেখক হাসনাত আবদুল হাই মূলত প্রত্যক্ষদর্শী লেখক। তিনি নবেরা লিখেছেন, তিনি সৈয়দ সুলতানকে নিয়েও লেখেছেন। সেসব উপন্যাসের সকল চরিত্র কি বাস্তবের। কিছু স্বপ্ন কিছু আশা আর কিছু কল্পনাকে সত্যের সাথে মিশিয়ে তিনি গল্প বানান। এতে কারোর আঘাত লাগা কি বাঞ্চনীয়। অনুভূতি যদি এমনই হয় তাহলে যারা ধর্ম নিয়ে ছলছাতুরী করে বিভিন্ন কল্পকাহিনী রচনা করে তখন ধর্মবিশ্বাসীদের মনে আঘাত লাগলে শাহবাগী বা এই ঘরনার মানুষজন উৎফুল্ল হন কেন?
আমরা এমনই এক জাতী। এমনই আমাদের নিজের সম্পর্কে পক্ষপাত। এটাকে আমি কখনই প্রগতি বলতে পারি না। বরং এই গল্প প্রত্যাহার করে নিয়ে লেখক এবং এর সম্পাদক বা প্রকাশক নিজেদের নীচতাকেই প্রকাশ করেছেন।

এবার আসি কিছু ফ্ল্যাস বেকে। ১/১১ এর সময় প্রথম আলোর সম্পাদক একটি বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশ করার দায়ে মরহুম মওলানা উবায়দুল হকের কাছে তওবা করেছিলেন। এবং তার কাগজে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি কী আদতেই এমত আদর্শে বিশ্বাসী যে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার দায়ে সেদিন দুঃখ প্রকাশ করবেন? আমরা জানি তিনি সে রকম নন। ১/১১ এর সময় মতিউর রহমান সাহেবের একটি মিশন ছিল মাইনাস ২ ফর্মূলার। তিনি এই ফর্মূলার একজন অন্যতম খলনায়ক। সেদিন কোনো রাজনৈতিক দল রাজপথে নামার যোগ্যতা হারিয়েছিল। আর্মির ভয়ে কেউ টু শব্দও করার সাহস পেতো না। তারা রাজনীতিকে বিদায় জানাতে এমন সব কর্মসূচী হাতে নিয়েছিল যে, ধরে ধরে রাজনীতিবিদদের ও ব্যবসায়ীদের উপর চরম নির্যাতন শুরু করেছিল। আমরা আজ মানছি, রাজনীতিকরা অনেক ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছেন বা সেদিনও ভুল পথই তাদেরকে ডেকে ছিল। কিন্তু রাজনীতিকে মাইনাস করে যারা রাজনীতি শুদ্ধ করার অভিযানে শরিক হয়েছিলেন, তারা কী শুদ্ধ চর্চা করতেন? মোটা অঙ্কের ঘোষ কি তারা গ্রহণ করেননি। তবু তারা এই সুযোগে দেশের মানুষকে এটাই বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, মাইনাস টুই আগামীর দেশ গঠনে সহায়ক হবে। ভয়ে যখন সবাই চুপ, তখন একটি কার্টুনকে কেন্দ্র করে ধর্মগোস্ঠী মাঠে নামার একটি সুযোগ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। মতিউর রহমান গং দেখলেন এদের লেজুড় ধরে রাজনীতিবিদরা মাঠে নামার সাহস পাবে এবং ১/১১-এর মাইনাস টু ফর্মূলা নস্যাৎ হয়ে যাবে। তাই সেদিন তাড়াহুড়ো করে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বায়তুল মোকাররমের খতিব মওলানা ওবায়দুল হক সাহেবের কাছে গিয়ে তওবা করে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন জাতীর কাছে। তার এই কৌশল খুব কেজে লেগেছিল। সরল বিশ্বাসী হুজুররা জানলেন লোকটা সহি হয়ে গেছে। তারাও তাদের কর্মসূচী বা উষ্মা প্রশতি করলেন। করতে বাধ্য হলেন। এ ছাড়া তারা আর কীই বা করতে পারতেন। ধর্মের ব্যাপারে তারা বাড়াবাড়ি করনেনি, এটা তাদের নৈতিক দায়িত্ব বলেই মান্য করলেন।

এখন এই শাহবাগ কোন ধরনের বার্তা দিচ্ছে? এদের টাকা-যোগান কোত্থেকে হচ্ছে। নিন্দুকেরা বলেন, সেই ১/১১ এর কুশলীবরা কৌশলে মাঠে একটি রাজনৈতিক স্ট্যান্ড নিতে চাচ্ছেন। শাহবাগ সেই ১/১১-এরই নতুন রূপ। আরো শক্তিশালী আরো কৌশলী। হেফাজতে ইসলাম এসে এদেরকে এক ধাক্কায় নড়বড়ে করে দিলেও এখনও তারা পাওয়াফুল জায়গায় অবস্থান করছে, যেহেতু তাদের পিছনে প্রথম আলো তথা সমমনাদের সমর্থন রয়েছে। সমর্থন রয়েছে বলাটা ভুল হবে। মূলত তারাই এটিকে পরিচালিত করছে। এর অর্থও ১/১১-এর ফর্মূলা বোর্ড থেকে আসছে। ক্যান্টনমেন্টের সরাসরি যোগসাজসে তারা লালিত-পালিত হচ্ছে।

হেফাজতে ইসলামের ধাক্কা সামাল দিতে তারা বহুপথ ধরলেও নিজের ঘর থেকে যখন গল্পকার হাসনাত আবদুল হাই বাস্তব চিত্র নিযে একটি গল্প তুলে ধরলেন আর সেটি সম্পাদকের ফাক গলিয়ে প্রকাশ হয়ে পড়লো তখন তারা প্রমাদ গুনলেন। তাই কোনো অঘটন ঘটার আগেই ক্ষমা চাওয়া ছাড়া কোনো পথ আর বাকী রইলো না। বিষয়টি এরকম, বোমাটি প্রতিপক্ষের উপর ছুড়ে মারতে গিয়ে নিজের হাতেই ফেটে পড়লো। তা নিজের হাতে বোমা ফাটলে কিছুটাতো জখম হতেই হয়। সে রকম রক্তাক্ত হওয়ার একটি গদ্য লিখেছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। কিন্তু রোকেয়া প্রাচীরা যদি একই বিষয় নিজের গায়ে মাখেন (ক্যামেরার সামনের মেয়েটির চরিত্র) তাহলে তো রক্তাক্ত না হয়ে উপায় নেই। কিন্তু চরম সত্য হলো যে, হাসনাত আবদুল হাই'র গল্পের মাধ্যমে আমরা যা জানার জেনে গেছি, ক্ষমা চেয়ে সেটাকে আর গোপন করা যাবে না।
আবার এটাও প্রমাণিত হলো যে, গল্পকার হাসনাত আবদুল হাই গল্পের চরিত্র বাছাইয়ে তিনি ভুল না করলেও বাস্তবতার বিরুদ্ধে গিয়ে আপোষ করেছেন। একজন ক্রিয়েটিব লেখকের জন্য খুবই আত্মসম্মানের বিষয়। তিনি যদি জোসেফ ব্রস্কির জীবনী পাঠ করতেন তাহলে দেখতে পেতেন - কমিউস্ট স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে তিনি কীভাবে কবিতার স্বার্ভমৌত্ব নিয়ে সেদিন দণ্ডায়মান হয়েছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:০০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×