ওড়না ছাড়া রাস্তায় বের হলেই যত দোষ। একটু হালকাপাতলা ড্রেস পরে ঘুরে বেড়ানোর মতো মৌলিক অধিকারটুকুও স্বীকার করেনা সমাজ। শত শত জোড়া চোখ আপত্তি আর বিরক্তিভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে।
নারীদের মত শিশুরাও নিষেধাজ্ঞার শিকলে বন্দী। অরিত্রীর কথাই ভাবুন। কতখানি বিক্ষুব্ধ হলে পরে নিজেকে হত্যা করে ফেলা যায়! ওতো ক্লাস নাইনের ছাত্রী ছিলো, নিজের ভালো মন্দ বোঝার মত যথেষ্ট সামর্থ্য ওর হয়েছিলো। শিক্ষকটি অত পাকামো না করলেও পারতো। বিবিসি বাংলার মত বিশুদ্ধ উচ্চারণে এটুকু বলে দিলেই হতো, “সোনামনি, মোবাইল দেখে লেখা বেআইনী, ওটা রেখে দাও, কাল থেকে আর ওটা পরীক্ষার হলে আনবেনা, কেমন?” ব্যাস, এ নিয়ে তাকে জবাবদিহি করা, অপমান করা, বাবা মাকে নালিশ করা, বেশি বেশি কথা শুনানো, এগুলো কী?!
অরিত্রী এদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থীকে শিখিয়ে গেছে, কিভাবে নিপীড়নের জবাব দিতে হয়। শিক্ষামন্ত্রী মহদয় বলে দিয়েছেন, অপরাধী শিক্ষককে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। এবার জব্দ হবে ইচড়ে পাকা শিক্ষকের গোষ্ঠী।
অধিকার ও স্বাধীনতার স্বাদ থেকে বঞ্চিত আরেকটি শিশুর নাম ঐশী। স্বাধীনতায় কতখানি প্রতিবন্ধকতা থাকলে নরম শিশুমনেও বিদ্রোহ জ্বলে উঠে, নিজের মা বাবাকেও মেরে ফেলা যায়। শিশুটির পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো জেলে পাঠিয়ে দিলো এই সমাজ, এই সরকার।
ঐশী এদেশের স্বাধীনতা বঞ্চিত শিশুদেরকে দেখিয়ে দিয়েছে, কিভাবে পরিবারের বিধিনিষেধের বেড়াজালকে ছিন্ন করতে হয়।
তবে সময় বদলেছে। নারীরা মুখ খুলতে শুরু করেছে, বুক খুলতে শুরু করেছে। শিশুস্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আন্দেলনে শিশুরাও অবদান রাখতে শুরু করেছে। ঐশী-অরিত্রীরা তাদেরই প্রতিনিধী।পপপপপতততবব পতাকাবাহী শিশুনেত্রী। ঐশী-অরিত্রীদের কাছে বিবিসি বাংলা প্রশ্ন রাখতে পারে, “স্বাধীনতার পথে কোন জিনিসটিকে আপনারা প্রধান বাধা মনে করেন? কোন জিনিসটি আপনারা ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিতে চান?”
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮