ছিল এক কুয়াশায় ঢাকা প্রান্তর, আর চৌচির ধরণীর কিছু বিদীর্ণ বেদনা,
ছিল এক বুক হতাশার ভারী দীর্ঘশ্বাস, খুঁজেছিল দু’ফোঁটা করুনা,
ছিল অক্ষি গোলোক ঠিকরে বেরোনোর ভয়াবহতা, কিছু আতংক।
শুধু মৃত্যু আর আত্মা ছিল। কোন কিনারা ছিল না, এমন এক নদী ছিল,
পাতা বিহীন প্রায় বিলীন এক বৃক্ষ ছিল, ছিল সবুজের লাশ, একরাশ।
বিবেক ছিল, মানবতার আস্ফালন ছিল জড় সবে, তবে মানুষ ছিল না,
শব্দ, অগনিত কম্পনের ছড়াছড়িতে বলার আকুতি ছিল, কোন ভাষা ছিল না।
এখানে এক সাগর ছিল, অগাধের সাথে বিবাদে গলাটিপে খুন করা হল,
বুভুক্ষের প্রয়োজনে পান করা হল আকণ্ঠ। নীল সব হল রক্তাক্ত! তবু ছিল,
তবু ছিল নষ্টের সব আখড়া, টিকে ছিল সর্পিল ধুলিপথ, আর নোংরা কাদার দলা,
ছিল সব কুৎসিত চেহারার বিকৃত হাঁসি-চিৎকার আর অশ্লীল কথা বলা।
প্রহার যাতনে মৃত প্রায় কতো দাসী ছিল, কতো কান্না-হাঁসি গল্প ছিল,
ছিল কতো শত লাশ খুবলে খাওয়া কুকুর আর বিষ নখরের শকুন-চিল,
ফিরে পাবার আকংখা নয় শুধু, ধ্বংসের কতো আকুতি ছিল।
এখানেই ছিল পৃথিবীর বসবাস, আর সবুজের সাথে রুপালির খেলা হতো,
পাখির ডাক নির্মম আর্ত চিৎকারে প্রতিস্থাপিত অভিশাপে, এখানে পাখিরাও ছিল, গুঞ্জনরত।
গ্রহদের কক্ষপথ ছিল, বিক্ষিপ্ততা তাড়িয়ে তাদের প্রানবায়ু কেড়েছিল,
কতো স্বপ্ন ছিল হেথা, দুঃস্বপ্নে নিমজ্জিত সব হারালো।
আমিও ছিলাম, পথ হাঁটতে হারিয়েছিলাম, একদিন আমিও ছিলাম,
দুহাত লোহিত রঙিন, আমি দাঁড়িয়ে আজ, পথের শেষে। সময়যন্ত্র থেমে গিয়েছে,
সময়যন্ত্র বলে দিয়েছে, ঘূর্ণনে আর নয় যাপন মুহূর্তেরও, সময় সকলি শেষ হয়েছে।
আর “হবে”র প্রত্যাশা রবে না, কুৎসিতের পূজন হবে না কোন কালে,
আর কবে-কোথায় এর জিজ্ঞাসা রবে না, ওরা বিলুপ্তিতে পূর্ণ হল,
সার্বিক ধ্বংস নয় তবে পূর্ণস্তব্ধতার আগমন। সময় জানিয়ে দিয়েছে, যাবার সময় হল।