বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ, মানে ফার্স্ট ইয়ার একটা চমৎকার সময়। হঠাত করেই নিজেকে বেশ বড় বড় মনে হয়।দুনিয়াটাও বেশ রহস্যময় মনে হতে থাকে।এবং এই রহস্য সমাধানে রাতে পলাশীর মোড়ে চা খাওয়া,সোহরাওয়ারদী উদ্যানে মুক্ত মঞ্চে শুয়ে (রাত ৩ টায়) আকাশ দেখা এবং পুরনো ঢাকার অলিগলিতে হাঁটা জরুরী বলে মনে হতে থাকে।
যারা আমার আগের পোস্টটা পড়েছেন,ভাববেন না নাম এক রেখে অন্য গল্প ফেঁদে বসেছি।প্রেমের গল্পই বলব,তবে তার আগে তখনকার ‘আমি’ কে একটু ব্যাখ্যা করতে ইচ্ছা করছে।
তো ,যা বলছিলাম,বিশববিদ্যালয়ের ফার্স্ট ইয়ার আমার জীবনের সবচেয়ে অদ্ভুত সময়গুলোর একটি। আমি প্রথমবারের মত জানতে পারলাম রাত ২ টার সময় পলাশীর মোড়ে ডিম কারি দিয়ে পরোটা খেতে অসাধারন লাগে।আরও জানতে পারি বুয়েটের আহসানউল্লাহ হল এর সামনের ফুট ওভার ব্রীজটার উপর থেকে রাতের বেলা নিচের চলন্ত গাড়িগুলোর উপরে থুথু ফেলতে একটা বিজাতীয় আনন্দ পাওয়া যায়।জানলাম,বিশাল প্রতিযোগিতার পর পছন্দের ভার্সিটিতে পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হওয়ার পর হঠাত করেই ‘পড়ালেখা করে কি হবে’ টাইপ ভাব আসাটা খুবই স্বাভাবিক।
আমার জেনারেল নলেজের পরিধিও একটু বাড়লো। একটু উদাহরন দেই,প্রথম বারের মতো জানলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সামনে হাঁটাহাঁটি করলে আয়ু বাড়ে।আই বি এ এর সামনেও যাওয়া যায়,আবার কাছাকাছির মধ্যে বুয়েটের আরকি ডিপার্টমেন্ট ও খারাপ না!!
আয়ু কেন বাড়বে?বাড়বে ,কারন একটা সুন্দর মুখ দেখলে পাঁচ মিনিট আয়ু বাড়ে।আর কে না জানে, বাংলাদেশের সুন্দর মুখশ্রীর অধিকারিনীদের অর্ধেকই এই তিন জায়গায় পড়েন?
(আয়ু বাড়ার থিওরী আমার না,আমার এক বড় ভাই এর।উনি এখন বিবাহিত,ভাবি দেখতে তড়কা রাক্ষুসী টাইপ,প্রত্যেকবার দেখলে আয়ু ২০ মিনিট কমার কথা,ভাই এখন বেচে আছে কিভাবে এইটা একটা রহস্য!)
এই চমৎকার এবং অদ্ভুত সময়ে আমি আমার পাঁচ নাম্বার প্রেমটায় পড়লাম।যাকে বলে হুরমুর করে পড়া।অবশ্য হুরমুর করে না পড়ে উপায় ও ছিল না।সেই যে নোভা আপু গেল ক্লাস এইট এ!তারপর থেকে খালি বয়েজ স্কুল, তারপর বয়েজ কলেজ!কিচ্ছু হল না।আশেপাশের বাসায়?তাও না।নোভা আপুদের বাসায় নতুন লোক এল,ওদের সাথে এলো মানিক ভাই।ইয়া লম্বা চওড়া মানুষ, নোভা আপুদের বারান্দায় লাল একটা হাফ প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে বুকডন দিত।সাদা জামার জায়গায় এলো লাল হাফ প্যান্ট, বিষন্ন চোখের জায়গায় গাব্দা গাব্দা দুইটা লাল চোখ, আমের আচার এর জায়গায় ইয়া সাইজের সাগর কলা! সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আমার প্রেমে পড়া রোগের মোটামুটি লম্বা বিরতি পড়লো।
প্রেমের গল্পে ফিরে আসি,বালিকার নাম প্রিয়তি ,আমার ডিপার্টমেন্ট এ পড়ে, সুন্দরী, বেশি কথা টথা বলে না,ভিষন ভাল ছাত্রী।সবসময় নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটে, ক্লাসে চালু গল্প-কেউ নাকি ওকে কখনও চোখ তুলে তাকাতে দেখে নাই।
একটা মজার ব্যাপার কি জানেন?আমি দেখেছি আমার জীবনে সবসময়ই এই রাবার জিনিস্টা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে এসেছে(পাঠকদের শরমীর গল্প মনে করিয়ে দিচ্ছি )! এইবারও ঘটনার শুরু রাবার, মানে ইরেজার নিয়ে।
ঘটনাটা বলি, ফিজিক্স এর ব্যাবহারিক ক্লাস চলছে।সবাই গভীর মনযোগ দিয়ে অভিকর্ষ ত্বরণের মান বের করছে,আর আমি উদাস মুখে চাক্তি ঘুরাচ্ছি। (কম্পাউন্ড পেন্ডুলাম বলে একটা জিনিস আছে,চাক্তি ওয়ালা,ঘুরাইতে হেভি মজা!)
হঠাত কানের কাছে চুড়ি ভাঙ্গার শব্দ! “রাবার হবে তোমার কাছে?”
(আচ্ছা?ওর হাসি,কথা সব আমার কাছে চুড়ি ভাঙ্গার শব্দের মত মনে হয় কেন? চুড়ি মানে,কাচের চুড়ি,লোহার না কিন্তু,ভাংলে ঠনঠন শব্দ না,কেমন কোমল একটা শব্দ হয়,শুনলে খালি শুনতেই ইচ্ছা করে...)
আমার কাছে রাবার ছিল না।কলম,খাতা,রাবার এইগুলা নিয়ে ক্লাসে যাওয়া বাহুল্য মনে হত।আমি পাশের জনের রাবার নিয়ে প্রিয়তিকে দিয়ে দিলাম।
“থ্যাংকস”
বলেই চোখ তুলে তাকাল আমার দিকে।
মোটামুটি একটা ধাক্কার মত খেলাম!জীবনে প্রথম বারের মতো জানলাম ,না জেনে না বুঝে যেসব জায়গায় পড়ে যাওয়া যায় এবং হারিয়ে যাওয়া যায় তার মধ্যে সমুদ্র,ম্যান হোল,প্রেম এর পড়েই আছে প্রমার চোখ!ইশ!এত সুন্দর কেন ওর চোখ গুলা! একদম “হঠাত দেখি তোমার দুটি বিশাল কাল চোখ,দিন দুপুরে চেঁচিয়ে উঠি-একটা কিছু হোক! ” টাইপ অবস্থা।হইল কিছু???
বাকি পুরোটা ক্লাস আমি ওর দিকে তাকিয়েছিলাম,যদি আরেকবার চোখ দুটো দেখতে পেতাম!
আফসোস!বালিকা ফিরেও তাকাল না।
ক্লাস শেষে হলে ফিরলাম,নানান ভাবে চিন্তা করছি,কেন আমার কাছে রাবার চাইলো!ও কি আমাকে আসলে মনে মনে পছন্দ করে!!(প্রেমে পড়ার এই একটা মজার ব্যাপার,যাই দেখি মনে হয় ও আমাকে পছন্দ করে বলেই করছে।ও যদি আমাকে দেখে চপাক করে থুথু ফেলত তাহলেও মনে হয় আমি ভাবতাম, ‘আমাকে দেখে এই ভাবে থুথু ফেলল ক্যান? ওকি আমাকে পছন্দ করে!)
পরদিন থেকে শুরু হল আমার ঘোরাঘুরি সময়, চলিত বাংলায় যাকে বলে লাইন মারা।নিজেকে অনেকবার গালি দিলাম কেন ওকে আরো আগে এভাবে খেয়াল করি নাই।
তারপর যা হয় আর কি,ওর আর আমার মিল খুজতে শুরু হল ব্যাপক গবেষনা,ফেসবুক ঘাটাঘাটি, এর তার সাথে বিশেষ আলোচনা।
গবেষনার ফল হল ভয়াবহ!দেখলাম আমি যদি হই দক্ষিন মেরু,তাহলে ও অবশ্যই বৃহস্পতি গ্রহ!উল্টার উপরে উলটা!যেমন,আমি প্রচুর কথা বলি,ও মোটেই কথা বলে না।রাস্তায় হাঁটার সময় আমার ভাবটা থাকে যেন বাপ দাদার সম্পত্তি দেখতে বের হয়েছি,ও হাঁটে মাথা নিচু করে।সামনে দিয়ে ডাইনোসর গেলেও মনে হয় দেখবে না।ভার্সিটিতে আমার প্রিয় জায়গা ক্যাফেটেরিয়া,ওর প্রিয় লাইব্রেরী।ক্লাসে আমি বসি লাস্ট বেঞ্চে, ও বসে একদম সামনে ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রায় প্রতিদিনই কাকতালীয় ভাবে আমার ওর সাথে ওর হলের সামনে দেখা হয়ে যায়,(কাকতাল না,আমার কঠোর পরিশ্রমের ফল)।সাধারনত আমিই এগিয়ে যাই,এইটা ওইটা কথা বলার চেষ্টা করি,কিন্তু বেশিদুর আগায় না।
বিশ্বাস করেন পাঠক,তিন মাস আমি রীতিমত জোকারি করে গিয়েছি ওর সামনে,এর বদলে বালিকার দাত দেখেছি মাত্র চারবার!
চুড়ি ভাঙ্গার শব্দে যে হাসে,তার হাসির মনে হয় অনেক দাম!
এই তিন মাসে আমার ব্যাপক পরিবর্তন হল।আমি লাইব্রেরীতে যাওয়া শিখলাম,লাস্ট বেঞ্চ থেকে থার্ড বেঞ্চে বসা শিখলাম(ওইখান থেকে কোণাকুণি প্রিয়তিকে দেখা যেত)।
আমার নির্ঘুম রাতের শুরু হল।রাত জেগে আমি প্রিয়তির ফেসবুক প্রোফাইল দেখি,ও কাউকে কমেন্ট করলে ওই লোকটাকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছা করে! প্রতিদিন আমি খুন করতে চাই এমন লোকের লিস্ট লম্বা হয়।আমার কিচ্ছু ভাল লাগে না।
এর মধ্যে পরীক্ষা চলে আসলো। আমার “দক্ষিন মেরুত্ত” আর ওর ‘বৃহস্পতি গ্রহত্ত’ প্রমান করে ও পেল ৩.৯ ,আর আমি ২.৮!!
সেমিস্টার এর ছুটি শেষে আবার ক্লাশ শুরু হয়ে গেছে।সারারাত আড্ডা দেই আর দুপুর ৩ টায় উঠি।ভুলেও প্রিয়তির হলের সামনে যাই না,ক্লাসে যাই না।কি দরকার ওর সামনে পরার? মোটামুটি সন্যাসী অবস্থা আমার।
মে মাসের এক দুপুরে আমার সন্যাস জীবন বাধা পেল।দুপুর বেলায় ঘুম ভেঙ্গেছে,অভ্যাস মত বালিশের নিচ থেকে ফোনটা নিয়ে সময় দেখব,একটা মেসেজ এসেছে। প্রিয়তির নাম্বার-
“আচ্ছা? তোমার কি এখন আর আমার হলের সামনে কোন কাজ থাকে না?কেমন আছ তুমি?”
লাফ দিয়ে উঠে বসলাম।সম্ভবত যদি দেখতাম বিল গেটস মেসেজ পাঠিয়েছে তাহলেও এত উত্তেজিত হতাম না।আমার সন্যাস ব্রত এলোমেলো হয়ে গেল।আমি দাত না মেজে,থ্রী কোয়ার্টার আর ময়লা টি শার্ট পড়েই দৌড় । পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেকুবের মতো আমি এসেছি। এলোমেলো চুল,গরমে ঘেমে চুপসে গেছি,ওর হলের গেটে দাঁড়িয়ে ফোন দিলাম।
-হ্যালো ,প্রিয়তি?
- তুমি? এতদিন পরে কোত্থেকে?
মেয়েটা কেন যে এইভাবে কথা বলে।আমার সব এলোমেলো হয়ে যায়।আমি বলি-
-এম্নি,একটা কাজ পড়ল এদিকে।
-কি কাজ?
-রাবার নিতে আসছি,ওই যে রাবার টা নিসিলা না লাস্ট সেমিস্টারে?ওইটা।
-রাবার নিতে আসছ মানে!!
-হ্যা!! রাবার!! রাবারটা ভাল ছিল,১০ টাকা দাম! রাবারটা দিয়ে যাবা একটু?
একটা দীর্ঘশ্বাস ......
-আসছি।
আমি অপেক্ষা করছি,মনে মনে গুছিয়ে নিচ্ছি কি বলব।ধুর ছাতা!কিছুই তো মাথায় আসছেনা!
পাঁচ মিনিট পর প্রিয়তি এল,সেই নিচের দিকে তাকিয়ে।এহ!ভাব কত,এমন ভাবে নিচের দিকে তাকায়ে হাঁটে যেন পয়সা পরেছে নিচে,খুজতে খুজতে আসছে!
আমি আর প্রিয়তি মুখোমুখি, ও চোখ তুলে তাকাল, সেই গভীর কাল চোখ!আমার সব এলোমেলো হয়ে যায় আবার।
নতুন একটা স্টেডলার রাবার বাড়িয়ে দিল আমার দিকে।
-এই নাও রাবার।
-থ্যাঙ্ক ইউ।
-রাবার নিতেই এসেছ?
-হুমম,আচ্ছা আমি যাই।
বলেই আমি ঘুরে হাটা দিলাম,একবারও ফিরে তাকালাম না।আমি কিছু ভাবছিনা।আমার সব এলোমেলো।আমি এত গাধা কেন!!
হলে না গিয়ে বাসায় চলে এলাম।পরের দুই মাস আমি হলে যাই না,ক্লাস করি না, প্রিয়তির কোন খবর রাখি না।কারো ফোন ধরি না, মেসেজ ও ব্যাক করি না।
আমি খালি ঘুমাই।আর মাঝে মাঝে বারান্দায় বসে আকাশ দেখি।আমার বারান্দা থেকে আকাশ দেখা সহজ না,খালি পাশের বিল্ডিং এর বারান্দায় নেড়ে দেয়া নীল লুঙ্গি দেখা যায়।আমি লুঙ্গি সহই আকাশ দেখার চেষ্টা করি,আমার কিচ্ছু ভাল লাগে না।
এর মধ্যে একটা মেইল পেলাম,অনেকদিন আগে হল্যান্ড এর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলাম,ওরা মেইল করেছে।আমি যেতে পারব। অগাস্ট মাসে আমার ফ্লাইট,সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস। আমি বিদেশ যাত্রার প্রস্তুতি নেই,দেশ ত্যাগ এবং আমি বন্ধুদের কত মিস করব তাই নিয়ে ফেসবুকে জালাময়ী স্ট্যাটাস দেই।বিনীত ভঙ্গিতে আমার স্কলারশিপের কথা লিখি,বিনয়ের আড়ালে থাকে অহংকার,দেখ শালা চলে যাচ্ছি বাইরে টাইপ! প্রিয়তির কথা ভুলেও ভাবি না।
অগাস্ট এর পাঁচ তারিখ আমি এয়ার পোর্টে , বাবা মা ,আত্মীয় স্বজন এক গাদা লোক বিদায় দিতে এসেছে। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি ভিতরে লাউঞ্জে বসে আছি,সাথে গাট্টি বোচকা অনেক,রেখে কোথাও যেতেই পারছি না।
রঙ চঙ্গে শার্ট পরা কিছু লোক এক জায়গায় বসে আছে, মনে হয় দুবাই টুবাই যাবে।ওদের একজন মনে হয় গ্রামে নতুন বউ রেখে এসেছে।সাথের সবাই দেখি খোচাচ্ছে-‘কি রে,ভাবির লাই ফেড ফুঁড়ের?’ আমি এক পাশে বসে থাকি। আমার প্রিয়তির কথা মনে পড়ে, ওকে জানাইও নাই যে আমি চলে যাচ্ছি।ও অবশ্য জানে সবি,বাকি পোলাপানের কাছ থেকে।
আমি ফোন বের করে দ্রুত হাতে মেসেজ টাইপ করি-
‘জানো?আমি কখনও তোমার হাত ধরতে চাই নি,কিন্তু মনে মনে অনেকবার তোমার হাত ধরে টি এস সি থেকে হাকিম চত্বর পর্যন্ত হেঁটে গেছি।কাঠফাটা রোদকে করেছি ফিনকি দিয়ে পড়া জোছনা......... আমার সাথে চারুকলার সামনে বসে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেতে কি তোমার খুব কষ্ট হবে?’
মেসেজ সেন্ট হয়।আমি অপেক্ষা করি প্রিয়তির উত্তরের।
অপেক্ষা করতে করতে আধা ঘন্টা হয়ে যায়। উত্তর আসে না।
আমার সময় হয়ে যায়,আমি ফোন বন্ধ করে হাঁটা দেই।
আচ্ছা?শুনেছি পাঁচ একটা ম্যাজিক সংখ্যা । আজকে অগাস্ট মাসের পাঁচ তারিখ,মঙ্গল বার।সপ্তাহের পঞ্চম দিন।কি অদ্ভুত!আজকের দিনেও কি একটা ভাল কিছু হতে পারত না?
থাক গে, প্রিয়তির মনে হয় ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়ার ইচ্ছা নেই।হাত ধরতেও সমস্যা থাকতে পারে।
তাতে কি,নাই বা ধরলাম হাত।
কে বলেছে হাত না ছুঁয়ে মন ছোঁয়া যাবে না?
[সব চরিত্রই কাল্পনিক,গল্পের ‘আমি’ ও কাল্পনিক।]