ভ্রমনের জন্য বরাবর ই বাংলাদেশ কে আমার ব্যায়বহুল মনে হ্য়। কক্সবাজার ঘুরে আসতে এখন নিদেন পক্ষে একেক জনের পনের হাজার লাগে। অথচ এই টাকায় অনায়াসে ইন্ডিয়া ও ঘুরে আসা যায়। টুরিস্ট স্পট গুলোতে গত কয়েক বছরের ব্যাবধানে আবাসিক হোটেল, খাবারের রেস্টুরেন্টের বিল অস্বাভাবিক বেড়েছে। কক্সবাজারে রিকশায় উঠলে ই নাকি ৫০ টাকা দিতে হ্য়।অথচ অন্যান্য সকল দেশে টুরিস্ট দের উৎসাহিতো করতে কত পদক্ষেপ ই না নেওয়া হয়। একবার আমি সুইডেন থেকে ফ্রান্স গেলাম। রায়ান এয়ার এ প্লেন ভাড়া পড়ল মাত্র ছয় ডলার। তখন আমি ষ্টুডেন্ট।তাই খরচের দিকে বাধ্য হয়ে ই নজর দিতে হয়। প্লেন থেকে নেমে ই ব্যাক প্যাক টা কে একটা লকারে পুরে একটা সাইকেল ভাড়া করে দিলাম ভোঁ ছুট। হাতে ম্যাপ, চষে বেরাচ্ছি পুরো শহর। মাঝে মাঝে ই এমন সস্তায় অফার মিলত পুরো ইউরোপ জুড়ে। ভাইকিংস লাইন নামে বিশাল শীপ এ বিলাস বহুল ট্যুর দিয়েছি মাত্র শুন্য পয়সা খরচ করে ও। এই শীপ এ করে সুইডেন থেকে ফিনল্যান্ড যেতে সময় লাগে ৭ ঘন্টার মত। প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ আছে একটি করে কেবিন। ২/৩ টা ফ্লোর বরাদ্দ ড্যান্স ফ্লোর, ক্যাসিনো আর শপিং এর জন্য। কেউ ছুটছে স্পা করতে, কেউ রেস্টুরেন্টে বসে গিলছে, কেউ বা বিয়ার হাতে ড্যান্স ফ্লোর এ মেয়ে পটাচ্ছে। সকালের নাস্তা বুফে তে রয়েছে ৩০০ আইটেমের খাবার। মাঝে মাঝে এই পুরো প্যাকেজ ই ফ্রী তে মিলে।শুধু নজর রাখতে হয় অনলাইন এ এই যা। প্রত্যেক দেশে ই স্টুডেন্ট দের জন্য রযেছে লোকাল ট্রান্সপোট এ ছাড়। রেল স্টেশনে থাকে স্বল্প মূল্যে রাত্রি যাপনের ব্যাবস্থা অথবা স্টুডেন্ট হোস্টেল। মিউজিয়াম গুলোতে ঢুকতে টিকেটে বিশেষ ছাড়। মেট্রো তে সারাদিনের জন্য একটি টিকেট কিনে ঘুরে বেড়ানো যায় পুরো শহর।
উন্নত দেশগুলো ছাত্রদের নিয়ে ভাবে, অনুন্নত দেশগুলো ছাত্রদের অবহেলায় রাখে। তাই ছাত্রদের দেশের প্রতি মায়া কমে যায়। সুযোগ পেলে ই দেশ ছেড়ে পালায়। চাপা এই ক্ষোভ ছাত্র দের দিশেহারা করে তুলে। আমার অনেক বন্ধু দের দেখেছি বাংলাদেশে ভাল জব করছে। সেই জব ছেড়ে তারা আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা নিয়ে কোনমতে সেই দেশে প্রবেশ করে অবৈধ ভাবে বসবাস করছে। দেশে এসি রুমে বসে জব করতো আর এখন বাংগালি দের রেস্টুরেন্টে লুকিয়ে লুকিয়ে থালা বাসুন ধুইতে হচ্ছে অথবা নিজের সন্চয় ভেংগে খেতে হচ্ছে। রাস্তায় পুলিশ দেখলে অন্য পথে ইউটান। তারপর ও তারা দেশে ফিরবে না। এতো টা ই ক্ষোভ তাদের।
স্টুন্ডন্ট দের শিক্ষার যেমন দায় ভার সরকারের ঠিক তেমনি তাদের জীবন উপভোগ করবার আয়োজক ও সরকার। ওদের ভ্রমনে উৎসাহিত করতে আমাদের সরকারের ও উচিত কিছু পদক্ষেপ নেওয়া। এখনো স্বপ্ন দেখি স্টুডেন্ট দের জন্যে শুধু ৬ নং বাস নয়, সকল দুরপাল্লার বাসে থাকবে বিশেষ ছাড়। ওরা টিফিনের টাকা জমিয়ে দল বেধে যেন ঘুরে আসতে পারে বান্দরবন, রাংগামাটি, দেশের আনাচে কানাচে। ওরাও শিখবে আন্চলিকতা, অনুভব করবে বাংলার সোদা মাটির গন্ধ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪১