বিরামহীন বর্ষণের দিনে আমি দেখি
ভিজছে অগণিত দানব,
ভিজছে প্রকৃতির ঝাড়ুদার,
ভিজছে ছদ্মবেশী মানব,
ভিজছে কলিমদ্দি দফাদার।
আমি আরও অবাক হয়ে দেখি
কিভাবে ভিজছে দালানকোঠা-বাড়ি,
কিভাবে ভিজছে তোমার ভেজা শাড়ি,
কিভাবে ভিজছে নাটাইয়ের সুতো,
কিভাবে ভিজছে মন খারাপের ছুতো।
ঘুরে ফিরে আমি আরও দেখি
ভিজে যাচ্ছে সরকারী নথি,
ভিজে যাচ্ছে শাস্ত্রীয় পুঁথি,
ভিজে যাচ্ছে দৃষ্টিহীন, দূর্বল, নির্বাক,
ভিজে যাচ্ছে খোলা আকাশের ডাক।
দেখতে দেখতে হাঁটি
আর হাঁটতে হাঁটতে দেখি
ভিজে একাকার প্রেমিকের ভুলের মাশুল,
ভিজে একাকার প্রেমিকার কানের দুল,
ভিজে একাকার শহুরে সভ্যতা,
ভিজে একাকার নিষ্ঠুর মানবতা।
আমি দেখতেই থাকি
কেমন করে ভিজছে খোঁপার কদম ফুল,
কেমন করে ভিজছে বট অশুথের মূল,
কেমন করে ভিজছে ত্রিচক্রযান চালক,
কেমন করে ভিজছে চালচুলোহীন বালক।
আমি অবাক হতে হতে হতবাক হয়ে দেখি
ভিজেই চলেছে গ্রামের বাজার, পথঘাট,
ভিজেই চলেছে সোহরাওয়ার্দীর মাঠ,
ভিজেই চলেছে কৃষকের ভিটেমাটি,
ভিজেই চলেছে ভিখিরীর খালি বাটি।
ভিজতে ভিজতে ভাবি
আর ভাবতে ভাবতে দেখি
ভিজে গেছে ঘটকের কালো ছাতি,
ভিজে গেছে আজ নীরব প্রকৃতি,
ভিজে গেছে গ্রাম্য কিশোরীর হাসি,
ভিজে গেছে মেঠোপথে রাখালের বাঁশি।
দু’চোখ ভরে আমি দেখি
ভিজতে থাকে রাতের পাখি,
ভিজতে থাকে নির্ঘুম আঁখি,
ভিজতে থাকে আমার স্বপ্নভেলা,
ভিজতে থাকে ভেজাভেজির খেলা।
আচ্ছা বাদ দাও। এসব কথা ছাড়ো।
আমার ভেজা চোখ আর কত ভিজবে বলতে পারো?