নই মহাকালের স্মরণীয় মহাত্মাদের, যা কাল থেকে কালে স্থায়িত্বের দাবি করে,
যার কান্না শত সহস্র বছর কাঁদায় কোটি সৃষ্টিকে সে বিশালতা নই।
আমি শুধু বিলীন হয়ে যাওয়া এক প্রেতাত্মার দীর্ঘশ্বাস,
তোমাদের মাঝেই করে গেছি বসবাস।
তোমরা চেননি আমায়, উপাধি দিয়েছিলে অবহেলায়, “সাধারণ।”
সে ঝরে পড়া পাতার গল্প আমি, বৃক্ষ যাকে ডেকে নেয়নি আবারও,
হয়ত ঈষৎ ব্যাথায় ভুগেছিল শেকড় মুহূর্ত মাত্র, তবু এই ছিল-
এই ছিল মরণশীলের ভাগ্যে, শুকিয়ে হারিয়ে যাবার ছিল, হবার ছিল নীল।
আমি নির্বাক ধ্বংস দেখেছি, স্বত্ব লাভ করে উপযোগের চূড়ান্ত উপভোগে ব্যাস্ত হতে দেখেছি,
আমি নামক সৃষ্টিকে হারিয়ে যেতে দেখেছি নিঃশেষ ব্যাবহারে,
চূর্ণ হতে দেখেছি কত দম্ভ, হতে দেখছি মৃদু কত পদক্ষেপ, অহংকারে।
আমার আমারিত্বে লুকিয়ে পড়া আমাকে কেউ খুঁজে নেয়নি,
সে প্রয়োজন হতনা কোন কালেই, সময়ের দাস হয়ে এসেছিলাম, পাইনি সময়ের দিশা।
বাঁচিনি অনন্তকালের হয়, শুধু সাময়িকতায় সবকিছু, বড় নশ্বর,
বড় সংক্ষিপ্ত, বড় অপ্রতুল করেছ হে ঈশ্বর!
আমি কিংবদন্তি নই, শত আবেগের নই কোন পূজনীয় দেবতা,
মানুষ থেকে কিছুটা কম হয়ে বেঁচেছি আমি, হয়েছি বিনাশ মানুষ হবার শত প্রয়াসে।
শুন্যতায় বিশাল হবার ধৃষ্টতা দেখানো কোন আবেগি পথিক,
শুধু পথে হেঁটে গিয়েছি গন্তব্যহীন, অরণ্য শত পেরিয়ে মরু উপত্যকায় আজ বিচরণ,
তোমাদের কান্না শুনিনা আমি আর, হাসি দেখিনা, ঘৃণা আর ছুঁয়ে যায়না আমাকে,
সবথেকে নীচ আমি সবকিছুর উর্ধে চলে গিয়ে দেখ রক্তাক্ত তবু
কাঁদিনা মোটেই! লালসার লোভে মত্ত শুধু, পাইনা দেখা কভু।
সময়ের ক্ষুদ্রতর একক বলছি,
তোমাদের থেকে হারিয়ে গেছি।
হয়েছি নিখোঁজ তবু তোমাদের মাঝেই রয়েছি।
আজ তোমারা আমায় দেখতে পাওনা চোখে, আমি শত ডেকেছি
দাওনি সাড়া তাই একা রয়েছি।
দেখোনা তোমরা, শুনোনা আমাকে, আমি বিলীন প্রেতাত্মা বলছি,
অশুভ কিছু হারানো মুহূর্ত আমি, অবলুপ্ত
বৃথা জন সে, ভুলেছ সবাই, জানি সেই মহাসত্য।
আমি স্মরণীয়ও হতে আসিনি, আমি ধ্বংস প্রাপ্ত হবার আকাঙ্খা মাত্র,
মহাকালের মহাশিক্ষকের সেই ভুলে যাওয়া ছাত্র।
___________________________________________________
শুধু হারানোর জন্যে জন্ম, বেঁচে থাকা অধিকাংশের। পদচিহ্নহীন পথের শেষে পৌঁছে পেছনে ফিরে তাকানো তাদের জন্যে করুনা হয়। পেছনে ফেরা আর হয়না, সামনে শুধুই বিশাল শুন্যতা। করুনা হয় নিজের তরেও।