হযরত নূহ (আঃ) এর আশ্চর্য নৌকাঃ
পৃথিবীতে হযরত আদম (আঃ) এর পর তাঁর পুত্র শীষ (আঃ) নবুয়ত প্রাপ্ত হন। তারপর আসেন ইদ্রীছ (আঃ)। অনেকের মতে নূহ (আঃ) ছিলেন ইদ্রীছ (আঃ) এর পৌত্র। হযরত নূহ (আঃ) চল্লিশ বৎসর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। তিনি দীর্ঘ ৯৫০ (নয়শত পঞ্চাশ) বৎসর পর্যন্ত চেষ্টা ও পরিশ্রম করে তাঁর ১৬০ (এক শত ষাট) জন উম্মতকে আল্লাহর পথে আনতে পেরেছিলেন। এর মধ্যে ৮০ (আশি) জন ছিলেন পুরুষ ও ৮০ (আশি) জন মহিলা। আর কেউ ঈমান আনলো না। একসময় আল্লাহ নিজেই নূহ (আঃ) কে অহী মারফত জানিয়ে দিলেন যে, তাঁর আর অন্য কোন উম্মতই ঈমান আনবে না।
হযরত নূহ (আঃ) এর যামানায় এত বেশী লোক আল্লাহর অবাধ্য হয়ে পড়ে যে, আল্লাহ সব কাফের দের ধবংস করার সিদ্ধান্ত নিলেন। আল্লাহ নূহ (আঃ) কে জানিয়ে দিলেন যে, তিনি যেন তাঁর ঈমানদার বান্দাদের বাঁচার জন্য একটি বড় নৌকা তৈরী করে তাতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। একদিন দেখলেন মাটি ফেটে ও চুলার ভেতর থেকে পানি উঠছে, তখন নূহ (আঃ) তাঁর ঈমানদার বান্দাদের সাথে নিয়ে নৌকায় উঠে গেলেন। সাথে নিলেন সমস্ত জীব-যন্তু ও পশু-পাখী এক জোড়া করে। সমস্ত গাছের বীজও নিলেন।
আকাশ হতে পড়তে লাগলো প্রবল বৃষ্টিপাত। মাটির নীচ হতে উঠতে লাগলো প্রচন্ড বেগে পানি। একনাগাড়ে ৪০ দিন এরূপ চললো। পৃথিবীর বাড়ী-ঘর গাছ-পালা পাহাড়-পর্বত সব কিছুই পানির প্রবল স্রোতে ধবংস হয়ে গেলো। শুধুমাত্র নূহ (আঃ) এর জাহাজ পানির উপরে ভাষতে লাগলো।
হযরত নূহ (আঃ) এর চার ছেলে ছিল। তাদের নাম হাম, সাম, ইয়াফেছ ও কেনান। প্রথম তিন জন ঈমানদার ছিলেন। তাঁরা তার পিতার সাথে জাহাজে আরোহন করেছিলেন। ছোট ছেলে কেনান ও তার মাতা ছিল কাফের। কেনান জাহাজে আরোহন না করে উঁচু পর্বতের দিকে ছুটলো। কিন্তু জলোচ্ছাস তাকেও ডুবিয়ে নিয়ে গেলো।
চল্লিশ দিন পর তুফান, বৃষ্টিপাত ও জলোচ্ছাস থামলো। হযরত নূহ (আঃ) এর জাহাজ ‘জুদী’ নামক পর্বতের উপর থামলো। আল্ল¬াহ্র আদেশে নূহ (আঃ) তাঁর ঈমানদার বান্দাদের নিয়ে জাহাজ থেকে নামলেন। তখন সমস্ত পৃথিবী আবার নতুনভাবে আবাদ হলো। এই হিসেবে হযরত নূহ (আঃ) কে আদমে ছানী বা দ্বিতীয় আদম বলা হয়। বর্তমানে বিশ্বের সমস্ত লোকই হযরত নূহ (আঃ) এর বংশধর।
তথ্যসূত্র:
আলকোরআন:
সূরা নূহ: পারা; ২৯, সূরা আরাফ: পারা; ৮ রুকু ১৫, সূরা মোমেনুন: পারা; ১৮ রুকু ২,
পারা; ২৩ রুকু ৭, পারা; ১২ রুকু ৩,৪,১০, পারা; ১১ রুকু ১৩, পারা; ২৮ রুকু ২০,
বোখারী শরীফ হাদীস নং ১৬২৪।
https://www.facebook.com/newbasherkella?fref=nf